উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরই প্রথম পছন্দ যুক্তরাষ্ট্র। সঠিক প্রোগ্রাম নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সে জন্য আগ্রহী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের সেবা দিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান এডুকেশন-ইউএসএ। পরামর্শ কেন্দ্রের গ্রন্থাগারে রয়েছে অনেক বইপত্র ও বিনামূল্যে ওয়াইফাই সুবিধা। সঙ্গে থাকছে কম্পিউটার, যা আপনাকে খুব সহজেই পছন্দের প্রতিষ্ঠান খুঁজে বের করা এবং আবেদন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করবে।

সেন্টারের সাপ্তাহিক কার্যক্রমগুলো অনেক উপকারী ও মনোগ্রাহী হয়ে থাকে। যেখানে আবেদন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা, কলেজ অনুসন্ধানে সহায়তার জন্য তাদের দেওয়া বিভিন্ন তথ্য কাজে লাগানোর সুযোগ আছে। কীভাবে নিজের অভিপ্রায়ে একটি উপযুক্ত বক্তব্য লিখতে হয়, তার শেখানোর পাশাপাশি জিআরই এবং টোফেলের মতো মানসম্মত পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করার জন্য এডুকেশন-ইউএসএ নির্দেশিকা দেয়। একটি সঠিক বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজে বের করার জন্য সব ধরনের সাহায্য করে থাকে এডুকেশন-ইউএসএ। আপনাকে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চশিক্ষা ভর্তি প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে পরামর্শ দেবে এডুকেশন-ইউএসএর দুর্দান্ত পাঁচ ধাপের মডেল। আবেদন করার জন্য সঠিক প্রতিষ্ঠানগুলো চিহ্নিত করা, আর্থিক সহায়তার সুযোগ এবং সফলভাবে ভিসা আবেদন জমা দেওয়া নিয়ে দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকে। এডুকেশন-ইউএসএর বিনামূল্যে একক এবং গ্রুপভিত্তিক পরামর্শমূলক সেবাগুলোর ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে। বর্তমানে একজন এডুকেশন-ইউএসএ অ্যাডভাইজরের মাধ্যমে ভার্চুয়াল পরামর্শ সহায়তা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভার্চুয়াল মেলার মাধ্যমে গাইডলাইন

মেলায় ভর্তি কর্তৃপক্ষ, এডুকেশন-ইউএসএ উপদেষ্টা ও যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের কনস্যুলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে চ্যাটের সুযোগ থাকে। পাশাপাশি কলেজ বোর্ড বা ইটিএসের মতো পরীক্ষা গ্রহণকারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ থাকে। সেন্টার কর্তৃক বিনামূল্যে একটি ভার্চুয়াল কলেজ মেলার আয়োজন করা হয়। যেখানে ভার্চুয়াল বুথের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা সরাসরি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকেন। তাঁরা আপনাকে সঠিক ও প্রাসঙ্গিক তথ্য দিয়ে সহায়তা দেবেন ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার।

দি আর্চার কে ব্লাড আমেরিকান সেন্টার লাইব্রেরি সদস্য ও সুবিধা

১৩ বছর ও তদূর্ধ্ব ব্যক্তি ২ বছরের জন্য ৮০০ টাকা ফি দিয়ে সদস্য হওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে ফি অবশ্যই নগদে পরিশোধ করতে হবে। সদস্য হওয়ার জন্য রয়েছে অনেক সুবিধা। সদস্যের যে কেউ বই নিয়ে যেতে পারবে পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহার করার সুযোগ আগে। তা ছাড়া আমেরিকা সেন্টারের বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়, যেগুলো আগাম নিবন্ধন নেওয়া যায়। লাইব্রেরিতে সবার সাধারণ আগ্রহের বিষয়গুলো নিয়েই বইয়ের ভালো সংগ্রহ আছে। তবে এ সংগ্রহ গড়ে উঠেছে মূলত পাঁচটি বিষয়কে কেন্দ্র করে- যুক্তরাষ্ট্রবিষয়ক অধ্যয়ন, আমেরিকান গল্প-উপন্যাস, ইংলিশ অ্যাজ এ সেকেন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ, কম্পিউটার এবং ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা। একটি বড় ভিডিও সংগ্রহও আছে, যাতে রয়েছে অনেক চলচ্চিত্র ও প্রামাণ্য চিত্র। আছে ভাষাবিষয়ক অডিও টেপ ও নানা বিষয়ের সিডিরম। ৫০টির বেশি পত্রপত্রিকা ও বেশ কয়েকটি সংবাদপত্র পাওয়া যাবে এখানে।

ওয়ারা করিম, সেইন্ট ক্লাউড স্টেট ইউনিভার্সিটি মিনেসোটা থেকে মাস্টার্স পাস করা সেরা ছাত্রীর অন্যতম। তিনি বলেন, 'আমেরিকার অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তারা খুঁজছে মেধা। আপনি যদি মেধাবী হন ও কঠোর পরিশ্রম করতে রাজি থাকেন, তাহলে সবচেয়ে ভালো জায়গা আমেরিকা। মেয়েদের চলাচলে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। আমাদের দেশের আমেরিকা সেন্টার আপনাকে অনেক সহযোগিতা করবে। লাইব্রেরি আছে, পরামর্শের জন্য উপদেষ্টা আছেন। যাঁরা সঠিকভাবে গাইডলাইন করেন।'

স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস সোমা বলেন, 'যাঁরা বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য স্বপ্ন দেখেন, তাঁদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ভালো একটা অপশন। কারণ এখানে ইউনিভার্সিটির সংখ্যা অনেক এবং সেসঙ্গে রয়েছে প্রচুর সুযোগ। আগে আমাদের বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বড় একটা ক্যারিয়ার ছিল, বাধ্যতামূলক জিআরই স্কোর তোলা। কিন্তু এখন বেশিরভাগ ইউনিভার্সিটিতে জিআরই আর চাওয়া হয় না। কাজেই শুধু আইইএলটিএস/টোফেল এবং রিসার্চ এক্সপেরিয়েন্স দিয়েই আবেদন করা যায়। এখানে পিএইচডি একেবারে ফুল ফান্ডেড হয়ে থাকে; তার সঙ্গে সঙ্গে লার্নিং এনভায়রনমেন্টও খুব সুন্দর। যাঁরা সত্যিকারের রিসার্চার হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তাঁদের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকেই বেছে নেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। আমেরিকা সেন্টারে আবেদন করার শুরু থেকে এপ্লিকেশন প্রসেসের শেষ পর্যন্ত সব স্টেপসহ যাবতীয় পরামর্শ একজন শিক্ষার্থী বিনামূল্যে পেয়ে থাকেন। সেখানে ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাবের ব্যবস্থা রয়েছে। বিনামূল্যে ছাত্রছাত্রীরা ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ, পাবলিক স্পিকিং গ্রুপ ডিসকাশনের মাধ্যমে প্র্যাকটিস করার সুযোগও পেয়ে থাকেন। এর সঙ্গে ইংলিশ রাইটিং স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য রাইটিং ক্লাবেরও ব্যবস্থা রয়েছে। তারপরও কীভাবে এত ইউনিভার্সিটির মধ্য থেকে নিজের ব্যাকগ্রাউন্ডের ইউনিভার্সিটি সার্চ করতে হবে- স্টেটমেন্ট অব পারপাস কীভাবে লেখা শুরু করা যেতে পারে, সেগুলো নিয়ে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা বা সেমিনার হয়ে থাকে। এমনকি কারও যদি এসব নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা করার থাকে সেটারও ব্যবস্থা রয়েছে।'

আমেরিকায় পড়াশোনা-সংক্রান্ত অনেক ধরনের তথ্য পেতে পারেন নিচের ওয়েবসাইটে- https://bd.usembassy.gov/bn/education-culture-bn/study-usa-bn/