- ফিচার
- জীবনবাগানের গর্বিত ফুল
জীবনবাগানের গর্বিত ফুল

রোলেন স্ট্রস। ‘মিস ওয়ার্ল্ড-২০১৪’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী দক্ষিণ আফ্রিকান অভিনেত্রী। এ তরুণ অভিনেত্রীর বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে অনুপ্রেরণার কথা তুলে এনেছেনে মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ
একজন মানুষকে চেনা হয় তার নিজের নামে। যদি সে নাম নিজেকেই স্বস্তি না দেয় তাহলে সেই নাম নিয়ে সুস্পষ্টভাবে স্বস্তি কিংবা গর্ববোধ করা সম্ভব নয়।
অক্সফোর্ড সাউথ আফ্রিকান ডিকশনারি অনুসারে, একটা নামের মানে হলো–এমন এক শব্দ বা শব্দগুচ্ছ, যা দিয়ে কাউকে বা কোনো কিছুকে চেনা যায়। এ নিয়ে ভাবলে আপনি অজান্তেই সে নামের একজন ব্যক্তির, একজন ব্যক্তিত্বের ও সেই ব্যক্তিটিকে ঘিরে আপনার অনুভূতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারবেন। যে কোনো নামেরই রয়েছে একটা জাদুকরি শক্তি– তা ইতিবাচক হোক কিংবা নেতিবাচক। আমার ক্ষেত্রে, আমি যখন কারও নাম প্রথমবার শুনি, তখন সেই নামের নিজের কোনো বন্ধু কিংবা পরিচিতের মুখ চট করে মনে চলে আসে। তা নিয়ে না ভেবে, মুহূর্তেই সেই অপরিচিত মানুষটির সম্পর্কে নিজস্ব একটা ধারণা তৈরি করে নিই। এই নতুন মানুষটিকে ভালোমতো চেনার কিংবা মেশার আগে, বন্ধুদের প্রতি বোধ করা আমার অনুভূতির সঙ্গে এক ধরনের বোঝাপড়া করে নিই।
চিন্তাশীল প্রক্রিয়ায় অর্থবহ
মানুষের নামের ক্ষমতাকে আজকাল অবজ্ঞা করা হয়ে থাকে। মনে রাখবেন, নিজের কিংবা চারপাশের অন্যকারও বা কিছুর নামের অর্থ আপনি নিজে রাখেননি। তবু নামের ভেতর দিয়েই কোনো মানুষের খ্যাতি চিন্তাশীল প্রক্রিয়ায় অর্থবহ হয়ে ওঠে।
জীবন একটা ফুলের বাগান
আমার জীবনীগ্রন্থের জন্য একটা শিরোনাম বেছে নিতে বলা হয়েছিল আমাকে। তখনই নামটা মাথায় এলো– ‘লাইফ ইজ অ্যা গার্ডেন’। জাদুকরী কোনো বাগানের ভেতর দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময়, বোধের ও ঘ্রাণের যে অনুভূতিটা আপনি সবার আগে পাবেন, তা হলো– বাগানটির ‘জীবন’। যতই কাছে যাবেন, মনোমুগ্ধকর রং, আলো আর সৌন্দর্যের অপ্রত্যাশিত বৈচিত্র্যে জুড়িয়ে যাবে চোখ। এই শিক্ষা আমাকে সবচেয়ে গভীরভাবে ছুঁয়ে গেছে এবং এনে দিয়েছে আমার সাম্প্রতিক উপলব্ধি, সেটি আমাকে ফিরিয়ে নিয়েছে হাইস্কুল জীবনের দিনগুলোতে। তখন মডেলিং করতে বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ পেয়েছিলাম আমি; সে যাত্রায় শিখেছিলাম দুটি জিনিস, একটি বইয়ের রসদ সেই বইটির প্রচ্ছদের চেয়ে বেশি কথা বলে এবং আমার স্বপ্নকে আমি নিজের দেশেই প্রস্ফুটিত করতে পারব।
বাগানে চারাগাছ...
কোনো বাগানের একটি ফুলের মতোই, বড় কোনো পরিসরে জায়গা করে নেওয়াটা কঠিন খুব। নিজের ভ্রমণ অভিজ্ঞতায়, দূর থেকে সেই ছবি দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। জীবনের বহুমাত্রিকতায় যদিও চোখ আমার এখনও অন্ধ, তবু এর সৌন্দর্য ও সুযোগগুলোকে সঙ্গী করে আমি গর্বের সঙ্গেই বলতে পারি, চমৎকার সাউথ আফ্রিকান বাগানে চারাগাছ হয়ে উঠতে আমার বীজ রোপিত হয়ে গেছে। বাগানটির প্রতিটি সাউথ আফ্রিকান অংশকেই আমরা সাউথ আফ্রিকা বলে ডাকি। আমাদের আদুরে দেশটির কাছ থেকে যা পেয়েছি, তাতেই গড়ে উঠেছি আমরা; আর এ দেশের কী কী বেছে নেব– সেটি বাছাইয়েরও ক্ষমতা রয়েছে আমাদের। লালপানি ‘পান করে’ একটি গোলাপের কলি যেমন লাল হয়ে ওঠে, তেমনি আমি আর দেশ ও দেশের মানুষের কাছ থেকে পানের জন্য ভালো জিনিসগুলো বেছে নিতে চাই। নিজের পিপাসা মেটাতে আমি বেছে নিই– পরের কল্যাণবোধ, সত্যতা, উপযোগিতা, সহজগম্যতা এবং রসাস্বাদন।
আমরা যদি ভালো কিছু ‘পান’ করি, তাহলে আমাদের বাগান ভ্রমণে আসা যে কেউই ভালোবাসার ঘ্রাণ আস্বাদন করতে পারবে। জীবন বাগানের একটি গর্বিত ফুল আপনি। নিজের যত্ন নিন!
মন্তব্য করুন