ঘুম থেকে উঠলেই দেখা যায়, প্রকৃতি যেন শীতের রূপ নিচ্ছে। ঋতু পরিবর্তনের শুরুর এই সময়টা উপভোগ্য হলেও দেখা দিতে পারে স্বাস্থ্যগত নানা সমস্যা। শুস্ক আবহাওয়ার সঙ্গে কম তাপমাত্রার সংযোজন, ধুলাবালির উপদ্রব; সব মিলিয়েই সৃষ্টি করে কিছু স্বাস্থ্যগত সমস্যা। আর একটু সতর্ক হলেই এসব অনাকাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পারেন। শীতে প্রধানত বাড়ে শ্বাসতন্ত্রের রোগ। শীতের শুরুতেই জ্বর, সর্দি ও কাশি যেন আঁকড়ে ধরে। অনেক সময় একবার কাশি শুরু হলে পিছু ছাড়তে চায় না। একটানা খুক খুক কাশি বিরক্তিকর। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কাশি কয়েক সপ্তাহ থাকতে পারে।

শীতে যেসব রোগ সবচেয়ে বেশি হয় তা হলো, সর্দি-কাশি, ঠান্ডা জ্বর। সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং প্যারা ইনফ্লুয়েঞ্জার মাধ্যমে এ রোগ হয়। রোগটি ভাইরাসজনিত কারণে ছড়ায়। ঠান্ডার অন্যান্য উপসর্গ ছাড়াও এ রোগের ক্ষেত্রে জ্বর ও কাশিটা খুব বেশি হয় এবং শ্বাসকষ্টও হতে পারে। এ ছাড়া ভাইরাসে আক্রান্ত দেহের দুর্বলতার সুযোগে অনেক সময় ব্যাকটেরিয়াও আক্রমণ করে থাকে। বিশেষ করে নাকের সর্দি যদি খুব ঘন হয় বা কাশির সঙ্গে হলুদাভ কফ আসতে থাকে, তা ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণকেই নির্দেশ করে। এ রোগে আক্রান্ত হলে বিশ্রাম, প্রচুর পানীয়, ফলের রস ও পান গ্রহণ করতে হবে। খুব বেশি জ্বর, গলা ব্যথা, কাশি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
সর্দি-কাশি ও হাঁপানি প্রতিরোধে করণীয়
- কুসুম গরম পানি পান করা।
- ঠান্ডা খাবার ও পানীয় পরিহার করা
- ধুলাবালি ও ধূমপান এড়িয়ে চলা।
-তাজা, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ এবং পর্যাপ্ত পানি পান।
- প্রয়োজনমতো গরম কাপড় পরা।
- চোখ বা নাক মোছার পরপর হাত ধোয়া।
- রাস্তায় চলাচলের সময় মাস্ক পরা।
- হাঁপানি রোগীরা শীত শুরুর আগেই চিকিৎসকের পরামর্শমতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

বয়স্ক ও শিশুরা ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ থেকে রেহাই পেতে চিকিৎসকের পরামর্শে ভ্যাকসিন নিতে পারেন। শীতে অনেকে সাইনোসাইটিসের সমস্যায় ভোগেন। অনেকে ফুসফুসের সংক্রমণের শিকার হন। নিউমোনিয়াও এ সময় প্রচুর দেখা দেয়। শীতকালে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা বেশি প্রয়োজন। এ সময় ধুলাবালি ও রোগজীবাণুর প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা দেয়। ফলে অসুখ-বিসুখে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকে। অবশ্যই পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। তাই প্রত্যেকের প্রতিরোধমূলক জীবনযাপন করা উচিত। প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন
করতে হবে।
[অধ্যাপক : শিশু বিভাগ, এনআইসিভিডি]