
মডেল: মাফিন; ছবি: মঞ্জু আলম
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আবার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল যেমন কমলা, মাল্টা, লেবু, আঙুর, আনারস ইত্যাদি ত্বকের যত্নে দারুণ উপকারী। লিখেছেন আসমাউল হুসনা
শরীর সুস্থ রাখতে তুলনা নেই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফলের। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে খাবারের এই উপাদানটি। স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে এটি। পূরণ করে ভিটামিন এ ও সি’র অভাব। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মুহূর্তেই ক্লান্তি দূর করে দেয় এক সতেজতা। শরীরের অভ্যন্তরীণ কার্যের পাশাপাশি এটি নিশ্চিত করে ত্বকের সুস্বাস্থ্য ও উজ্জ্বলতা– এমনটাই বলেন পুষ্টিবিদ নাহিদা আহমেদ।
যেসব খাবারে পাওয়া যায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্রীষ্ম থেকে শীত কমবেশি সব ঋতুর মৌসুমি খাবারগুলোতে পাওয়া যায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যেমন আম, স্ট্রবেরি, মাল্টা, আনারস, লেবু, মধু, বাদাম, আপেল, ডার্ক চকলেট ও পেঁয়াজ।
রূপবিশেষজ্ঞ ফারহানা রুমি বলেন, সতেজ ত্বকের ক্ষেত্রে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অত্যন্ত কার্যকর। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে এমন সব ফল দিয়ে ত্বকের যত্ন নেওয়া যায় খুব সহজেই।
লেবু: একটি লেবুর অর্ধেক অংশ কেটে তার রস বের করে নিন। এবার এর সঙ্গে ১০ টেবিল চামচ দুধ মিশিয়ে নিন। এবার মিশ্রণটি মুখে ধীরে ধীরে ম্যাসাজ করুন। এর পর ২ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
মধু: দুই চা চামচ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে নিন এক চা চামচ দারচিনি গুঁড়া। মিশ্রণটি মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। ত্বকে টানটান অনুভূত হলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে দূর হবে ব্রণ ও ব্রণের কালো দাগ এবং পোরস।
মাল্টা: তৈলাক্ত ত্বক ভালো রাখতে মাল্টার রসের আইস কিউব পুরো মুখে ঘষুন। মাল্টা ক্লিনজার হিসেবেও সহায়ক। এ ক্ষেত্রে মসুর ডাল ও চাল মাল্টার রস দিয়ে ভিজিয়ে রেখে গুঁড়া করে নিন। এর পর স্ক্রাবের মতো ম্যাসাজ করুন। শুষ্ক ত্বকের জন্য মাল্টার রসের সঙ্গে গাজরের রস ভালো কাজ করে।
স্ট্রবেরি: ২-৩টি স্ট্রবেরির সঙ্গে ২ চা চামচ মধু ও কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট করে মুখে লাগান। ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এই মাস্ক ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার করে উজ্জ্বল এবং সুন্দর করে তুলবে। স্ট্রবেরি চুল ঝরা রোধেও সহায়ক। এটি চুলকে করে প্রাকৃতিকভাবে সিল্কি।
আঙুর: দৃষ্টিনন্দন ও রসালো ফল আঙুর। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকে ফেলে জাদুকরী প্রভাব। ক্লিনজার হিসেবে আঙুর খুবই কার্যকর। খুব সহজে ঘরে বসে ত্বক ক্লিনজিং করতে দুই থেকে তিনটি আঙুর নিন। এবার আঙুরগুলো দুই ফালি করে কেটে চোখ আর ঠোঁটের অংশ বাদ দিয়ে সারা মুখে আঙুরের রস লাগিয়ে নিন। রস লাগানোর কিছু সময় পর মৃদু উষ্ণ পানি দিয়ে মুখটা ধুয়ে ফেলুন। এই পদ্ধতিতে আপনি সব ধরনের ত্বকের ক্লিনজিং করতে পারবেন।
আনারস: ত্বকের মৃত কোষ, বলিরেখা, ফাইন লাইন, ত্বকের উপরিভাগের ময়লা ও সানবার্নের মতো দাগ তুলতে সাহায্য করে আনারস। এমনকি আনারসের ফেসিয়াল মাস্ক ত্বকে ব্রণের বিরুদ্ধে ভালো কাজ করে। কয়েক টুকরা আনারসের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ দুধ মিশিয়ে মসৃণ পেস্ট তৈরি করে নিন। পেস্টটি গলায় এবং মুখে সমানভাবে লাগিয়ে আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি সপ্তাহে দু’বার ব্যবহার করলে পাবেন নমনীয় ও সতেজ ত্বক।
জলপাই: নিয়মিত জলপাই তেল ম্যাসাজ আপনাকে দেবে নমনীয় ত্বক। তাই প্রতিদিন ঘুমানোর আগে অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করুন।
কাঠবাদাম: ত্বকের বলিরেখা দূর করতে কাঠবাদামের তেল খুবই উপকারী। মধু, লেবু, কাঠবাদামের তেল মিশিয়ে মুখে মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করলে ত্বক হয়ে উঠবে দীপ্তিময়।
আপেল: ব্রণ দূর করতে আপেল খুব ভালো কাজ করে। সে ক্ষেত্রে অর্ধেকটা আপেল কুচি করে ২ টেবিল চামচ মধু ও ৫ ফোঁটা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে নিন। ব্রণ আক্রান্ত ত্বকে লাগান প্যাকটি। ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন একবার করে এটি ব্যবহার করলে পাবেন ব্রণমুক্ত ত্বক।
ত্বক উজ্জ্বল করতে ১ টেবিল চামচ থেঁতলানো আপেল, ১ চা চামচ গাজরের রস, ১ চা চামচ কমলার রস ও ২টি ভিটামিন-ই ক্যাপসুল ও কয়েক ফোঁটা গোলাপজল একসঙ্গে মেশান। ফেসওয়াশ দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে মিশ্রণটি লাগান। ২০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ত্বক। ত্বক হবে উজ্জ্বল ও সুন্দর।
বিষয় : রূপচর্চা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
মন্তব্য করুন