ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

বন্ধুর পথে এগিয়ে চলা

বন্ধুর পথে এগিয়ে চলা

লাবণী মণ্ডল

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২২ | ২২:১২

ফাতেমা সাইয়েদার জন্ম ঢাকায়। বেড়ে উঠেছেন নোয়াখালীর কেশারপাড় গ্রামে। বাবা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন, মা গৃহিণী। ১০ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। ছিলেন পরিবারের সবার প্রিয়। করোনাকালে বিশ্বব্যাপী স্থবিরতা চলে আসে। মানুষ ঘরবন্দি। এ সময়ে তিনি উদ্যোক্তা জীবন শুরু করেন।

ফাতেমা সাইয়েদা ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে অনার্স করেছেন। এর পর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টে করেছেন এমবিএ। খুব ছোটবেলায় তিনি বাবাকে হারিয়েছেন। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, 'ছোটবেলা থেকেই শিখেছি, অর্থ উপার্জন কতটা দরকার। স্কুলে পড়ার সময়েই বাড়ির আশপাশের ছোট বাচ্চাদের পড়াতাম। স্কুলের বৃত্তি পরীক্ষা দিতাম। স্বাবলম্বী হবো- ছোট থেকেই এ চিন্তা মাথায় খুব ভালোভাবে গেঁথে গিয়েছিল। পরিবারের সহযোগিতা সব সময় ছিল।' তিনি আরও বলেন, 'আমার দুই মেয়ে। উদ্যোক্তা হবো- কখনও ভাবিনি। পড়াশোনা শেষে চাকরি করেছি। মেয়েদের দেখাশোনা করাটা কিছুটা চ্যালেঞ্জিং মনে হওয়ায় করপোরেট চাকরি ছেড়ে স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করি। করোনায় যখন বেতন বন্ধ হলো, তখন মন খুব খারাপ। ভাবছি কী করব। আমার বড় মেয়ে বলল, আম্মু, তোমার মিষ্টি খুব ভালো। বিক্রি করা শুরু করো।'

এর পর জীবন ভিন্ন পথে এগোলো। প্রথমে বিল্ডিংয়ের নিচতলা-ওপরতলায় মিষ্টির চাহিদা বেড়ে গেল। লোকমুখে মিষ্টির সুনাম ছড়িয়ে পড়ল। জীবনকে উদযাপন শুরু করলেন ফাতেমা সাইয়েদা।

পথচলা থেমে থাকে না। বাধা অতিক্রম করেই স্বপ্নের পথে যেতে হয়। যে পথ মসৃণ নয়; বন্ধুর। চাকরি না করে ব্যবসা করা আমাদের সমাজব্যবস্থা এখনও মেনে নিতে পারে না। হাজারটা মতপার্থক্য থাকে। অনেকের অনেক মত। তাতে কারও পথ থেমে থাকে না। সব বাধা, সমালোচনা পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে হয় আপন গতিতে। ফাতেমা বলেন, "কিছুদিন অন্যের পণ্য এনে কাজ করার পর চিন্তা করলাম, নিজেই ডিজাইন করি। সেই চিন্তা থেকেই কাজ শুরু করে দিলাম। নিজের চিন্তার ফল 'এফএফ ফ্যাশন'। আমার দুই মেয়ের নামেই 'এফ' বর্ণ আছে; তাই এই নামকরণ। নিজস্ব নকশার শাড়ি, গজ কাপড়, ব্লাউজ; আরেকটা নতুন ট্রেন্ড হলো কাপল সেট। বিভিন্ন গানের কথা ও উৎসবভিত্তিক থিম শাড়িও আমরা করছি।"

উদ্যোক্তা জীবন নিয়ে এখন আর তাঁর তেমন কোনো হতাশা নেই। এখন নতুনের সন্ধানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। তাঁর থিমভিত্তিক শাড়িগুলো অনেক বিক্রি হচ্ছে। সাড়া ফেলেছে ক্রেতাদের মধ্যে। তিনি বলেন, 'ছোট মেয়ে এখনই বলে, বড় হলে উদ্যোক্তা হবে। এটা আমার কাছে এক বড় পাওয়া বলে
মনে করি।'

তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রশ্নে তিনি বলেন, 'আমি অনেক তরুণ উদ্যোক্তাকে চিনি, যাঁরা খুব পরিশ্রমী ও খুব ভালো কাজ করছেন। একটাই কথা- লেগে থাকতে হবে। সামনে এগিয়ে যেতে হবে। অনেকে অনেক কথা বলবে। তাতে পিছিয়ে পড়লে চলবে না।'

আরও পড়ুন

×