কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) বিকাশে বহুমাত্রিক সম্ভাবনা দৃশ্যমান। প্রায় সবকিছুতেই ব্যবহৃত হচ্ছে এআই প্রযুক্তি। যে কোনো প্রযুক্তির লাগামহীন বিকাশ ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। তাই কঠোর নীতিমালা দরকার। কিছুদিন আগে টেক জায়ান্টদের সঙ্গে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের বৈঠকে এক্স সিইও ইলন মাস্ক এআই রেফারির আহ্বান জানিয়েছেন। শক্তিশালী ফোরাম এমন রেফারির দায়িত্ব পালন করতে পারে।

মার্কিন সংসদে ক্যাপিটল হিলে সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা চাক শুমার ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। সেখানে আইনপ্রণেতা ও টেক উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ে দ্বিপক্ষীয় ফোরাম গঠনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। এতে ৬০ জনের বেশি সিনেটর অংশ নেন। মাইক্রোসফট, এক্স, মেটা, অ্যালফাবেট এবং ওপেনএআই ঘরানার বৃহৎ প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এআই নীতিমালা নির্ধারণে ওয়াশিংটন ডিসিতে একত্র হয়। সেখানে ইলন মাস্কের সঙ্গে আরও ছিলেন মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ ও অ্যালফাবেটের সিইও সুন্দর পিচাই।

মাস্ক জানালেন, এআই প্রযুক্তির নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিতে নিয়ন্ত্রকের প্রয়োজন। আমাদের জন্য একজন রেফারি থাকা দরকার। নিয়ন্ত্রক নিশ্চিত করবে, প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নিরাপদ ও জনস্বার্থবিরোধী পদক্ষেপ নেবে না।

মাস্ক ওই বৈঠককে ‘মানবতার সেবা’ উল্লেখ করে বলেন, সভ্যতার ভবিষ্যতের জন্য জরুরি অধ্যায় হিসেবে ইতিহাসে লেখা থাকতে পারে।

অন্যদিকে জাকারবার্গ বললেন, উদ্ভাবন ও সুরক্ষার জন্য মার্কিন কংগ্রেসের এআই প্রযুক্তির সঙ্গে জড়িত হওয়া উচিত। বিকাশমান প্রযুক্তির বিকাশে ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক পদক্ষেপ জরুরি। অসম্ভব কিছু ঘটলে শেষমেশ সরকারই দায়ী থাকবে। অন্যদিকে অ্যাডোবি, আইবিএম, এনভিডিয়া এবং অন্যান্য পাঁচটি টেক প্রতিষ্ঠান বলছে, তারা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্বেচ্ছাসেবী এআই প্রতিশ্রুতিতে সই করেছে। যেখানে এআই থেকে আসা জরুরি সব বিষয় ওয়াটারমার্কিংয়ের মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। যেন সহজেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মানুষের কাজের পার্থক্য করা যায়। সারাবিশ্বে নিয়ন্ত্রকরা জেনারেটিভ এআই ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার নিয়ম-নীতি তৈরি করতে হিমশিম খাচ্ছেন। গত মার্চে মাস্ক, এআই বিশেষজ্ঞ ও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীরা সমাজের জন্য সম্ভাব্য ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে ওপেনএআই প্রযুক্তির জিপিটি-৪ সংস্করণের চেয়ে তুলনামূলক শক্তিশালী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশে ছয় মাসের বিরতির আহ্বান জানিয়েছিলেন।

সবশেষ জুলাই মাসে ঘোষিত প্রতিশ্রুতি চুক্তিতে সই করেছে গুগল, ওপেনএআই, মাইক্রোসফটসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। সেসব প্রতিশ্রুতির লক্ষ্য হলো, মূলত এআই প্রযুক্তির শক্তি ধ্বংসাত্মক উদ্দেশ্যে যেন ব্যবহার না হয়, তা নিশ্চিত করা।

মার্কিন কংগ্রেস সম্প্রতি এআই নিয়ে তিনটি শুনানির উদ্যোগ নিয়েছে। মাইক্রোসফট প্রেসিডেন্ট ব্র্যাড স্মিথ সিনেটের বিচার বিভাগীয় উপকমিটিকে জানিয়েছেন, কংগ্রেসের উচিত এআই প্রযুক্তির জন্য সুরক্ষা নীতিমালা তৈরি করা, যা জরুরি অবকাঠামো নিয়ন্ত্রণ বা পরিচালনায় ব্যবহৃত হয়।