শহীদুল্লা কায়সার ১৯২৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের মাজুপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ হওয়া জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের একজন। ১৯৪২ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর ভর্তি হন প্রেসিডেন্সি কলেজে। ১৯৪৬ সালে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে সম্মানসহ স্নাতক হন। অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর পড়ার জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও সেখানে তিনি পাঠগ্রহণ শেষ করেননি। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হন। একই বছর তিনি পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ঢাবি থেকে ডিগ্রি লাভ করার আগেই লেখাপড়ার সমাপ্তি ঘটান তিনি।
১৯৪৯ সালে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী পরিচালিত সাপ্তাহিক ইত্তেফাক পত্রিকায় যোগ দেন। দুটি ছদ্মনাম ছিল তাঁর- 'দেশপ্রেমিক' ও 'বিশ্বকর্মা'। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে ভূমিকার কারণে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁকে সাড়ে তিন বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ১৯৫৫ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পরপরই ফের গ্রেপ্তার হন। কয়েক বছর পর মুক্তি পান। ১৯৫৮ সালে দৈনিক সংবাদ-এর সম্পাদকীয় বিভাগে সহকারী সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন। একই বছর ৭ অক্টোবর জেনারেল আইয়ুব খান কর্তৃক সামরিক আইন জারি হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে ১৪ অক্টোবর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। জননিরাপত্তা আইনে তাঁকে ১৯৬২ সালের অক্টোবর পর্যন্ত আটক রাখা হয়। ১৯৬২ সালে মুক্তি পেয়ে ফের দৈনিক সংবাদে যোগদান করেন এবং তাঁর পরবর্তী জীবনেও সাংবাদিকতা করেন। তিনি ১৯৬৯ সালে উপন্যাসে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৩ সালে সাংবাদিকতায় মরণোত্তর একুশে পদক ও সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৯৮ সালে তাঁকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়।
তাঁর সাহিত্যকর্মের ভেতর উল্লেখযোগ্য হলো- 'সারেং বৌ' (১৯৬২) (চলচ্চিত্র রূপ ১৯৭৮), 'সংশপ্তক' (১৯৬৫), 'কৃষ্ণচূড়া মেঘ', 'দিগন্তে ফুলের আগুন', 'সমুদ্র ও তৃষ্ণা', 'রাজবন্দীর রোজনামচা' (১৯৬২), 'পেশোয়ার থেকে তাসখন্দ' (১৯৬৬)। 'কবে পোহাবে বিভাবরী' তাঁর অসমাপ্ত রচনা।
নিচে সংশপ্তক উপন্যাস থেকে খানিকটা অংশ তুলে দেওয়া হলো-
ভাঁটার মতো চোখে ক্রোধ ফাটায় রমজান। ভ্রু জোড়া কুঁচকে নেয় সতুর বাপ। প্রচণ্ড বিরক্তির সঙ্গে চিলমচিতে পানের পিক ফেলে ফেলু মিঞা। সেও একটা দিক বটে। মাস্টারের কথা গওর করতে হবে আমাদের। তবে ভাই জুমা শেষ হলো অনেকক্ষণ। বেলা আসর হতে চলল। খাব না আমরা? সামনে মিটিংয়ে বিষয়টা আসতে পারে, কী বল মাস্টার? চাতুর্যের সাথেই আলোচনার গলা কেটে দিল ফেলু মিঞা।
মাস্টার অর্থাৎ সেকান্দর আর না করে কেমন করে! বলছে ফেলু মিঞা।
তার ওপর লেকু ছাড়া আর কেউ কি মুখ খুলবে? তেমন কোনো ভরসা দেখছে না ও। অতএব, রফার নামে ধামাচাপার প্রস্তাবটা মেনে নেয় মাস্টার।
সম্রাট পঞ্চম জর্জের প্রতিকৃতি আঁকা তামার একটি পয়সা। কাঠকয়লার আগুনে পুড়ে পেয়েছে নতুন এক চেহারা। না আছে মুকুট, না সম্রাটের মুখ, মনে হয় জমাট আগুনের একটা গোলাকার পাত। া
প্রশ্ন
১. শহীদুল্লা কায়সারের জন্ম কোন জেলায়?
২. তিনি মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক পান কত সালে?
৩. তামার পয়সায় কার প্রতিকৃতি আঁকা?
কুইজ ৮১-এর উত্তর
১. ১৯৬৬ সালে
২. সিরাজ
৩. ৩৯ বছর বয়সে

কুইজ ৮১-এর জয়ী

রাশেদা আক্তার
সোনাপুর, নোয়াখালী

কার্তিক ব্রহ্মচারী
কালাচাঁদ পাড়া, পাবনা

নিয়ম
পাঠক, কুইজে অংশ নিতে আপনার উত্তর পাঠিয়ে দিন ১২ ডিসেম্বর সোমবারের মধ্যে কালের খেয়ার ঠিকানায়। পরবর্তী কুইজে প্রথম তিন বিজয়ীর নাম প্রকাশ করা হবে। বিজয়ীর ঠিকানায় পৌঁছে যাবে পুরস্কার।