শীত এখন একদম জেঁকে বসেছে। বাইরে যেমন ঠান্ডা, ঘরেও তেমন ঠান্ডা। ঘরের ফ্লোরে পা রাখলেই ঠান্ডায় যেন পা অবশ হয়ে যায়। তাই ঠান্ডা ফ্লোর থেকে বাঁচতে ব্যবহার করতে পারেন কার্পেট, শতরঞ্জি কিংবা ফ্লোর ম্যাট। এসবের ব্যবহারে শীতকালে ঘরের ভেতরটাও আরামপ্রদ ও নান্দনিক হয়ে ওঠে।

শতরঞ্জি ও কার্পেটের মধ্যে কার্পেট কিছুটা ভারী ধাঁচের হলেও শীতে ঘর উষ্ণ রাখার এটি অন্যতম উপায়। বিছানা থেকে পা ফ্লোরে ফেলতেই ঠান্ডা হয়ে থাকা ফ্লোরের ধাক্কা যেন আপনাকে অনুভব করতে না হয়, সে কারণে নানা ধরনের ডিজাইনে চমৎকার সব কার্পেট রাখতে পারেন ঘরের ফ্লোরে।

বাজারে নানা রকম, নানা রঙের, নানা ঢংয়ের ফ্লোর ম্যাট, কার্পেট ও শতরঞ্জি কিনতে পাওয়া যায়। শুধু কেনাকাটা করলেই হবে না, ফ্লোর ম্যাটের মাধ্যমে ঘরের মেঝেকে সুন্দর করে তুলতে প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা। কোথায় কোন ফ্লোর ম্যাট রাখবেন, কোন রং বা কেমন আকৃতির ফ্লোর ম্যাট কোথায় মানাবে- এসব বিষয় চলুন জেনে নিই।

ফ্লোর ম্যাটের প্রকারভেদ : ঘরের ভেতরে ও বাইরে ব্যবহার করার জন্য ভিন্ন ভিন্ন ফ্লোর ম্যাট রয়েছে। ইনডোর ও আউটডোর ম্যাটের ক্ষেত্রে সাধারণ কিছু ব্যাপার খেয়াল করতে হবে আপনাকে। এ ব্যাপারগুলো হলো ম্যাটের উপাদান ও বুনোট পদ্ধতি। এই যেমন ঘরের বাইরে ব্যবহার করতে হয় এমন ম্যাটের ক্ষেত্রে তাতে রাবার আছে কিনা, তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বিশেষত আউটডোর ম্যাট হিসেবে সবার প্রথম পছন্দই থাকে রাবার বা কোয়ের ম্যাট। অন্যদিকে, ঘরের ভেতরে ব্যবহারের জন্য কাপড় বা সুতা দিয়ে তৈরি রাবার ম্যাটকেই প্রাধান্য দেওয়া উচিত। এ ম্যাট খুব সহজেই মানুষের পায়ের ময়লাকে আলাদা করতে পারে এবং মেঝেকেও পরিস্কার রাখে। এ ছাড়া আবহাওয়ার সঙ্গে সহজেই খাপ খেয়ে যায়।

রুমভেদে ফ্লোর ম্যাট :ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য অবশ্যই রুমভেদে ফ্লোর ম্যাটের অবস্থান নির্ধারণ করতে হবে। যেমন ঘরে প্রবেশের আগে ডোর ম্যাটটি আপনার ব্যক্তিত্বের পরিচয় দেবে। তাই সেই ম্যাটটি হতে হবে রুচিশীল এবং উন্নতমানের। এ ছাড়া বেডরুমের ফ্লোর ম্যাট হতে হবে আরামদায়ক। এটি আপনি পুরো ফ্লোরজুড়ে ব্যবহার করতে পারেন। আপনি চাইলে শুধু খাটের সামনেও বাহারি ম্যাট রাখতে পারেন। যদি আপনি ঠান্ডা থেকে বাঁচতে চান, তাহলে পুরো ঘরে ম্যাট ব্যবহার করবেন। পাশাপাশি বিছানার পাশেও আলাদা করে ফ্লোর ম্যাট রাখতে পারেন। সে ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ম্যাটটির বেলায় উজ্জ্বল রং বেছে নেবেন।

এভাবে বসার ঘরেও আপনি পুরোটা জুড়ে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে একটু রংচঙের ফ্লোর ম্যাট আপনার ঘরটিকে সাজিয়ে তুলবে। একইভাবে রান্নাঘর, বাথরুমেও আপনি ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন। অন্যদিকে, ব্যালকনি কিংবা ছাদবাগানের জায়গার জন্য কৃত্রিম ঘাসের কার্পেট বা গ্রাস কার্পেট ব্যবহার করা যেতে পারে। বাজারে বিভিন্ন ম্যাটেরিয়ালের গ্রাস কার্পেট রয়েছে। এর মধ্যে পাট, রেক্সিন, প্লাস্টিক, পাতলা রাবার ও সিনথেটিকের কার্পেট অন্যতম।

যত্ন নিতে ভুলবেন না :শীতকালে ঘর সাজাতে কার্পেটের ব্যবহার ঘরের সৌন্দর্য যেমন বাড়িয়ে দেবে, তেমনি এর যত্ন নেওয়া, পরিস্কার রাখার বিষয়টিও সমান গুরুত্ব পাবে। এ কারণেই প্রতিদিন ব্রাশ দিয়ে কার্পেট পরিস্কার করা প্রয়োজন এবং দুই সপ্তাহে অন্তত এক দিন ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে পরিস্কার করা উচিত এবং এর সঙ্গে সম্ভব হলে রোদেও দেওয়া উচিত।

মানভেদে দাম :মানভেদে কার্পেট, ফ্লোর ম্যাটের দামের পার্থক্য রয়েছে। পাটের এবং সিনথেটিক কার্পেটের ব্যবহার মূলত সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে পাটের কার্পেটের দাম তুলনামূলক কম; তবে গুণগত মান, আকৃতি এবং ডিজাইনের ওপর ভিত্তি করে সিনথেটিক কার্পেটের দাম ৪-৫ হাজার থেকে শুরু করে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তবে কার্পেটের রোলগুলো মূলত বিক্রি হয় স্কয়ার ফুট হিসেবে। যার দাম ৩০ থেকে ৩০০ বা এর অধিক টাকার হয়ে থাকে। তবে কার্পেট কেনার পাশাপাশি কার্পেট বসাতে খরচ পড়বে প্রতি স্কয়ার ফুটে ৫ থেকে ১৫ টাকার মতো।

কোথায় পাবেন :ঢাকায় কার্পেট মার্কেট রয়েছে বেশ কয়েকটি স্থানে। এর মধ্যে এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট, ডিসিসি উল্লেখযোগ্য।
ছবি :কারুকার্য

বিষয় : আরামদায়ক মেঝে শতরঞ্জি ফ্লোর ম্যাট

মন্তব্য করুন