- ফিচার
- 'মানুষের চিন্তা বদলে যাচ্ছে'
'মানুষের চিন্তা বদলে যাচ্ছে'

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শহিদুল ইসলাম জীবনের তাগিদে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পেশায় যুক্ত হয়েছেন। জীবনের চাকায় ঘুরতে ঘুরতে এক পর্যায়ে ঢাকার ভাটারায় গড়ে তোলেন 'এমএ পাস চাওয়ালা'। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন ফরিদুল ইসলাম নির্জন
এ ব্যবসায় এলেন কীভাবে?
আমার গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। সেখানেই শৈশব-কৈশোর কেটেছে। সেখান থেকে আমি এইচএসসি পাস শেষে ঢাকায় আসি। ২০১৩ সালে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স শেষ করি। তারপর একটি কলেজে প্রভাষক হিসেবে চাকরি শুরু করি। করোনার কারণে সেখানে আমার চাকরি চলে যায়। তারপর একটি অনলাইনে কাজ করি। সেখানে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হই। অনেক টাকা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় হতাশায় ভুগতে থাকি। একসময় আত্মহত্যার কথাও মাথায় আসে। ভাবলাম আত্মহত্যা করলেই তো সব সমাধান হয় না; বরং পরিবারকে আরও বিপদে ফেলা হবে। অনেক ভেবে প্রথমে চিন্তা করলাম অটোরিকশা কিনব। আবার ভাবলাম অটোরিকশা চালানো তো বেআইনি। পুলিশ ধরে নিয়ে গিলে পুরো পুঁজি চলে যাবে। পরে ভাবলাম দেশে তো পানির পর চায়ের অবস্থান। সেই ব্যবসা শুরু করলে মন্দ হয় না। তারপর চায়ের দোকান দেওয়ার জন্য মনস্থির করি।
দোকানের নাম 'এমএ পাস চাওয়ালা' কেন?
চায়ের দোকানের নাম দেওয়া নিয়ে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। কী নাম দেব ভাবতে থাকি। যেহেতু আমি এমএ পাস, একটি চায়ের দোকান দেব- এটি নিয়ে ইগো কাজ করে। তারপর ভাবি, প্রথমে আমাকে ইগোর চিন্তা বাদ দিতে হবে। যা-ই কাজ করি না কেন, সেটিকে ছোট ভাবা যাবে না। প্রথম দিকে 'এমএ চাওয়ালা' নাম ঠিক করি। কয়েকজনের সঙ্গে পরামর্শ করলে তাঁরা বলেন, এটি 'মা চাওয়ালা' বোঝায়। পরে একটু ব্যতিক্রম আনতে নামকরণ করি 'এমএ পাস চাওয়ালা'। ডেকোরেশন আমি নিজেই করেছি। একজন আমার এখানে চা পান করতে আসবেন। তিনি যেন দেখেই বোঝেন এটি সাধারণ চায়ের দোকান নয়। সে জন্য দামি ফুলদানিতে ফুল, লাইটিং, ফ্যান, এসিসহ নান্দনিক কারুকাজে চায়ের দোকান সাজাই।
পরিবারের সহযোগিতা কতটা পেয়েছেন?
আমি দুই সন্তানের বাবা। পরিবারে প্রথমে বিষয়টি মানতে রাজি হয়নি। আমার এক ভাইয়ের সঙ্গে পরামর্শ করলাম। তিনি বললেন, চায়ের দোকান নাম না দিয়ে যেন ক্যাফেটেরিয়া জাতীয় কিছু দিই। তিনিও বিষয়টি নিয়ে প্রথমে একটু হাসাহাসি করেন। পরে আমার আত্মবিশ্বাস দেখে সম্মতি দেন। তবে আমার স্ত্রী প্রথম থেকে বেশি সাপোর্ট দিয়েছেন। তাঁর উৎসাহ আমাকে কাজের পথ সহজ করে দেয়। আমার স্ত্রী বলেন, পরিবারকে অর্থ জোগান দিতে হবে। সে জন্য কোনো কাজকে ছোট মনে করা উচিত নয়।
সামাজিক প্রতিবন্ধকতা কেমন ছিল?
সামাজিকভাবে কারও কারও কাছে হাসির খোরাক হই। অনেকেই আমাকে এসে বলেন, আমি নাকি এমএ পাস করাদের অসম্মান করেছি। ব্যাপারটি এমন- এমএ পাস করে চায়ের দোকান দেওয়া যাবে না। কেউ কেউ ঠাট্টা করে বলেছেন- 'এমএ পাস ঝাড়ূওয়ালা' হব। তবে এর সংখ্যা খুব কম। এখন মানুষের চিন্তা বদলে যাচ্ছে। বেশিরভাগ পছন্দ করতে শুরু করেছে। সমাজে না খেয়ে থাকলে কেউ দেখে না, কিন্তু সমস্যা সৃষ্টি বা অবহেলা করতে পারে সবাই।
দোকানে কোন ধরনের চা পাওয়া যায়?
আপাতত ৯ ধরনের চা আছে। ইরানি মালাই চা, ইন্ডিয়ান মালাই চা, পাকিস্তানি মালাই চাসহ ৯ ধরনের চা পাওয়া যায়। সর্বনিম্ন ৩০ টাকা থেকে এই মালাই চা শুরু। বেলা ১১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত খোলা থাকে। া
এ ব্যবসায় এলেন কীভাবে?
আমার গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। সেখানেই শৈশব-কৈশোর কেটেছে। সেখান থেকে আমি এইচএসসি পাস শেষে ঢাকায় আসি। ২০১৩ সালে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স শেষ করি। তারপর একটি কলেজে প্রভাষক হিসেবে চাকরি শুরু করি। করোনার কারণে সেখানে আমার চাকরি চলে যায়। তারপর একটি অনলাইনে কাজ করি। সেখানে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হই। অনেক টাকা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় হতাশায় ভুগতে থাকি। একসময় আত্মহত্যার কথাও মাথায় আসে। ভাবলাম আত্মহত্যা করলেই তো সব সমাধান হয় না; বরং পরিবারকে আরও বিপদে ফেলা হবে। অনেক ভেবে প্রথমে চিন্তা করলাম অটোরিকশা কিনব। আবার ভাবলাম অটোরিকশা চালানো তো বেআইনি। পুলিশ ধরে নিয়ে গিলে পুরো পুঁজি চলে যাবে। পরে ভাবলাম দেশে তো পানির পর চায়ের অবস্থান। সেই ব্যবসা শুরু করলে মন্দ হয় না। তারপর চায়ের দোকান দেওয়ার জন্য মনস্থির করি।
দোকানের নাম 'এমএ পাস চাওয়ালা' কেন?
চায়ের দোকানের নাম দেওয়া নিয়ে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। কী নাম দেব ভাবতে থাকি। যেহেতু আমি এমএ পাস, একটি চায়ের দোকান দেব- এটি নিয়ে ইগো কাজ করে। তারপর ভাবি, প্রথমে আমাকে ইগোর চিন্তা বাদ দিতে হবে। যা-ই কাজ করি না কেন, সেটিকে ছোট ভাবা যাবে না। প্রথম দিকে 'এমএ চাওয়ালা' নাম ঠিক করি। কয়েকজনের সঙ্গে পরামর্শ করলে তাঁরা বলেন, এটি 'মা চাওয়ালা' বোঝায়। পরে একটু ব্যতিক্রম আনতে নামকরণ করি 'এমএ পাস চাওয়ালা'। ডেকোরেশন আমি নিজেই করেছি। একজন আমার এখানে চা পান করতে আসবেন। তিনি যেন দেখেই বোঝেন এটি সাধারণ চায়ের দোকান নয়। সে জন্য দামি ফুলদানিতে ফুল, লাইটিং, ফ্যান, এসিসহ নান্দনিক কারুকাজে চায়ের দোকান সাজাই।
পরিবারের সহযোগিতা কতটা পেয়েছেন?
আমি দুই সন্তানের বাবা। পরিবারে প্রথমে বিষয়টি মানতে রাজি হয়নি। আমার এক ভাইয়ের সঙ্গে পরামর্শ করলাম। তিনি বললেন, চায়ের দোকান নাম না দিয়ে যেন ক্যাফেটেরিয়া জাতীয় কিছু দিই। তিনিও বিষয়টি নিয়ে প্রথমে একটু হাসাহাসি করেন। পরে আমার আত্মবিশ্বাস দেখে সম্মতি দেন। তবে আমার স্ত্রী প্রথম থেকে বেশি সাপোর্ট দিয়েছেন। তাঁর উৎসাহ আমাকে কাজের পথ সহজ করে দেয়। আমার স্ত্রী বলেন, পরিবারকে অর্থ জোগান দিতে হবে। সে জন্য কোনো কাজকে ছোট মনে করা উচিত নয়।
সামাজিক প্রতিবন্ধকতা কেমন ছিল?
সামাজিকভাবে কারও কারও কাছে হাসির খোরাক হই। অনেকেই আমাকে এসে বলেন, আমি নাকি এমএ পাস করাদের অসম্মান করেছি। ব্যাপারটি এমন- এমএ পাস করে চায়ের দোকান দেওয়া যাবে না। কেউ কেউ ঠাট্টা করে বলেছেন- 'এমএ পাস ঝাড়ূওয়ালা' হব। তবে এর সংখ্যা খুব কম। এখন মানুষের চিন্তা বদলে যাচ্ছে। বেশিরভাগ পছন্দ করতে শুরু করেছে। সমাজে না খেয়ে থাকলে কেউ দেখে না, কিন্তু সমস্যা সৃষ্টি বা অবহেলা করতে পারে সবাই।
দোকানে কোন ধরনের চা পাওয়া যায়?
আপাতত ৯ ধরনের চা আছে। ইরানি মালাই চা, ইন্ডিয়ান মালাই চা, পাকিস্তানি মালাই চাসহ ৯ ধরনের চা পাওয়া যায়। সর্বনিম্ন ৩০ টাকা থেকে এই মালাই চা শুরু। বেলা ১১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত খোলা থাকে। া
মন্তব্য করুন