
কৈশোরে বয়ঃসন্ধিকালীন স্বাস্থ্যগত সমস্যা ও ভীতিতে গ্রামের প্রায় সব কিশোরীই কমবেশি ভুগে থাকে। এ নিয়ে লজ্জা, চেপে যাওয়া, সমস্যা পুষে রাখার প্রবণতাও বেশি। যেমন কিশোরীদের ঋতুকালে বাড়ির বাইরে অথবা বিদ্যালয়ে না যাওয়া, ভূত-প্রেতের ভয়, ঋতুকালীন খাবার গ্রহণকালে মাছ-মাংস খেতে না দেওয়াসহ নানা কুসংস্কার রয়েছে। বয়ঃসন্ধিকালে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টিতে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ১৫ জন কিশোরী সচেতনতামূলক কাজ করছে।
জরিপ দলের ওই ১৫ কিশোরী বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কেয়ার বাংলাদেশ থেকে বয়ঃসন্ধিকালীন বিষয়ক দু’দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছে। ‘পরিবর্তন’ নামে একটি স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জরিপকাজ বাস্তবায়ন করছে। এদিকে জরিপ দলের দলনেতা কুন্দইল কিশোরী ক্লাবের সভানেত্রী খাদিজাতুল কুবরা জানায়, তাদের জরিপে উঠে এসেছে অজপাড়াগাঁয়ে কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকালের নানা শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় ভোগার নানা চিত্র। বিশেষ করে প্রথম ঋতুকালে ভীতির মধ্যে রয়ে যায় তারা। এ সময়টাতে কিশোরীরা কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়ে। কিন্তু এসব কথা মা-বাবা বা পরিবারের বড়দের বলতে পারে না। আবার বললেও মা ও বড় বোনরা অসচেতনতার কারণে তেমন গুরুত্ব দেয় না। ফলে কিশোরীদের নীরবেই সহ্য করতে হয় ঋতুকালীন যত সমস্যা। গ্রামাঞ্চলের কিশোরীরা প্রথম ঋতুকালীন বিষয়ে মা-বাবা খোঁজ রাখেন না বা কোনো ধরনের পরামর্শও দেন না। এতে তারা অসহায় বোধ করে। আবার ঋতুকালীন স্যানিটেশন ব্যবস্থা নেই অনেক বিদ্যালয়েই। ফলে এ সময়ে অনেক কিশোরী বিদ্যালয়বিমুখ হয়ে পড়ে এ সময়টায়।
এ বিষয়ে কিশোরীদের নিয়ে কাজ করা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘পরিবর্তন’-এর পরিচালক আবদুর রাজ্জাক রাজু বলেন, ‘গ্রামীণ সমাজের বেশির ভাগ কিশোরী বয়ঃসন্ধীকালীন স্বাস্থ্যগত সমস্যা নিয়ে কোনো ধারণা রাখে না। তারা ঋতুকালীন সমস্যাগুলো গতানুগতিক ভেবে থাকেন। বহুকাল ধরে এভাবেই চলে আসছে।’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ নিয়ে বিস্তর আলোচনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন এই উন্নয়নকর্মী।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা খাদিজা নাসরীন বলেন, ‘বয়ঃসন্ধিকালীন শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন নিয়ে কিশোর-কিশোরী ক্লাবে শিক্ষা দেওয়া হয়। ঋতুকালীন স্বাস্থ্য সচেতনতা জোরদার করতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।’
মন্তব্য করুন