- ফিচার
- সুবিধাবঞ্চিতদের 'পজিটিভ স্কুল'
সুবিধাবঞ্চিতদের 'পজিটিভ স্কুল'

মানুষের পাশে পজিটিভ ঢাকার সংগঠকরা
১৪ বছরের শিশু ফাহিমা। পৈতৃক বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া হলেও বর্তমানে তার ঠিকানা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন। আজ থেকে প্রায় পাঁচ বছর আগে তার মা মারা যান। বাবা করেন দ্বিতীয় বিয়ে। নতুন মা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি ফাহিমাকে। তাই বকাঝকা, মারধর নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে যায় ফাহিমার। প্রতিদিনের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ছোট্ট ফাহিমা সিদ্ধান্ত নেয় বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার। সুযোগ বুঝে একদিন পালিয়ে আসে সে। ট্রেনে চেপে চলে আসে রাজধানীতে। সেই থেকে স্টেশনেই দিন কাটছে তার।
ফাহিমার মতো এমন অনেক শিশুই বেড়ে উঠছে পথে পথে। এমন সুবিধাবঞ্চিতদের পাশে দাঁড়িয়েছে মানবিক সংগঠন 'পজিটিভ ঢাকা'। প্রতিষ্ঠা করেছে 'পজিটিভ স্কুল'। রাজধানীর বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে ছিন্নমূল শিশুদের দেওয়া হয় প্রাথমিক ও নৈতিক শিক্ষা। শিশুদের চাহিদা ও পুষ্টির কথা ভেবে ব্যবস্থা করা হয় এক বেলার খাবারেরও। পজিটিভ স্কুলের কো-অর্ডিনেটর শাহিনা নদী বলেন, 'পজিটিভ স্কুল ভালোবাসা, নৈতিকতা ও সুশিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়ার একটি মানবিক প্ল্যাটফর্ম।'
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে যাত্রা শুরু করে মানবিক সংগঠন 'পজিটিভ ঢাকা'। তখন করোনার প্রভাবে পুরো দেশ স্থবির, রোগীরা প্রয়োজনীয় রক্তের জোগানটুকুও পাচ্ছেন না। সে সময় স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়মিত রক্তদান, রক্তদাতার ব্যবস্থা এবং রক্তদান নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে কাজ করতে থাকে 'পজিটিভ ঢাকা'। সংগঠনটি এ পর্যন্ত ২ হাজার ব্যাগেরও অধিক ডাটাবেজসহ ব্যবস্থা করেছে রক্তের।
এ সময় শতাধিক পরিবারকে দেওয়া হয়েছে 'পজিটিভ ঢাকা ফ্রি অক্সিজেন সেবা'। ১৫ সেপ্টেম্বর ছিল সংগঠনটির দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে পজিটিভ ঢাকার স্বেচ্ছাসেবীরা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে একটি আনন্দ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে থাকা ৫০ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে একবেলা খাবার বিতরণের পাশাপাশি আয়োজন করা হয় নানা রকম খেলার।
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা এমএম আরিফুল ইসলাম বলেন, 'পজিটিভ ঢাকা একটি সামাজিক ও মানবিক প্ল্যাটফর্ম। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, প্রত্যেক শ্রেণি-পেশার মানুষেরই নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশ, সমাজ ও অসহায় মানুষের জন্য ইতিবাচক অবদান রাখার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। এ লক্ষ্যেই কাজ করছে পজিটিভ ঢাকা।" া
মন্তব্য করুন