- ফিচার
- 'আমাকে দেখলেই পানের নেশা হয়'
'আমাকে দেখলেই পানের নেশা হয়'

প্রতিকৃতি :অরবিন্দ হালদার
হিরোন আলী। গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলায়। অভাবের কারণে চলে আসেন ঢাকায়। ফুটপাতে প্রথম দাঁড়িয়ে পান বিক্রি শুরু করেন। পরে আয় ভালো হওয়ার কারণে বাহারি পানের ব্যবসায় আসেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন ফরিদুল ইসলাম নির্জন
পান বিক্রি শুরু করেন কীভাবে?
ছোটবেলা থেকে পড়াশোনার তেমন সুযোগ ছিল না। অভাবের সংসার। তাই কম বয়সেই কাজ শুরু করি। প্রথম খাট-পালংয়ের কাজ শুরু করি। কিন্তু এ কাজটা অনেক কঠিন। শ্রম বেশি, পারিশ্রমিক অনেক কম। আবার শরীরের ওপর অনেক চাপ আসে। তাই ভাবলাম কিছু একটা করা দরকার। কিন্তু এলাকায় কিছু করতে গেলে টাকা দরকার। এলাকা ছেড়ে রাজধানী উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরে চলে আসি। কম পুঁজিতে কাঁচা সবজির ব্যবসা শুরু করি। সে ব্যবসায় তেমন এগোতে পারিনি। আমি সবজি বিক্রির পাশাপাশি দেখতে থাকি এক লোক কীভাবে পান তৈরি করেন। তাকে বলি, ভাই আমি এ ব্যবসা শুরু করতে চাই। তিনি আমাকে পরামর্শ দেন, ছোট পানের ডালি গলায় নিয়ে ফুটপাতে বিক্রি করতে। আমি সেই পরামর্শ মেনে যানবাহন ও ফুটপাতে পান বিক্রি শুরু করি। গ্রামে এলে গরুর হাটে পান বিক্রি করতাম। পরে এ পেশায় স্থায়ী হই।
সব পান কি এক দিনে বিক্রি করতে পারেন?
পান পচনশীল পণ্য। প্রথম প্রথম বুঝতাম না। কী পরিমাণ পান কিনব আর কী পরিমাণ বিক্রি করব। বেশি লাভের আশায় বেশি পান কিনতাম। কিন্তু সে পরিমাণ পান বিক্রি হতো না। ফলে পান নষ্ট হতো। পরবর্তী সময়ে আমি তা বুঝতে পারি। পরে বাহারি পান বিক্রি শুরু করি।
আপনার কাছে কত ধরনের পান আছে?
আমার কাছে ১০৯ রকমের পানের মসলা আছে। ৩০ ধরনের পান বিক্রি করি। পানের দাম সর্বনিম্ন ১০ ও সর্বোচ্চ ৮০ টাকা।
এসব মসলা কোথা থেকে সংগ্রহ করেন?
মসলা অনেক জায়গা থেকেই সংগ্রহ করি। যে মসলা যেখানে পাওয়া যায়, সেখানেই ছুটে চলে যাই। হিলি, বগুড়া, পুরান ঢাকাসহ অনেক জায়গা থেকেই পান সংগ্রহ করি।
আপনি কোন এলাকায় পান বেশি বিক্রি করেন?
এক সময় উত্তরায় বেশি পান বিক্রি করেছি। তবে এলাকার ওয়াজ মাহফিল ও মেলার সময় পান বেশি বিক্রি করি। আমি যে এলাকাতেই পান বিক্রি করেছি, সেখানে সবার কাছে বেশ পরিচিত হয়ে গেছি। আমাকে দেখলেই পানের নেশা চলে আসে। সবাই এমনই বলে। আসলে আমার কাছে এটা শৌখিন ব্যবসা মনে হয়। শৌখিনতার মাধ্যমে অর্থ আয় করার আনন্দ অন্যরকম। কোনো কোনো বিয়েবাড়িতে আমাকে ভাড়া করে নিয়ে যাওয়া হয় পান পরিবেশন করার জন্য। আমিও বিষয়টি বেশ আনন্দ নিয়েই করি।
আপনার পরিবারের সদস্য কয়জন?
পরিবারের সদস্য সংখ্যা মোট পাঁচজন। দুই ছেলে ও এক মেয়ে এবং আমরা দু'জন।
সন্তানদের এই শৌখিন পেশায় আনতে চান?
না। আমি চাই না সন্তানরা এ পেশায় আসুক। যতই বলি শৌখিন পেশা, সেটা আমার জন্য ঠিক আছে। আমার সুযোগ ছিল না লেখাপড়ার। আমার সন্তানদের তো সুযোগ আছে পড়াশোনার। তারা আদর্শ মানুষ হোক, এটাই চাওয়া।
ক্রেতাদের সঙ্গে মজার কোনো ঘটনা আছে?
আমার এখানে আগুন পান, ধোঁয়া পান বিক্রি হয়। একদিন এক ছেলে এক মেয়েকে নিয়ে পান খেতে এসেছে। ছেলেটি বলল, একটা আগুন পান দেন। কথা শুনে চারপাশের মানুষ জড়ো হন। মেয়েটি সাইডে গিয়ে দাঁড়ায়। যখন আগুন পান ছেলেটির মুখে দেব, তখনই মেয়েটি এসে আমার হাত থেকে পান কেড়ে নিয়ে ফেলে দেয়। আর ছেলেটিকে উদ্দেশ করে বলে, এসব বাদ দাও। তোমার মুখ আমি পুড়তে দেব না। পরে আমাকে বলে, আপনি পানের ব্যবসা করেন নাকি মানুষ পুড়িয়ে মারেন। সবাই হো হো করে হেসে উঠল। ছেলেটি বিব্রত হয়ে মেয়েটিকে নিয়ে চলে গেল। া
পান বিক্রি শুরু করেন কীভাবে?
ছোটবেলা থেকে পড়াশোনার তেমন সুযোগ ছিল না। অভাবের সংসার। তাই কম বয়সেই কাজ শুরু করি। প্রথম খাট-পালংয়ের কাজ শুরু করি। কিন্তু এ কাজটা অনেক কঠিন। শ্রম বেশি, পারিশ্রমিক অনেক কম। আবার শরীরের ওপর অনেক চাপ আসে। তাই ভাবলাম কিছু একটা করা দরকার। কিন্তু এলাকায় কিছু করতে গেলে টাকা দরকার। এলাকা ছেড়ে রাজধানী উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরে চলে আসি। কম পুঁজিতে কাঁচা সবজির ব্যবসা শুরু করি। সে ব্যবসায় তেমন এগোতে পারিনি। আমি সবজি বিক্রির পাশাপাশি দেখতে থাকি এক লোক কীভাবে পান তৈরি করেন। তাকে বলি, ভাই আমি এ ব্যবসা শুরু করতে চাই। তিনি আমাকে পরামর্শ দেন, ছোট পানের ডালি গলায় নিয়ে ফুটপাতে বিক্রি করতে। আমি সেই পরামর্শ মেনে যানবাহন ও ফুটপাতে পান বিক্রি শুরু করি। গ্রামে এলে গরুর হাটে পান বিক্রি করতাম। পরে এ পেশায় স্থায়ী হই।
সব পান কি এক দিনে বিক্রি করতে পারেন?
পান পচনশীল পণ্য। প্রথম প্রথম বুঝতাম না। কী পরিমাণ পান কিনব আর কী পরিমাণ বিক্রি করব। বেশি লাভের আশায় বেশি পান কিনতাম। কিন্তু সে পরিমাণ পান বিক্রি হতো না। ফলে পান নষ্ট হতো। পরবর্তী সময়ে আমি তা বুঝতে পারি। পরে বাহারি পান বিক্রি শুরু করি।
আপনার কাছে কত ধরনের পান আছে?
আমার কাছে ১০৯ রকমের পানের মসলা আছে। ৩০ ধরনের পান বিক্রি করি। পানের দাম সর্বনিম্ন ১০ ও সর্বোচ্চ ৮০ টাকা।
এসব মসলা কোথা থেকে সংগ্রহ করেন?
মসলা অনেক জায়গা থেকেই সংগ্রহ করি। যে মসলা যেখানে পাওয়া যায়, সেখানেই ছুটে চলে যাই। হিলি, বগুড়া, পুরান ঢাকাসহ অনেক জায়গা থেকেই পান সংগ্রহ করি।
আপনি কোন এলাকায় পান বেশি বিক্রি করেন?
এক সময় উত্তরায় বেশি পান বিক্রি করেছি। তবে এলাকার ওয়াজ মাহফিল ও মেলার সময় পান বেশি বিক্রি করি। আমি যে এলাকাতেই পান বিক্রি করেছি, সেখানে সবার কাছে বেশ পরিচিত হয়ে গেছি। আমাকে দেখলেই পানের নেশা চলে আসে। সবাই এমনই বলে। আসলে আমার কাছে এটা শৌখিন ব্যবসা মনে হয়। শৌখিনতার মাধ্যমে অর্থ আয় করার আনন্দ অন্যরকম। কোনো কোনো বিয়েবাড়িতে আমাকে ভাড়া করে নিয়ে যাওয়া হয় পান পরিবেশন করার জন্য। আমিও বিষয়টি বেশ আনন্দ নিয়েই করি।
আপনার পরিবারের সদস্য কয়জন?
পরিবারের সদস্য সংখ্যা মোট পাঁচজন। দুই ছেলে ও এক মেয়ে এবং আমরা দু'জন।
সন্তানদের এই শৌখিন পেশায় আনতে চান?
না। আমি চাই না সন্তানরা এ পেশায় আসুক। যতই বলি শৌখিন পেশা, সেটা আমার জন্য ঠিক আছে। আমার সুযোগ ছিল না লেখাপড়ার। আমার সন্তানদের তো সুযোগ আছে পড়াশোনার। তারা আদর্শ মানুষ হোক, এটাই চাওয়া।
ক্রেতাদের সঙ্গে মজার কোনো ঘটনা আছে?
আমার এখানে আগুন পান, ধোঁয়া পান বিক্রি হয়। একদিন এক ছেলে এক মেয়েকে নিয়ে পান খেতে এসেছে। ছেলেটি বলল, একটা আগুন পান দেন। কথা শুনে চারপাশের মানুষ জড়ো হন। মেয়েটি সাইডে গিয়ে দাঁড়ায়। যখন আগুন পান ছেলেটির মুখে দেব, তখনই মেয়েটি এসে আমার হাত থেকে পান কেড়ে নিয়ে ফেলে দেয়। আর ছেলেটিকে উদ্দেশ করে বলে, এসব বাদ দাও। তোমার মুখ আমি পুড়তে দেব না। পরে আমাকে বলে, আপনি পানের ব্যবসা করেন নাকি মানুষ পুড়িয়ে মারেন। সবাই হো হো করে হেসে উঠল। ছেলেটি বিব্রত হয়ে মেয়েটিকে নিয়ে চলে গেল। া
মন্তব্য করুন