ঘন, কালো ও লম্বা চুল যেন সবাই পেতে চায়। কারও কারও চাওয়ার সঙ্গে পাওয়া মিলে গেলেও অনেকের প্রত্যাশা আশাহত করে তুলে। অনেকে আবার হরেক রকমের দামি পণ্য ব্যবহার করেন স্বপ্নের চুল পেতে, কিন্তু পান না আশানুরূপ ফল। তবে সাতপাঁচ না ভেবে নিয়মমাফিক তেল ব্যবহারেই পেতে পারেন সুন্দর চুল। কারণ তেলকে চুলের প্রধান খাদ্য বলা হয়। নিয়মমাফিক তেল ব্যবহারে চুলের নানা সমস্যা দূরের পাশাপাশি সিল্কি ও দ্রুত লম্বা হতে সাহায্য করে। কোন তেল ব্যবহারে বেশ উপকৃত হতে পারেন– তা দেখে নিতে পারেন। পরামর্শ দিয়েছেন রূপবিশেষজ্ঞ ফারহানা রুমি।

নিম তেল: অল্পস্বল্প সমস্যার কারণে চুল পড়া বৃদ্ধি পেলে নিম তেল ব্যবহারে ভালো ফল পাওয়া যায়। এ ছাড়া সমস্যা দূর করে নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে। এ তেলে আজাদিরচটিন ও ট্রাইটারপেনয়েড নামে প্রধান দুটি উপাদান রয়েছে। এগুলোর অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টিহিস্টামিন অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টিপাইরেটিক গুণ অনেক সমস্যাই সমাধানে ভূমিকা রাখে। এ তেলে ক্যাম্পেস্টেরল, বিটা-সিটোস্টেরল ও স্টিগমাস্টেরলের মতো উপাদানের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে অ্যালকালয়েড ও ফ্যাটি এসিড বিদ্যমান– যা স্বাস্থ্যবান ও স্বপ্নের চুল পেতে সাহায্য করে।

পেঁয়াজের তেল: এ তেলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস থাকায় এটি চুল পড়া কমিয়ে এনে নতুন চুল গজাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। পেঁয়াজের রসে বিদ্যমান উপাদান প্রয়োজনীয় এনজাইমের উৎপাদন ও কার্যক্ষমতা বাড়ায়। তাতেই দ্রুত চুল পড়া কমে। প্রথমে হাতের তালুতে পরিমাণমতো পেঁয়াজের তেল নিন। ভালো করে চুল ও চুলের গোড়ায় তা লাগিয়ে নিন। ঘণ্টাখানেক রেখে শ্যাম্পু করুন। এ তেল আপনার আশানুরূপ ফল পেতে সাহায্য করবে।

নারকেল তেল: সাধারণত চুলের যত্নে বাঙালি নারীরা যেসব তেল ব্যবহার করেন, তার মধ্যে নারকেল তেল অন্যতম। নারকেল তেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ই ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস থাকায় চুলের বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। স্বাস্থ্যবান চুল পেতে সাহায্য করে। এ তেল সামান্য গরম করে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। ঘণ্টাখানেক রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন।

আমন্ড অয়েল: চুলের বৃদ্ধিতে আমন্ড অয়েল বেশ কার্যকরী। এই তেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ই এবং ম্যাগনেশিয়াম থাকায় চুল বৃদ্ধিতে এবং সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। রুক্ষ ও শুষ্ক চুলেও অনায়াসে লাগানো যায় এ তেল। এ তেল আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে বলে চুল সহজে পড়ে না।

টি ট্রি অয়েল: পুষ্টিগুণসম্পন্ন ও কার্যকরী টি ট্রি অয়েল। এই তেল নিয়মিত ব্যবহারে চুলের গোড়া মজবুত হওয়ার পাশাপাশি চুল পড়া কমে আসে। টি ট্রি অয়েল অন্য যে কোনো তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করতে হয়, শুধু টি ট্রি অয়েল ব্যবহার করা যাবে না। অলিভ অয়েলের সঙ্গে ৪-৫ ফোঁটা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে তা কমপক্ষে ২০-৩০ মিনিট বা সারারাত রেখে পরের দিন শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুলের গোড়া মজবুত হয়ে চুল পড়া বন্ধ হবে এবং নতুন চুল গজাবে। অন্যদিকে টি ট্রি অয়েল শ্যাম্পুর সঙ্গে ২-৩ ফোঁটা মিশিয়ে হালকা ম্যাসাজ করে শ্যাম্পু করুন। এতে অনেক সমস্যা দূর হবে। এতে হেয়ার গ্রোথ বৃদ্ধি পাবে।