বসন্তের প্রথম দিনের জন্য যুগল পোশাক কিনে নিতে পারেন। গান-কবিতা আছে এমন পোশাক পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। অনেকে পোশাকে তুলে ধরছেন হারানো দিনের ক্যাসেট, সাইকেল, চায়ের কাপ ইত্যাদি। লিখেছেন রিক্তা রিচি

শুরু হলো ফেব্রুয়ারি। আর মাত্র ক'টা দিন। তারপর মাঘের সব শীতকে বিদায় জানিয়ে প্রকৃতি নবরূপে সাজবে। শাখায় শাখায় ফুটবে ফুল, গাছে গাছে গজাবে নতুন পাতা, ডালে ডালে ডাকবে পাখি। মোহনীয় আবেশে কাটবে সকাল থেকে সন্ধ্যা। কোনো দ্বিধা না রেখেই মাধবী তার প্রেমিককে বলবে 'শুভ বসন্ত'। জানাবে ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা। এই বিশেষ দিনগুলোতে পোশাকে থাকে অন্যরকম আবেশ। থাকে যুগল ও ম্যাচিং পোশাকের প্রাধান্য। কেননা, পরিপাটি ও সুসজ্জিত পোশাক ছাড়া বিশেষ দিন উদযাপনের কথা ভাবাই যায় না। প্রেমিক-প্রেমিকা, স্বামী-স্ত্রী ছাড়াও এই দিনে বন্ধু, আত্মীয় ও পরিবারের অন্যদের সঙ্গে একই রং ও নকশার পোশাক পরতে পারেন। পরস্পর পরস্পরের কাছে হতে পারেন আরও প্রিয়। একজন অপরজনকে উপহার দিতে পারেন। এতে হৃদ্যতা, বন্ধুতা বাড়বে বৈকি।

বসন্ত মানেই রঙের সমাহার। বসন্ত মানেই চারদিকে বাসন্তী, কমলা, লাল, হলুদ রঙের ছোঁয়া। তাই এ সময় পোশাকের ব্র্যান্ডগুলো অন্য সময়ের তুলনায় ম্যাচিং পোশাক নিয়ে আসে। পোশাকের ব্র্যান্ড সাতকাহন নিয়ে এসেছে ম্যাচিং শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, কুর্তি, পাঞ্জাবি ইত্যাদি। পরিবারের সবার জন্য একই নকশা ও রঙের পোশাক নেওয়া যাবে ব্র্যান্ডটি থেকে। হলুদ ও কমলা রঙের পাশাপাশি সাদা, কালো, পেস্ট, বেগুনি, কলাপাতা সবুজ, হালকা সবুজ, আকাশিসহ অনেক রঙের পোশাক এনেছে ব্র্যান্ডটি।

সাতকাহনের স্বত্বাধিকারী নুরুননাহার নীলা বলেন, 'বসন্তকে যেন পোশাকে ধরে নিয়ে আসতে পারি, সেই চেষ্টা করেছি। এবারের শাড়িগুলোতে বসন্তের ফুল যেমন জারুল, সোনালু ইত্যাদি রাখা হয়েছে। শাড়ির সঙ্গে রঙের মিল রেখে কিছু ব্লাউজ পিসও ডিজাইন করা হয়েছে। ঘটি হাতা, চোলি কাট, কোলি কাট, ফুল হাতা, ম্যাগি হাতা, হাতা কাটা থেকে শুরু করে হাতের কাজের প্রাধান্য রয়েছে। হ্যান্ড প্রিন্টের নকশা রয়েছে এগুলোতে।'

নীলা বলেন, 'এবার আমরা ক্যাসেট থিম নিয়ে কাজ করেছি পোশাকগুলোতে। যুগল পোশাক ও শিশুদের পোশাকে সাইকেলের নকশা করা হয়েছে। পরিবারের চারজন কিংবা পাঁচজন সদস্য থাকলেও, তারা ম্যাচিং পোশাক নিতে পারবেন। সেসব পোশাকে আমরা বসন্তের গান, কবিতা, ডালপালা ইত্যাদি রেখেছি।'
এবারের পোশাকে ক্যাসেট থিম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এই থিম নিয়ে জানতে চাইলে নীলা জানান, অনেকের ছোটবেলা কেটেছে ক্যাসেট শুনতে শুনতে। ক্যাসেটে ভরাট কণ্ঠে প্রিয় আবৃত্তিশিল্পীর কবিতা শুনেছেন অনেকে। শুনেছেন জেমস, আইয়ুব বাচ্চু, রিচার্ড মার্কসের গান। সেই সময় অন্যরকম আবেগ কাজ করত। সেই আবেগ থেকেই পোশাকে এই থিম সংযোজন করা হয়েছে।

পহেলা বসন্তের দিনে নতুন পোশাক পরে ঘোরাঘুরি ও খাওয়া-দাওয়া করা হয়। তাই পোশাকে আরামের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। আরাম ও ফ্যাশন- এই দুটি বিষয়কে মাথায় রেখে ডিজাইন করা হয়েছে এবারের বসন্তের পোশাক। ফ্যাশন হাউসগুলো ভারী কাপড়ের পরিবর্তে ম্যাচিং পোশাকে সুতি, সিল্ক্ক, জামদানি, হাফ সিল্ক্ক, ধুপিয়ান ইত্যাদি কাপড়কে বেছে নেয়। এসব কাপড়ের ওপর করা হয় টাইডাই, ব্লক, ছাপা নকশা, ডিজিটাল প্রিন্ট, হ্যান্ড এমব্রয়ডারি, মেশিন এমব্র্রয়ডারি, কারচুপি, রিবন ওয়ার্ক, ডলার ওয়ার্ক ইত্যাদি।

শাড়ির আঁচল, ওড়নার দুই ধার ও কামিজে টার্সেলের ব্যবহার করা হয়। এতে পোশাকে দ্যোতনা সৃষ্টি হয়।
দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোতেও পাওয়া যায় যুগল পোশাক। প্রতিটি ব্র্যান্ড নিজস্ব নকশা ও থিম নিয়ে পোশাক তৈরি করে। ব্র্যান্ডভেদে দামের তারতম্য হবে। যে কোনো ব্র্যান্ড থেকে যুগল পোশাক কেনা যাবে ৩-৪ হাজার টাকা বা বেশি দামের মধ্যে। চার-পাঁচজনের জন্য একই পোশাক কিনলে দাম আরও বাড়বে। া
মডেল :অদিতি, মিশু, বৃষ্টি, রিত্বকা ও আবিদ; ছবি:সীমান্ত ঘোষ; সৌজন্য:সাতকাহন