মরুর দেশে শোনা যাবে বাঘের গর্জন। চূড়ান্ত পদক জয় করে মাথায় পরবে স্বপ্নের মুকুট। গত বছর চারটি ব্রোঞ্জ জয় করলেও এবার দৃষ্টি স্বর্ণপদকে। বিশ্বজয়ের এমন আশায় বুকবাঁধা সেরা ২০ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো আবাসিক বায়োক্যাম্প। যারা ১২ অঞ্চল থেকে বিজয়ী হয়ে জাতীয় পর্যায়ে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করেছে। এবার চূড়ান্ত লড়াইয়ে মুখোমুখি সেরা ২০ শিক্ষার্থী। সেরাদের এই লড়াইয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা চারজন আগামী ৩ থেকে ১১ জুলাই সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিতব্য ৩৪তম আইবিওতে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। সঙ্গে থাকবেন জুরি বোর্ডের দুই সদস্য।
ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ ও চূড়ান্ত বাছাইয়ের জন্য ১৫ থেকে ১৮ মে সাভারে অবস্থিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজিতে অনুষ্ঠিত হয় বিডিবিও-সমকাল বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান উৎসবে বিজয়ীদের অংশগ্রহণে নবম জাতীয় আবাসিক বায়োক্যাম্প। ১৫ মে সকাল ৯টায় সাভারে অবস্থিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজিতে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিডিবিওর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী। চার দিনব্যাপী এ বায়োক্যাম্পে শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে জীববিজ্ঞানের নানাবিধ ব্যবহারিক শিক্ষার মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে উপযুক্ত করে গড়ে তোলার চেষ্টা চলে।
১৮ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং বিডিবিও কোচ অধ্যাপক ড. রাখহরি সরকারের সভাপতিত্বে ক্যাম্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আবু হাশেম, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জাহাঙ্গীর আলম, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান এবং বিডিবিও ঢাকা দক্ষিণ আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. তারিক আরাফাত প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ৯ জন মাস্টার ক্যাম্পারের নাম ঘোষণা করা হয়। নির্বাচিতরা হলেন ঢাকা সিটি কলেজের আহাম্মদ নাইম, সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের আরিজ আনাস, এসএফএক্স গ্রিনহেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের রাব্বানী রাশা রিদম, নটর ডেম কলেজের শেখ আকিফ ইলাহী, মো. তারনিম আহমেদ ও ইনতিসার মোহাম্মদ রক্তিম, গভ. ল্যাবরেটরি হাই স্কুল রাজশাহীর ফাইয়েজ আহমাদ, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামিয়া আজরিন অঙ্কন এবং রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের আদিশা ইশমাম পৃথা। গত বছরের মাস্টার ক্যাম্পার ও আইবিও ২০২২-এর বাংলাদেশের অন্যতম ব্রোঞ্জজয়ী ফাইয়াদ আহম্মেদকে নিয়ে অনুষ্ঠেয় পরবর্তী বর্ধিত বায়োক্যাম্প থেকে যে চারজন চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হবে, তারাই ৩৪তম আইবিওতে অংশগ্রহণ করবে। বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান উৎসব এই সাফল্য উৎসর্গ করছে সব জ্ঞানপিপাসু মানুষ ও বিজ্ঞানসংশ্লিষ্ট আন্দোলনগুলোর কর্মীদের প্রতি। ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ মে পর্যন্ত দেশজুড়ে অনুষ্ঠিত হয় জীববিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় এ আসর। দেশে হাজারো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১২ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্য থেকে ১ হাজার ৩০০ বিজয়ী শিক্ষার্থীকে নিয়ে গত ১২ মে অনুষ্ঠিত হয় চূড়ান্ত পর্ব।  
উৎসবের পাওয়ার্ড বাই হিসেবে রয়েছে শাহ্‌জালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড এবং কারিগরি সহযোগী ল্যাব বাংলা ও প্রশিক্ষণ সহযোগী ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি। বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড কমিটি ও সমকাল দেশে এ উৎসবের আয়োজন করে।

সাভার প্রতিনিধি