আমাদের স্কুল গেটের বিপরীতেই অনামিকা ফটোস্ট্যাট। দোকানের মালিক সালাম মামা। তিনি চকলেট, খাতা, কলম, চিরুনি, লিপজেল ইত্যাদি বিক্রি করেন। মোবাইলে ফ্লেক্সি করেন। ফটোকপি করেন একটি পুরোনো ফটোকপিয়ার দিয়ে। কপি হয় অস্পষ্ট। তবু আমরা অন্য দোকানে যেতে পারি না। কারণ, টাকা না থাকলে বা টাকা কম থাকলে সালাম মামা হাসি মুখে বলেন, ‘পরে দিও।’

অনামিকা ফটোস্ট্যাটের পাশের দোকান ছিলো ফার্মেসি। ফার্মেসিতে কখনো কোনো ক্রেতা দেখা যেতো না। হয়তো এজন্যই  ফার্মেসির মালিক ব্যবসা পরিবর্তন করেছেন। তাঁর দোকানে এখন একটি কম্পিউটার এবং দুটি ফটোকপিয়ার। ফটোকপি হয় ঝকঝকে ও দ্রুত। সালাম মামার প্রতি মায়া থাকলেও অনেক মেয়ে নতুন দোকানে যায়। তবে নতুন দোকানে বাকি পাওয়া যায় না। দোকানের মালিককে মামা ডাকলে রাগ করেন। বাইরের দেওয়ালে লেখা-মামা ডাকা নিষেধ। মাঝেমাঝে মেয়েরা পোস্টারটি ছিঁড়ে ফেলে। তিনি আবার আঠা দিয়ে লাগিয়ে দেন ছেঁড়া পোস্টারটি। এভাবে নতুন দোকানটির নাম হয়ে যায় ফার্মেসি মামার দোকান।

এক শনিবার আমাদের স্কুলে ছিলো আলোচনা অনুষ্ঠান। আমাদের প্রধান শিক্ষক অভিভাবকদের সাথে দুই দোকানদেরকেও দাওয়াত দিলেন। ম্যাম বলেন, ‘প্রতিদিন ছাত্রীরা তাদের দোকানে যায়। তারাও তাদের অভিভাবক। সালাম মামার মেয়ে আমাদের স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। ফার্মেসি মামার মেয়ে আমাদের স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে।’

তিনি ছাত্রীদের অনুরোধ করেন, ‘আজ থেকে তোমরা তাদের মামা ডাকবে না। বড়দের সম্মান করবে, কেমন?’

এরপর ম্যাম মাউথ পিস হাতে নিয়ে সশব্দে বলেন, ‘তাহলে এখন থেকে...।’

সবাই চিৎকার করে বলে, ‘মামা ডাকা নিষেধ।’

বয়স : ১‍+২‍+২‍+২‍+৩ বছর; পঞ্চম শ্রেণি, মানিকগঞ্জ সুরেন্দ্র কুমার সরকারি  বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়

বিষয় : মামা কাহিনি

মন্তব্য করুন