- ফিচার
- বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে মেট্রোরেলে চড়ে উচ্ছ্বসিত সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে মেট্রোরেলে চড়ে উচ্ছ্বসিত সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা

ছুটির দিনে মেট্রোরেলে যাত্রীর ভিড় বাড়ে। তাদের বড় অংশই শিশু, যারা বাবা-মায়ের সঙ্গে ট্রেনে চড়ার আনন্দ উপভোগে আসে। কিন্তু স্মৃতি, ঝুমুর, রাকিবা, লামিয়া, সাদিয়া, আফরোজারা আসতে পারে না। কারণ, তাদের বাবা-মা নেই। তাদের ঠিকানা এতিমখানা। কে নিয়ে আসবে? জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে সুবিধাবঞ্চিত এ শিশুদের মেট্রোরেলে চড়ার শখ পূরণ হলো।
শেখ রাসেলের জন্মদিনে যে ছাদখোলা বাসে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পদ্মা সেতুতে ঘোরানো হয়েছিল, সেই বাহনে করে শুক্রবার ৭০ অনাথ শিশুকে আনা হয় আগারগাঁওয়ে। এখান থেকে শুরু হয় তাদের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ট্রেন ভ্রমণের আনন্দযাত্রা। ১৭ মিনিটে ট্রেনটি দিয়াবাড়ী স্টেশনে পৌঁছে। সেখান থেকে তারা আবার ফিরতি ট্রেনে আসে আগারগাঁওয়ে। আবার ছাদখোলা বাসে যায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে। সেখানে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে তারা জানে জাতির পিতা সম্পর্কে। এর আগে দিয়াবাড়ী মেট্রোরেলের প্রদর্শনী কেন্দ্রে কেক কেটে উদযাপন করে বঙ্গবন্ধুর ১০৪তম জন্মদিন।
মিরপুর ও তেজগাঁওয়ের দুটি সরকারি শিশুনিবাসের বাসিন্দা এ অনাথ শিশুরা। সকাল সাড়ে ৯টায় তারা আসে আগারগাঁও স্টেশনে। মেট্রোরেল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ডিএমটিসিএলের উদ্যোগে তাদের চড়ানো হয় মেট্রোরেলে। সঙ্গে ছিলেন সড়ক পরিবহন বিভাগ, বিআরটিসির কর্মকর্তারা। স্টেশনে দোতলায় লাইন ধরে টিকিট নেয় শিশুরা। তাদের চোখেমুখে ছিল মেট্রোরেলের চড়তে যাওয়ার উত্তেজনা-উচ্ছ্বাস।
লামিয়া থাকে তেজগাঁওয়ে। পড়ে ক্লাস ফোরে। মেট্রোরেলের টিকিট হাতে উঁচিয়ে সে জানাল, এতদিন টিভিতে মেট্রোরেল দেখেছে। কিন্তু তাকে কেউ নিয়ে না আসায় মেট্রোরেলে চড়তে পারেনি। আজ সেই ইচ্ছা পূরণ হচ্ছে।
লাল পোশাকের ওপর বঙ্গবন্ধুর ছবিসংবলিত টিশার্ট পরা ৭০ শিশুকে নিয়ে বিদ্যুৎচালিত মেট্রোরেলের ট্রেন সকাল ১০টায় যাত্রা করে আগারগাঁও। ট্রেন ছাড়ার পর উচ্ছ্বাস আরও বাড়ে শিশুদের। বসার আসন ছেড়ে জানালা দিয়ে তারা বাইরের দৃশ্য দেখতে থাকে। ‘শিশুরা স্লোগান দিচ্ছিল, শুভ শুভ শুভদিন, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন।’
দিয়াবাড়ী স্টেশনে নেমে ঝুমুর জানাল, মেট্রোরেল অনেক সুন্দর। ভেতরটা কী ঠান্ডা! খুব ভালো লেগেছে ট্রেনে চড়ে।
শিশুরা ঘুরে দেখে দিয়াবাড়ীর সুবিশাল স্টেশন। এরপর তারা যায় প্রদর্শনী কেন্দ্রে। সেখানে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আখতার এবং বিআরটিসি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম। তাঁরা শিশুদের শোনান বঙ্গবন্ধুর কথা।
নীলিমা আখতার বলেন, শিশুদের নিয়ে এ ব্যতিক্রম আয়োজন করায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ। বিআরটিসির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম জানান, সাফজয়ী নারী ফুটবল দলের জন্য একটি দ্বিতল বাস কেটে ছাদ খোলা হয়। পরে আরেকটি ছাদখোলা বাস তৈরি করা হয়েছে। একটি বাস দিয়ে শেখ রাসেল দিবসে শিশুদের পদ্মা সেতুতে ঘোরানো হয়েছে। সেটি এখন পদ্মা সেতু ভ্রমণে স্থায়ীভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন