- গোলটেবিল
- শিশুর সুরক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে
এবার শুনব শিশুদের কথা
শিশুর সুরক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে
শিশুদের মনের কথা অনেকে শুনতে চায় না। শিশুদের মতপ্রকাশের সুযোগও কম। তাদের শারীরিক স্বাস্থ্য নিয়ে সবাই ব্যস্ত থাকলেও মনের কথা কেউ জানতে চায় না। নেওয়া হয় না মনের যত্ন। অথচ আগামীর এই প্রজন্ম প্রাণ খুলে কথা বলতে পারলেই উঠে আসবে অনেক সমস্যা। কিন্তু বর্তমান সমাজে শিশুদের মতপ্রকাশের সুযোগ কম। ফলে অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তারা। বাল্যবিয়ে, ধর্ষণ ও নির্যাতনের মতো সহিংসতার শিকার হচ্ছে শিশুরা। নানা প্রতিবন্ধকতায় জড়িয়ে পড়ছে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে। এবার শিশুরা শুনিয়েছে তাদের মনের কথা। তুলে ধরেছে সমস্যা। নিজের সুরক্ষা, নিরাপত্তা, মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় সহায়তা চেয়েছে সবার। গত ২১ ডিসেম্বর 'এবার শুনবো শিশুদের কথা' শীর্ষক এক অনলাইন সংলাপে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে একঝাঁক শিশুর কণ্ঠে উঠে আসে বাল্যবিয়ে, করোনাকালে শিক্ষা পরিস্থিতি, মানসিক স্বাস্থ্য ও নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার, নিরাপত্তা, শিশুশ্রম, প্রবেশগম্যতা, নিরাপদ যাতায়াত, ধর্ষণ, পরিবেশগত পরিবর্তন ও প্রভাব, পাঠ্যপুস্তক, নির্যাতন, সুবিধাবঞ্চিত ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের সমস্যাসহ নানা বিষয়। আর শিশুদের সমস্যা শুনে সরকারি কর্মকর্তা, চিকিৎসক ও বিশ্নেষকরা শুনিয়েছেন আশার কথা। দিয়েছেন নানা পরামর্শ। চাইল্ড রাইটস অ্যাডভোকেসি কোয়ালিশন ইন বাংলাদেশ-এর পক্ষে আইন ও সালিশ কেন্দ্র এ সংলাপের আয়োজন করে। এতে মিডিয়া পার্টনার ছিল দৈনিক সমকাল।
শেখ রোকন
শিক্ষা, দর্শন, চিন্তা- সব আমরা শিশুদের মাঝে চাপিয়ে দিতে চাই। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, 'তোমার হাতে নাই ভুবনের ভার।' তোমার যা ভালো লাগে সেটাই করো। বাকিদের কাজ বাকিরা করবে। অবশ্য সরকার এ কথা বলতে পারে না। কারণ অনেক ভারই সরকারের হাতে থাকে। সেসব ভার তাদের নিতে হবে। আমরা শিশুদের কথা শুনলাম। তারা তাদের বাস্তব অবস্থা তুলে ধরেছে। একটি মুখের হাসির জন্য আমরা অস্ত্র ধরেছি। আমরা শিশুদের কথা শুনেছি, কিন্তু তাদের মুখে হাসি নেই। শিশুদের মুখে হাসি ফোটানোর মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার পূরণ করতে এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে পারব। সমকাল সব সময় শিশুর সুরক্ষা ও অধিকারকে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে। 'ঘাসফড়িং' নামে শিশুদের জন্য একটি পাতা আছে সমকালে; সেখানে শিশুরা তাদের মনের কথা তুলে ধরতে পারে। সমকাল শিশুদের কথাগুলো ছড়িয়ে দেবে।
রাশেদা কে চৌধুরী
আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মনে করি, আমরাই সব জানি, আমরাই দক্ষ। শিশুদের কথা শোনার ধৈর্য থাকে না আমাদের। অথচ শিশুরা হয় ভিকটিম না হয় উপকারভোগী। বিজয়ের মাসে আজ শিশুরা প্রাণ খুলে কথা বলেছে। তাদের মনের কথা উঠে এসেছে। আজকের সংলাপের মধ্য দিয়ে স্বপ্নের সূচনা হলো।
শিশুরা আজ অনেক সমস্যার কথা বলেছে। প্রতিবন্ধীদের 'বিশেষ' বলেই আমরা তাদের সরিয়ে রেখেছি। এখন পর্যন্ত প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত। তাদের শিক্ষাটা অন্তত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে অধিকার হিসেবে ন্যস্ত করা উচিত। আমি মনে করি, এখানে আমাদের অনেক কিছুর ঘাটতি রয়ে যায়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় কিন্তু নির্দেশনা দিয়েছে, যত নতুন ভবন হবে, সেখানে র্যাম্প করতেই হবে।
শিশুদের মুখে শুনলাম, অনেক শিশু নাকি যান্ত্রিক আচরণ করছে। এই কথাটা অনেক কড়া। কিছু শিশু যান্ত্রিক আচরণ করছে, কিন্তু সব শিশু তা করছে না। গ্রাম-গঞ্জে অসংখ্য শিশু এখন পুকুর-মাঠে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু এখানে যে শিশুটি বলছে, সে-ই এটা মোকাবিলা করছে। শিশুদের কথায় ইন্টারনেটের অপব্যবহরের কথা উঠে এসেছে। এটা নিয়ে অনেক দিন ধরে বলা হচ্ছে। এটার জন্য শিশুদের মা-বাবার মধ্যেই সচেতনতার অভাব রয়েছে। অনেক শিশু বলছে, তাদের কাউন্সিলিং দরকার নেই, তাদের মা-বাবার কাউন্সিলিং দরকার। আসলে আমরা তথ্যপ্রযুক্তি বাদ দিতে পারব না, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও বাদ দিতে পারব না। ফলে ইন্টারনেটের ব্যবহার সম্পর্কে সবাইকে সচেতন হতে হবে। এখনও বাংলাদেশে ৩০-৪০ শতাংশ মা-বাবা লেখাপড়া জানেন না। তাদেরও শিক্ষিত করার উদ্যোগ নিতে হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে বাল্যবিয়ে ও সহিংসতা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে, তাদের জন্য একটি বুকলেট আমরা দিয়েছি। শিশুদের সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব সবার। রাস্তায়ও শিশুদের নিরাপত্তা নেই। অনেক স্থানে সড়ক যোগাযোগ নেই। এসব এলাকার শিশুরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছয় বছরেও ভর্তি হয় না রাস্তা না থাকার কারণে।
শিশুদের সমস্যা সমাধানে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। গণমাধ্যম যদি সুহৃদ হিসেবে থাকে তাহলে অনেক কিছু ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব। যেমন সমকাল আজ শিশুদের কথাগুলো সারাদেশে ছড়িয়ে দিচ্ছে। শিশুদের সমস্যা সমাধানে বিশেষ করে প্রবীণদের দায়িত্ব বেশি। আমরা যেন শিশুদের দিকে খেয়াল রাখি। পরিবারে যেন আমরা শিশুদের দিকে একটু খেয়াল রাখি। প্রজন্ম যদি নানাভাবে হারিয়ে যায়, তাহলে এর ক্ষতি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরেও পুষিয়ে নিতে পারব না। সবকিছু নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
মো. মুহিবুজ্জামান
সরকারের ওপর অনেক ভার থাকে। আমরা সেই ভার মোকাবিলা করছি জিও-এনজিও নিয়ে। এক সময় সরকার একলা চলো নীতিতে বিশ্বাসী ছিল। এখন সবার জন্য সরকারের জানালা খোলা। সেই জানালা দিয়ে আমরা সবাইকে দেখতে চাই। আমরা দেখছিও। প্রথমত, আইনকানুন দিয়ে সরকার নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতা মোকাবিলা করে। আরেকটি থাকে সমাজ ও সংস্কৃতি বিকাশের মাধ্যমে। সেটা আমরা করে থাকি শিশু একাডেমির মাধ্যমে। সেখানে শিশুদের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ হয়। আরেকটি শিশুর ক্রমবিকাশ, যা ভ্রূণ থেকে শুরু হয়। ভ্রূণের পরিচর্যা যদি ঠিকমতো না হয় তখন শিশুর নানা সমস্যা হয়। গর্ভে যখন শিশু আসে তখন পরিচর্যা করতে হবে। এ রকম কয়েক ভাগে আমরা শিশুর বিকাশে কাজ করছি। শিশুর কল্যাণে শিশু বিকাশ কেন্দ্রসহ সরকারের প্রজেক্ট আছে। এসব প্রোগ্রাম ও সরকারের নির্দিষ্ট কাঠামোর মাধ্যমেই আমরা শিশুদের জন্য কাজ করছি। যেখানে সরকার পৌঁছতে পারে না সেখানে বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে আমরা পৌঁছে যাচ্ছি।
আজকের সংলাপে শিশুরা ভালো ভালো প্রসঙ্গ তুলে ধরেছে। চট্টগ্রামের এক শিশু তার স্কুল ভবনে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে সমস্যার কথা বলেছে। আমরা চেষ্টা করব তার বক্তব্য সংশ্নিষ্ট জায়গায় পৌঁছানোর। শিশুরা নিরাপদ ইন্টারনেটের দাবি জানিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করব। করোনা পরিস্থিতির কারণে আমরা শিশুদের ইন্টারনেটের সুযোগ দিয়েছি। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই তারা যেন এর অপব্যবহার না করে। পাসওয়ার্ড সুরক্ষিত রাখতে হবে। অনেক লোভনীয় অফার সাবস্ট্ক্রাইব করলে তা হ্যাকারদের কাছে চলে যায়। এসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
একজন শিশুর আচরণ হঠাৎ পরিবর্তন হচ্ছে কিনা, তা অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে। এ রকম হলে আমাদের কাউন্সিলিং সেন্টারে নিতে পারেন। নির্যাতন থেকে বাঁচতে আমাদের ১০৯ হটলাইন ও অ্যাপসের সহায়তা নেওয়া যাবে। ১০৯ হটলাইনের সঙ্গে পুলিশের দুটি হটলাইন সংযুক্ত। এর পরও কাজ না হলে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে জেলা ও উপজেলা কর্মকর্তাদের সহায়তা নেওয়া যাবে। এ ছাড়া অ্যাপসের মাধ্যমেও আমরা সহায়তা দিচ্ছি। ১০৯ নম্বরে কল করে নির্যাতন কিংবা বাল্যবিয়ের শিকার শিশুরা প্রতিকার পাচ্ছে। আমরা শিশুদের কথাগুলো সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেব। আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এসব বিষয় উপস্থাপন করব। এত পদক্ষেপের পরও কোনো শিশু বিপদে পড়লে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।
ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ
আমরা শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করি। শিশুদের কীভাবে ভালো রাখতে হবে, তা নিয়ে কাজ করি। ২০১৩ সালে ১১টি রাষ্ট্রের মধ্যে ১০টি রাষ্ট্র নিয়ে আমরা গবেষণা করেছি। এতে বাংলাদেশের ৫৬ শতাংশ শিশু বলেছিল, তাদের কথা কেউ শোনে না। তাদের মানসিক সমস্যা আছে কিনা, সেটি কেউ জানতে চায় না। মা-বাবা তাদের কথা শোনে না। মনে হয়, তাদের ভালোমন্দ নেই। ছোটবেলায় শিশুদের শারীরিক স্বাস্থ্য নিয়ে সবাই ব্যস্ত থাকে। কিন্তু তাদের মনের কথা কেউ জানতে চায় না। তাদের মনের যত্ন নেওয়া হয় না।
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় মাঠ, খেলাধুলাসহ সব বিষয় কারিকুলামে আছে। আসলে কারিকুলাম থাকতে হবে অ্যাক্টিভিটির মাধ্যমে। সবকিছু পাঠ্যপুস্তকে থাকার দরকার নেই। অ্যাক্টিভিটির মাধ্যমে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখা যায়। মা-বাবারা প্রায়ই আমাদের কাছে শিশুদের নিয়ে আসেন। তারা বলেন, সন্তান পড়তে চায় না। এটিই প্রমাণ করে- তার শিশু মানসিকভাবে সুস্থ। কারণ তার পড়ার মধ্যে এমন কিছু নেই, যা তার পড়তে ভালো লাগবে।
শিশুদের কথার মাঝেই লুকিয়ে আছে ভালো থাকা ও মন্দ থাকা। ভালো থাকা ও মন্দ থাকা নিয়ে পলিসির কিন্তু অভাব নেই। পলিসি থেকে অ্যাকশনে আমাদের জোর দিতে হবে। পলিসি বাস্তবায়নে জোর দিতে হবে। দ্রুতগতির ইন্টারনেট শিশুদের হাতে তুলে দিতে হবে। তবে ইন্টারনেটে শিশু কী দেখছে, তা নিয়ে অভিভাবকদের মাঝে ভয় আছে। ফলে বাবা-মাকেও প্রযুক্তিতে দক্ষ হতে হবে। বাবা-মাকে শিশুদের সময় দিতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে নগরকেন্দ্রিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এক রকম সূচক কাজ করে। একটি স্কুলের প্রধান আমাকে বলেছেন, আমার স্কুল থেকে পাস করে কেউ দেশেই থাকে না; বিদেশে চলে যায়। ছোটকাল থেকেই শিশুদের মনে বিদেশ শব্দটি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তাহলে তারা দেশ নিয়ে ভাববে কেন? জিপিএ ৫ যেন স্কুলের উদ্দেশ্য না হয়। শিশুদের যেন দেশের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা হয়।
নুয়ারা সফিক দিশা
দশটি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার জোট চাইল্ড রাইটস অ্যাডভোকেসি কোয়ালিশন ইন বাংলাদেশ তাদের ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সংলাপের আয়োজন করেছে। এ সংলাপে শিশুদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়েই শিশুদের সুরক্ষা, নিরাপত্তা, মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত করার কাজ এক ধাপ এগিয়ে যাবে।
দোলা আক্তার রেবা
জাতীয় শিশু ফোরাম ১৮ হাজার শিশু নিয়ে কাজ করছে। আমরা বাংলাদেশে ৬০০ বাল্যবিয়ে বন্ধ করেছি। আমরা এই কাজ করতে গিয়ে দেখেছি বাবা-মা মনে করেন- মেয়েরা সমস্যা, নিরাপদ নয়। এ ছাড়া অনেক বাবা-মা শিক্ষিত নন। এতে বাল্যবিয়ের শিকার হয় শিশুরা। বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে আইনে কঠোরতার পাশাপাশি মানুষের মস্তিস্কের পরিবর্তন হওয়া জরুরি। নারী-পুরুষ সমতা বজায় রাখা জরুরি। 'বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর,/অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর'। কাজেই মেয়েকে মেয়ে হিসেবেই দেখতে হবে। মেয়েদের পৃথিবী দেখাতে হবে।
মোনিরা
আমাদের এলাকায় একটি মেয়েকে ১৫ বছর বয়সে বিয়ে দেওয়া হয়। সে তারা বাবা-মাকে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু তার মা-বাবা তার কথা শোনেননি। একপর্যায়ে মেয়েটি আত্মহত্যা করে। এতে সম্ভাবনাময় মেয়েটি অকালে ঝরে গেল। নিভে গেল তার স্বপ্ন। আমাদের এলাকায় বেশিরভাগ বাল্যবিয়ে হচ্ছে লুকিয়ে। রেজিস্ট্রি ছাড়াই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বাল্যবিয়ে দেওয়ার জন্য বয়স বাড়ানো হচ্ছে। কাজিরা টাকার বিনিময়ে বয়স বাড়াতে সহায়তা করছেন। তা ছাড়া কোর্ট থেকেও বয়স বাড়িয়ে বিয়ে পরিয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন, চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। বাল্যবিয়ের কারণে যে একটি শিশুর জীবন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, দেশের ক্ষতি হচ্ছে- এদিকে কেউ খেয়াল করছে না। আমার সহপাঠীদের অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের শিক্ষকরাও ভূমিকা নিচ্ছেন না। বাংলাদেশে অনেক আইন প্রণয়ন করা হলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এ বিষয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে। সচেতন না হলে শুধু আইন দিয়ে বাল্যবিয়ে বন্ধ করা সম্ভব নয়।
মেহজাবিন মুনিরা
করোনাকালে গ্রামাঞ্চলে বাল্যবিয়ে বেড়ে গেছে। আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম দেখতেন শিশুর মধ্যে ভবিষ্যতের উজ্জ্বল স্বপ্ন আর মনে-প্রাণে বিশ্বাস করতেন, শিশুর জীবন অসীম সম্ভাবনাময়। তিনি সুদৃঢ়ভাবে আস্থা রেখেই লিখেছেন, 'আমি চেয়ে আছি তোদের পানে রে ওরে ও শিশুর দল, নতুন সূর্য আসিছে কোথায় বিদারিয়া নভোতল।' কিন্তু বর্তমানে বাল্যবিয়ের কারণে শিশুদের উড়ে যাওয়া ডানা দুমড়েমুচড়ে ভেঙে যাচ্ছে। দেশের উত্তরের জনপদ কুড়িগ্রামে বেশিরভাগ মা-বাবা দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে। করোনার মধ্যে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ দারিদ্র্য বেড়েছে। পরিবারের ভার কমিয়ে মা-বাবা সুখে থাকতে চান। ফলে অনেক শিশু বাল্যবিয়ের শিকার হচ্ছে। শিশুরা নিজের স্বপ্ন সাজাতে না সাজাতেই বাল্যবিয়ের শিকার হচ্ছে। এক রাশ দুঃখের মধ্যে পতিত হচ্ছে। সারাদেশে এখন স্কুল-কলেজ বন্ধ। এ সময়ে সবাই বাড়িতে থাকছে। এতে বাল্যবিয়ে দিতে সুবিধা হয়ে গেছে। বিশেষ করে চরাঞ্চলে বাল্যবিয়ের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। কারণ এসব এলাকায় সংশ্নিষ্টদের কোনো নজরদারি নেই।
শিশুদের জন্য গঠিত কমিটিগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। আশা করি শিশুরা স্বপ্ন দেখবে, বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পাবে। সারাদেশ একদিন বাল্যবিয়ে থেকে মুক্ত হবে। শিশুরা আগামী দিনের বাংলাদেশে নেতৃত্ব দেবে। শিশুরা আলোকিত করবে বাংলাদেশকে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ব।
রুবিয়া আক্তার
করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকে আমরা যুদ্ধ করছি। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে আছে। এ সময়েও বাংলাদেশ সরকার পিছিয়ে যায়নি। মন্ত্রণালয় ঘরে বসে শিক্ষার অগ্রযাত্রা সম্পন্ন করেছে। এডুকো বাংলাদেশ কর্মজীবী শিশুদের শিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছে। তিনশ শিশুর মধ্য থেকে একশ শিশুকে কাজ থেকে ফিরিয়ে এনে শিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছে। কিন্তু অনলাইনে শিক্ষা শিশুদের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। কারণ, অনলাইনের সুযোগ অনেকের নেই। নিম্ন আয়ের মানুষ লকডাউনে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লকডাউন খুলে দেওয়ার পরও দারিদ্র্য কমেনি। ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে ওই পরিবারের শিশুরাও পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে কাজে যোগ দিয়েছে। তারা অনলাইন ক্লাস বাদ দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যুক্ত হয়েছে। এসব কাজে যে তারা যুক্ত হয়েছে- এই শিশুদের নিয়ে মন্ত্রণালয়ের কোনো পদক্ষেপ আছে? যারা বিভিন্ন সমস্যার কারণে অনলাইনে ক্লাস করতে পারছে না, সেসব শিশুকে নিয়ে আমাদের মন্ত্রণালয় কী কাজ করছে?
শহিদুল ইসলাম
আমি একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। আমি বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার সময় হুইলচেয়ারে চলাচল করি। বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার সময় আমাকে আরেকজনের সহায়তা নিতে হয়। আমাকে আমার মা-বাবা ভাইবোন সহায়তা করেন। তবে বিদ্যালয়ের সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠতে যাওয়ার সময় কারও সহায়তা পাওয়া যায় না। সে ক্ষেত্রে আমার বন্ধুরা আমাকে কোলে নিয়ে উপরে ওঠায়। দেশের বিদ্যালয়গুলোতে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। স্কুলে ওঠার জন্য উপযুক্ত সিঁড়ি নেই। আমি আশা করি, সারা বাংলাদেশে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের যেন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। স্কুলগুলো যেন প্রতিবন্ধীবান্ধব হয়। যারা কানে শোনে না, কিংবা চোখে দেখে না, তাদের উপযোগী ক্লাস নিতে হবে।
মো. শাকিব আহমেদ
শিশুরা আগামী প্রজন্মের ধারক। যখন কোনো শিশু ভালো আঁকাআঁকি করে, তখন আমরা বলি তাদের শিশু বড় শিল্পী হবে। তবে যে শিশু মন খারাপ ও হতাশা নিয়ে বড় হয়, তাদের নিয়ে আমরা কোনো ভবিষ্যৎ স্বপ্ন দেখি না। তাদের মানসিক স্বাস্থ্য আড়ালেই থেকে যায়। যদি কোনো শিশু মন খারাপ করে, এর দায়ভার আমাদের সবার। আমরা আমাদের শিশুদের বদ্ধ ঘরে বড় করছি। ঢাকায় প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকায় শিশুরা বড় হচ্ছে বন্দি অবস্থায়। আমাদের শিশুরা নীল-সাদা খুব কম দেখে, তারা আকাশের রং কালো দেখে। তারা আকাশ দেখে না। ঢাকার ৯৫ শতাংশ স্কুলে খেলার মাঠ নেই।
আমাদের শিশুদের বাসার বাইরে জায়গা দিতে পারি না। করোনার সময় শিশুরা বেশি শিকার হচ্ছে। নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারের বিষয়ে কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। শিশুরা খারাপ ও ভালো দুটিই দেখতে পাচ্ছে। ইন্টারনেটের নেতিবাচক দিকের কারণে শিশুদের মানসিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে। শিশুরা যেন পর্নো সাইটগুলোতে প্রবেশ করতে না পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
জেরিনা আক্তার
আমরা সবাই জানি, শূন্য থেকে ১৮ বছরের মধ্যে সবাই শিশু। আমাদের সমাজে বর্তমানে শিশুশ্রম বেড়ে গেছে। কর্মক্ষেত্রে বহু শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। এই শিশুশ্রম বন্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। যেন বিদ্যালয়ে গিয়ে পড়াশোনা করে স্বপ্ন পূরণ করতে পারি। বর্তমানে মেয়ে শিশুদের নিরাপত্তা নেই। আমাদের শিশুদের নিজের বাসায়ও নিরাপত্তা নেই। এখন আমরা ঘর থেকে বের হওয়ার আগে দু'বার ভাবি ঘরে নিরাপদে ফিরতে পারব কিনা। আমাদের উচিত শিশুদের জন্য নতুন বিশ্ব গঠন করা। সমাজের প্রত্যেক মানুষকে সচেতন হতে হবে। আমাদের পুরুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। যাতে আমরা বিনা বাধায় ঘর থেকে বেরিয়ে কাজ করতে পারি।
শারমিন আক্তার বীথি
আমাদের দেশের প্রায় প্রত্যেক শিশু দারিদ্র্যের মাঝেও স্কুলে যাচ্ছে, এটা আশার কথা। আমাদের দেশে প্রায় ৪৫ শতাংশ শিশু রয়েছে। রাস্তাঘাটে যাতায়াতে শিশুদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয় শেষ করে মাধ্যমিক পর্যায়ে যাওয়ার পর যাতায়াত ব্যবস্থা একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। যাতায়াতে যে খরচ, তা দরিদ্র পরিবার সংগ্রহ করতে পারে না। শিক্ষার্থীদের রাস্তাঘাটে অর্ধেক বাস ভাড়ার বিধান থাকলেও পুরো ভাড়া দিতে হয়। বাসে ঝুঁকি নিয়ে উঠতে ও নামতে হয়। বাসে উঠলে দেখা যায়, সেখানে পুরুষরা বসে থাকে। গাড়িতে শিশুরা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে। আন্দোলনের পর শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিদিন বিভিন্ন স্কুলে শিশুরা সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হলেও তাদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। মেয়েরা যে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে, তার জন্যও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, তিনি যেন এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেন। প্রত্যেক শিশুর যাতায়াত যেন সুরক্ষিত হয়।
সেতু আক্তার
যৌনপল্লির শিশুরা কোনো স্বাস্থ্য সহায়তা পায় না। তারা পড়াশোনা করতে পারে না। পড়ার পরিবেশ নেই। শিশুরাও নেশায় মেতে থাকে। সেখানে মেয়েরা সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে। তারা যদি বড় হয়ে মায়ের পেশায় চলে যায়, তাহলে ভবিষ্যৎ ধ্বংস হয়ে যাবে। যৌনপল্লিতে শিশুরা শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতায় ভুগছে। সরকার যদি এই বিশেষ জনগোষ্ঠীর দিকে নজর না দেয়, তাহলে পুরো বাংলাদেশ ঝুঁকিতে পড়বে। সরকার সহায়তা করলে তাদের পড়াশোনার পরিবেশ তৈরি হতো, এতগুলো শিশু আলোর পথে আসত।
জাহিদুল ইসলাম
সাধারণ শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরি থেকে একটি বই চাইলেই নিয়ে পড়তে পারে। কিন্তু আমরা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা সেটি পারি না। আমরা স্বাভাবিক বই পড়তে পারি না। অনলাইনে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের উপযোগী বই রাখা দরকার। তাহলে আমরা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা আর জ্ঞানের ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ব না। আমরা সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি সাহিত্যের বইও পড়তে পারব। দেশের জন্যও কিছু দিতে পারব।
বীথি মজুমদার
বিশ্বজুড়েই শিশু ধর্ষণ একটি বড় সমস্যা। শিশুরা নিকটাত্মীয় ও শিক্ষকদের দ্বারাও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। সংঘবদ্ধ ধর্ষণেরও শিকার হচ্ছে। খাগড়াছড়িতে দরজা ভেঙে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণ করা হয়। নারায়ণগঞ্জে প্রাইভেট শিক্ষকদের দ্বারাও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষকরা যেন ছাড় না পায়। বাংলাদেশ যেন ধর্ষণমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে ওঠে।
আহনাফ আনাম অর্ক
শিশুরা পরিবেশের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। দুর্যোগে আক্রান্ত তালিকায় বাংলাদেশ তৃতীয়। বর্তমানে দেশে ৭০ গুণ বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। বন্যার পানিতে ডুবে অনেক শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। অতি বন্যা, খরা কিংবা অতি তাপমাত্রায় শিশুদের ওপর বেশি প্রভাব পড়ছে। এখন যে পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে, এটির প্রভাব শিশুদেরই ভোগ করতে হবে। ফলে শিশুবান্ধব পরিবেশ গড়তে হবে।
মো. রাতুল
দেশে শিশুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। শিশুরা পাচারও হচ্ছে। ফলে তারা বেড়ে উঠতে পারছে না। আমি যে এলাকায় বসবাস করি, সেখানেও শিশুরা নানা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। অনেকেই পড়াশোনা ছেড়ে কাজ করছে। সেখানেও মালিকের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। অনেক বন্ধুকে দেখছি এসএসসি পাস করার পর দারিদ্র্যের কারণে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে কাজ করছে। কর্মক্ষেত্রেও তারা মালিকের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আমি চাই এটি বন্ধ হোক। পড়াশোনা বাদ দিয়ে কাজ করা বন্ধ হোক। শিশু নির্যাতন দমন হোক।
মো. তরিকুল ইসলাম নাজিম
আমি একজন শিশু। নির্যাতনের শিকার হলে প্রতিকার চাইতে গেলে কী করতে হবে, তা আমি জানি না। আমি মনে করি, নির্যাতনের শিকার হলে শিশুরা কী করবে, সেটি যেন পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত থাকে। বাল্যবিয়ে নিয়ে দেশে আইন আছে। কিন্তু প্রত্যন্ত গ্রামের শিশুরা এই আইন সম্পর্কে কিছুই জানে না। একজন শিশুকে শরীরের সীমানা বোঝাতে হবে। কোনটা ভালো স্পর্শ কিংবা কোনটা খারাপ স্পর্শ, সেটি বোঝাতে হবে। শিক্ষকরাও ক্লাসরুমে শিশুদের সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন না। কমিউনিকেশন স্কিল উন্নয়নেও শিশুদের কাজ করতে হবে। লিডারশিপ ও পৃথিবীকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ছোটবেলা থেকেই মানসিকভাবে গড়ে তুলতে হবে। দেশে মনে হয় এ রকম কোনো ট্রেনিং সেন্টারও নেই।
আফসানা কবির
একটি শিশুর জন্মের পর থেকে বেড়ে ওঠার পাশাপাশি সবকিছু পাওয়াই হচ্ছে অধিকার। এই অধিকার হতে পারে শিক্ষা, খাদ্য, স্বাস্থ্য সবক্ষেত্রে। কিন্তু আমাদের দেশে সব শিশু এই অধিকার পায় না। আজকের শিশুদের হাতেই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ। শিশুরা দারিদ্র্যের কারণে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ থাকার পরও শিশুশ্রমে জড়িয়ে যাচ্ছে। এই ক্ষেত্রে শিশু অধিকার খর্ব হচ্ছে। শিশুদের খেলাধুলার ব্যবস্থা নেই, বদ্ধ ঘরে তাদের কাটাতে হচ্ছে। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, প্রত্যেক শিশু যেন তাদের অধিকার যথাযথভাবে পায়। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাকে খেয়াল রাখতে হবে শিশু অধিকারের বিষয়ে। শিশুদের সঙ্গে বিভিন্নভাবে কথা বলতে হবে, যাতে তারা তাদের সমস্যা তুলে ধরতে পারে। তারা যাতে স্বাধীনভাবে তাদের মত প্রকাশ করতে পারে।
সঞ্চালক
শেখ রোকন
সহকারী সম্পাদক
দৈনিক সমকাল
বিশেষ অতিথি
রাশেদা কে চৌধুরী
নির্বাহী পরিচালক
গণসাক্ষরতা অভিযান
মো. মুহিবুজ্জামান
যুগ্ম সচিব
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়
ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ
সহযোগী অধ্যাপক
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
স্বাগত বক্তব্য
নুয়ারা সফিক দিশা
প্রকল্প সমন্বয়ক, শিশু অধিকার ইউনিট
আইন ও সালিশ কেন্দ্র
শিশু আলোচক
দোলা আক্তার রেবা
ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ
মোনিরা
অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ
মেহজাবিন মুনিরা
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ
রুবিয়া আক্তার
এডুকো বাংলাদেশ
শহিদুল ইসলাম
সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ
মো. শাকিব আহমেদ
ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ
জেরিন আক্তার
এডুকো বাংলাদেশ
শারমিন আক্তার বীথি
জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম
সেতু আক্তার
সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ
জাহিদুল ইসলাম
ডিজঅ্যাবল্ড চাইল্ড ফাউন্ডেশন
বীথি মজুমদার
জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম
আহনাফ আনাম অর্ক
সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ
মো. রাতুল
অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ
মো. তরিকুল ইসলাম নাজিম
বি-স্ক্যান
আফসানা কবির
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ
অনুলিখন
জাহিদুর রহমান
স্টাফ রিপোর্টার
দৈনিক সমকাল
মন্তব্য করুন