
‘মোড় ঘুরতেই আগুনের এক ঢিলা’– এই আগুনের ঢিলাটি, যে মোড় ঘুরে চলে গেলেন– তিনিই মাধবী।
তাকে দেখেছিলাম একবার সুগন্ধা নদীর তীরে ধু-ধু করা বিস্তীর্ণ ধানক্ষেতের সবুজ আলপাড়ে, হেঁটে যেতে। তাকে দেখেছিলাম একবার বরিশালের গৈলা স্কুলের কাঁঠালবাগানে পা দুলিয়ে বসতে। তাকে দেখেছিলাম নিউমার্কেটের কাছে স্টার হোটেলের দোতলায়, উঠে যাবার পূর্ব মুহূর্তে। তাকে, মানে মাধবীকে দেখেছিলাম ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে, একটি পুরোনো গলির ভিতর দিয়ে হেঁটে যেতে। তাকে দেখেছিলাম একদিন ভোরবেলা আমার দরজায়, কিন্তু সে ভিতরে আসে নাই। তাকে দেখেছিলাম সন্ধ্যার দিকে শিল্পকলা একাডেমিতে প্রবেশ করতে। আরেকদিন সদরঘাটের পন্টুনে দাঁড়িয়ে থেকে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চের জানালায় দেখেছিলাম মাধবীকে। মাধবী এখন মেধা ও মননের উর্বরতায় আরও বেশি হৃদয়গ্রাহী– একদিন রফিক আজাদ মাধবীকে নিয়ে যে হৃদয় ও মস্তিষ্কের হতাশা ব্যক্ত করেছিলেন, এর পর মাধবীকে নিয়ে যদি আরও বলাবলি করি–
মাধবী আসলে কে? আমাদের অপূর্ণতা? আমাদের আকাঙ্ক্ষা? আমাদের কৈশোর, যে চুপ করে যৌবনে ঢুকে পড়ে? নাকি মাধবী এক উৎসব, যেখানে আমার নিমন্ত্রণ নেই বলে আফসোস করি। নাকি মাধবী এক কবরস্থান, যেখানে একটি শিউলি ফুলের গাছ বাসনা করি? নাকি একটি শ্মশানঘাট যেখানে অনিচ্ছায় পুড়ে মরি?
মাধবী আসলে কে? আমাদের গালে পাকা দাড়ি যে কাঁচা থাকতে চেয়েছিল? নাকি আমাদের কমনীয় শৈশবের ত্বক, যে বৃদ্ধের গালে লেগে থাকতে চেয়েছিল? মাধবী আসলে কে? সে কি আমার বাহুর ওপাশে শোয়। সে কি আমার বধূ যে অন্যের বাড়ি যায় আমার আঙিনা দিয়া? মাধবী আসলে কে? যার সঙ্গে দিনরাত্রি জেগে থাকি? নাকি যার সঙ্গে এখনও জেগে থাকতে পারি নাই বলে, সে এখন হতেছে মাধবী?
আচ্ছা, মাধবীকে নিয়া শুধু মাধবীর মাধুরীই কেন বলছি! তাকে একটু গালাগালি করি। যেহেতু এখনও ধরতে পারি নাই তার হিয়া। সে সম্ভবত পরকীয়া। সে সম্ভবত, চিত্রকল্প। সে সম্ভবত তার না-ভালো লাগাকে বোঝাতে চেয়েছিল, আমাকে তার উরত দেখাতে নিয়া। সে সম্ভবত প্রবাসী, তাই সে দেশির সঙ্গে ফোনে আলাপরত। সে সম্ভবত বিবাহ করতে চায়নি, যদিও সে বিবাহিত। সে সম্ভবত রাশিয়ায় জন্মাতে চায়নি, তাই মরছে ইউক্রেনে গিয়া। সে সম্ভবত একটি অনাকাঙ্ক্ষিত শিশু, যে নিজেই জন্মাতে চায়নি– অথচ মাধবীকে না পাওয়ায় তাকে জন্ম দিয়ে এখনও বিব্রত। তাহলে মাধবী একটি বিব্রত বিষয়। তাহলে মাধবী একটি ইউটোপিয়া– রাষ্ট্রের ধারণা যত। সে এখনও অপরিণীত– না হলে সে কেন অন্য যুবকের হাত ধরে যায়, জীবনানন্দ দাশের সুরঞ্জনার মতো!
মাধবী সম্ভবত স্পেনে থাকে, যেখানে পাবলো নেরুদা থাকত। কিন্তু সে ভারতবর্ষে এসেই তার অধরা মাধবীকে দেখিত। মাধবী সম্ভবত ভারতে জন্মগ্রহণ করেছিল, যেখানে রবীন্দ্রনাথ গানের কথায় কথায় তাকে ধরতে যেত। মাধবী সম্ভবত কার্ল মার্কসের ঈশ্বরমগ্ন কবিতা, যেখানে ঈশ্বর ও দাসের ব্যবধান দাস ক্যাপিটালেই রচিত। মাধবী একটি কমা যাচনা করে, মাধবী সেমিকোলনও চায়, আমরা রচনা করি মাধবীকে নিয়া– মুহূর্তের বাসনায়।
আরও কথাবার্তা আছে মাধবীকে নিয়া, যে হিমালয়ের সর্বোচ্চ চূড়াকে ছুঁতে গিয়ে পারে নাই, কিন্তু কাছ থেকে দেখেছে চূড়াটাকে– ওই চূড়া না ছুঁতে পারার বাসনাটাই। তাহলে মাধবী বসে আছে না ছুঁতে পারার বাসনাতেই। যেমন কৃষ্ণ ষোলোশ গোপিনীকে ছুঁতে যেয়ে ছুঁয়েছে কি রাই?
এ যুগে যেমন তোমার অন্তর ছুঁতে চেয়ে, ছুঁয়েছি শুধু হাতটাই। ছুঁইতে চেয়ে যা যা আমি ছুঁইতে পারি নাই– তাহাদের শিরোনাম দিয়েছি মাধবী। সে কারণে সম্ভবত মাধবী এসেই বলে, যাই। সে বেশিক্ষণ থাকে না। মুহূর্তে আসে মুহূর্তেই মিলায়ে যায়।
একবার, সম্ভবত ২০০০ সালে জাপান দেশের পুতুলের প্রদর্শনী হয়েছিল বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে, তারিখটা মনে নেই বলে উল্লেখ করা গেল না। সেই প্রদর্শনীতে জাপান সাম্রাজ্যের ধারাবাহিক বর্ণনা ছিল পুতুলের ভাষায়। নানান রঙের, নানান বয়সের পুতুল দিয়ে যেন জাপান সাম্রাজ্যের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছিল প্রদর্শনীতে। ছেলে পুতুল, মেয়ে পুতুল, বাবা পুতুল, মা পুতুল, সৈনিক পুতুল, সম্রাট পুতুল, সম্রাজ্ঞী পুতুল, রাজপুত্র পুতুল, রাজকন্যা পুতুল, আরও কত রকমের পুতুলের সমারোহ! পুতুলের মধ্য দিয়ে যেন এক জীবন্ত ইতিহাস প্রদর্শিত। সে স্মৃতি আজও মনের কর্নারে বয়ে বেড়াচ্ছি! কিন্তু পুতুল তো পুতুলই। দেখতে যদিও চোখের আরাম লেগেছিল খুব। বাস্তবতা ছিল, বেদনা ছিল, সৌন্দর্যও ছিল। বাস্তবতা বলতে একটি গ্রামের বর্ণনা, বেদনা বলতে হিরোশিমার ভয়াবহতা আর সৌন্দর্য বলতে কোনো এক সম্রাজ্ঞীর লাবণ্যখচিত রূপের ঝলকানি।
সম্রাজ্ঞীর কথাই বলি। কানে দুল, মাথায় মুকুট। রাজকীয় আভিজাত্যের পোশাকে আচ্ছাদিত এই পুতুল মারফত বর্ণিত কাহিনিতে শুধু জীবন ছিল না। আমার একটা সচল চিত্রে প্রতিবেদন করার দায়িত্ব হেতু আমি এই পুতুল প্রদর্শনী দেখতে গিয়েছিলাম। স্থির বিষয় দিয়ে সচল চিত্র তৈরি করা সত্যিই কঠিন। অনেক দেখলাম আর অনেক ভাবনা এলো মাথায় কিন্তু সময় বয়ে যায়, সচল চিত্রের প্রতিবেদন তৈরি করা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। বসে আছি, হঠাৎ চোখ পড়ল অনতিদূরে একটি স্ট্যান্ড ফ্যানের ওপর। ফ্যানটি থেকে বাতাস বইছিল মিলনায়তনের এক কর্নারে। গরম পড়েছে বেশ। আমি বুকের বোতাম খুলে ফ্যানের অনতি কাছে দাঁড়াতেই চোখ কেড়ে নিল জাপান সম্রাজ্ঞীর কানের দুল। বেশ বড়, গোলাকৃতির দুলের কারুকার্য এখনও আমার চোখে লেগে আছে। ফ্যানের বাতাসে সম্রাজ্ঞীর কানের দুলজোড়া এমন মৃদু দুলছিল, মনে হলো এই আমি সত্যিকারের সম্রাজ্ঞীর দেখা পেলাম, তার চোখে চোখ পড়ল, বাতাসে মৃদু উড়ছে দারুণ কালো চুল। মনে হলো তার হাত ধরে চুম্বন করি, যেভাবে সম্রাজ্ঞীর হাত ধরে প্রজা ও প্রতাপশালীরা জানু পেতে আলতো করে চুমু খায়! মুহূর্তেই মৃত এই পুতুলগুলি যেন আমার চোখের ভিতর জীবন্ত হয়ে উঠল। আমি দেখলাম কোনো এক মাধবীকে, যার মাধুরীতে আমার চোখ জ্বলজ্বল করে উঠল। হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেল, আর মাধবী চলে গেল! ফিরতে ফিরতে আমার মনে পড়ল কবি রফিক আজাদের সেই পঙ্ক্তি– মাধবী এসেই বলে যাই।
আজ বহুদিন পর আবার মনে হলো মাধবী কি আসে, না যায়? না এলে তো যাওয়াও হয় না! আর যদি আসেই, এসে কেন মুহূর্তেই চলে যায়! এই বিস্ময় নিয়ে আমার কেটে যাচ্ছে অমেয় সময়, যুগের পর যুগ।
মাধবীর সঙ্গে সর্বশেষ দেখা হয়েছিল গত বিষ্যুৎবারে। উত্তীর্ণ সন্ধ্যায় ঢাকা শহরের উন্নয়নশীল পাড়ার একটি আলো-আঁধার ঘেরা রেস্তোরাঁয় বসেছিলাম। হঠাৎ একটি ছেলে আর একটি মেয়ে হাত ধরাধরি করে সিঁড়ি বেয়ে উঠল দোতলায়। আমি বসেছিলাম দোতলা ওঠার সিঁড়ি-সংলগ্ন প্যাসেজে। পাশ দিয়ে কতজন উঠে আসে নেমে চলে যায়– কারও দিকে তাকাই, কারও দিকে চোখই লাগে না। কিন্তু ওই যুবকের হাত ধরে থাকা মেয়েটির চোখে যখন আমার চোখের মুহূর্ত পড়ল আর সে নিমেষে ঘোরাল তার অপরূপ দেহখানি– আমি স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলাম তার চলে যাবার দিকে। ফ্যানের বাতাসে তার চুলের হঠাৎ ওড়া, আঁধারের গায়ে হঠাৎ কয়েক ফোটা আলোর সন্নিবেশ তার মুখের মধ্যে যে মাধুরী রচনা করে গেল। যেন স্লো-মোশনে সে আমার অন্তর চোখে আজও জীবন্ত হয়ে আছে। তারপর তাকে আবার দেখব বলে কয়েক ঘণ্টা বসে থাকার পর যখন সে নিচে নেমে গেল, তার সঙ্গে আমার দেখা সেই মাধবীর কোনো মিল খুঁজে পাইনি। মাধবী মানেই কি হঠাৎ কিছু?
মাধবী তো একটি গাছও। মাধবী গাছকে কতজনে মনে রেখেছে এ বাংলায়, ভূ-ভারতে? নিসর্গপ্রেমীরা হয়তো তাকে কিছুটা রেখেছে মনে, কিন্তু আর সব প্রেমী মাধবীর গন্ধেরই তারিফ করে। সে শুধু বসন্তে ফোটে। সারা বছর ধরে মাধবী গাছ তাকে রচনা করে। কিন্তু ফাল্গুনে সে কয়েকদিনের জন্য ফোটে, তারপর ঝরে যায়। মাধবীর অবলম্বনকে আর কেউ মনে রাখে না তার মালী ছাড়া।
আপনাদের নিশ্চয়ই একটি গানের কথা মনে আছে। প্রণব রায়ের কথা, সুবল দাশ গুপ্তের সুরে এবং জগন্ময় মিত্রের গলায়। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কাহিনি দেবদাস চলচ্চিত্রে ব্যবহার করা হয়েছিল। ‘সেখানে দেখা যায় মাধবী গাছের তলায় দাঁড়িয়ে আছেন দেবদাস, মানে উত্তম কুমার (সাদা কালোয় নির্মিত হওয়ার জন্য আমি কিছুটা বিভ্রান্ত, এটা মাধবীতলায় কিনা)। সুচিত্রা সেনের উদ্দেশে এই গান গীত হচ্ছে জগন্ময় মিত্রের কণ্ঠে, দৃশ্যে নির্বাক উত্তম কুমার। ‘যে মাধবীতলে দাঁড়ায়ে/ প্রথম বলেছিলে ভালোবাসি/ আজও সে লতায় ফুল ফোটে হায়/ তেমনি বাজে গো বাঁশি/ তুমি আজ কত দূরে।’ এই যে মাধবীতলায় দাঁড়িয়ে কথা দেওয়া, কথা দিয়েছিলেন মাধবী ফুল মানে পার্বতী, সুচিত্রা সেন। আর কথা গ্রহণ করেছিলেন দেবদাস, মানে মাধবী গাছ, মানে উত্তম কুমার। মাধবী গাছটি এখনও দাঁড়িয়ে আছে, মাধবী ফুল সেই বসন্তে কবেই ঝরিয়া গেছে। মাধবী নিয়ে এখনও যে দাঁড়িয়ে রয়েছে সে মাধব। এই যে মাধবের মনে মাধবী লাগিয়া আছে– এটাই হয়তো মাধবীর সুর– হঠাৎ এসে হঠাৎই চলে যাওয়া।
মাধবী প্রসঙ্গে যত কথাই লিখি, সে হয়তো ধরাই দেবে না। সে আসলে অধরা। আমরা মূলত তারাই যারা অধরাকে ভালোবাসি। ধরা দিলে তাকে আর ভালোবাসি না। কে জানি লিখেছিলেন, ‘তুমি অধরা মাধুরী।’ আমি একটু যোগ করে বলব, মাধবী এক অধরা বিস্ময়। তাকে যদি ধরতে যাই, পাইতে চাই, ছুঁইতে চেয়ে ঘুরি– আমার হাতে আমিই ধরা পড়ি।
আবার ধরুন, এই আমাদের প্রিয়তম স্রষ্টার কথা। তাঁর সৃষ্টিতে কত কত মাধুরী রচনা করেছেন, হঠাৎ মেঘ আসে, হাওয়া হয়ে যায়। হঠাৎ মেঘ থেকে বৃষ্টি আসে, বৃষ্টিও থেমে যায়। এই মেঘ, এই রোদ্দুর। এই আলো, এই অন্ধকার। এই কাছে, এই সুদূর।
হঠাৎ দিনান্তে কড়া রোদের সূর্য কি শান্তভাবে দিগন্ত রাঙায়ে ডুবে যায়। এইসব দৃশ্য দেখে আমরা আফসোস করে বলি, আহা! অপূর্ব! কিন্তু এই স্রষ্টাকেই আমরা ধরতে পারি না, ছুঁয়ে দেখতে পারি না। এই না পারাকেই বলি অধরা। আর অধরাকে ধরতে পারা ও না-পারার মুহূর্তটিই আসলে মাধবী।
ভোরের ক্ষণস্থায়ী আকাশ মুহূর্তেই রং বদলায়, দুপুর সে দ্রুত বিকেলের পাটে বসে। সন্ধ্যার মোহন রূপ দ্রুত নিভে যায়। অস্তগামী সূর্যকে দেখব দেখব বলে অস্ত যেতে যেতে টুপ করে চলে যায়। এইভাবে কি মাধবীও যায়? আকাশের কোজাগরি পূর্ণিমাতে যে মুষলধারা মাধবীর দেখা পাই, অন্য পূর্ণিমাতে তা পাই না কেন। আজও এই প্রশ্ন অমীমাংসিত।
দেখতে দেখতে মাধবী ডুবে গিয়েছিল কুয়াকাটায়, ১৯৮৮ সালে। তার প্রেমিক তখন আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের ভিড়ে। মাধবী মানে আমার ক্লাসমেট, কাঁকন। আর কোনোদিনই তার সঙ্গে দেখা হবে না, কিন্তু দেখা হতো যখন, বলত না কিছুই– ওর এই না বলা চোখেই ছিল মাধবীর বাস ... যদিও মাধবীর কোনো ঠিকানা থাকে না। হঠাৎ হাওয়ার মতন– আসে আর যায়, যায় আর আসে না– সম্ভবত সে এমন। তাকে নিয়ে তোমরা স্টোরি করো দৈনিকের পাতায়। তাকে নিয়া আমরা বিউটি বোর্ডিংয়ে গিয়া আলাপ করি যখন তখন। কিন্তু সেখানেও এখন দেখতে যেতে পয়সা লাগে। সেখানকার টেবিলে যখন সকালবেলা আমি বসে থাকি, একজন মাধবী এসে বলে আমি চা খাব, পত্রিকায় আপনার ছবি দেখে চিনেছি আপনি আলফ্রেড খোকন। আমি মাধবীকে চা খাওয়াই। সে আমার পাশে বসে, আমি মাধবীর ঘামের গন্ধ পাই। ঘামের গন্ধ তো চায়ের গন্ধের অধিক দাম দিয়ে আমি কিনে নিতে চাই। এ জীবনে মাধবীর কোনো সীমা-পরিসীমা নাই। যে আমাকে বলে তোমার মৃদু ঘামের গন্ধ ভালো লাগে। আবার যে আমাকে বলে তোমার তীব্র গন্ধ আমার ভালো লাগে না। তাহলে মৃদু ও তীব্রের মাঝে যে ব্যবধান সেই কি মাধবী? মাধবী প্রসঙ্গে আমি চিরকাল দ্বিধান্বিত।
মাধবীকে নিয়ে লিখতে লিখতে আমার বারবার মনে হচ্ছে, মাধবী সম্ভবত নিবের নয়, চোখের। মাধবী সম্ভবত দেহের নয়, মনের। মাধবী সম্ভবত ঠোঁটের নয়, ওষ্ঠের। মাধবী সম্ভবত কারও নয়, মুহূর্তের।
হয়তো আবার কোনো একদিন শহরের রেস্তোরাঁয় মাধবী এসেই বলবে, ‘যাই’।
মন্তব্য করুন