
মোরশেদুল ইসলাম
'আমার বন্ধু রাশেদ' সিনেমাটি নির্মাণ করেছি মুহম্মদ জাফর ইকবালের কিশোর উপন্যাস অবলম্বনে। এই সিনেমার প্রেক্ষাপট মফস্বলের ছোট্ট একটি শহর। মুক্তিযুদ্ধে কিশোরদের অংশগ্রহণ দেখে বর্তমান প্রজন্ম যাতে মুক্তিযুদ্ধকে অনুভব করতে পারে এবং অনুপ্রাণিত হয়- তা মাথায় রেখে চলচ্চিত্রায়ণের জন্য এই উপন্যাসটি বেছে নিয়েছিলাম। কিশোরদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ নিয়ে এটিই আমার প্রথম সিনেমা। সিনেমার মূল চরিত্র রাশেদ।
একাত্তরের উত্তাল দিনগুলো যখন ছোটরা বুঝতে পারছে না, রাজনীতি সচেতন রাশেদ তখন ঠিক তার মতো করে সেটি সবাইকে বুঝিয়ে দিচ্ছে। এক সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনী এ দেশের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং ওই ছোট্ট শহরেও তারা এসে হাজির হয়। ভয়ংকর এক ধ্বংসলীলার সাক্ষী হয়ে থাকে রাশেদ।

স্বাধীনতা সংগ্রামের শুরুতে মুক্তিবাহিনীকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসে তারা কয়েকজন বন্ধু। কিন্তু যুদ্ধের ডামাডোলে রাশেদ ও তার বন্ধুদের এক সময় বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে হয়। এতে শুধু স্বাধীনতা যুদ্ধই নয়; মফস্বল শহরের কয়েকজন কিশোর কীভাবে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে, এরই চিত্র ফুটে উঠেছে। ২০১০ সালে সিনেমার দৃশ্যধারণ করেছি। ২০১১ সালে মুক্তি পায় এটি। মুক্তিযুদ্ধের একটি দৃশ্য ছিল সিনেমায়। এ ধরনের দৃশ্য ধারণ করতে লজিস্টিক সাপোর্টের অনেক প্রয়োজন হয়। সিনেমার যে বাজেট ছিল, তাতে দৃশ্যের আয়োজন করা সহজ ছিল না। আর সেনাবাহিনীর সহযোগিতা ছাড়া এটি মোটেও সম্ভব ছিল না। তবে আমরা সেনাবাহিনীর সহায়তা পেয়েছি। যতদূর মনে পড়ে, দিনাজপুরের ইকবাল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দৃশ্যধারণ করেছি। সারারাত শুটিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। অনেক মানুষ শুটিং দেখতে এসেছিলেন। রংপুর থেকে আর্মি এসেছিল। সত্যিকার অস্ত্র ও গোলাবারুদ ব্যবহার হয়েছে। নানা চ্যালেঞ্জ ছিল, কিন্তু তা আমাদের শুটিং ইউনিট ভালোভাবেই সামাল দিতে পেরেছিল।
মন্তব্য করুন