- ফিচার
- রূপায়ণ গ্র্যান্ডে মিলবে বিশ্বমানের সুবিধা
রূপায়ণ গ্র্যান্ডে মিলবে বিশ্বমানের সুবিধা

বায়ুদূষণের কারণে বারবার আলোচনায় এসেছে ঢাকা শহর। জলবায়ু পরিবর্তনে দিন দিন বদলাচ্ছে প্রকৃতির গতি। মানুষের স্বার্থপরতা আর অসচেতনতার কারণেও যেন নিষ্ঠুর হয়ে উঠছে প্রকৃতি। এমন পরিস্থিতিতেও ইটের পর ইট গেঁথে শুধু দালানকোঠাই নির্মাণ হয়েছে ঢাকায়। তৈরি হয়নি মুক্ত আকাশের নিছে বুক ভরে নির্মল বাতাসে নিশ্বাস নেওয়ার সুব্যবস্থা। ফলে এ নগরে পরিকল্পিত ও পরিবেশবান্ধব আধুনিক আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা এখন স্বপ্নের মতো। তবে এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে দেশের অন্যতম আবাসন কোম্পানি রূপায়ণ গ্রুপ। ঢাকার উত্তরার সোনারগাঁও জনপথে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে দৈনন্দিন জীবনের সব ধরনের সুবিধা নিশ্চিত করে এক পরিকল্পিত আধুনিক শহর গড়ে তুলেছে প্রতিষ্ঠানটি। উত্তরার মাসকট প্লাজা থেকে রিকশায় ১০-১৫ মিনিট গেলেই দেখা মিলবে দেশের এই প্রথম সিটি ব্র্যান্ড 'রূপায়ণ সিটি উত্তরা'র।
সিটির মূল ফটকের নিরাপত্তাবেষ্টনী ডিঙিয়ে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে ১২০ ফুট ঝকঝকে প্রশস্ত সড়ক। এর দুই পাশে এবং মাঝের ডিভাইডারে লাগানো হয়েছে পাম, খেজুর, ফুলগাছসহ নানা প্রজাতির বাহারি গাছ। রয়েছে দৃষ্টিনন্দন সড়কবাতি। রাস্তার পাশে বিস্তৃত এলাকাজুড়ে বিছানো সবুজ ঘাস। ফুটপাতে গাছের নিচে পেতে রাখা হয়েছে বেঞ্চ। সেগুলোয় বসে নেওয়া যাবে হিমশীতল বাতাসের নিশ্বাস। অভূতপূর্ব এই সুন্দর পরিবেশে স্থাপিত হয়েছে একই আকার ও উচ্চতার সারি সারি আবাসিক ভবন। ভবনগুলোর সামনে-পেছনে রয়েছে খোলামেলা জায়গা, যাতে ভবনের প্রতিটি অ্যাপার্টমেন্ট বা কন্ডোর ভেতরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারে।
গতানুগতিক আবাসন ধারার বিপরীত স্রোতে বেড়ে ওঠা এই প্রকল্পে সুপারশপ, শপিংমল, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, খেলার মাঠ, দৃষ্টিনন্দন মসজিদ, শরীরচর্চার জায়গা, মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, কমিনিউটি ক্লাবসহ সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকছে। মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে পুরো প্রকল্পের প্রায় ৬৩ শতাংশ জায়গাই খোলামেলা রাখা হয়েছে। অর্থাৎ এই খালি জায়গায় কোনো স্থাপনা তৈরি হবে না। বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে সবুজ গাছগাছালি। প্রায় সাড়ে ছয় কিলোমিটার সড়ক থাকবে প্রকল্পটিতে। যেন বসবাসকারী নাগরিকরা সকাল-বিকেলে জগিং করতে পারেন। এ সিটিতে আছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রয়েছে বিদ্যুতের সাবস্টেশন।
বিশ্বমানের এ সিটিতে রয়েছে চারটি ফেজ বা পর্যায়। এসব ফেজে রয়েছে তিনটি আবাসিক ও একটি বাণিজ্যিক ভবন। আবাসিকের মধ্যে ম্যাজিস্টিক ও গ্র্যান্ড নামে দুটি প্রিমিয়াম মানের কন্ডোমিনিয়াম করা হচ্ছে। অন্যটি স্কাই ভিলা। এটি মূলত ডুপ্লেক্স বা দ্বিতল অ্যাপার্টমেন্ট। সব ক'টিতেই একটি বেজমেন্টসহ ৯তলা ভবন হবে। এর মধ্যে ম্যাজিস্টিক নির্মাণ হয়েছে। গ্র্যান্ড ও স্কাই ভিলার নির্মাণ শেষ পর্যায়ে। সব ভবন নির্মাণ শেষ হলে দেড় হাজার পরিবার থাকার সুব্যবস্থা হবে এই রূপায়ণ সিটিতে।
২০১৪ সালে বড় এই প্রকল্পের কাজ শুরু করে রূপায়ণ গ্রুপ। ইতোমধ্যে সেখানে নির্মিত প্রকল্প ম্যাজিস্টিকের ৩১৫টি কন্ডো ক্রেতাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। যেখানে তাঁরা এখন বসবাস করছেন। 'থিঙ্ক গ্র্যান্ড, লিভ গ্র্যান্ড' স্লোগান নিয়ে ক্রেতাদের জন্য আরও পরিকল্পিত, চমকপ্রদ এবং দেশের সবচেয়ে বড় কন্ডোমিনিয়াম প্রকল্প রূপায়ণ গ্র্যান্ডের ২৫টি ভবন নির্মাণ শেষের দিকে। এসব ভবনে রয়েছে মোট ৫৭৭টি কন্ডো। যেগুলোর আয়তন হবে ২১০০ থেকে ৩১৫০ বর্গফুট। কয়েকটি ভবনের ভেতরের কাজও সম্পন্ন হয়েছে। এখন চলছে ভবনের আশপাশের সড়ক নির্মাণের কাজ। ভূমিকম্প হলে এসব ভবন সাধারণ ভবনের চেয়ে অনেক বেশি চাপ নিতে পারবে। অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনা ঘটলে ভবনের চারপাশ থেকে ফায়ার ফাইটাররা যাতে কাজ করতে পারেন, সে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
মূলত 'ব্রেক দ্য স্কয়ার ফুট স্টোরি' অর্থাৎ গৎবাঁধা সীমিত পরিসরের ফ্ল্যাট থেকে বড় পরিসরে মানুষের বসবাস করার চিন্তা থেকেই এ প্রিমিয়াম মেগা গেটেড সিটি নির্মাণ করা হয়। ১৫০ বিঘার সিটির ৬৩ শতাংশ জায়গাই খোলামেলা রাখা হয়েছে। সব বাসিন্দার জন্য একটি কমিউনিটি ক্লাব ভবন করা হয়েছে। রূপায়ণ গ্র্যান্ডের বেজমেন্টে রয়েছে আধুনিক সুইমিংপুল। অতিথিদের রাত্রিযাপনের জন্য রয়েছে আবাসন, ব্যায়ামাগার ও ইনডোর গেমস।
বর্তমান যান্ত্রিক জীবনে বেশিরভাগ পরিবারেই ছেলেমেয়ে হয় দেশের বাইরে অথবা যার যার মতো করে জীবন দৌড়ে ব্যস্ত। ফলে বৃদ্ধ মা-বাবা কিংবা নিজের ছেলেমেয়ের সঙ্গে বসে গল্প করা, কথা বলা, খোলা জায়গায় গিয়ে নিজেদের মতো করে সময় কাটানো হয়ে ওঠে না। এ সিটিতে সেই সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে। নিজের বাসা থেকে বের হয়ে বাবা-মায়েরা যখন তখন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন। ছেলেমেয়েরা মন খুলে ছোটাছুটি করতে পারবে। পাশাপাশি শিশুদের সৃজনশীল ও উদ্যমী হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে। সন্ধ্যা নামলেই এখানে সড়কদ্বীপ, ফুটপাত ও চৌরাস্তার মাঝের ফোয়ারায় হরেক রকমের বাতি জ্বলে ওঠে। আলোয় ঝলমল করে ওঠে পুরো সিটি।
রূপায়ণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এম মাহবুবুর রহমান সমকালকে বলেন, এটি এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে, এখানে বসবাসকারীদের কোনো কিছুর জন্য সিটির বাইরে যেতে হবে না। দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজন হয়, এমন সবকিছুর সুব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ঢাকা শহর কোলাহলপূর্ণ হলেও বাসাবাড়িতে থাকা অনেকে একাকিত্ব অনুভব করেন। বয়োবৃদ্ধদের অনেকেই মানসিক বিষাদগ্রস্ত হন। কিন্তু রূপায়ণ সিটিতে এ অবস্থা থেকে মুক্ত থাকার পরিবেশ থাকবে। এখানে কমিউনিটি লিভিং হবে। তিনি বলেন, মানুষের জীবন-জীবিকার মান উন্নয়নের চিন্তাভাবনা থেকেই পরিকল্পিত সবুজ শহর করা হয়েছে। এখানে ফ্ল্যাট কেনা মানে শহর কেনা। ফলে শুধু দেশের বাসিন্দা নন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা এ সিটিতে কন্ডো বুকিং দিচ্ছেন।
মাহবুবুর রহমান বলেন, আবাসন খাতে সবসময় নতুন কিছু করার চেষ্টা করে রূপায়ণ। কোম্পানির নিয়ম মেনে রূপায়ণ সিটিতে যে কেউ কন্ডো বা দোকান নিয়ে ভাড়া দিতে পারবেন। চাইলে যে কোনো সময় বিক্রিও করে দিতে পারবেন।
মন্তব্য করুন