রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াতের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করা হবে বলে উল্লেখ করেছেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এ. কে. আজাদ। তিনি বলেন, পাকিস্তানের দোসর বিএনপি-জামায়াত বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়ে দেশকে আবারও অস্থিতিশীল করতে চাইছে। দেশের উন্নয়নের ধারাকে বন্ধ করতে চাইছে।

রোববার বিকালে ফরিদপুর শহরের ব্রক্ষ্মসমাজ সড়কে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে ‘বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্র, আগুন সন্ত্রাস, নৈরাজ্য’ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।  

সমাবেশে এ. কে. আজাদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকিদাতা বিএনপি নেতার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

তিনি বলেন, ফরিদপুরে কোনো পদ-পদবীর জন্য আসিনি। ফরিদপুর আওয়ামী লীগের জন্য ও জনগণের জন্য কাজ করতে এসেছি। ৭-৮ মাস পর জাতীয় নির্বাচনে যাতে আওয়ামী লীগকে আবারও জয়যুক্ত করে দেশে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা যায়, এজন্যই ফরিদপুর আওয়ামী লীগের পাশে এসেছি, সাধারণ জনগণের কাছে এসেছি।

বিক্ষোভ সমাবেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা

এ. কে. আজাদ বলেন, আজকের এই প্রতিবাদ সভা করতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। ফরিদপুর আওয়ামী লীগের একটি অংশ এর পেছনে কাজ করেছে। তাহলে আপনারা কোন আওয়ামী লীগ করেন? আপনাদের কিসের ভয়, জনগণের সেবা করলে জনগণ আমাদের পাশে থাকবে, এটাই আপনাদের ভয়।

আগামী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেবেন তাকে জয়যুক্ত করতে একত্রে কাজ করার কথা উল্লেখ করেন এ. কে. আজাদ।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিপুল ঘোষকে অপমান করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে সম্মান দিয়েছেন। বিপুল ঘোষকে অপমান করা মানে শেখ হাসিনাকে অপমান করা।

সভায় আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিপুল ঘোষ ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হককে উদ্দেশ করে বলেন, আপনার রাজনৈতিক ইতিহাস কি, কয়দিন জেল খেটেছেন, কোনো আন্দোলনে নাম আছে? আমি আওয়ামী লীগ করে ৭১ মাস জেল খেটেছি। 

ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ সমাবেশ

তিনি বলেন, সাতটি জাতীয় পত্রিকায় পদ্মা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর ছাপা হওয়ার পরও বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি। এখানে বঙ্গবন্ধুপুত্র শেখ কামাল স্টেডিয়ামের নাম ব্যবহার করে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে, যার সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শামীম হকের নামও উঠে আসছে। প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

অবৈধ বালু ব্যবসা বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান তিনি।

বিপুল ঘোষ বলেন, আমি শেখ হাসিনার কাছ থেকে কখনও সরে যাইনি। ভবিষ্যতে আমাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করা হলে আওয়ামী লীগ কর্মীরা তার সমুচিত জবাব দেবে। 

তিনি বলেন, আমরাও চাই ফরিদপুরে এক সঙ্গে আওয়ামী লীগ করতে। এক সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতকে মোকাবিলা করতে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ফরিদপুরের জন্য যদি কোনো বার্তা থাকে তাহলে তাড়াতাড়ি দিন। কারণ ফরিদপুর আওয়ামী লীগ দুর্বৃত্ত ও মাদক ব্যবসায়ীদের কর্মকাণ্ড নিয়ে বিব্রত হচ্ছে। 

জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহার সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিপুল ঘোষ, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফারুক হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী জাহিদ, মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা আইভি মাসুদ, কোষাধ্যক্ষ যশোদা জীবন দেবনাথ, শ্রমীক লীগ সভাপতি আক্কাস হোসেন, পৌর আওয়ামী লীগের আহবায়ক মনিরুল হাসান মিঠু, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মনির ও অ্যাডভোকেট বদিউজ্জামান বাবুল, সদস্য শেখ মাহাতাব আলী মেথু, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা নুসরাত তানিয়া।

এ সময় হা-মীম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোতালেব হোসেন, হা-মীম গ্রুপের পরিচালক বেলাল হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মো. খায়ের মিয়া, জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদ হোসেন মোল্লা, শহর আওয়ামী লীগের সদস্য নুরুল আমিন বাপ্পিসহ আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।