পূজা আসছে। ইতোমধ্যে পোশাক কেনাকাটা শুরু হয়ে গেছে। শাড়ির সঙ্গে ঠিক কেমন ব্লাউজ কিনবেন ভেবেছেন কি? হাফ হাতা, ফ্রিল হাতা, রেয়ারড ফ্লেয়ার হাতা, থ্রি কোয়ার্টার হাতা, রাফেল হাতার ব্লাউজ এখন চলছে। বাহারি ব্লাউজ নিয়ে লিখেছেন-ফারিয়া এজাজ

কাতান, খাদি, শিফন, সুতি, মসলিন কিংবা সিল্ক্ক! শাড়ি যেমনই হোক না কেন, যদি ব্লাউজের ডিজাইন হয় ট্রেন্ডি তাহলে লুকটাই বদলে যায়। এক রঙের শাড়িতে যেখানে পাড় কিংবা জমিনে কোনো ডিজাইন নেই, সেই শাড়ির সঙ্গে একেবারে ভিন্ন রকমের একটি ব্লাউজ পরেও গর্জিয়াস লুক পেতে পারেন। এখনকার ব্লাউজগুলোয় হাতা, গলার কাট, ডিজাইনে ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে। জারদৌসি, বিডস্‌, পুঁতি, চুমকি, লেইসসহ ভারী কাজের ব্লাউজগুলো পছন্দ করছেন সবাই। ট্রেন্ডে থাকা ব্লাউজগুলো সম্পর্কে ধারণা নিয়ে আপনিও পেতে পারেন স্টাইলিশ লুক।

পূজার লাল পাড়ের সাদা শাড়ির সঙ্গে লাল রঙের প্লেইন ব্লাউজ কিংবা হাতা ও গলায় ফ্রিল আছে এমন ব্লাউজ বেছে নিতে পারেন। বেছে নিতে পারেন রাবীন্দ্রিক, ম্যাগি হাতা, বেল স্লিভের ব্লাউজ। এ ছাড়াও অন্যান্য শাড়িতে পছন্দের স্টাইলের ব্লাউজটি বেছে নিতে পারেন।

হল্টার নেক ব্লাউজ :রাতের কোনো জাঁকজমকপূর্ণ পার্টিতে যাবেন- লুকটা কিন্তু সে রকমই হওয়া চাই। সিকুয়েন্স শাড়ির সঙ্গে চিকন পাড়ের প্লেইন বডি জর্জেট বা শিফন শাড়ি, ডলার বা চুমকির কাজের শাড়ির সঙ্গে হল্টার নেক ব্লাউজ খুব মানানসই। এই ব্লাউজ গর্জিয়াস লুক এনে দেবে। হল্টার নেক ব্লাউজের শুধু গলায় ভারী কাজ, যেমন- এমব্রয়ডারি, পার্ল, পুঁতি, চুমকি বা গ্লাস ওয়ার্ক রাখতে পারেন। আবার গলা থেকে শুরু করে কিছুটা নিচ পর্যন্ত ডিজাইন দিয়েও করতে পারেন। অনেকে আবার হল্টার নেক ব্লাউজের গলার নিচের অংশ থেকে বুকের অংশ পর্যন্ত নেট দিয়ে তার ওপর সুতা বা চুমকি বসানো ডিজাইনও করে থাকেন।


পিটার প্যান কলার ব্লাউজ :শাড়িতে ফ্যান্সি ও ট্র্যাডিশনাল লুকের একটা কম্বিনেশন চাইলে এই ধাঁচের ব্লাউজ পরতে পারেন। ব্লাউজের পুরো বডি প্রিন্টের আর এক রঙের কলারের ওপর ভারী সুতার কাজ, এমব্র্রয়ডারি কাজ বেশি লক্ষ্য করা যায়। এ ছাড়া ব্লাউজের পুরো বডি প্রিন্ট বা এক রঙের হয়ে কুশি কাটার কাজের কলারও দেখা যায় এই ধরনের ব্লাউজে। সুতি, টাঙ্গাইল, কোটা বা খাদি শাড়ির সঙ্গে এই ব্লাউজগুলো ভালো মানিয়ে যায়।

জ্যাকেট স্টাইল ব্লাউজ :বলিউড তারকারাই প্রথম এই ধরনের ব্লাউজের চল শুরু করেন। ওয়েস্টার্ন-ট্র্যাডিশনাল লুক চাইলে নিঃসন্দেহে বেছে নিতে পারেন এই ধরনের ব্লাউজ। জ্যাকেট স্টাইল ব্লাউজ কোমর বা হাঁটু পর্যন্তও পরতে পারেন। এই ব্লাউজগুলো নেট, ভেলভেট, কাতান, নকশিকাঁথা কাজ বা ভারী চুমকি কাজের হয়ে থাকে। পার্টি বা বাঙালিয়ানা যেকোনো সাজের সঙ্গে এই ধরনের ব্লাউজ পরতে পারেন।


কেইপ স্টাইল ব্লাউজ :এই ব্লাউজ পরতে হলে নিচে আরেকটি ব্লাউজ পরতে হয়। নিচে স্লিভলেস প্লেইন ব্লাউজ পরে ওপরে ভারী থেকে মাঝারি কাজের কেইপ ব্লাউজ পরে নিতে পারেন। নিচের স্লিভলেস প্লেইন ব্লাউজ এবং ওপরের কেইপ স্টাইল ব্লাউজ দুটি কন্ট্রাস্ট কালারের হলে বেশি ভালো লাগবে। কেইপ ব্লাউজগুলো সাধারণত গলা আর নিচে চারদিকে ভারী সুতা, চুমকি বা গ্লাসের কাজ হয়ে পুরো বডিতে ছিট ছিট মুক্তা, বিডস, চুমকি বা সুতার কাজ হয়ে থাকে। কেইপ স্টাইল ব্লাউজ নেট কাপড় দিয়ে করলেই ভালো। চিকন পাড়ের ভারী বা হালকা কাজের জর্জেট শাড়ির সঙ্গে কেইপ স্টাইল ব্লাউজ ভালো মানাবে।

বাটারফ্লাই স্লিভ ব্লাউজ :বর্তমানে কিশোরী, তরুণীদের পছন্দের তালিকায় বাটারফ্লাই স্লিভ ব্লাউজটি আছে। শাড়ির সঙ্গে এ ব্লাউজ মিষ্টি একটি লুক এনে দেয়। ব্লাউজের পুরো বডি প্লেইন হয়ে হাতের দিকে দুই, তিন লহরের ঝালর দিয়ে বানানো হয় বাটারফ্লাই স্লিভ ব্লাউজ। পুরোটা এক রঙের অথবা বডি এক রঙের আর হাতা প্রিন্টের- এসব স্টাইল দেখা যায় বাটারফ্লাই স্লিভ ব্লাউজে। এই স্টাইলের ব্লাউজে ভারী বা হালকা কোনো ধরনের কাজই দেখা যায় না বললেই চলে। হালকা কাজ বা প্রিন্টের জর্জেট বা শিফন শাড়ির সঙ্গে এ ব্লাউজ মানানসই দেখাবে।

ফুল স্লিভ ক্রু নেক ব্লাউজ :খাদি, তসর, সুতি এই কাপড়গুলো দিয়ে এ ধরনের ব্লাউজগুলো বানালে ভালো হয়। নেকের অংশে গোল করে ভারী কাজ আর ফুল হাতার একদম শুরুর দিকে গোল করে ভারী কাজ হলে এ ব্লাউজগুলোয় গর্জিয়াস লুক আসে। আবার একেবারেই কোনো কাজ ছাড়া এ ব্লাউজ প্লেইন ও সিম্পলও মন্দ লাগে না।

ম্যান্দারিন ব্লাউজ :ট্র্যাডিশনাল স্টাইলের সঙ্গে স্মার্টনেসের সংমিশ্রণের লুক চাইলে ম্যান্দারিন ব্লাউজ বেছে নিতে পারেন। ম্যান্দারিন ব্লাউজ সাধারণত একরঙা বা হালকা প্রিন্টের হলে ভালো হয়। ক্যাজুয়াল বা পার্টি- যে কোনো লুকের শাড়ির সঙ্গে খুব সুন্দর মানিয়ে যাবে ম্যান্দারিন ব্লাউজ। সামনের দিকে লম্বালম্বিভাবে অথবা গলার এক পাশ থেকে শুরু করে একদিকের হাতায় বাঁকা করে বোতাম চলে গেছে- এ দুই স্টাইলেই বানাতে পারেন ম্যান্দারিন ব্লাউজ। া

বিষয় : ব্লাউজ

মন্তব্য করুন