ছড়া কবিতা

.
সমকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৩ | ১৮:২৬ | আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৩ | ০০:২৬
জা হা ঙ্গী র আ ল ম জা হা ন
গাঁয়ে ফেরার আকুলতা
কার্তিকে পাই শৈত্য বায়ু, অঘ্রাণে ধান পেকে যায়
নতুন চালের পিঠার খবর কে খুশিতে হেঁকে যায়?
সবার ঘরেই সুখের পরশ, আনন্দে মন নেচে যায়
ভোর-কুয়াশায় কৃষকেরা মাঠে কোমর কেচে যায়।
ধান দাওয়াটা শুরু হলেই মন জুড়ে সুখ বয়ে যায়
ফসলগুলো তোলার পরে মাঠও বিরান হয়ে যায়।
পিঠা-পুলির ধুম পড়ে যায়, মেয়েরা আসে নায়রে
গ্রামগুলো ঠিক ভাসতে থাকে অনন্ত সুখ-সায়রে।
এককালে এই দৃশ্য পেতাম সকল পাড়া-গাঁ জুড়ে
একের সাথে অন্যজনের চলতো আলাপ খাজুরে।
অবসরের সুযোগ পেলেই হুঁকোর সাথে ভাব হতো
গাছে গাছে ফলফলারি আর নারকেল ডাব হতো।
গাঁয়ে গেলেও সেই দৃশ্য দুই চোখে আর পড়েই না
গানের তালে মাল্লা-মাঝি সেই সুরও যে ধরেই না।
কই হারালো মধুর অতীত, স্মৃতি খুঁজি হাতড়িয়ে
স্নানের ছলে গাঁয়ের নদী দিতাম পাড়ি সাঁতরিয়ে।
আগের মতোই কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাস আসে
কিন্তু এখন গাঁয়ে গেলে বুকফাটা নিঃশ্বাস আসে।
পাই না খুঁজে পূর্বকালের আনন্দময় গাঁ-টি আর
হাতছানিতে ডাকে নাতো সেই পল্লির মাটি আর।
আবার যদি পেতাম ফিরে শান্তি-সুখের পল্লিকে
বিদায় দিতাম এই শহরের সকল অলি-গল্লিকে।
গাঁয়ের বাড়ির কুঁড়েঘরেই সুখ যে পেতাম অনন্ত
বুকের মাঝে শুনি আজও গাঁয়ের অনুরণন তো।
রা না কু মা র সিং হ
ঘড়ির দেশে পরির দেশে
ছোট্ট খুকীর ভাল্লাগে না ঘড়ি!
সকাল হতেই বিকট সুরে
হতচ্ছাড়া, ঘুরায় দেখি ছড়ি।
ঘড়ি নিয়ে খুকীর মুখে
গল্প আসে কেবল দুখে
একটুখানি শুনতে গেলে
পড়াটড়া বেবাক ফেলে
বলছে খুকী, শোনো–
হাসবে না কক্ষনো;
ঘড়ি ধরে ইশকুলে যাও
ঘড়ি ধরে ক্লাস
ঘড়ি ধরে মায়ের হাতে
আমার দুধের গ্লাস।
ঘড়ি ধরে কার্টুন এবং
ঘড়ি ধরে খেলা
ঘড়ি ধরে কাজ না হলে
হয় বকুনি গেলা।
ঘড়ি ধরে ঘুম ভাঙানো
ঘড়ি ধরেই ঘুম
ঘড়ি ধরে গান শেখা আর
নৃত্যটা ঝুমঝুম।
কিন্তু গেলে গভীর ঘুমে
পরির দেশে যাই
ফুল পরি আর নীল পরিদের
সঙ্গে খেলি গাই।
পরির দেশে ঘড়ির বড়াই
নেই কো মোটে ভাই
কেবল হাসিখুশি পরির
দেখা আমি পাই।
পরির দেশে সময় দেখে
দেয় না তো কেউ বকে
সবাই দেখি উড়ে বেড়ায়
আপন মনের শখে।
ঘড়ির দেশে খুকীর সময়
বড্ড যে একঘেয়ে
পরির দেশে কী আনন্দে
যায়রে নেচে গেয়ে।
সারওয়ার-উল-ইসলাম
ঘুঙুর নদী
আজ সারাদিন একলা বাসায়
আজ সারাদিন একা
চোখ জানালায় পাচ্ছি কাছের
ঘুঙুর নদীর দেখা।
পর্দা ওড়ায় ঘুঙুর নদীর
জলে ধোয়া বাতাস
ওরে ঘুঙুর, অপার সুখে
আমায় কেন মাতাস?
জলে ধোয়া বাতাসে মন
চনমনিয়ে ওঠে
অজান্তে কেউ শিশ বাজিয়ে
দিচ্ছে আমার ঠোঁটে।
অনেক দূরে যাচ্ছে দেখা
রঙিন পালের নাও
ইচ্ছে করে কাছে গিয়ে
বলি, কোথায় যাও ?