- ফিচার
- ফ্যাশন আইকন মেরিলিন মনরো
ফ্যাশন আইকন মেরিলিন মনরো

পঞ্চাশ-ষাটের দশকে দুর্দান্ত অভিনয় দিয়ে মানুষের হৃদয় জয় করেছিলেন মেরিলিন মনরো। সেই সঙ্গে ফ্যাশন ও বিউটি আইকন হিসেবে বিশ্বের মানুষের হৃদয়ে নাম লিখিয়েছেন। ১ জুন মেরিলিন মনরোর জন্মদিন। লিখেছেন মোশারফ হোসেন
ফ্যাশন জগতে মেরিলিন মনরো ছিলেন এক অবিস্মরণীয় নাম। কিংবদন্তি জেমস ডিন ও এলভিস প্রিসলির মতো মনরো তাঁর গ্ল্যামার, সুন্দর চেহারা এবং ক্ল্যাসিক চলচ্চিত্র তারকাসহ বিভিন্ন আবেদনময়ী রূপে ভক্তদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিলেন।
এতদিনেও হারিয়ে যায়নি মনরোর ‘গোলাপি গাউন’, দ্য সেভেন ইয়ার ইচ সিনেমায় ‘উড়তে থাকা সাদা পোশাক’ বা প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির জন্মদিনে পরে আসা ‘হ্যাপি বার্থডে ড্রেস’। পিটার প্যান কলার, পুডল স্কার্ট ও আবেদনময়তার যুগে মনরোর সাহসী সিদ্ধান্ত তাঁকে ফ্যাশন কিংবদন্তি হিসেবে পরিচিত করে তুলেছে।
মনরো ফেরাগামোর জুতো পরতেন, ব্যবহার করতেন লুই ভিঁতোর ব্যাগ। নরমান নোরেল, এমিলিও পুচি এবং ল্যানভিনের নকশা করা জামা ছিল তাঁর প্রথম পছন্দ। অস্কার বিজয়ী ডিজাইনার জিন লুই, অরি কেলি ও উইলিয়াম ট্র্যাভিলা মনরোর আটটি সিনেমার কস্টিউম ডিজাইনার ছিলেন।
মেরিলিন মনরো লুক নিয়ে সব সময় সচেতন ছিলেন। অনেক স্টাইল ও সৌন্দর্য পরামর্শক তাঁর হাসি, হেয়ার লাইনার ও চুলের রং পরিবর্তন করতে অনেক চাপ দিয়েছিলেন। কিন্তু মনরো ছিলেন নাছোড়বান্দা। কোনো চাপ তাঁকে টলাতে পারেনি। প্রথম সিনেমা হিট হওয়ার পর মনরোকে অবশ্য আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। মানুষই তাঁকে অনুকরণ করা শুরু করে।
১৯৫৩ সালে ‘কল মি ম্যাডাম’ সিনেমার প্রিমিয়ারে মনরো পরেন মসৃণ সাদা স্ট্র্যাপলেস পোশাক। কোমরে ছিল একটি বেল্ট। পরেছিলেন কনুই পর্যন্ত সাদা গ্লাভস, সাদা জুতা এবং শরীর জড়ানো একটি মোটা চাদর বিশেষ। পোশাকটির ডিজাইনার ছিলেন উইলিয়াম ট্র্যাভিলা।
একবার একটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান সেরা উদীয়মান তারকার পুরস্কার জেতেন মনরো। সেখানে পুরস্কার ছাপিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে তাঁর পরা পোশাকটি। সোনালি বর্ণের পোশাকে ছিল হল্টার নেকলাইন ও স্টাইল লাইন, অনেকটা মিসরীয় রানীদের মতো।
১৯৫৩ সালে ‘হাউ টু ম্যারি আ মিলিয়নেয়ার’ সিনেমার প্রিমিয়ার অনুষ্ঠানে মনরো যা পরেছিলেন এর সবই ছিল স্টুডিও থেকে ভাড়া করা। পোশাকটি ছিল ট্র্যাভিলার ডিজাইন করা একটি গাউন। রূপকথার রাজকুমারীদের পোশাকের মতো দেখতে, বুকের দিক থেকে কোমর পর্যন্ত ছিল একটি মোটা লেইস এবং ছোট ছোট ফুল দিয়ে পুরো পোশাক ছিল এমব্রয়ডারি করা।
তবে মনরোর সবচেয়ে বিখ্যাত এবং আইকনিক পোশাকটি ছিল ‘দ্য সেভেন ইয়ার ইচ’ সিনেমার সাবওয়ে দৃশ্যে পরা সাদা পোশাকটি। উড়তে সাদা পোশাকটিতে বুঁদ হয়েছিলেন সব শ্রেণির ভক্ত। সিনেমার জগতে সবচেয়ে স্মরণীয় দৃশ্য এটি।
এ ছাড়া ঘরোয়া পরিববেশে মনরো টাইট ফিটিং স্কার্টের সঙ্গে হাতে বোনা পোশাক পরতেন। ছুটির দিনগুলোয় মনরো যখন বাসায় থাকতেন, তখন সিল্ক বা টেরি বাথরোব বা আরামদায়ক সিল্কের পায়জামা পরতেন।
ত্বকের যত্ন : ত্বকের বিষয়ে খুব কড়াকড়ি ছিলেন মনরো। ত্বক থেকে তেল দূর ও মুখের ছোট ছোট ছিদ্র বন্ধ করতে মনরো মুখ ও ঘাড়ে গরম পানি এবং ফেলিটাইল ক্লিনজিং দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে এক ধরনের ফর্মুলা ব্যবহার করতেন। তারপর চোখের নিচে ত্বকের শক্তিবর্ধক ছোট ছোট ফোঁটায় ব্যবহার করে হাত দিয়ে আলতো করে মুছে ফেলেন। সর্বশেষ ত্বকের আর্দ্রতা দূর করতে ফেস পাউডার ব্যবহার করেন এবং এক মিনিট পর ব্রাশের মাধ্যমে মুখের সঙ্গে মিলিয়ে নেন।
হেয়ার স্টাইল: মেরিলিন মনরো চুলের ছাঁট ‘মনরো বব’ নামে বেশ জনপ্রিয়। নিজেকে ব্লন্ড হিসেবে উপস্থাপন করতে মনরো সোনালি কার্ল রাখতেন। তবে তিনি জন্মগতভাবে ব্লন্ড ছিলেন না। যখনই স্যালুনে যেতেন মনরো ‘পিলো কেস হোয়াইট’ নামে এক ধরনের শেড ব্যবহার করতেন। এই শেড তাঁর চুল সোনালি ও ব্লন্ডদের মতো রাখতে সাহায্য করত।
মন্তব্য করুন