- ফিচার
- বিতর্ক আত্মবিশ্বাসী ও যুক্তিবাদী করে তোলে
বিতর্ক আত্মবিশ্বাসী ও যুক্তিবাদী করে তোলে

বিতর্ক মানুষকে সাহসী, আত্মবিশ্বাসী ও যুক্তিবাদী করে গড়ে তোলে। বিতর্কের মাধ্যমে শব্দ চয়ন, বাক্য গঠন, ভাষার ব্যবহার ও সুন্দরভাবে বক্তব্য উপস্থাপন করার দক্ষতা বাড়ে। একটি শব্দ যে কতভাবে বিচার-বিশ্নেষণ করা যায়, তা শেখা যায় এর মাধ্যমে। বিতর্ক যুক্তিকে শানিত করে। বিতার্কিকের জ্ঞানের পরিধি বাড়িয়ে দেয়। একটি বিষয়কে নানাভাবে দেখার সুযোগ করে দেয়, যা পরমতসহিষুষ্ণতা শেখায়। আজ আমাদের সমাজে অসহিষুষ্ণতা বেশি। বিতর্ক চিন্তার পথকে বহুদূর পর্যন্ত প্রসারিত করে। এই চর্চা আমাদের দেশে একটি উদার, গণতান্ত্রিক, মুক্তমনা সমাজ গড়ে তুলবে। বিতর্ক আমাদের আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করা বাড়িয়ে দেয়। অধিকাংশ সময় আমরা জানি না পক্ষ নাকি বিপক্ষে বলব। বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা এবং বিশ্নেষণের চেষ্টা করা। বিতর্কচর্চার মাধ্যমে যুক্তি খণ্ডনে দক্ষতা অর্জন করা যায়। একটি বিষয়কে ভিন্ন ভিন্নভাবে বিশ্নেষণ করা সম্ভব। কাজেই বিতর্ক অন্যের মতের প্রতি, যুক্তির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জন্মানো শেখায়। প্রতিটি স্কুলে বিজ্ঞান ক্লাব, বিতর্ক ক্লাব, দাবা ক্লাব থাকা অত্যাবশ্যক। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সফল অংশীদার যেন আমরা হতে পারি, সে জন্য নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে এগুলো প্রয়োজন। বিশ্বজুড়ে এখন চেষ্টা চলছে সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং, টেকনোলজি, ম্যাথমেটিকসের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এগিয়ে যাওয়ার। আমরাও বিজ্ঞানশিক্ষাকে ছড়িয়ে দিতে চাই সব জায়গায়। বিজ্ঞান যে একটি কাঠখোট্টা বিষয় নয়, বিজ্ঞান যে মজায় মজায় শেখা যায়- সেই আনন্দ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই। বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গড়ে তুলতে চাই আমরা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও বারবার সেটিই বলে গেছেন। তাঁর গঠন করা কুদরাত-এ-খুদা শিক্ষানীতি, আওয়ামী লীগের গঠনকালীন ইশতেহার, সত্তর সালের আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার- সর্বত্রই শিক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। আসলে একটি জাতিকে এগিয়ে নিতে, সমৃদ্ধ করতে বিজ্ঞানশিক্ষার বিকল্প নেই। আমাদের ভাষা সমৃদ্ধ, সংস্কৃতিও সমৃদ্ধ। আমাদের হাজার বছরের সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আত্মপরিচয় রয়েছে। আত্মপরিচয় না জানলে আত্মবিশ্বাস নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া যায় না। বিজ্ঞান আমাদের সামনে এগিয়ে দেবে। সেই সঙ্গে ধর্মীয় শিক্ষাও হতে হবে যথাযথ। নীতিনৈতিকতা ও অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা থাকা জরুরি। আমরা সব ধরনের চাপ ও বোঝামুক্ত আনন্দময় শিক্ষা চাই। শিক্ষার্থীরা যা শিখবে, তা যেন তারা আনন্দের সঙ্গে শেখে। আমরা নতুন শিক্ষাক্রম শুরু করেছি। ২০৩০ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার পূরণ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে দক্ষ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন জনশক্তি দরকার। সে জন্য শিক্ষায় রূপান্তরের কাজ শুরু হয়েছে।
মন্তব্য করুন