প্রচণ্ড গরমে সবার অবস্থা নাজেহাল। তাপদাহের কারণে বাইরে তো গরমই, ঘরেও অসহনীয় অবস্থা। তাই কর্মক্লান্ত দিনশেষে বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর ভীষণ অস্বস্তিতে পড়তে হয়। এ ছাড়া দিনের বেশিরভাগ সময় যাঁদের ঘরেই কাটাতে হয়, তাঁদের অবস্থা আরও খারাপ। এ অবস্থায় ঘর যদি কোনোভাবে খানিকটা শীতল রাখা যায় তাতে অন্তত কিছুটা প্রশান্তি মেলে। ঘর ঠান্ডা রাখার জন্য আমাদের প্রথমেই মাথায় আসে এয়ার কন্ডিশন (এসি) বা এয়ারকুলারের কথা। যেহেতু এগুলো কেনা সবার সামর্থ্যে  কুলাবে না। কিছুটা হলেও মোটামুটি সবারই সামর্থ্যের মধ্যে আছে ফ্যান, কিন্তু ফ্যানের বাতাস ঘর ঠান্ডা রাখতে সক্ষম নয়। তাই ভাবতে হবে অন্য উপায়।

গরমেও যেভাবে ঘর ঠান্ডা রাখবেন
গরমে এসি ছাড়াও ঘর ঠান্ডা রাখার বেশ কিছু উপায় রয়েছে। এতে কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলবে

নজর দিন আসবাবের দিকে: ঘরে হালকা ডিজাইনের আসবাব রাখার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে যে ঘরে আপনি ঘুমান, সেখানে যথাসম্ভব কম আসবাব রাখুন। এতে ঘরের ভেতর ভ্যাপসা ভাবটা কমে যাবে।

জানালা-দরজা: দিনের বেলা যেদিক দিয়ে ঘরে রোদ প্রবেশ করে, সেদিকের দরজা বা জানালা বন্ধ রাখুন। সূর্য অস্ত যাওয়ার পর জানালাগুলো সব খুলে দিন। এতে দিনের বেলা ঘরে তাপ কম ঢুকবে এবং রাতে বাতাস প্রবেশ করায় শান্ত পরিবেশ বিরাজ করবে।

জানালার পর্দা ও বিছানার চাদর: জানালায় ব্যবহার করুন কিছুটা ভারী রঙের পর্দা। যাতে বাতাস ঢুকলেও তাপ ঢুকতে না পারে। যে ঘরে প্রচুর রোদ পড়ে সেখানে বাঁশের চিকও ব্যবহার করতে পারেন। বিছানায় সাদা বা হালকা রঙের চাদর ব্যবহার করুন। এতে তাপ শোষণ ক্ষমতা কম। তাই বিছানাও কম গরম হবে।

এক্সজস্টেড ফ্যান: ঘর ঠান্ডা রাখতে ঘরের ভেন্টিলেশন ঠিক রাখা জরুরি। এ ক্ষেত্রে বাথরুম, কিচেন বা অন্যান্য কক্ষেও এক্সজস্টেড ফ্যান ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া রান্নার সময় পুরো ঘর গরম হয়ে যায়। তাপ বের করে দিতে সহায়ক হবে এটি। রান্নার সময় সম্ভব হলে কিচেনের দরজা ভেজিয়ে দিয়ে জানালাগুলো খুলে দিতে পারেন। এতে তাপ ঘরের ভেতরে ঢুকতে পারবে না।

বরফ বা ঠান্ডা পানি: এটিকে একটি ‘হ্যাক’ হিসেবেও ভাবতে পারেন। তা হলো, ঘরের মধ্যে একটি পাত্রে বরফ বা পানি রাখা। এরপর ফ্যান ছেড়ে রাখলে শীতল হবে ঘরের বাতাস।

বৈদ্যুতিক বাল্ব: ঝকঝকে আলো দেয় বা তাপ ছড়ায় এমন লাইট ব্যবহার করবেন না। রাতের বেলা উজ্জ্বল আলো ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। চোখে শান্তি দেয় বা তাপ ছড়ায় না এমন লাইট ব্যবহার করুন।

সুতি কাপড় কিংবা শীতলপাটি: গরমে ঘর ঠান্ডা রাখতে সুতি কাপড়ের বিছানার চাদর বেছে নিন। বিছিয়ে নিতে পারেন শীতলপাটিও। আগেকার দিনের মানুষের কাছে গরমের এই শীতলপাটির গ্রহণযোগ্যতা ছিল তুঙ্গে। তবে আগের মতো ব্যবহার নেই বললেই চলে। শীতল পাটি বিশেষ ঐতিহ্যও বহন করে।

গাছ: পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে গাছের বিকল্প নেই। তাই ঘরে-বাইরে বিভিন্ন জায়গায় গাছ লাগাতে হবে। ঘর শীতল রাখতে গাছ লাগানোর ঘরে-বারান্দায় গাছ লাগান। বাড়ির চারপাশেও গাছ লাগান। এতে ছায়া পাবেন, পরিবেশও ঠান্ডা থাকবে। ঘরে গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে বাতাস পরিশোধন করে এমন কিছু ইনডোর প্লান্ট বেছে নিতে পারেন।

কার্পেটের বিকল্প: ঘর ঠান্ডা রাখতে বসার ঘরের নান্দনিক ও ভারী কার্পেট তুলে ফেলুন। বিছিয়ে নিন পাটের কিংবা বেতের লম্বা চাটাই।

বৈদ্যুতিক পণ্য: বিজ্ঞানের জয়জয়কারের এই যুগে আমরা ঘরে বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক পণ্য ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। যেগুলো আপাতদৃষ্টিতে বেশি তাপ ছড়ায় না বলে মনে হলেও ঘরের তাপমাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। যেমন ওভেন, ডিশওয়াশার, ওয়াশিং মেশিন, ড্রায়ার, কম্পিউটার– এমনকি মোবাইল চার্জারও।  তাই এগুলোর কাজ শেষ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দিন।

বিষয় : ঠান্ডা ঘর

মন্তব্য করুন