হেমন্তকে শীতের চিঠি
.
ফারুক নওয়াজ
প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৩ | ২১:৪৬
হেমন্তকে শীত পাঠালো হিমেল হাওয়ার চিঠি
‘আমরা মায়ের যমজ ছেলে দুজন পিঠাপিঠি
আয় চলে তুই জলদি করে এবার আমার পালা
তুই দিয়েছিস নতুন ফসল, ধানকাউনের ডালা
পরম সুখে চাষির ছেলে মাতলো নবান্নতে–
এবার আমি কাঁপিয়ে দিতে আসবো নিসর্গতে
উত্তুরে ওই হিমপাহাড়ের বরফ ছুঁয়ে ছুঁয়ে
ছড়িয়ে দেবো শীতল হাওয়া থাকলে মানুষ শুয়ে।
উদোম গায়ের পথের শিশু, বৃদ্ধ আবাসহারা
কাঁপবে তারা ঠকঠকিয়ে– উপায় কী এ ছাড়া!
এই প্রকৃতির নিয়ম মেনেই আমরা আসি ধরায়
যেমন আমি কাঁপন-হাওয়ায় গাছের পাতা ঝরায়
এলেই আমি গরিব কাঁপে রয় জীবনের ঝুঁকি
উলটো আবার ধনীর ছেলে থাকে দারুণ সুখী
বেড়ায় ঘুরে জড়িয়ে গায়ে শীত তাড়ানো বসন
ভাববে সবাই হয়তো আমি করি ওদের তোষণ।
তোষণ-টোশন নয়রে কিছু এটাই আমার রীতি
এটাই হলো এই প্রকৃতির ঋতুর সংস্কৃতি।
হয়তো আমি হিম ছড়িয়ে কষ্ট বাড়াই, তবে
এলেই আমি এই বাঙালি মাতে যে উৎসবে
পিঠাপুলির দিন শুরু হয়, বসে বাউল-পালা
খেজুর-রসের ভাঁড় তুলে দিই, চিতইপিঠার থালা।
রসের পায়েস, কুলসি, ভাঁপার স্বাদ নিতে সব থাকে
সেই খুশিতে ভরদুপুরে হলদে পাখি ডাকে।
বোঝাই আমি দুঃখ-সুখেই মানব-জীবন গড়া;
আমায় পেয়ে বাউল খুশি, কবিও লেখে ছড়া।
হেমন্ত তুই এলেই আমি ছুটবো হাওয়ার রেলে
ফিরলে আমি বসন্তকে পাঠিয়ে দেবো ঠেলে।
বসন্ত মা’র ছোট্ট ছেলে স্বভাব কবি-কবি
ফুল ফোটানোর মন্ত্র পড়ে পাল্টে দেবে সবি।’