- ফিচার
- মায়াময় শহরে
মায়াময় শহরে

কভিড প্রাদুর্ভাবের কারণে প্রায় তিন বছর পর দেশের বাইরে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে প্রথমেই মাথায় এলো পণ্ডিচেরী তথা পদুচেরির নাম। চেন্নাইয়ের বাসিন্দা বন্ধুর সঙ্গে পরামর্শ করে একটি এয়ারলাইন্সের টিকিট কাটলাম। পরিকল্পনা ছিল, সকাল ১১টা ১০-এ ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে চেন্নাই এয়ারপোর্টে নামব। সেখান থেকে ট্যাক্সি ধরে সোজা আগে থেকে বুক করে রাখা পদুচেরির হোটেলে গিয়ে উঠব সন্ধ্যার আগেই। কিন্তু বন্ধুর জোরাজুরিতে তাঁর বাসায় সপরিবারে দুপুরে ভরপেট খেয়ে বিকেল ৫টায় চেন্নাই থেকে ইস্ট কোস্ট রোড হয়ে যাত্রা শুরু করলাম। শেষের দিকের কিছুটা ছাড়া প্রায় পুরোটা সময় বঙ্গোপসাগরের ওপর দিয়ে রাত ৮টার আগেই ১৫০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে হোটেল লে রয়েল পার্ক পদুচেরিতে চেক ইন করলাম।
ঢাকা থেকে পদুচেরির হোটেল পর্যন্ত প্রায় ১২ ঘণ্টা জার্নির পর ঘণ্টাদুয়েকের মধ্যে ফ্রেশ হয়ে একটা অটো নিয়ে সোজা বিচের দিকে রওনা দিলাম। প্রায় ৩০০ মিটার আগে থেকেই সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় হেঁটে যেতে হয়। অটোর ভাড়া মিটিয়ে আশপাশে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলাম। বাড়িঘরগুলো একদমই আমাদের এ অঞ্চলের মতো নয়; বরং চলচিত্র বা স্থিরচিত্রে দেখা ইউরোপীয় বিশেষত ফরাসি ঘরানার। রাত প্রায় ১১টায়ও বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অসংখ্য মানুষ শীতল হাওয়া আর প্রশস্ত রাস্তায় সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। প্রায় দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রাস্তার মাঝামাঝি ১৯৬৫ সালে স্থাপিত হয় ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর ১৩ ফুট লম্বা স্ট্যাচু- যা পদুচেরির রাষ্ট্রীয় সব অনুষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দু। এর পাশেই রয়েছে ঐতিহ্যবাহী লে ক্যাফে, যা দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। ১৭৯০ সালে নির্মিত এই ভবন প্রথমে পোস্ট অফিস, এরপর পোর্ট কাস্টমস অফিস ও ১৯৫২ সালে ক্যাফেতে রূপান্তরিত হয়। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ থাকায় বাইরে থেকে দেখে সন্তুষ্ট হয়ে রাস্তার অপর পাশে এক রেস্তোরাঁয় স্যুপ, কাটলেট আর পাস্তা খেয়ে আরও দুই চক্কর হেঁটে অটো নিয়ে প্রায় মাঝরাতে হোটেলে ফিরলাম। তবে ভরা পূর্ণিমায় এমন পরিবেশে সাগরের সৌন্দর্য খুব বেশি দেখার সুযোগ পাওয়া যায় না।
পরদিন ভোরবেলা গুগল ম্যাপের সাহায্য নিয়ে হেঁটে হেঁটে পৌঁছে গেলাম আবার সেই ফ্রেঞ্চ কোয়ার্টারে। ফটোগ্রাফারদের আকর্ষণের শীর্ষে রয়েছে এখানের ২০০ বছরের বেশি পুরোনো বাড়িগুলো। অনেক বাড়িতে আবাসিক হোটেল, হোম-স্টে বা রেস্তোরাঁ চালু আছে, কোনোটা অফিস বা কিছু কিছু সম্পূর্ণ আবাসিক ভবন হিসেবেও ব্যবহার হচ্ছে। একটা ভবনের রেলিং ও গেট এত সুন্দর যে রীতিমতো লাইন দিয়ে সেখানে ছবি তুলতে হচ্ছিল। ঘণ্টাখানেক ঘোরাঘুরি করে আবারও বিচে চলে এলাম। সকালে প্রাতঃভ্রমণরত স্থানীয় কিছু বাসিন্দা ছাড়া প্রায় জনমানবহীন এলাকা, তাই কিছুক্ষণ কাটিয়ে আবার হোটেলের ফিরতি পথ ধরলাম শেয়ার্ড অটোতে।
হোটেলে সপরিবারে সকালের খাবার শেষে সকাল ১০টার দিকে অটো নিয়ে প্যারাডাইস বিচের উদ্দেশে রওনা দিলাম। বলা হয়ে থাকে, ম্যানগ্রোভ বন, বালুকাময় কোস্টলাইন ও উত্তাল ঢেউয়ের অতুলনীয় এই বিচে না ঘুরে এলে পদুচেরি ভ্রমণ সম্পূর্ণ হয় না। শহর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরে এ বিচে সরাসরি গাড়ি বা জনপ্রিয় বিকল্প হিসেবে কিছুটা পথ গণপরিবহন ও বাকিটা লঞ্চ বা স্পিডবোটে যাওয়া যায়। ২০ মিনিটে চুন্নামবার বোট হাউস জেটিতে পৌঁছে ১ হাজার ৬২ রুপিতে তিনজনের জন্য ফিরতি টিকিট নিয়ে অপেক্ষমাণ লঞ্চে উঠে বসলাম। চারদিক খোলা ক্যাটামারান টাইপের জলযানে বসে চুন্নামবার নদীর দু'পাশের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে আধঘণ্টার মধ্যে প্যারাডাইস বিচের জেটিতে পৌঁছে গেলাম। ম্যানগ্রোভ বনের মাঝে মিনিট পাঁচেক হাঁটলেই সাগরের দেখা মিলবে। কোনো জনবসতি নেই; শুধুই বেড়াতে আসা মানুষ সমুদ্রস্নান, ঘোরাঘুরি, খাওয়া আর বিভিন্ন ওয়াটার স্পোর্টসে ব্যস্ত। আমরাও ঘুরে বেড়ানো ও ছবি তোলা শেষে সমুদ্রে নামলাম। দুই ঘণ্টা কাটিয়ে স্পিডবোট-অটোতে করে দুপুরের লেট লাঞ্চ করতে পদুচেরির বিখ্যাত প্রভিডেন্স মলে ঢুকলাম। কিছুক্ষণের মধ্যে চেন্নাইয়ে বসবাসরত বন্ধু সপরিবারে চলে আসায় একসঙ্গে লাঞ্চ সেরে আবার হোয়াইট টাউনে গেলাম। সেখানে ওয়ার মেমোরিয়াল থেকে ওল্ড পোর্ট জেটি পর্যন্ত বিচে হাঁটাহাঁটি, সমুদ্র দর্শন আর আইসক্রিম খেয়ে সন্ধ্যার পর হোটেলে ফিরে এলাম।
পরদিন আমাদের লিস্টে ছিল সেরেনিটি বিচ আর অরোভিল, যদিও নাশতার আগেই একবার আমি হোয়াইট টাউন চক্কর মেরে এসেছি। হোটেল থেকে অটোতে সেরেনিটি বিচ প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তা ২০ মিনিটেই চলে এলাম। ছোট্ট ছিমছাম কিন্তু পরিস্কার বিচ। আগে ফিশারমেন বিচ নামে পরিচিত পাথরের টি গ্রোয়েনের মধ্যে সাদা বালুর এই বিচ সার্ফিং ও স্নোরকেলিংয়ের জন্য বিখ্যাত। দুই ঘণ্টার মতো এখানে কাটিয়ে ১০ কিলোমিটার দূরের অরোভিলের উদ্দেশে রওনা দিলাম।
অরোভিলের বিশেষ আকর্ষণ মাতৃমন্দির, যা আসলে মেডিটেশনের জন্য বিশেষভাবে নির্মিত। একতার প্রতীক হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে নিজ নিজ দেশের মাটি সংগ্রহ করে চাকতির আকার দিয়ে এর বাইরের দেয়াল সাজানো হয়েছে। ৩৭ বছর ধরে সম্পন্ন হওয়া এই স্ট্রাকচার চারটি পিলারের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। সদস্য ছাড়া শুধু শনিবার সকালে কিছু দর্শনার্থী এর ভেতরে প্রবেশের সুযোগ পান, তবে রোববার বিকেল ছাড়া প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা সহজেই পাস নিয়ে বাইরে থেকে এটি দেখতে পারেন। অরোভিলের মূল প্রবেশপথ থেকে প্রায় ২০ মিনিট হেঁটে মাতৃমন্দিরে যেতে হয়। যদিও প্রবীণদের জন্য মিনিবাসের ব্যবস্থা আছে। এখানে প্রতিটি ভবন পরিবেশবান্ধব ও সৌরশক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে নির্মিত। নানা রকমের ফুল, ফল, ভেষজ ও ছায়াদানকারী বড় বড় গাছের প্রাকৃতিক পরিবেশে সুশৃঙ্খল অধিবাসী ও দর্শনার্থীদের সমাবেশ মনে দাগ কাটবেই।
সারাদিন ঘুরে ক্লান্ত হয়ে হোটেলে ফিরে রুমে রাতের খাবার আনিয়ে ঘুমালাম। পরদিন সকালে আবার হোয়াইট টাউন, বিচ ঘুরে শতবর্ষী বেকারি থেকে ক্রোসান্ট আর পেস্ট্রি কিনলাম। এরপর হোটেলে নাশতা করে গাড়ি ঠিক করে পরবর্তী গন্তব্যের উদ্দেশে পদুচেরি ছাড়লাম। মনে মনে ঠিক করলাম, সময়ের অভাবে কাভার করতে না পারা লেক, বোটানিক্যাল গার্ডেন, মিউজিয়াম, রোমান বণিকদের স্মৃতিবিজড়িত আরিকামেদু, স্কুবা ডাইভিং ও অনন্যা ওয়াটার স্পোর্টসের জন্য আবারও আসতে হবে এই মায়াময় শহরে।
ঢাকা থেকে পদুচেরির হোটেল পর্যন্ত প্রায় ১২ ঘণ্টা জার্নির পর ঘণ্টাদুয়েকের মধ্যে ফ্রেশ হয়ে একটা অটো নিয়ে সোজা বিচের দিকে রওনা দিলাম। প্রায় ৩০০ মিটার আগে থেকেই সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় হেঁটে যেতে হয়। অটোর ভাড়া মিটিয়ে আশপাশে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলাম। বাড়িঘরগুলো একদমই আমাদের এ অঞ্চলের মতো নয়; বরং চলচিত্র বা স্থিরচিত্রে দেখা ইউরোপীয় বিশেষত ফরাসি ঘরানার। রাত প্রায় ১১টায়ও বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অসংখ্য মানুষ শীতল হাওয়া আর প্রশস্ত রাস্তায় সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। প্রায় দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রাস্তার মাঝামাঝি ১৯৬৫ সালে স্থাপিত হয় ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর ১৩ ফুট লম্বা স্ট্যাচু- যা পদুচেরির রাষ্ট্রীয় সব অনুষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দু। এর পাশেই রয়েছে ঐতিহ্যবাহী লে ক্যাফে, যা দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। ১৭৯০ সালে নির্মিত এই ভবন প্রথমে পোস্ট অফিস, এরপর পোর্ট কাস্টমস অফিস ও ১৯৫২ সালে ক্যাফেতে রূপান্তরিত হয়। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ থাকায় বাইরে থেকে দেখে সন্তুষ্ট হয়ে রাস্তার অপর পাশে এক রেস্তোরাঁয় স্যুপ, কাটলেট আর পাস্তা খেয়ে আরও দুই চক্কর হেঁটে অটো নিয়ে প্রায় মাঝরাতে হোটেলে ফিরলাম। তবে ভরা পূর্ণিমায় এমন পরিবেশে সাগরের সৌন্দর্য খুব বেশি দেখার সুযোগ পাওয়া যায় না।
পরদিন ভোরবেলা গুগল ম্যাপের সাহায্য নিয়ে হেঁটে হেঁটে পৌঁছে গেলাম আবার সেই ফ্রেঞ্চ কোয়ার্টারে। ফটোগ্রাফারদের আকর্ষণের শীর্ষে রয়েছে এখানের ২০০ বছরের বেশি পুরোনো বাড়িগুলো। অনেক বাড়িতে আবাসিক হোটেল, হোম-স্টে বা রেস্তোরাঁ চালু আছে, কোনোটা অফিস বা কিছু কিছু সম্পূর্ণ আবাসিক ভবন হিসেবেও ব্যবহার হচ্ছে। একটা ভবনের রেলিং ও গেট এত সুন্দর যে রীতিমতো লাইন দিয়ে সেখানে ছবি তুলতে হচ্ছিল। ঘণ্টাখানেক ঘোরাঘুরি করে আবারও বিচে চলে এলাম। সকালে প্রাতঃভ্রমণরত স্থানীয় কিছু বাসিন্দা ছাড়া প্রায় জনমানবহীন এলাকা, তাই কিছুক্ষণ কাটিয়ে আবার হোটেলের ফিরতি পথ ধরলাম শেয়ার্ড অটোতে।
হোটেলে সপরিবারে সকালের খাবার শেষে সকাল ১০টার দিকে অটো নিয়ে প্যারাডাইস বিচের উদ্দেশে রওনা দিলাম। বলা হয়ে থাকে, ম্যানগ্রোভ বন, বালুকাময় কোস্টলাইন ও উত্তাল ঢেউয়ের অতুলনীয় এই বিচে না ঘুরে এলে পদুচেরি ভ্রমণ সম্পূর্ণ হয় না। শহর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরে এ বিচে সরাসরি গাড়ি বা জনপ্রিয় বিকল্প হিসেবে কিছুটা পথ গণপরিবহন ও বাকিটা লঞ্চ বা স্পিডবোটে যাওয়া যায়। ২০ মিনিটে চুন্নামবার বোট হাউস জেটিতে পৌঁছে ১ হাজার ৬২ রুপিতে তিনজনের জন্য ফিরতি টিকিট নিয়ে অপেক্ষমাণ লঞ্চে উঠে বসলাম। চারদিক খোলা ক্যাটামারান টাইপের জলযানে বসে চুন্নামবার নদীর দু'পাশের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে আধঘণ্টার মধ্যে প্যারাডাইস বিচের জেটিতে পৌঁছে গেলাম। ম্যানগ্রোভ বনের মাঝে মিনিট পাঁচেক হাঁটলেই সাগরের দেখা মিলবে। কোনো জনবসতি নেই; শুধুই বেড়াতে আসা মানুষ সমুদ্রস্নান, ঘোরাঘুরি, খাওয়া আর বিভিন্ন ওয়াটার স্পোর্টসে ব্যস্ত। আমরাও ঘুরে বেড়ানো ও ছবি তোলা শেষে সমুদ্রে নামলাম। দুই ঘণ্টা কাটিয়ে স্পিডবোট-অটোতে করে দুপুরের লেট লাঞ্চ করতে পদুচেরির বিখ্যাত প্রভিডেন্স মলে ঢুকলাম। কিছুক্ষণের মধ্যে চেন্নাইয়ে বসবাসরত বন্ধু সপরিবারে চলে আসায় একসঙ্গে লাঞ্চ সেরে আবার হোয়াইট টাউনে গেলাম। সেখানে ওয়ার মেমোরিয়াল থেকে ওল্ড পোর্ট জেটি পর্যন্ত বিচে হাঁটাহাঁটি, সমুদ্র দর্শন আর আইসক্রিম খেয়ে সন্ধ্যার পর হোটেলে ফিরে এলাম।
পরদিন আমাদের লিস্টে ছিল সেরেনিটি বিচ আর অরোভিল, যদিও নাশতার আগেই একবার আমি হোয়াইট টাউন চক্কর মেরে এসেছি। হোটেল থেকে অটোতে সেরেনিটি বিচ প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তা ২০ মিনিটেই চলে এলাম। ছোট্ট ছিমছাম কিন্তু পরিস্কার বিচ। আগে ফিশারমেন বিচ নামে পরিচিত পাথরের টি গ্রোয়েনের মধ্যে সাদা বালুর এই বিচ সার্ফিং ও স্নোরকেলিংয়ের জন্য বিখ্যাত। দুই ঘণ্টার মতো এখানে কাটিয়ে ১০ কিলোমিটার দূরের অরোভিলের উদ্দেশে রওনা দিলাম।
অরোভিলের বিশেষ আকর্ষণ মাতৃমন্দির, যা আসলে মেডিটেশনের জন্য বিশেষভাবে নির্মিত। একতার প্রতীক হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে নিজ নিজ দেশের মাটি সংগ্রহ করে চাকতির আকার দিয়ে এর বাইরের দেয়াল সাজানো হয়েছে। ৩৭ বছর ধরে সম্পন্ন হওয়া এই স্ট্রাকচার চারটি পিলারের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। সদস্য ছাড়া শুধু শনিবার সকালে কিছু দর্শনার্থী এর ভেতরে প্রবেশের সুযোগ পান, তবে রোববার বিকেল ছাড়া প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা সহজেই পাস নিয়ে বাইরে থেকে এটি দেখতে পারেন। অরোভিলের মূল প্রবেশপথ থেকে প্রায় ২০ মিনিট হেঁটে মাতৃমন্দিরে যেতে হয়। যদিও প্রবীণদের জন্য মিনিবাসের ব্যবস্থা আছে। এখানে প্রতিটি ভবন পরিবেশবান্ধব ও সৌরশক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে নির্মিত। নানা রকমের ফুল, ফল, ভেষজ ও ছায়াদানকারী বড় বড় গাছের প্রাকৃতিক পরিবেশে সুশৃঙ্খল অধিবাসী ও দর্শনার্থীদের সমাবেশ মনে দাগ কাটবেই।
সারাদিন ঘুরে ক্লান্ত হয়ে হোটেলে ফিরে রুমে রাতের খাবার আনিয়ে ঘুমালাম। পরদিন সকালে আবার হোয়াইট টাউন, বিচ ঘুরে শতবর্ষী বেকারি থেকে ক্রোসান্ট আর পেস্ট্রি কিনলাম। এরপর হোটেলে নাশতা করে গাড়ি ঠিক করে পরবর্তী গন্তব্যের উদ্দেশে পদুচেরি ছাড়লাম। মনে মনে ঠিক করলাম, সময়ের অভাবে কাভার করতে না পারা লেক, বোটানিক্যাল গার্ডেন, মিউজিয়াম, রোমান বণিকদের স্মৃতিবিজড়িত আরিকামেদু, স্কুবা ডাইভিং ও অনন্যা ওয়াটার স্পোর্টসের জন্য আবারও আসতে হবে এই মায়াময় শহরে।
মন্তব্য করুন