হুট করে নখ ভেঙে যাওয়াকে অনেকেই গুরুত্ব দেন না। এটি হতে পারে শারীরিক সমস্যার উপসর্গ। দীর্ঘদিন ধরে নখের ময়েশ্চার কমে যাওয়া এবং নখ শুষ্ক হয়ে যাওয়ার কারণেও এমনটি হতে পারে। ভঙ্গুর, পাতলা নখের যত্নে কী কী করবেন আর কী কী করবেন না তা জেনে রাখা ভালো।

যা করবেন
নখ সব সময় পরিষ্কার এবং শুকনা রাখুন : সব সময় পরিষ্কার ও ভেজার পর মুছে রাখলে নখের নিচে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে না। বারবার পানি ধরা হলে বা পানির কাজ করলে নখ ভঙ্গুর হয়ে যায়। থালা-বাসন, কাপড়চোপড় ধোয়ার সময় বা ক্ষারীয় কোনো কেমিক্যাল দিয়ে কাজ করার সময় কটন-লাইনড হ্যান্ড গ্লাভস পরে নিতে পারেন।

নখ কাটার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখুন : নখ একটু বেশি বড় হয়ে গেলেই যে কেটে ফেলা সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো তা অবশ্যই বলার অপেক্ষা রাখে না। নখ কাটার ক্ষেত্রে ধারালো মেনিকিউর বা পেডিকিউর কিটের সবকিছু ঠিকঠাক ধারালো আছে কিনা খেয়াল রাখুন অথবা শুধু নেইল কাটার ব্যবহার করলেও সেটির ধার ঠিক আছে কিনা তা নিশ্চিত করুন। নখ কাটার সময় দুই পাশ থেকে আড়াআড়ি করে সোজা শেপে কাটুন এবং নখের একদম উপরিভাগে রাউন্ড শেপে কাটুন; এতে করে নখের খুব ভেতরের ময়লা পরিষ্কার করতে পারবেন সহজেই।

নখেও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা জরুরি: গোসল করে এসে আপনি যখন ত্বকে, হাতে, পায়ে ক্রিম, লোশন, ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করেন, সঙ্গে সঙ্গে নখ এবং কিউটিক্যালসেও বডি লোশন ব্যবহার করতে ভুলবেন না। এ ছাড়া অনেক ব্র্যান্ডেরই নখের জন্য আলাদাভাবে ময়েশ্চারাইজার বা নাইল অয়েল পাওয়া যায়। আপনি চাইলে সেগুলোও ব্যবহার করতে পারেন।

প্রটেক্টিভ লেয়ার ব্যবহার করতে পারেন : নখ যদি খুবই পাতলা হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে নখ শক্ত করার জন্য নেইল জেল কোট বা নেইল ডিফেন্স ব্যবহার করতে পারেন।

বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন: একজন নিউট্রিশনিস্টের সঙ্গে কনসাল্ট করে আপনার পাতলা ও ভঙ্গুর নখের জন্য বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার পরামর্শ নিতে পারেন।

যা করবেন না
দাঁত দিয়ে নখ কাটবেন না, কিউটক্যালস কামড়াবেন না: অনেকেরই দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস থাকে, যা একদমই উচিত নয়। এর ফলে নখের নিচের স্তরে ক্ষতি হতে পারে। এমনকি নখের পাশে সামান্য একটু কেটে গেলেও ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস ঢুকে ইনফেকশন হতে পারে।

আধভাঙা নখ টেনে তুলবেন না: নখের কিছু অংশ ভেঙে গেলে হাত দিয়ে টেনে না তুলে নেইল কাটার দিয়ে সাইজমতো কেটে নখটি ফাইল করে নিন।

ক্ষারীয় বা শক্ত কোনো নেইল প্রডাক্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন: মাত্রাতিরিক্ত নেইলপলিশ রিমুভার ব্যবহারের ফলে আপনার নখ থেকে ন্যাচারাল ময়েশ্চারাইজার হারিয়ে যেতে শুরু করে। তাই নেইলপলিশ রিমুভার যথাসম্ভব কমিয়ে আনুন এবং অ্যাসিটোন-ফ্রি ফর্মুলার নেইলপলিশ রিমুভার ব্যবহার করুন।

নখের সমস্যাকে অবহেলা করবেন না: আমরা চুল নিয়ে যতটা সচেতন, নখ নিয়ে কিন্তু ততটা সচেতন বা সতর্ক একবারেই নই। কিন্তু নখ ভালো রাখতে হলে নখের যত্নের দিকে যেমন খেয়াল রাখতে হবে, তেমনি নখের সামান্য সমস্যা হলেও অবহেলা না করে অবশ্যই ডাক্তার অথবা ডার্মাটলজিস্টের পরামর্শ নিন।

ভঙ্গুর ও পাতলা নখ শক্ত করার কিছু ঘরোয়া টোটকা
একটি পাত্রে নখ ভেজানো পরিমাণ কুসুম গরম পানি নিয়ে তাতে কিছুটা লবণ ও অলিভ অয়েল ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণে ১৫-২০ মিনিট নখ ভিজিয়ে রাখুন। সপ্তাহে অন্তত তিন দিন ব্যবহার করুন।

আপেল সিডার ভিনেগার ও পানি একসঙ্গে মিশিয়ে অন্তত ১০ মিনিট তাতে নখ চুবিয়ে বসে থাকুন। আপেল সিডার ভিনেগারে থাকা ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামসহ অনেক রকম খনিজ উপাদান আছে, যা আপনার নখে থাকা সংক্রমণ দূরে করে নখকে শক্ত ও মজবুত রাখতে সাহায্য করবে।  এখন অনলাইনে বা মার্কেটে খুব সহজেই ভিটামিন-ই ক্যাপসুল পাওয়া যায়। এই ক্যাপসুল থেকে ভিটামিন-ই অয়েল নিয়ে মাঝেমধ্যে নখে মালিশ করুন। নখ মজবুত হবে এবং নখের ময়েশ্চারাইজার হিসেবেও ভালো কাজ করবে।