- ফিচার
- বিশ্বাস রাখুন নিজের সক্ষমতায়
বিশ্বাস রাখুন নিজের সক্ষমতায়
![এলেন ডিজেনারিস [২৬ জানুয়ারি ১৯৫৮, যুক্তরাষ্ট্র] ৩ ছবি :অনলাইন](https://samakal.com/uploads/2022/10/online/photos/Untitled-1-samakal-635d587dc9395.gif)
এলেন ডিজেনারিস [২৬ জানুয়ারি ১৯৫৮, যুক্তরাষ্ট্র] ৩ ছবি :অনলাইন
এলেন ডিজেনারিস। আমেরিকান কমেডিয়ান, টিভি উপস্থাপক, অভিনেত্রী, লেখক ও প্রযোজক। আলোচিত এই কমেডিয়ানের অনুপ্রেরণামূলক বক্তৃতার নির্বাচিত অংশ অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ
অনেকের মতো আমিও বেশ কষ্টের মাঝেই গ্র্যাজুয়েশন করেছিলাম। এরপর শুরু নতুন যুদ্ধ! সাফল্য পেতে বারবার নানা দরজায় কড়া নেড়েছি। বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে অনেক সময় ব্যয় হয়েছে। মনে পড়ে, আমার মা নিউকম্ব শহরে কাজ করতেন এবং আমি তার পার্স থেকে প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু সরিয়ে রাখতাম! এই যে আজ আমি এখানে; এর পেছনে সেই সরিয়ে রাখার কোনো ভূমিকা নেই। কেবলই মানুষের কারণেই এসেছি। কারণ, আমি অনমনীয়তার বাইরে কোনো কিছু চিন্তা করতে পারি না।
সাহসী হয়ে ওঠা
আমি বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে আরও সাহসী হয়ে উঠি। আমি নিউ অরলিন্সকে ভালোবাসি। আমি এখানে জন্মেছি এবং বেড়ে উঠেছি। এখানে আপনাদের মতো আমার গঠনমূলক বছরগুলো কেটেছে। যখন এখানে বাস করতাম, আমি মাত্র ছয়বার কাপড় ইস্ত্রি করেছিলাম!
স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে মাধ্যমিকে এসে সবকিছু হারিয়ে ফেলেছিলাম। তবু আমি সামনে এগিয়ে গিয়েছি। যে কোনোভাবে শেষ করেছিলাম উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠ। সত্যি বলতে, আমার কোনো লক্ষ্য ছিল না- কী করতে চাই। আমি সবকিছু করেছি। ঝিনুকের খোসা ছাড়িয়েছি। অতিথির সেবা করেছি। মদের দোকানে মদ পরিবেশন করেছি। হোটেলে খাবার পরিবেশন করেছি। ঘরে রং করেছি। মেঝে পরিস্কার করেছি। আমি কী করব- তা নিয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা ছিল না। ভাবতাম, কোনো এক কাজে শেষমেশ স্থির হতে পারব। বাড়ি ভাড়া দেওয়ার মতো যথেষ্ট টাকা উপার্জন করতাম এ কারণেই।
গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রিয় মানুষের মৃত্যু
১৯ বছর বয়সে আমার জীবনে একটি বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটে। আমার প্রিয় বান্ধবী গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যায়। তখন একটি অ্যাপার্টমেন্টের বেজমেন্টে থাকতাম আমি। আমার কাছে কোনো টাকা ছিল না। তাপমাত্রা কিংবা বাতাস ছিল না সেখানে। মেঝের ওপর একটি ম্যাট্রেস বিছানো ছিল; অ্যাপার্টমেন্টটি মাছিতে ভনভন করত। সে সময় নিজের আত্মাকে খুঁজতাম আমি! জানতে চাইতাম, কেন সে হঠাৎ চলে গেল এবং এখানে এত মাছি কেন? আমি এসবের কারণ বুঝতাম না। মনে হতো, যদি স্রষ্টাকে ফোন করতে পারতাম, যদি তার কাছে জিজ্ঞেস করতে পারতাম!
ইতিহাসের পথে...
আমি লেখা শুরু করলাম এবং স্রষ্টার সঙ্গে কাল্পনিক কথোপকথনগুলো মনভরে লিখতাম। সেটি একপক্ষীয় ছিল। তবু আমি এ লেখা শেষ করেছিলাম। আমি এ লেখাগুলোর দিকে তাকাই ও নিজেকে জিজ্ঞেস করি, 'আমি জানি কারসনের সঙ্গে টুনাইট শো করব।' সে সময় তিনি 'স্ট্যান্ডআপ টুনাইট শো'র সেরা ছিলেন। নিজেকে আরও বলেছিলাম, 'আমি এ শোয়ের ইতিহাসে প্রথম নারী হতে যাচ্ছি!' তার কয়েক বছর পর আমি এ শো উপস্থাপনকারী নারী হিসেবে ইতিহাস গড়ি।
পাল্টে যাওয়া সফলতার সংজ্ঞা
আজকের দিনে আমার কাছে সফলতার ধারণা ভিন্ন। আপনি যখন বড় হচ্ছেন দেখবেন, সফলতার সংজ্ঞা পাল্টে গেছে। আমার মতে, আপনার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সম্পূর্ণতা নিয়ে নিজের জীবনযাপন করা এবং যা আপনি নন, বন্ধুবান্ধবের চাপে তেমন কিছু না করা। একজন সৎ ও দয়ালু মানুষ হিসেবে আপনারা নিজের জীবন কাটান- এ আমি চাই। আর চেষ্টা করুন, ভালো কিছু করার। নিজের ভালো লাগাকে অনুসরণ করুন, নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন। যতক্ষণ পর্যন্ত না পথ না হারিয়ে ফেলবেন, অন্য কারও পথ অনুসারে চলা যাবে না। কাউকে উপদেশ দেবেন না। কারণ এটি ফিরে আসবে আপনার কাছেই; তখন হয়তো বেকুবের মতো লজ্জিত হবেন!
মন্তব্য করুন