
তিন বছর সাধনার পর অবশেষে সফল। চট্টগ্রামের ছাদ কৃষিতে নতুন সংযোজন রসাল 'দার্জিলিং কমলা'। রং ও আকার আমদানি করা কমলার মতো দেখা গেলেও এটি আসলে ছাদবাগানের গাছেই ফলেছে। এক গাছেই ১১টি কমলা। মিষ্টিও বেশ। সঠিক পরিচর্যা করায় কমলার আকারও হয়েছে বড়। চট্টগ্রাম নগরের অক্সিজেন এলাকার ব্যবসায়ী নাসির মনজুর ছাদবাগানে দার্জিলিং কমলায় দেখাচ্ছে আশার আলো। ছাদবাগানে এ ফলের চাষ যত বাড়বে, ততই কমে আসবে কমলা আমদানি।
ছাদবাগানি নাসির মনজুর বলেন, এ কমলা দেখতে সুন্দর, খেতে সুস্বাদু ও বাকল পাতলা। কমলার প্রতিটি কোয়া রসে ভরপুর। অনলাইনে ঢাকা থেকে অর্ডার করে দার্জিলিং কমলাগাছটি এনে ছাদে লাগিয়েছি। ইউটিউব থেকে দেখে গাছ পরিচর্যার কৌশল রপ্ত করেছি। ছাদবাগানে টবে কমলা চাষ করে নিজের পরিবারের ভিটিমিন সি'র চাহিদা পূরণ করতে পারছি। এ গাছে বারো মাসই কমলা ফলে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পাঁচলাইশ থানার কৃষি কর্মকর্তা রোজিনা আক্তার বলেন, মানুষের ধারণা ছিল কমলা শুধু পাহাড়েই উৎপাদন সম্ভব। তবে বর্তমানে ছাদবাগানেও কমলার চাষ হচ্ছে। কমলাসহ নানা ফল চাষ করে সফলতাও পাচ্ছেন। আমরা কমলা চাষে সব ধরনের সহযোগিতা করে আসছি।
২০১৭ সাল থেকে নিজের ভবনের ছাদে বাগান শুরু করেন ব্যবসায়ী নাসির মনজুর। তিনি নিজেই প্রতিদিন দুই বেলা বাগানের গাছ পরির্চযা করেন। চট্টগ্রাম-হাটহাজারী সড়কের কুলগাঁও এলাকা 'আয়শা ওয়াজেদ মেমোরিয়াল টাওয়ার' ভবন। এই ভবনের ৫ হাজার বর্গফুটের ছাদে চাষ করছেন কমলাসহ নানা ফল ও সবজি। ২০০০ সালে তিনি ৬০০ টাকায় ঢাকা থেকে দার্জিলিং কমলাগাছের চারা অনলাইনে অর্ডার করে ছাদে লাগান।
এর পর তিনি চায়না কমলা, দেশি কমলার চারাও লাগান। তাঁর বাগানে দার্জিলিং কমলাই বছরে চারবার ফলন দিচ্ছে। চায়না ও দেশি কমলা তেমন ফলন দেয় না। যা দু-একটা ফল ধরে তাও টক। তবে দার্জিলিং কমলাগাছ লাগানোর তিন বছরে ফল ধরতে শুরু করে। কমলার আকার বড় ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ করতে বছরের ফেব্রুয়ারি ও সেপ্টেম্বর দুই দফায় টিএসপি, ডার্মি, পটাশিয়ামসহ বিভিন্ন প্রকার সার দিতে হয়। কমলা ছাড়াও তাঁর বাগানে ডোরাকাটা মাল্টা, জামরুল, জলপাই, পেয়ারাসহ ১৬ ধরনের ফল ধরছে। ফলের পাশাপাশি চায়না পটোল, মিষ্টিকুমড়া, শিম, কাঁকরল, বরবটি, বেগুন, টমেটো, শসা, করলা, লাউ, ধুন্দুল, লালশাক, ডাঁটাশাক, পুঁইশাক, কলমিশাকসহ সারা বছর ১৫ ধরনের সবজির চাষ হয়।
বিষয় : দার্জিলিং কমলা ছাদবাগান ছাদ কৃষি
মন্তব্য করুন