- ফিচার
- সপ্তাহে দু'দিন স্লিপিং মাস্ক
সপ্তাহে দু'দিন স্লিপিং মাস্ক

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন ঘটে। ধুলাবালি ও ময়লা জমে ত্বকের পোরস বন্ধ হয়ে যায়, যা থেকে ব্রণ ও ফুসকুড়ি হয়। তাই ঘুমানোর আগে স্লিপিং মাস্কের সাহায্যে ত্বকের যত্ন নিলে এসব সমস্যা কমবে। লিখেছেন- শাহিনা নদী
স্লিপিং মাস্ক হচ্ছে একটি এশিয়ান স্কিন কেয়ার টেকনোলজি। এই মাস্ক সপ্তাহে এক থেকে দু'বার ব্যবহার করতে হয়। রাতে ক্লিঞ্জিং ও টোনিঙের পর নাইট ক্রিমের জায়গায় এই মাস্ক ব্যবহার করা হয়। সারাদিনের ধুলাবালি, রোদ, ঘাম ইত্যাদি থেকে ত্বকের যে ক্ষতি হয়, তা রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় ত্বক নিজেই গভীর থেকে রিপেয়ার করে নেয়। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
তাই ২৫ বছরের পর থেকেই ত্বকের বাড়তি যত্ন নেওয়া জরুরি। এ ক্ষেত্রে স্লিপিং মাস্ক অনেক উপকারী। ল্যানেইজ ওয়াটার স্লিপিং মাস্ক মূলত একটি জেলবেজড ওভারনাইট স্লিপিং মাস্ক। এতে রয়েছে বেটা গ্লুকন ও স্নো ওয়াটার, যা ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং ত্বককে গভীর থেকে পরিস্কার ও মসৃণ করে তোলে। ত্বকের অভ্যন্তরীণ কোষকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে।
ফলে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ার প্রাথমিক লক্ষণগুলো যেমন- বলিরেখা, বড় লোমকূপ, ডার্ক সার্কেল, রিঙ্কেল ইত্যাদি কমিয়ে ত্বককে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত করে তোলে। এটি খুব হালকা ধরনের ও নন-স্টিকি হওয়ায় সহজেই ত্বকের সঙ্গে মিশে যায়। এটি ক্ষতিকর প্যারাবেনমুক্ত এবং সব ধরনের ত্বকের জন্য ব্যবহার উপযোগী।
ব্যবহারবিধি :পাতলাভাবে এই মাস্ক মুখে লাগিয়ে না ধুয়ে ঘুমিয়ে পড়তে হয়। সারারাত মাস্ক স্কিনে কাজ করে। সকালে উঠে মাস্ক ধুয়ে ফেলতে হয়। ক্লিয়ার এবং গ্লোয়িং স্কিন পেতে হলে ত্বকে হাইড্রেশন, ময়েশ্চার, অয়েল- এসব কিছুরই ভারসাম্য থাকতে হবে। স্কিনে ড্যামেজ রিপেয়ার করার উপযুক্ত সময় হচ্ছে রাতের স্কিন কেয়ার টাইম।
নাইট ক্রিম আর স্লিপিং মাস্ক সম্পূর্ণ আলাদা দুটি স্কিন কেয়ার পণ্য। নাইট ক্রিম হচ্ছে এমন একটা জিনিস, যেটা আপনি সাধারণত প্রতি রাতে ব্যবহার করতে পারেন এবং বিশেষত তা শীতকালে ব্যাপক কার্যকরী। অন্যদিকে, স্লিপিং মাস্ক নিয়মিত ব্যবহার না করে বরং সপ্তাহে এক-দু'বার ব্যবহার করা যায়। নাইট ক্রিমের নিয়মিত ব্যবহার বন্ধ করে শুধু যখন দরকার তখন স্লিপিং মাস্ক ব্যবহার করলেই হয়ে যাবে- এমনটা যদি ভেবে থাকেন, তাহলে ভুল ভাবছেন। কারণ, প্রথমত নাইট ক্রিম প্রতিদিন ব্যবহারে ত্বক হয় মসৃণ আর স্বাস্থ্যকর।
তাই এটার ব্যবহার বন্ধ করলে ধীরে ধীরে ড্যামেজ হয়ে যাবে। স্লিপিং মাস্ক যেহেতু নাইট ক্রিমের দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারের কার্যকারিতাকে বুস্ট করে; সেহেতু নাইট ক্রিমের অভাবে এটির কার্যকারিতা এবং কাঙ্ক্ষিত ফলাফল নাও আসতে পারে। তাই নিয়ম মেনে যখন যেটা দরকার, সেটাই ব্যবহার করতে হবে। দুটিই বেশ কার্যকরী আর উপকারী। একটি নিয়মিত ব্যবহারে উপকার মেলে আর অন্যটা সেই নিয়মিত ব্যবহারকে সাময়িক বুস্ট করতে সহায়তা করে।
রাজিয়া'স মেকওভারের স্বত্বাধিকারী রাজিয়া সুলতানা জানান, ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নানা রকম উপটান এবং প্যাক লাগানো হয়। সবকিছুর মধ্যে এখন জনপ্রিয়তায় আছে মাস্ক। বিভিন্ন ধরনের মাস্ক ব্যবহার করে সবাই। এসব মাস্ক মুখোশের মতো লাগিয়ে নিতে হয়, নির্দিষ্ট সময় পর তুলে ফেলতে হয়। এতে টানটান সজীব ত্বক পাওয়া যায়। তিনি জানান, বাজারে নানান ধরনের মাস্ক পাওয়া যায়। যেমন ক্লোবেজ মাস্ক, পেপার শিট মাস্ক, পিল অব মাস্ক, এক্সলা ফ্লোটিং মাস্ক। এগুলোর মাঝে থাকে আবার নানান গুণের সমাহার ও ত্বক অনুযায়ী প্রকারভেদ। ইদানীং স্লিপিং মাস্ক বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। অন্যান্য মাস্কের তুলনায় স্লিপিং মাস্ক একটু বেশি ভিন্ন। এটা কিছুটা নাইট ক্রিমের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে।
রাতে ঘুমানোর আগে স্লিপিং মাস্ক ব্যবহার করতে হয়। মাস্ক ব্যবহার করার আগে নিজের ত্বকের ধরন ও প্রয়োজন বুঝে নিতে হবে। যে কোনো মাস্ক ব্যবহার করার আগে ত্বক ভালোভাবে পরিস্কার করে নিতে হবে। যদি সম্ভব হয়, একটু ভাপ বা স্টিম দিয়ে নিতে পারেন। স্লিপিং মাস্ক মুখে লাগানোর পরে ত্বকের সংস্পর্শে ধীরে ধীরে গরম হতে থাকে। এতে ত্বক নিঃশ্বাস নিতে পারে এবং ত্বকের বিভিন্ন ময়লা দূর হয়। এ ছাড়া এই মাস্ক ব্যবহারে ব্ল্যাকহেডস, একনিউ সমস্যা কমে। স্লিপিং মাস্ক রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্যবহার করতে হয়। যারা খুব ব্যস্ত থাকেন, তাদের জন্য এই মাস্ক খুবই উপকারী। ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে যে কেউ এই মাস্ক ব্যবহার করতে পারবেন।
মন্তব্য করুন