হঠাৎ অ্যালার্জি কেন, জেনে রাখা ভালো

ডা. তাওহীদা রহমান ইরিন
প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৩ | ১৮:০০
আমাদের শরীরে ইমিউন সিস্টেম নামে এক ধরনের পদ্ধতি থাকে। এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। কোনো কারণে ইমিউন সিস্টেম যদি হাইপার অ্যাকটিভ হয়ে যায়, তখন এক ধরনের প্রতিক্রিয়া হয়। একে আমরা বলি, অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন। আর যা দিয়ে হয়, তাকে বলি অ্যালার্জেন বা সেনসেটাইজার।
অ্যালার্জি কী, কেন হয়?
গবেষণায় দেখা গেছে, গত দুই দশকে অ্যালার্জির পরিমাণ বেড়ে গেছে অনেক গুণ। শিশু-কিশোর-বৃদ্ধ সবাই আক্রান্ত হচ্ছে অ্যালার্জিতে। আমরা যে পরিবেশে বাস করি, সেই পরিবেশের যে উপাদানগুলো রয়েছে যেমন– আলো, বাতাস, পানি, যানবাহনের ধোঁয়া– সবকিছু থেকেই অ্যালার্জি হতে পারে। আমরা যে খাবার খাই, সেই খাবারের কিছু উপাদান থেকে অ্যালার্জি হতে পারে। আমরা দৈনন্দিন জীবনে যে পণ্যগুলো ব্যবহার করি, আমাদের ত্বকে বা আমাদের কাপড় ধোয়ার জন্য, আমাদের থালাবাটির জন্য, সবকিছু থেকে হতে পারে অ্যালার্জি।
আরেকটি হতে পারে, কোনো রোগ থেকে মুক্তির জন্য আমরা যে ওষুধ নিই, সেই ওষুধ থেকেও অ্যালার্জি দেখা দেয়।
পণ্য ব্যবহারের মাধ্যমে কীভাবে শরীরে অ্যালার্জি হতে পারে?
আমরা ত্বকের সৌন্দর্যে ও ত্বকের রুটিনে নানা রকম পণ্য ব্যবহার করি। আমরা ভাবি, এগুলো আমাদের সৌন্দর্য বাড়াতে সাহায্য করবে। আসলে কিছু ক্ষেত্রে হয়তো আমাদের ত্বক ও চুলে এরা অনেক উপকার নিয়ে আসে। কিন্তু এদেরই কিছু উপকরণ ব্যবহারের কারণে ত্বকে নানা রকম র্যাশ দেখা দেয়।
এখানে প্রিজারভেটিভের মধ্যে দেখি, প্যারাবেন ও ফরমাল ডিহাইড্রেড। শ্যাম্পু, কন্ডিশনার বা আমরা যে ফেস প্রডাক্ট ব্যবহার করি, যে পণ্যে প্যারাবেন ও ফরমাল ডিহাইড্রাল রয়েছে, আমরা সেগুলো এড়িয়ে যাব। আমরা নখে নেইল পলিশ ব্যবহার করি, নেইল পলিশ দূর করি, এখানে অ্যাসিটোন থাকে। অ্যাসিটোন থেকে অনেকের অ্যালার্জি হয়। যে কোনো পণ্য ব্যবহারের আগে আমরা তার উপাদান দেখব। কারণ, এই উপাদানগুলোই আমার জন্য অ্যালার্জির কারণ হতে পারে, আপনার জন্য।
পরিবেশ দূষণ বা ওষুধে অ্যালার্জি সম্পর্ক
আমরা যে পরিবেশে বাস করছি, এর প্রতিটি উপাদান দূষিত হচ্ছে। এই কারণে অ্যালার্জির পরিমাণ বেড়ে গেছে। পরিবেশগত অ্যালার্জির পাশাপাশি বলতে পারি ঋতুগত অ্যালার্জি। আমাদের ষড়ঋতুর দেশ। প্রতিটি ঋতুতে অ্যালার্জির প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। গরমে যে অ্যালার্জি হয়, সেটি যে বর্ষাকালে হবে না, সেটি নয়। একেকটি ঋতুতে একেকটি অ্যালার্জি। গ্রীষ্মে হিট র্যাশ বা পলিমরফিক অ্যালার্জি দেখা দেয়। সোলার আর্টিকেরিয়া হয়। বর্ষায় পোকামাকড় থেকে অ্যালার্জি দেখা দেয়। স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় মোল্ড তৈরি হয় নানা রকম। শরতে বা বসন্তে ফুল ফোটে, এখানে পেলেন অ্যালার্জি আর শীতকালে ডাস্ট অ্যালার্জি বেশি হয়।
খাবারে অ্যালার্জি
সাধারণত সতেজ খাবারে অ্যালার্জি কম হয়। যখন ফ্রোজেন বা প্রিজার্ভ হয়, তখন অ্যালার্জির কারণ হয়ে যায়। অনেকের দেখা গেল ইলিশ মাছ বাজার থেকে এনে রান্না করে খেল।
কোনো অ্যালার্জি নেই। আবার অনেকের দেখা গেল ফ্রিজে রেখেছে, প্রিজারভেটিভ বা অ্যাডিটিভ অ্যাড হচ্ছে, সেটি অ্যালার্জির কারণ হচ্ছে। সাধারণত তার ইলিশ মাছে অ্যালার্জি নেই, তবে এটি যখন ফ্রিজে থাকছে এবং প্রিজার্ভ হচ্ছে, তখন অ্যালার্জি হচ্ছে।
- বিষয় :
- অ্যালার্জি