ঢাকা বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩

গপ্পো

আমাদের মোরগ রাজা

আমাদের মোরগ রাজা

লিখেছেন ফারিহা মুবাশশারা ছবি এঁকেছেন রজত

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২৩ | ১৮:০০

দু ই বছর আগের কথা। আমি তখন শিশু শ্রেণিতে পড়ি। একটি ছাই রঙের চিল আমাদের রসুই ঘরের চালে এসে বসে। ওর নখরে একটি মোরগ ছানা। ছানাটি চিঁ চিঁ করছে। দাদিজান লম্বা একটা বাঁশ দিয়ে চিলটিকে ধাওয়া করেন। মোরগ ছানাটি ফেলে চিলটি উড়ে যায়। আমরা মোরগ ছানাটিকে ঘরে নিয়ে আসি। ওর সারা গায়ে রক্ত। দাদিজান কাঁচা হলুদ বাটা ক্ষতস্থানে লাগিয়ে বেঁধে দেন। ও ধীরে ধীরে সুস্থ হয়। বাঁশের কঞ্চি দিয়ে ওর জন্য একটি খাঁচা বানানো হয়। অন্য মোরগ ছানা থেকে ওর পাখা দুটি লম্বা। চোখের পাতাগুলো সাদা। হাঁটে খুব ধীরে। মনে হয় যেন মোরগের রাজা। সবাই বলে। এটা আসিল মোরগ।
ওর বয়স এখন দুই বছর। আমরা ওকে রাজা বলে ডাকি। সে এখন সব মোরগের নেতা। ভোর হলে ডেকে উঠে কক-কক-কক! সন্ধ্যায় ডাকে কক-কক-কক! লড়াই করে সব মোরগকে হারিয়ে দেয়। একদিন কলেজ থেকে ফিরে এসে ছোট কাকা বললেন, তাহিরপুর থানার মাঠে মোরগ লড়াই হবে। আমরা রাজাকে নিয়ে তাহিরপুর যাবো।
লড়াইয়ের দিন সকালে আমরা রাজাকে নিয়ে ট্রলারে উঠি। গ্রামের সবাই নদীর ঘাটে আসে। রাজার জন্য শুভকামনা করে। ট্রলার চলতে শুরু করে। ট্রলারের শব্দে রাজা ভয় পায়। ডেকে ওঠে কক-কক-কক! ছোট কাকা রাজাকে কোলে নিয়ে বসেন। আমরা জাদুকাটা নদী দেখতে দেখতে তাহিরপুর চলে যাই।
বিকেলে মোরগ লড়াই শুরু হয়। ছোট কাকা রাজাকে মাঠে নামিয়ে দেন। চারদিকে অনেক মানুষ চিৎকার করছে। একটু পরপর রেফারি বাঁশি বাজাচ্ছেন। রাজা ভয় পেয়ে দাগের বাইরে চলে আসে। কয়েকটি ছেলে হাসতে হাসতে বলে, আসিল মোরগ ভয় পেয়েছে। আমি দৌড়ে গিয়ে রাজাকে কোলে নিই। ওর বুক ঢিপঢিপ করছে। আমি বলি, চলো, আমরা বাড়ি ফিরে যাই। প্রতিযোগিতা ছাড়াই তুমি আমাদের রাজা!

বয়স : ২‍+২‍+২‍+২ বছর; দ্বিতীয় শ্রেণি, ৮৮ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মানিকগঞ্জ

আরও পড়ুন