- ফিচার
- তেলে তরতাজা ত্বক
তেলে তরতাজা ত্বক

ত্বকের যত্নে তেল ব্যবহার করলে ত্বক তরতাজা থাকবে। দূর হবে রুক্ষতা ও শুস্কতা। ত্বকে কোন তেল ব্যবহার করবেন তা জানাচ্ছেন আল আমীন
প্রাচীনকাল থেকেই রূপচর্চায় ব্যবহার হয়ে আসছে প্রাকৃতিক তেল। রাসায়নিক হাজারো বিউটি প্রডাক্ট বা প্রসাধনীর ভিড়ে তেলের গুরুত্ব আজও আগের মতোই রয়েছে। অনেকেই জানেন না ঠিক কোন উপায়ে কোন ত্বকে তেল ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
কোন তেল ব্যবহার করবেন :ত্বকে ব্যবহারের জন্য নারকেল তেল, অলিভ অয়েল, সানফ্লাওয়ার সিড অয়েল, লবঙ্গ তেল, কালিজিরা তেল, আমন্ড অয়েলসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরনের তেল রয়েছে। এর মধ্যে আবার পরিশোধিত (রিফাইন্ড) বা অপরিশোধিত (নন-রিফাইন্ড) তেলের ব্যাপার আছে। আপনি কোনটা ব্যবহার করবেন?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রিফাইন্ড তেলে রাসায়নিকের (কেমিক্যাল) ব্যবহার থাকতে পারে। তাই এটি কারও কারও জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অ্যালার্জিসহ অন্যান্য প্রতিক্রিয়াও দেখা দেয়। তাই সবচেয়ে ভালো হলো, এক্সট্রা ভার্জিন অথবা কোল্ড প্রেস অয়েল ব্যবহার করা।
তেলভেদে উপকারিতা
আমন্ড অয়েল :শত শত বছর ধরে বাদাম তেল (আমন্ড অয়েল) শুস্ক ত্বক, সোরিয়াসিস এবং ডার্মাটাইটিসের চিকিৎসায় ব্যবহূত হয়ে আসছে। এতে রয়েছে অতিরিক্ত পরিমাণে ভিটামিন এ। এই তেলে ত্বকের নতুন কোষ (সেল) তৈরিতে সাহায্য করে। ত্বককে মসৃণ করে। তবে বাদামে অ্যালার্জি থাকলে এটি ব্যবহার না করাই ভালো।
অ্যাভোকাডো অয়েল :অ্যাভোকাডো ফেস অয়েলে ভিটামিন ই, লেসিথিন ও পটাশিয়ামের মতো উপকারী পুষ্টি রয়েছে, যা শুস্ক ত্বককে পুষ্টি ও ময়েশ্চারাইজ করতে সাহায্য করে। এটি এপিডার্মিস দ্বারা সহজেই শোষিত হয় এবং নতুন ত্বক গঠনেও সাহায্য করে। এ ছাড়া তৈলাক্ত ত্বকে এই তেল ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়।
পেপারমিন্ট অয়েল :ত্বকে ব্যবহারের জন্য পরীক্ষিত একটি উপাদান হলো পেপারমিন্ট অয়েল। পেপারমিন্ট ফেস অয়েল ব্যবহার করে ত্বকের বিরক্তিকর অনুভূতিগুলোকে বিদায় জানাতে পারবেন। এ ছাড়া যদি আপনার ত্বকে লালচে ভাব বা জ্বালাপোড়া থাকে তাহলে এই তেল ব্যবহার করতে পারেন। এতে প্রশান্তিদায়ক এবং শীতল উভয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
নারকেল তেল : নারকেল তেল সহজেই ত্বকে শোষিত হয়। এতে রয়েছে ভিটামিন ই এবং কে। এর অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যসহ অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।
গ্রেপসিড তেল :এটি একটি প্রাকৃতিক অ্যাস্ট্রিনজেন্ট, যা আপনার মুখকে অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত ভাব থেকে মুক্ত রাখে। এই তেল আপনার ত্বকের ছিদ্রগুলোও শক্ত (টাইট) করে, আপনার ত্বককে ম্যাটিফাইড রাখে।
টি ট্রি অয়েল :এটি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য একটি চমৎকার উপকারী উপাদান। এর অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে সেবেসিয়াস গ্রন্থিগুলোকে স্থিতিশীল করতে সাহায্য করে এই তেল।
সানফ্লাওয়ার সিড অয়েল :প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে একটি চমৎকার সমাধান। এই তেলে ভিটামিন ই বেশি থাকে এবং ত্বকে সহজেই শোষিত হয়। শিশুদের ত্বকের জন্যও এটি বিশেষ উপকারী।
এ ছাড়া ত্বকের জন্য উপকারী আরও যেসব তেল ব্যবহার করতে পারেন, সেগুলো হলো জোজোবা অয়েল, অ্যালোভেরা অয়েল, ক্যাস্টর অয়েল ও রোজ হিপ অয়েল। তালিকায় রাখতে পারেন শিয়া বাটারও। সবগুলোর ক্ষেত্রেই ব্যবহারের ভিন্নতা রয়েছে। কোনোটি শুধু মুখের ত্বকের জন্য, কোনোটি শুধু শরীরের অন্যান্য অঙ্গের, আবার কোনোটি সব স্থানেই ব্যবহার করা যায়।
আরও পরামর্শ :বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপনার ত্বকে যদি অ্যালার্জিজনিত সমস্যার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে অবশ্যই এসব তেল ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। যদি এমন হয়, অ্যালার্জি বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই, তাই হুটহাট এসব তেল ব্যবহারে ভয় পাচ্ছেন, তাহলে প্রথমে অল্প পরিমাণে ব্যবহার করে যাচাই করে নিন। সমস্যা মনে হলে বাদ দিন। এসব তেল ব্যবহারের সময় বা পরে (বিশেষ করে মুখে) বেশি ঘষাঘষি করবেন না। এতে তেলের কার্যকারিতা ভালোভাবে পাওয়ার বদলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হতে পারে। তাই আলতো করে ব্যবহার করুন।
সূত্র :অলকা ডটকম, এভিরিডেহেলথ ডটকম, হেলথশট ডটকম
মন্তব্য করুন