- ফিচার
- চোখের নিচে কালো দাগ অবহেলা নয়
চোখের নিচে কালো দাগ অবহেলা নয়

চোখের নিচে কালো দাগ হওয়া এক ধরনের পরিচিত স্বাস্থ্য সমস্যা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। তার পরও এই সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যার অনেক সময় মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। চোখের নিচে কালো বৃত্ত বা ডার্ক সার্কেল কী কারণে হয়, তা জেনে নিই।
চোখের নিচে কালো দাগ আসলে কী
চোখের নিচের ত্বক স্বাভাবিকের চেয়ে কালো হয়ে গেলে চোখের নিচে কালো দাগ হয়। অনেকেই মনে করেন, এই দাগ ক্লান্তির লক্ষণ। আবার এ কালো দাগকে শারীরিক দুর্বলতা তো বটেই, কেউ কেউ বয়স হয়ে যাওয়ার লক্ষণ মনে করে থাকেন। তবে কালো দাগ হওয়ার নির্দিষ্ট কিছু কারণ রয়েছে।
ত্বকের ধরনের ওপর নির্ভর করে চোখের নিচে কালো বৃত্তগুলো বাদামি, নিল বা নাকি বেগুনি দেখাবে। তবে এ কালো বৃত্ত বা দাগ সংক্রমণের কারণ বা চোখের চারপাশে যে কোনো আঘাতের কারণে সৃষ্ট দাগ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
চোখের নিচে কালো দাগের কারণ
শরীরে যখন ক্লান্তি ভর করে, তখন এ ধরনের দাগ মুখের ওপর বিশেষ করে চোখের নিচে দেখা দিয়ে থাকে। কিন্তু চোখের নিচে যদি কোনো কারণে দীর্ঘস্থায়ী কালো বৃত্ত দেখা দেয়, তবে তার কারণগুলো খুঁজে বের করা দরকার
ডার্ক সার্কেলের কিছু সাধারণ কারণ :
অবসন্নতা
দীর্ঘ সময় ধরে জেগে থাকা, চরম ক্লান্তি, অবসাদ এবং অত্যধিক ঘুম- এমন কয়েকটি বিষয় ডার্ক সার্কেল সৃষ্টিতে অবদান রাখতে পারে। ঘুমের অভাব ত্বককে ফ্যাকাশে এবং নিস্তেজ করে তোলে। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতাকে নষ্ট করে দেয়।
ঘুমের অভাবে চোখের নিচে পানি জমতে ভূমিকা রাখে। যার ফলে চোখের নিচে ফোলা ভাব দেখতে পাওয়া যায়।
অ্যালার্জি
চোখের শুস্কতা বা অ্যালার্জির কারণে ডার্ক সার্কেল হতে পারে।
আপনার অ্যালার্জি আছে কিনা তা নির্ধারণ করতে আপনাকে অন্য উপসর্গগুলোও পরীক্ষা করা উচিত। অ্যালার্জির কারণে চোখে লালচে ভাব, চুলকানি এবং চোখ ফুলে উঠতে পারে। অ্যালার্জির কারণে সৃষ্ট হিস্টামিনগুলো রক্তনালিকে প্রসারিত করে তোলে। ফলে ত্বকের নিচের অংশ আরও দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।
খেয়াল রাখতে হবে, চোখের চারপাশে ঘষা বা আঁচড় যেন না পড়ে। ঘর্ষণের ফলে উপসর্গগুলো আরও খারাপ হতে থাকে এবং ফোলা ভাব আরও বেড়ে যায় এবং কোষের প্রদাহজনিত কারণে রক্তনালি ফেটে যেতে পারে। তখন ত্বকেও তার প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
বার্ধক্য
বার্ধক্যের সঙ্গে সঙ্গে ডার্ক সার্কেল হওয়া স্বাভাবিক। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একজন ব্যক্তির ত্বক পাতলা হয়ে যায় এবং কোলাজেন এবং চর্বি কমে যেতে শুরু করে। কোলাজেন এবং চর্বি ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা রক্ষার জন্য দায়ী। আর এর অভাব হওয়ার অর্থ ত্বকের মলিনতা বৃদ্ধিসহ ডার্ক সার্কেল তৈরি হওয়া।
পানিশূন্যতা
পর্যাপ্ত পানি পান না করার কারণেও চোখের এ সমস্যা দেখা যেতে পারে
ডিহাইড্রেশন হলো যখন আপনার শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পায় না। এটি হাড়ের নিকটবর্তী হওয়ায় চোখের নিচের অংশটিকে আরও গাঢ় দেখায়।
চোখের ওপর চাপ
চোখের স্প্রেন বা চাপ ডার্ক সার্কেল সৃষ্টির আরেকটি কারণ। বেশি স্ট্ক্রিন টাইমের ফলে আরও ডার্ক সার্কেল দেখা দেয়। চোখের স্প্রেন রক্তনালিগুলোকে স্ম্ফীত করে তোলে এবং তাদের চারপাশের ত্বককে কালো করে তোলে। সূর্যের অতিরিক্ত এক্সপোজারের ফলে ত্বকের মেলানিন হরমোনের উৎপাদন বেড়ে যায়। একই সঙ্গে অতিরিক্ত এক্সপোজার চোখের চারপাশে পিগমেন্টেশন বা কালো দাগ বাড়িয়ে তোলে।
পারিবারিক কারণ
পারিবারিক ও বংশগতির কারণেও অনেকেই ডার্ক সার্কেল ছোটবেলা থেকেই বহন করতে পারেন। শৈশবে অন্ধকার বৃত্তগুলো লক্ষণীয়ভাবে দেখা না দিলেও এবং এটি বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও খারাপ আকার ধারণ করতে পারে। অনেক সময় বংশগত কারণে সৃষ্ট ডার্ক সার্কেল কিছু সময়ের মধ্যে আপনা আপনি চলে যায়।
কখন ডাক্তার দেখাবেন
চোখের নিচে কালো দাগ কোনো মেডিকেল ইমার্জেন্সি নয়। তবে এর সঙ্গে যদি অস্বাভাবিক কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন চোখে ব্যথা, কালো দাগ ক্রমান্বয়ে বেড়ে যাওয়া- এসব দেখা দেয়, তাহলে আপনার ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
চোখের নিচে কালো দাগ দূর করতে ত্বক বিশেষজ্ঞ ক্রিম বা চিকিৎসার পাশাপাশি জীবন ধারণ প্রণালি পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। া
[ বাকি অংশ আগামী সংখ্যায় ]
মন্তব্য করুন