
জ্বর নিজে কোনো অসুখ নয়। জ্বর জ্বরের চেয়ে গভীরতর কোনো ঘটনার বার্তাবহ। সে জানান দেয় শরীরে কোনো ঘটনা ঘটেছে, শরীর লড়াই শুরু করেছে। সে লড়াই যত প্রবল জ্বরের মাত্রাও তত। সে লড়াইয়ে জ্বর ব্যর্থ হলে জ্বর নিজেই হয়ে উঠতে পারে এমনকি মৃত্যুরও বার্তাবাহী।
বাংলা জ্বর শব্দটি এসেছে সংস্কৃত জর্+অ থেকে। শব্দটি বিশেষণ। অর্থ অঙ্গে তাপ ও মনে চাঞ্চল্য বৃদ্ধিকারক রোগ। এটি আয়ুক্ষয়কারী। জরা শব্দটি জ্বরেরই সমগোত্রীয়। যদিও তার পুরাণ আলাদা। জ্বরের ইংরেজি প্রতিশব্দ ফিভার। যে শব্দটি এসেছে ল্যাতিন ফেবরিস শব্দ থেকে। ইন্দো ইউরোপীয় ভাষা এ শব্দটির মূল মানে পোড়ানো। ফেসরিস ছিলেন জ্বরের রোমান দেবী। তার আরাধনার জন্য রোমে তিনটি মন্দির স্থাপিত হয়েছিল। লোকের জ্বর হলে সে জ্বর গায়ে নিয়ে সে মন্দিরগুলোতে যেত। গিয়ে দেবীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করত। জ্বরের দেবীর স্তুতি গাইত। আরোগ্য লাভ করলে মনে করা হতো দেবীর কৃপা লাভ হয়েছে। ফেবরিসের ছিল আবার দুই বোন। তারতিয়ানা আর কোয়ারতানা। তারতিয়ানা শব্দটি এসেছিল তিন থেকে। আর কোয়ারতানা শব্দটি চার থেকে। লোকে মনে করত যে জ্বর তিন দিন পর আসে সেটি দেন তারতিয়ানা আর যে জ্বর চার দিন ধরে চলে সেটি দেন কোয়ারতানা। তাদের পিতার নাম স্যাটার্ন। শব্দটি থেকেই বোঝা যাচ্ছে তিনি অশুভ আত্মা।
প্রাচীন মানুষেরা জ্বরকে মনে করত অশুভ আত্মার ভর। মনে করা হতো নির্জন স্থানে, বনে বা বিশেষ স্থানগুলোতে মন্দ বাতাস বয়। সে বাতাস গায়ে লাগলে জ্বর আসে। কথাটার মধ্যে খানিকটা সত্যও আছে। ঠান্ডা বাতাস লাগাও জ্বরের একটি কারণ বটে। কিন্তু প্রাচীন লোকেরা এর সাথে কল্পনা করে নিয়েছিল অশুভ আত্মার চলাচল হিসেবে। অধিকাংশ মহামারি রোগের একটি অন্যতম লক্ষণ জ্বর যুক্ত হওয়া। প্লেগ, কলেরা, যক্ষ্মা, ইনফ্লুয়েঞ্জা, গুটিবসন্ত থেকে সাম্প্রতিক করোনা মহামারি পর্যন্ত। প্লেগ অব এথেন্স প্রসঙ্গে খ্রিষ্ট জন্মের প্রায় চারশ বছর আগে ঐতিহাসিক থুসিডিডিস লিখছেন– সুস্থ সবল মানুষের হঠাৎ গা গরম হয়ে যাচ্ছিল। চোখ লাল হয়ে উঠছিল। জিব ও গলা লাল হয়ে ফুলে যাচ্ছিল। শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। প্রলাপ বকতে বকতে মানুষ মরে যাচ্ছিল। কালো মৃত্যু ও আর হলুদ মৃত্যুর মহামারির ইতিহাসেও জ্বর জড়িয়ে ছিল।। সর্বশেষ করোনা মহামারির মূল লক্ষণই তো জ্বর।
গ্রামবাংলায় নানা মহামারি এলে হোক সে বসন্ত, ওলাওঠা, কলেরা মানুষ শনি মঙ্গলবার ত্রি-সন্ধ্যায় ত্রি-পথের মাথায় সাদা কাপড় পরা বুড়িকে দেখতে পেত। জ্বর তীব্র হলে সে বুড়িকে মানুষ রোগীর শিয়রে বসা দেখতে পেত। এ বুড়িকে তাড়ানোর জন্য সেই শনি মঙ্গলবার ত্রি-সন্ধ্যায় ত্রি-পথের মাথায় আগুন জ্বালানো হতো ঝাড়– ঝুলিয়ে রাখা হতো। শীতলা দেবীর ধারণা মধ্যযুগের কাব্যে বড় স্থান জুড়ে ছিল।
ম্যালেরিয়ার ইতিহাস অনেক প্রাচীন। মশার কামড় থেকেই তা হয়। ম্যালেরিয়া হলে মানুষ দীর্ঘদিন ধরে জ্বরে ভুগত। সে সময় চলত তার ঝাড়ফুঁক। করা হতো নানা কৃত্য। এর সাথে পরে যুক্ত হয় নানা গাছগাছড়ার শেকড় পাতা খাওয়ানোর রীতি। যা আসলে হেকিমি চিকিৎসার আদিরূপ।
জ্বরকে প্রথম অনেকটাই বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যাখ্যা করেন পারসিয়ান চিকিৎসক ইবনে সিনা। পরে ইতালিতে এ সংক্রান্ত ধারণা আরও উন্নত হয়। কিন্তু জ্বর নিয়ে এখনও মানুষের বেশ গোলমেলে। শিশুর জ্বর হলে মানুষ একরকম প্রতিক্রিয়া দেখায়, বৃদ্ধের হলে আরেক রকম।
জ্বরের মাত্রা তীব্র হলে মানুষের ঘোরের মধ্যে চলে যাওয়া একটি সাধারণ প্রবণতা। ঘোরের মধ্যে প্রলাপ বকার ঘটনাও ঘটে। জ্বর হলে জ্বরের তাপমাত্রা কমানোর ঔষধের পাশাপাশি সাধারণত নানা অ্যান্টি এলার্জিক ঔষধ দেওয়া হয়। এ ঔষধগুলো এক ধরনের ঘুম ঘুম, ঝিমানো, ঘোরদশা তৈরি করে।
জ্বর কষ্টদায়ক হলেও এই ঘোরলাগা দশা সৃষ্টিশীল মানুষের জন্য বেশ সৃষ্টিশীল ক্ষণও বটে।
২.
দেবী ফেবরিসের নজর শৈশব থেকেই আমার ওপর ছিল। তার দুই বোনও যে আমাকে যে বেশ ভালোবাসতেন সেটাও মাঝে মাঝে ভালো করেই টের পেতাম। তাদের আমার ওপর এই সুনজরের মূল উপলক্ষ ছিল মূলত আমার ঠান্ডা গরমের তীব্র এলার্জি প্রবণতা। এটাতে খুব ভুগি আমি। শৈশব থেকেই আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় নিশ্চিতভাবে প্রথমে হাঁচি কাশি শুরু হতো আর শেষ হতো জ্বর দিয়ে। এটি লেগেই থাকত। পরে যুক্ত হয় সাইনোসাইটিস। সেটিরও চূড়ান্ত রূপ জ্বর মাথা ব্যথা। এসএসসি পরীক্ষার আগ অবধি গ্রামে থাকার দিনগুলোতে আমাদের বাঁধা ডাক্তার ছিলেন গ্রামের বাজারের ফার্মেসির বিক্রয়কর্মীরা। সে সময় একটি কমন ওষুধ ছিল ফেনারগান নামে ঝিমলাগানো তরল। এটা পরে নেশার পানীয় হিসেবে ব্যবহার করা শুরু হলে নিষিদ্ধি হয়। জ্বরের মাত্রা বেশি হলে বা দীর্ঘস্থায়ী হলে নিয়ে যাওয়া হতো শমসেরনগর বাজারে। সেখানে ছিলেন একজন বড় ডাক্তার। নাম এই মুহূর্তে ঠিক মনে পড়ছে না। তার বাসার সামনের বসার বিরাট ঘরটিই ছিল তার চেম্বার। রোগীতে গিজগিজ করত। পেটমোটা, টাকমাথা ফর্সা মানুষ। সাদা ধুতি আর খাটো পাঞ্জাবিতে তাকে দেবদূতের মতো লাগত। অনেক বড় চিসিৎসক মনে হতো। কিন্তু আমার এখনকার যুক্তি বলে তিনি সম্ভবত হাতুড়ে ডাক্তার ছিলেন। হাতযশের কারণে নামকরা হয়ে উঠেছিলেন। এর কারণও অবশ্য আরও ছিল। গ্রামে তখনও বিদ্যুৎ আসেনি। তার চেম্বারে বিদ্যুতে চালিত বিরাট বিরাট পাখা। একজন সুইচ দিচ্ছে আর বাতি, ফ্যান চলছে– এটা আমার মতো গ্রামের বালকের কাছে ছিল বেশ অবাক হওয়ার ঘটনা।
তার বেশ কজন সহকারী ছিল। সিরিয়াল এলে তিনি চোখ জিহ্বা নাক ইত্যাদি পরীক্ষা করতেন। পেট টিপতেন। তারপর গম্ভীর হয়ে অনেকক্ষণ ভাবতেন। রোগীর এতে আত্মবিশ্বাস বাড়ত যে ডাক্তার তাকে নিয়ে অনেক চিন্তা করছেন। শেষদিকে অনেকক্ষণ চোখ বন্ধ করে থাকতেন। তারপর প্রেসক্রিপশন লিখতে শুরু করতেন। সে প্রেসক্রিপশন হতো এক থেকে দেড় পৃষ্ঠা দীর্ঘ। অনেক অনেক ওষুধের নাম লিখে পৃষ্ঠা ভরিয়ে তুলতেন। সে তালিকায় থাকত নানা কিসিমের ওষুধ। এর অধিকাংশই অকামের। ভিটামিন জাতীয়। এর মধ্যে একটি ভিটামিন সিরাপ পানীয় হিসেবে সে সময় আমার খুব প্রিয় হয়ে উঠেছিল। সাদা সুন্দর মোড়কের মধ্যে থাকত কমলার ছবি। সিরাপটি ছিল কমলার স্বাদের চেয়েও মিষ্টি। এটা তিনি অবশ্যই লিখতেন। আর লিখতেন মিক্সচার সিরাপের নাম। সেটি তার কর্মচারীরা বানিয়ে দিত। বড় বোতলের গায়ে কাজ কেটে ওষুধের মাত্রার দাগ কাটা থাকত। লাল রঙের তিতকুটে সিরাপ। সেটা খেলে জ্বর নেমে যেত। জ্বরের মাত্রা অনুসারে দাগ বাড়ত। কম হলে এক দাগ, বেশি হলে দুই দাগ। তাতেও জ্বর না নামলে ইনজেকশনের ব্যবস্থা। ইনজেকশন দেওয়া তার সহকারীদের মধ্যেও বেশ প্রিয় বিষয় ছিল মনে হয়। বিশেষত নারীদের। সে সময় দূরদূরান্ত থেকে নানা বয়সী নারীরা আসতেন। তখন হিজাবের চল ছিল না। বোরকা পরতেন একদম বৃদ্ধ মহিলারা। বাকি সব বয়সী নারী ফ্রক বা শাড়ি পরতেন। সহকারীরা সেসব কাপড় সরিয়েই ইনজেকশন দিতেন। সে সময় নারীর উদলা অংশ ও ছটফটানি সকলকেই চঞ্চল করত মনে হয়। আর সহকারীরা ইনজেকশন দেওয়ার অংশটুকুতে মালিশও করে দিতেন। সে সময় টিকা খুব ভয় পেতাম। কিন্তু ইনজেকশন পরে গা সওয়া হয়ে গিয়েছিল।
কখনও ঘুষঘুষে দীর্ঘ জ্বর হলে চিকিৎসা দিতেন সবুল ডাক্তার। তার ছিল হোমিওপ্যাথির চেম্বার। তারও বিশাল নামডাক ছিল। শমসেরনগর মূল বাজার ছাড়িয়ে আলীনগর চা বাগানের পথে ছিল তার বাসা কাম চেম্বার। সকাল থেকে অনেক মানুষ জড়ো হতেন। বেশিরভাগ ক্রনিক তথা দীর্ঘস্থায়ী অসুখ নিয়ে। তিনি একটি পর্দাঘেরা ঘরে বসতেন। বাইরে টানানো ছিল স্যামুয়েল হানিম্যানের বিরাট ছবি। দেয়ালগুলো জুড়ে বিরাট বিরাট আলমারিতে থাকত বড় বড় বোতলভরা পানি। আলমারির ওপর বিরাট বিরাট খালি কার্টন। সেগুলোর গায়ে জার্মানি-আমেরিকা এ রকম নানা দেশের নাম লেখা থাকত। তিনি সম্ভবত বোঝাতে চাইতেন তিনি বিদেশ থেকে সরাসরি ওষুধ নিয়ে আসেন। কিন্তু কাজের বেলায় বড় বড় বোতলের পানির মধ্যে ছোট ছোট বোতল থেকে এক ফোঁটা ওষুধ ঢেলে বোতলটি ঝাঁকানো হতো। থিওরি ছিল যত ঝাঁকি ওষুধ তত লক্ষগুণ শক্তি বৃদ্ধি। সাথে থাকত মিষ্টি পুরিয়া। সেটাতে মেশানো হতো স্পিরিট। সে স্পিরিট মেশানোর আগে হাঁ করতে বলা হতো। তারপর জিহ্বায় এক ফোঁটা ঢালা হতো। সে স্বাদ কেমন তা এখনও যাঁরা দেশি মদ নিট পান করেন তাঁরা অনুমান করতে পারবেন। সে চিকিৎসা চলত দীর্ঘদিন ধরে। জ্বর বা অসুখ গুরুতর হলে আবার অ্যালোপ্যাথি।
জ্বর গুরুতর হলে আমার তো আর দেবী ফেবরিসের মন্দিরে গিয়ে নাম জপার সুযোগ ছিল না। আমি নাম জপতে শুরু করতাম আম্মার। বিছানায় শুয়ে সারাক্ষণ আম্মা, আম্মা করতাম। আম্মা ভাত চড়ালেও এমন নাম জপতে শুরু করতাম যে তাকে রান্না ফেলে চলে আসতে হতো। আম্মা মাথার কাছে বসে থাকতেন। তার পায়ের সমস্যা ততদিনে আর জটিলতা সৃষ্টি করতে শুরু না করলেও হাতের শক্তি কমাতে শুরু করেছিল। আম্মা সে অশক্ত হাতে মাথা টিপে দিতেন। মাথায় পানি ঢালতেন। গা মুছে দিতেন। সে এক মিষ্টান্ন স্মৃতি। জ্বরজারি হলে আমি কাইকুই বেশি করি। বেশ বড় হওয়ার পর একবার কঠিন জ্বর হয়েছিল। দৈর্ঘ্যে তখন আমি আব্বার উচ্চতাকে ছাড়াতে শুরু করেছি। সে সময় আব্বা বিকেলে আমাকে কোলে করে ঘরময় পায়চারি করেছিলেন। আমার পা মাটি ছুঁয়ে যাচ্ছিল। আব্বা তবুও কোলে নিয়ে হাঁটছিলেন। শেষ বয়সে আব্বাও এমনি এক কঠিন দীর্ঘস্থায়ী জ্বরে পড়েছিলেন। চিকিৎসা করাতে ঢাকা নিয়ে এসেছিলাম। সে সময় আমি এক রুমের বাসায় থাকি। শীতের রাত ছিল। ঘরে লেপ কাঁথাও বেশি ছিল না। মধ্যরাতে গা কাঁপুনি দিয়ে আব্বার জ্বর আসতে শুরু করে। ঘরের সকল লেপ কাঁথা আব্বার গায়ে দেওয়ার পরও আব্বার কাঁপুনি থামছিল না। পরে নিজে ওপরে উঠে আব্বাকে জড়িয়ে থাকি। আব্বা সে তীব্র জ্বরের মধ্যেও বারবার বলছিলেন, তুমি শীতে কষ্ট পাইতেছ শোয়াইব।
কলেজের হোস্টেল জীবনের আর বিশ্ববিদ্যালয় হল জীবনের জ্বরগুলো ছিল বড় করুণ। বিশেষত সন্ধ্যা বেলাটা। সে সময়ে হলে বা হোস্টেলে কেউ থাকতো না। সবাই নানা কাজে বাইরে চলে যেত। জ্বর তীব্র হলে জ্বরের ঘোরে একা একা প্রলাপ বকতাম।
পরে প্রেমিকা জোটার পর সে শুশ্রূষা করত।
আমার কেন জানি বিশ্বাস জন্মেছে আমার মৃত্যু জ্বরের ঘোরের ভেতর হবে। জীবনের শেষ জ্বর হলে স্ত্রী জলপট্টি দিতে দিতে মধ্যরাতে ঘুমিয়ে পড়বে। আর তখনই মৃত্যু কালো বিড়ালের মতো শিয়রে এসে বসবে। এ নিয়ে একসময় একটি কবিতা রচনা লিখেছিলাম। কবিতাটির ক’টি পঙ্ক্তি থাকল এখানে–
নিঃসঙ্গ যাত্রা
গৃহে প্রবেশের আগে ছাদে কিছুক্ষণ বসেছিল।
নিঃসঙ্গ পানির ট্যাঙ্ক, সিঁড়িঘর চুপি চুপি দেখেছে
কেউ কাউকে কিছু বলেনি।
সিঁড়ির লোহার গেট সেও দিয়েছে মেলে ডানা।
কালো বিড়ালের মতো এসেছে যে কাঠের দরোজায়।
দরোজা, কাঠের দরোজা কী তাকে বান্ধবী ভেবেছিল?
দরোজার সাথেও হয়তো হয়েছে কিছু অস্পষ্ট আলাপ।
প্রবল জ্বরের মুখে ভেজা কাপড়ের প্রলেপ দিতে দিতে
ক্লান্ত স্ত্রী ঘুমিয়েছিলেন পাশে
আমি গরম জ্বর হাতে তাকে ছুয়ে জেগে আছি
তার অপেক্ষায়।
সে যখন ঘরে এলো, আর আমাকে ছুঁলো
আশ্চর্য কেউ কিছু জানল না।
মৃত্যু, একাকী হিমশীতল শেষ রাতে।
(নিঃসঙ্গ যাত্রা/ঘোর ও শূন্য জলধিপুরাণ)
মন্তব্য করুন