দেশে বিশ্বমানের ওষুধ তৈরি হওয়া সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রে সঠিক প্রয়োগ হচ্ছে না। দুর্বল বাজার তদারকির ফলে ওষুধের উচ্চমূল্য ও যত্রতত্র বিক্রি কমছে না। ওষুধের অপব্যবহারে অনেক সময় অনিরাপদ হয়ে উঠছে রোগীর সামগ্রিক সুরক্ষা ব্যবস্থা। এমন পরিস্থিতিতে রোগ ও রোগী ব্যবস্থাপনায় ওষুধের অপব্যবহার রোধ করা জরুরি এবং জনগণকে সচেতন করতে সম্মিলিত উদ্যোগ দরকার। সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সমকাল কার্যালয়ে এক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন বক্তারা। মাসব্যাপী 'মেডিসিন সেফটি উইক' উপলক্ষে ফার্মাকোভিজিলেন্স এবং বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের সহযোগিতায় এ গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করে সমকাল
হারুন-উর-রশিদ
২০ বছর আগে আমরা একটা সার্ভে করেছিলাম। সেখানে দেখেছিলাম, একটি হাসপাতালে ৯০ শতাংশ জ্বরের ওষুধে একটি থেকে দুটি অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছে। সেটা কি ভাইরাসজনিত রোগ ছিল, না ফাঙ্গাসের ইনফেকশনের কারণে জ্বর হয়েছে- কেউ জানে না। এটা হলো আমাদের চ্যালেঞ্জ। ব্যবস্থাপত্র আমরা কীভাবে করব। এটা করতে হলে আমাদের মনমানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। একটি ব্যবস্থাপত্রে তিন থেকে পাঁচটি ওষুধের বেশি থাকা ঠিক নয়। তবে আপনি যদি কোনো হাসপাতালে গিয়ে ব্যবস্থাপত্র অডিট করেন দেখবেন, ৬ থেকে ১০টি ওষুধ লেখা হয়েছে, যেটার কোনো প্রয়োজনই নেই। অনেক চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্রে প্রয়োজন ছাড়াই মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ লেখেন, এটি বন্ধ হওয়া জরুরি। দেশে ১২০০ ওষুধ কোম্পানি, তাদেরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। ওষুধ কোম্পানির লোকজন এসে চিকিৎসকের পেছনে লেগে থাকেন। তাঁরা প্রতিটি ব্যবস্থাপত্রে ছবি তুলে কোম্পানির বসদের দেখান। এটি না করলে তাঁদের নাকি চাকরি থাকবে না। এটার ওপরে তাঁদের পদোন্নতি নির্ভর করে। এগুলো থেকে ফার্মাসি কোম্পানিগুলোকে বের হয়ে আসতে হবে। এ ছাড়া মেডিকেল গবেষণা বাড়াতে হবে। ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো নমুনা ওষুধ চিকিৎসকের চেম্বারে দিয়ে থাকে। এটি কোনো কাজেই আসে না। এর মাধ্যমে টাকার বড় অংশ অপচয় হচ্ছে। সঠিক রোগ শনাক্ত না হওয়ায় রোগীর ভোগান্তি হচ্ছে। এ জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে হাসপাতাল নিবন্ধন প্রক্রিয়া একটু সহজ করতে হবে।
আহমেদুল কবীর
ওষুধ অনেক ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মাধ্যমে বাজারে আসে। এরপরও কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। এ ক্ষেত্রে কিছু সমাধান করা যায়, কিছু সমাধানযোগ্য নয়। এমন অনেক ওষুধ রয়েছে, দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এমনকি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি এমন অনেক ওষুধ সেবনেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ জায়গায় ফার্মাসিস্ট যদি দক্ষ না হন, তাহলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, এমন ওষুধ রয়েছে অনেক ভালো; কিন্তু নির্দিষ্ট রোগ সারাতে সাহায্য করলেও অন্য কোনো রোগ বাড়াতে সহায়তা করে। কিছু ওষুধ দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে কার্যকারিতা হারাচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানে আরও সচেতন হতে হবে। বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ঔষধ প্রশাসনের সক্ষমতা বাড়ানো। ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অনেকেই ওষুধ দিচ্ছেন। এটি বন্ধে উদ্যোগ নিয়েছি। ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কোনো অবস্থাতেই ওষুধ বিক্রি করা যাবে না। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা না গেলে ওষুধের অপব্যবহার বাড়বে। অবৈধ হাসপাতাল বন্ধে শক্ত অবস্থানে রয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কোনো অবস্থাতেই রোগীর সঙ্গে প্রতারণা করার সুযোগ দেওয়া হবে না। ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ওষুধ সেবনের কারণে দিন দিন অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের কার্যকারিতা হারাচ্ছে। এ ছাড়া নতুন করে অ্যান্টিবায়োটিক তৈরিও হচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে সামনে রোগীর চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক নেওয়া কঠিন হবে। এমন হতাশার মধ্যেও আমরা কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করা কোনো অবস্থাতেই চলবে না। এ ছাড়া আমরা ব্যবস্থাপত্র অডিট করার একটি নিয়ম চালু করেছি। এটি চালু করলে নির্দেশনা ছাড়া ব্যবস্থাপত্রে অতিরিক্ত যেসব ওষুধ লেখা হয়, এটা অনেক কমে আসবে। এখনও ব্যবস্থাপত্রের ওপরে কোনো জবাবদিহি নেই। এমনকি কে কোন ওষুধ লিখছে, এটা নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে চাই।
মোজাম্মেল হোসেন
আজ একটি বিচিত্র বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এখানে চিকিৎসা নয়, রোগীর নিরাপত্তা ও অন্যান্য বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে। যেসব ওষুধ চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া দোকান থেকে কেনা যায়, ঢাকার বাইরে সেসবের নকল ওষুধ ব্যাপক হারে তৈরি হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে কম দামে বেশি বিক্রি হয়। এটা রোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের অভাবের একটি দিক। এ ছাড়া নকল ওষুধ, ভুয়া চিকিৎসক, ওষুধ উৎপাদনে মান নিয়ন্ত্রণ, সঠিক মাত্রায় উপাদানগুলো ব্যবহার হচ্ছে কিনা, সরকারি সংস্থা ঠিকভাবে তদারকি করছে কিনা- এসব বিষয়ে ঔষধ প্রশাসনের বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। স্বাস্থ্যে মূলধারায় কিছু অগ্রগতি হচ্ছে। তার সঙ্গে কোনো কিছুর অপব্যবহার বা নানা মাত্রায় দুর্নীতি হচ্ছে। সেটির বিরুদ্ধে কঠিন লড়াই করতে হবে। জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে সংবাদ পরিবেশনের সঙ্গে সঙ্গে জনমত গঠন এবং বিভিন্ন খাতে জনকল্যাণে যা কিছু প্রয়োজন তথ্য-উপাত্ত, অভিমত, মতামত, বিশ্নেষণ প্রচারে ভূমিকা পালন করে সংবাদপত্র। সেই সংবাদপত্রের দিক থেকে এই আয়োজন করার আগ্রহ অনুভব করি; তখন দেখা গেল যে, জাতিসংঘ খুব সম্প্রতি এই দিবসটি চালু করেছে। রোগী তাঁর নিরাপত্তা এবং চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে যান। রোগীর নিরাপত্তার বিষয়টি কেন আলোচনার প্রয়োজন পড়ল; ডাক্তার, স্বাস্থ্য খাতের প্রশাসকবৃন্দ, ওষুধ বিশেষজ্ঞ- তাঁরাই এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন। সাংবাদিক হিসেবে এইখানে আমরা নিতান্ত আনাড়ি। খুব সম্ভবত শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর কোনো এক লেখায় উল্লেখ করেছিলেন, 'কুইনিন অসুখ সারাবে। কুইনিন সারাবে কে?' এটি বাংলায় একটি প্রবাদবাক্য হিসেবে চালু হয়ে গেছে। কুইনিন খেতে খুব তেতো বলে ওই রসিক সাহিত্যিক এই মন্তব্য করেছিলেন। মানুষ ওষুধ আবিস্কার করেছে, আবার সেই ওষুধ প্রয়োগ করতে গিয়েও ঘটে অনেক বিপত্তি। এ বিষয় নিয়ে স্বাস্থ্যসেবা খাতের বিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসকরা যেসব সমস্যার সম্মুখীন হন, সে বিষয়গুলো তুলে ধরার জন্য জাতিসংঘ এ দিবসের আয়োজন করেছে। আমরা খবরের লোকেরা খবর করতে গিয়ে দেখি, সত্যিই কুইনিন সারাবে কে- তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না। অল্প কিছুদিন আগে আমরা দেখলাম যে, অবৈধ ক্লিনিকগুলো ধরার জন্য বিরাট একটা অভিযান চালানো হয়েছে। সেই ক্লিনিকগুলো একদিকে নাকি বন্ধ হয়, আরেকদিকে চালু হয়। এ ছাড়া অনেকেই অভিযোগ করেন, অনেক ওষুধ কেনার পর দেখতে পান, সেই ওষুধের মেয়াদ নেই। অর্থাৎ ওষুধ যদি ঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করা হয় কিংবা মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ দেওয়া হয় অথবা চিকিৎসকরা যদি ভুল চিকিৎসা করেন, রোগী যদি নিজে নিজে চিকিৎসা করতে যান- এ সবকিছুর মধ্যেই রোগীর নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টা আসে। কাজেই এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা আলোচনা করবেন, আমরা সংবাদকর্মীরা শুনব ও শিখব এবং পত্রিকায় লিখব, যাতে দেশের মানুষ সচেতন হতে পারে।
মো. টিটো মিঞা
রোগীর নিরাপত্তায় যেমন চিকিৎসকের ভূমিকা রয়েছে, তেমনি ফার্মাসিস্ট, ঔষধ প্রশাসনসহ অন্যদের ভূমিকা রয়েছে। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াকে শনাক্ত করে এর ওপর কাজ করে বিষয়টি বোঝা এবং সর্বোপরি এটি প্রতিরোধ করা- এসবই একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটি যেমন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোর দায়িত্ব, তেমনি ঔষধ প্রশাসনসহ অন্যান্য অংশীজনও এ বিষয়ে কাজ করে থাকে।
মানসম্পন্ন কাঁচামাল ব্যবহারের ক্ষেত্রে ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোর কমিটমেন্ট থাকতে হবে এবং তা বাস্তবায়ন করতে হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ কাঁচামাল ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা প্রদানসহ ফার্মাকোভিজিলেন্স সার্ভিলেন্স নিশ্চিত করতে হবে। এটা আরও পরিস্কারভাবে বললে, অনেক সময় দেখা যায়, মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে এমন কাঁচামাল দামের জন্য কিংবা লাভের জন্যই হোক অথবা অন্য যে কোনো কারণেই হোক- সেই কাঁচামাল দিয়ে ওষুধ উৎপাদন থেকে কোম্পানিগুলোকে বিরত থাকতে হবে। পাশাপাশি যেসব ওষুধ বাজারজাত করা হয়, সেগুলোর নির্দেশনায় লেখা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বাইরেও কিন্তু অন্যান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। এ ধরনের ঘটনা ওষুধগুলোকে কোম্পানিগুলোর মনিটর করা উচিত। এ ছাড়া একটা টিম রাখা উচিত, যারা ডাক্তার, রোগী ও ফার্মাসিস্টদের মাধ্যমে সে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে তথ্য নেবে এবং এ বিষয়ে ডকুমেন্টেশন করে কত মাত্রার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, তা নির্ণয় করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। অনেক প্যাকেটের মধ্যে ওষুধ সম্পর্কিত তথ্যসংবলিত যে কাগজ থাকে, তা অনেক ছোট অক্ষরে লেখা থাকে, যা অনেক রোগী সহজে পড়তে পারেন না। অন্যদিকে, সব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াই যে গুরুত্বপূর্ণ, তাও না। অনেক সময় কোনো ওষুধ সেবনের পর হয়তো বমি বমি ভাব হতে পারে বা অন্য কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। কিন্তু যেসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ বা মূল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, সেগুলোকে তুলে ধরতে হবে। এ ক্ষেত্রে লিটারেচারগুলোতে মূল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোকে বাংলা হরফে বড় বড় করে লিখে দেওয়া উচিত। এ বিষয়ে প্রয়োজনে সভা-সেমিনারের আয়োজন করা যেতে পারে। এ ছাড়া ঔষধ প্রশাসনের উচিত ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলো তাদের ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ করছে কিনা, নজরদারি ঠিকমতো করছে কিনা- এসব বিষয় নজরে আনা। অন্যদিকে, রোগীকে সচেতন করাও অত্যন্ত জরুরি। ডাক্তাররা যখন ওষুধ দেবেন, তখন এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কেও সময় নিয়ে রোগীকে সচেতন করবেন। পাশাপাশি রোগীরও দায়িত্ব কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করলে সেটি ডাক্তারকে অবহিত করা। ফার্মাকোলজির কারিকুলামও বাস্তবতার নিরিখে প্রণয়ন করা উচিত। এতে করে শিক্ষার্থীরা সমস্যা সম্পর্কে একটা সম্যক ধারণা পাবে।
মো. ওয়াজিউল আলম চৌধুরী
অনিরাপদ সেবা অল্প বয়সে মৃত্যুর অন্যতম কারণ। ওষুধ প্রয়োগের নৈপুণ্য বা দক্ষতা নির্ভর করে দুটি জিনিসের ওপর। একটি হচ্ছে সঠিক রোগ নির্ণয়; অন্যটি হলো মূল উপসর্গ নিশ্চিত করা। এখন দেশে ওষুধের ব্যবহার বেশি হচ্ছে। যে কারণে ওষুধজনিত জটিলতা বেশি দেখা দিচ্ছে। এসব কারণে মানসিক, সামাজিক, অর্থনীতির ক্ষতি হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রোগী নিরাপত্তা নিশ্চিতে এই দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শুধু গরিব দেশগুলোর জন্য এই দিবস পালন করতে বলেছে এমন না। ওষুধের নিরাপত্তা না থাকার কারণে অনেক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। রোগীর মৃত্যুর ১০টি অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। স্বল্প উন্নয়ন দেশগুলোতে বছরে ১৩৩ মিলিয়ন মানুষের অনিরাপদ ওষুধ সেবনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে। বিশ্বের মধ্যে ১০ জনে ৪ জন এই সমস্যার শিকার হচ্ছে। এর ৮০ শতাংশ রোগই প্রতিরোধযোগ্য। এ জন্য ওষুধ সেবনে আরও সচেতন হতে হবে।
এস এম মাহমুদুল হক পল্লব
আমরা সব সময় রোগীকে যেমন সুস্থ করতে চাই, একই সঙ্গে তাঁদের নিরাপত্তা চাই। এ জন্য চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। রোগীর নিরাপত্তায় চিকিৎসকের করণীয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক ওষুধ প্রয়োগে তাৎক্ষণিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়। সে জন্য এগুলো প্রয়োগের আগে প্রস্তুতি থাকতে হবে। রোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার এখন পিএসসির মাধ্যমে ফার্মাসিস্ট নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কিছুদিনের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রকাশ করা হবে। এ ছাড়া ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর নিরাপদ ওষুধ নিশ্চিতে কাজ করে। রোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য এই সংস্থাটির আলাদা ইউনিট রয়েছে। তারা দায়িত্বশীলভাবে কাজ করছে। রোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে সুপারিশ রয়েছে, প্রতিটি ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানির নিজস্ব স্বাধীন রোগী নিরাপত্তা নিশ্চিতে টিম থাকতে হবে। যেখানে চিকিৎসক, নার্স, ফার্মাসিস্ট থাকবেন এবং তাঁরা স্বাধীনভাবে কাজ করবেন। আবার ওষুধ তৈরির আগে মানবদেহে প্রয়োগ এ দেশে খুবই কম হয়। অনেক সময় আমরা ভার্চুয়াল চুক্তি করি। এ ক্ষেত্রে অনেক ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয় না। অনেক ক্ষেত্রে শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয় না। ফলে যখন রোগী এই ওষুধ সেবন করেন, তার অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তাই রোগীর সেবনের পর একটি গবেষণা বা জরিপ করা প্রয়োজন। বিকন ফার্মা এমন সার্ভে করার উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি হলেও রোগীর নিরাপত্তায় আমাদের মনোযোগ রয়েছে। রোগীকে যেমন সুস্থ করতে চাই, একই সঙ্গে রোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। আমরা যাঁর যাঁর জায়গা থেকে যদি কাজ করতে পারি, অনেক ক্ষেত্রে রোগীর সুস্থতা নিশ্চিত করতে পারি।
গুলশান আরা
ওষুধ খাতে চারটি বিষয়ে নিরাপত্তার প্রয়োজন রয়েছে। প্রথমে হলো ব্যবস্থাপত্র, দ্বিতীয়ত ডিসপেন্সিং, তৃতীয়ত প্রশাসন এবং চতুর্থত মনিটরিংয়ের সময় সতর্কতা। এই চারটা জায়গায় যে কোনো একটা গ্যাপ থাকতে পারে। এই চারটি বিষয়ে সমন্বয় না থাকলে রোগীর নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। আমি যেহেতু অবসটেটিশিয়ান, এখান থেকেই বলি, যেমন ধরেন- প্রি-প্রেগন্যান্সি কেয়ার একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেননা, একটা সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য একটি স্বাস্থ্যবান শিশু অনেক জরুরি। প্রি-প্রেগন্যান্সি কেয়ার এ জন্যই গুরুত্বপূর্ণ যে, এই সময়টাতে অনেক সমস্যা থাকে, যার জন্য সঠিক শিক্ষা ও সচেতনতার অভাব রয়েছে এ দেশে। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে দেখা যায়, প্রি-প্রেগন্যান্সি কেয়ারের হার অনেক। যেমন- শ্রীলঙ্কায় এই হার ৬০ শতাংশ। কিন্তু আমাদের দেশে এই হার মনে হয় ১ শতাংশেরও কম। এই সময়ে যে অসুস্থতা থাকে, সেগুলোর চিকিৎসাকে অনেক সময় মোডিফাই করতে হয় এবং শিক্ষাও দিতে হয়। প্রি-প্রেগন্যান্সি কেয়ারে এলে মাকে এই বিষয়ে জানানো যাবে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল
আমরা এমন অনেক রোগী পাই, যাঁরা লিভারের সমস্যা নিয়ে আসেন। তাঁরা মনে করেন, অন্য কোনো কারণে তাঁদের জ্বর হয়েছে। এই জ্বরের জন্য তাঁরা হেপাটাইসিসের সমস্যার শুরুতে জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল খান। পরে লিভারের সমস্যা নিয়ে আমাদের কাছে আসেন। এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য একটি সমন্বিত ভূমিকা প্রয়োজন। এ বিষয়ে গোলটেবিল সেমিনারের আয়োজন করে গণমাধ্যমে এটি প্রচার করা উচিত। তাহলে জনসচেতনতা বাড়বে। 'পলি ফার্মাসি' প্রতিরোধে 'হসপিটাল ফার্মাসির' ওপর জোর দিতে হবে। একজন 'ফ্যাট লিভার'-এর রোগী আমার কাছে আসার আগে লিভার বিশেষজ্ঞসহ বেশ কয়েকজন ডাক্তারকে দেখিয়ে আসেন। আমার পক্ষে সবকিছু হয়তো জানা সম্ভব নয়। তবে ডাক্তার হিসেবে 'মাল্টিডিসিপ্লিনারি অ্যাপ্রোচ' সম্পর্কে জানতে হবে। তবে আমি যতই জানার চেষ্টা করি না কেন, কোন ওষুধের সঙ্গে কোন ওষুধ দিলে কী হতে পারে- এ বিষয়ে আমার জানার স্বল্পতা থাকতেই পারে। এ ক্ষেত্রে 'হসপিটাল ফার্মাসি'র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। একজন ফার্মাসিস্ট এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের দিকনির্দেশনা দিতে পারেন। এতে কারও ছোট-বড় হওয়ার কিছু নেই। এতে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। একজন চিকিৎসক কখনোই কোনো রোগীকে বিপদগ্রস্ত করেন না। তারপরও মাঝেমধ্যেই ডাক্তারের চিকিৎসায় রোগীরা অসন্তুষ্ট হন। অনেক ক্ষেত্রে ঘটনা আদালত পর্যন্ত যায়। যদি কোনো সাংবাদিকের ওপর আমি সংক্ষুব্ধ হই, সে ক্ষেত্রে বিধিবিধান রয়েছে, হয়তো আমাকে প্রেস কাউন্সিলে যেতে হবে। কিন্তু একজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সহজে মামলা করে তাঁকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায় কিংবা দুদক তাঁকে আসামি সাব্যস্ত করে নিজেদের ওয়েবসাইটে বিবৃতি দিতে পারে। এ বিষয়ে আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে, যেখানে চিকিৎসক এবং চিকিৎসাগ্রহীতা একটা প্ল্যাটফর্মে এসে বিচার চাইতে পারেন। বিচার শেষে দোষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। এতে করে নিরপেক্ষ একটা জায়গা থেকে বিচার নিশ্চিত হবে। আমাদের গবেষণার জায়গায় গুরুত্ব দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। শুধু অ্যালোপ্যাথিক গবেষণাতেই গুরুত্ব দিলে হবে না। কেননা বাংলাদেশ এমন একটি ভূখণ্ড, যেখানে হেকিমি এবং আয়ুর্বেদশাস্ত্রের একটা বিরাট উপস্থিতি ছিল। হেকিমি হচ্ছে মুসলমানদের ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা এবং আয়ুর্বেদ হচ্ছে হিন্দুদের ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে আয়ুর্বেদ মন্ত্রণালয় রয়েছে। এই শাস্ত্রেই তাদের যে আয়, তা আমাদের তুলনায় অনেক বেশি। তারা যদি ওই শাস্ত্র নিয়ে এত আয় করতে পারে, তাহলে আমাদের দেশে তো দুটি শাস্ত্রের উপস্থিতি ছিল। কিন্তু আজ আমাদের অভিজ্ঞতা কী? আজ আমাদের অভিজ্ঞতা হচ্ছে, আমরা এটা প্রচার করি, 'গাছ-গাছড়া খাবেন না, বনজি খাবেন না।' এটা তো হতে পারে না। আমার কাছে মনে হয়, এ জায়গায় একটি সমন্বিত গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
মেখলা সরকার
মানসিক রোগের চিকিৎসায় ওষুধগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক বেশি। অনেক সময় মানসিক রোগীর সঠিক সমস্যা নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। উপসর্গ দেখে ওষুধ দিলে নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। আমাদের চিকিৎসক ও গবেষক সংকট রয়েছে। রোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে এসব বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে। সচেতনতা বাড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। রোগীরা অনেক ক্ষেত্রে ফলোআপে আসে না। দীর্ঘদিন ধরে এক ধরনের ওষুধ খেয়ে থাকে। প্রয়োজন নেই এমন অনেক ওষুধ সেবন করে থাকে। সে সময় যে ওষুধ খাওয়ানোর প্রয়োজন, সে সময় সেই ওষুধ খাওয়ানো হয় না। অনেক সময় ওষুধের ডোজ কমিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও রোগীরা সঠিক সময়ে ফলোআপে না আসার কারণে সম্ভব হয় না। অনেক ক্ষেত্রে রোগীর আত্মহত্যা করার প্রবণতা থাকে। সে ক্ষেত্রেও অনেক কিছু ভেবেচিন্তে আমাদের ওষুধ দিতে হয়। আমাদের এসব  মানসিক রোগীর জন্য পরিবারের সদস্যদের কাউন্সেলিং করানোর প্রয়োজন হয়।
আমাদের দেশের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে জনবল অনেক কম। একজন চিকিৎসক অনেক রোগী দেখেন। এ ক্ষেত্রে সঠিক সেবা নিশ্চিত করাও অনেক কঠিন। এসব জায়গাতেও আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। রোগীর ক্ষেত্রে রোগের তথ্য গোপন করলে চিকিৎসা দেওয়া কঠিন হয়। এ সময় রোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে বড় বাধা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। অনেকেই এখানে নিজের রোগের নাম উল্লেখ করে ব্যবস্থাপত্র শেয়ার করছে। ওই ব্যবস্থাপত্র নিয়ে অনেকেই ওষুধ সেবন করছে। এতেও নানা জটিলতা দেখা দিচ্ছে।
সুকল্যাণ কুণ্ডু
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এ দেশের ফার্মাসিস্টরা শুধু ওষুধের ফর্মুলেশন নিয়ে কাজ করেন। নতুন মলিকিউল নিয়ে আমাদের কাজ করা হয় না। যদিও নতুন মলিকিউলের বিষয়টা নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হয় না, কিন্তু গত ১০ থেকে ১৫ বছর আমাদের ফার্মাসিউটিক্যালস মার্কেটে একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। যেখানে অনেক 'আইএনএন ড্রাগ' আছে, যা আমাদের প্রধান দুটো ফার্মাকোপিয়া 'বিপি' এবং 'ইউএসপি'- এগুলো দ্বারা স্বীকৃত নয়। অর্থাৎ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের যে বিভিন্ন স্তর রয়েছে, সেগুলো পার না করেই এই ড্রাগগুলো বাজারে নিয়ে আসা হয়। বড় পরিসরে ড্রাগগুলোকে দুটো ভাগে ভাগ করা যায়। একটি হলো 'ওভার দ্য কাউন্টার ড্রাগ', যা আমরা ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই ওষুধের দোকান থেকে কিনতে পারি এবং অন্যটি হলো 'ওভার দ্য কাউন্টার ড্রাগ'-এর বাইরের যেসব ওষুধ, যা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করতে হয়।
রোগীর ওষুধ সেবনের সঠিক বিধান জানার বিষয়ে ফার্মাসিস্টরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এ দেশে তিন ক্যাটাগরি 'এ', 'বি', 'সি' ফার্মাসিস্ট রয়েছেন। কমিউনিটি ফার্মাসিগুলোর 'এ' ক্যাটাগরির ফার্মাসিস্টদের নেওয়ার সক্ষমতা নেই, যার জন্য রোগীর কাউন্সেলিং সঠিকভাবে হয় না। অনেক সময় ডাক্তাররা রোগীর সঠিক ইতিহাসটা জানতে পারেন না, সমস্যা বুঝে ওষুধ দেন। এ পক্ষেত্রে ফার্মাসিস্টদের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। রোগী কীভাবে সঠিক নিয়মে ওষুধ সেবন করবেন, এ বিষয়ে ফার্মাসিস্টরা রোগীকে পরামর্শ দিতে পারেন। উন্নত দেশগুলোতে ডাক্তাররা ওষুধ লিখে দেওয়ার পরও ফার্মাসিস্টরা রোগ অনুযায়ী সঠিক ওষুধ এবং সঠিক ডোজের কথা লিখেছেন কিনা তা তাঁরা পুনর্নিরীক্ষণ করেন। এ দেশের প্রেক্ষাপটে রোগীকে ফার্মাসিস্টদের পক্ষ থেকে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হয় না।
বিভিন্ন সময় দেখা যায়, নানা ধরনের রোগে একই ধরনের কিছু ওষুধ ব্যবহার করা হয়। এ কারণে অনেক ধরনের অসুবিধার সৃষ্টি হয়। বর্তমানে এ দেশের ডাক্তারদের মধ্যে 'পলি ফার্মাসি' বা 'মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স'- এ বিষয়গুলো লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায়, সঠিকভাবে পরীক্ষা না করে একই গ্রুপের আলাদা আলাদা ওষুধ লিখে দেন ডাক্তাররা। প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে দেখা যায়, ব্যবস্থাপত্রের আকার যত বড়, সেই ডাক্তারের নাম তত বেশি। মনে করা হয়, তিনি অনেক কিছু জানেন, অনেক ওষুধের নাম জানেন। রোগী মনে করেন যে, ডাক্তারের পরামর্শেই তাঁরা ওষুধ সেবন করছেন। এ ক্ষেত্রে একজন সঠিক চিকিৎসকের কাছে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় পত্রপত্রিকায় দেখা যায়, চতুর্থ বা পঞ্চম শ্রেণি পাস করা একজন ব্যক্তিও চিকিৎসায় নেমেছেন এবং বড় বড় অস্ত্রোপচারের সঙ্গেও তাঁরা যুক্ত। এ দেশের প্রেক্ষাপটে এটা আশ্চর্যজনক এবং হাস্যকরও বটে। এই দুঃসাহসিক কাজে কীভাবে এই ধরনের লোক আসছেন? এই ব্যাপারগুলো নিয়ে আমাদের সাবধান হতে হবে।
শেখ রোকন
সমকাল যেসব ইস্যুতে বিশেষ মনোযোগ দিয়ে থাকে, তার মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য খাত ও ভোক্তা অধিকার। এই গোলটেবিলের বিষয়টি দুই দিক থেকেই প্রাসঙ্গিক। ভেজাল রোধে সমকাল থেকে জাতীয় পর্যায়ে যে প্রচারণা আমরা চালিয়েছিলাম, সেখানে ওষুধে ভেজালের বিষয়টিও ছিল। ওষুধের অপব্যবহারের কারণে কেবল ভোক্তার অর্থহানি হয় না, স্বাস্থ্যহানিও ঘটে। অপ্রয়োজনীয় ওষুধ সেবনের ফলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় আরও মারাত্মক অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। ওষুধের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহারের মূলে থাকে ওষুধ প্রদানকারী ও সেবনকারীর অসচেতনতা। তাই এ ব্যাপারে চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট, ঔষধ প্রশাসন ছাড়াও ওষুধ সেবনকারী ও তাঁদের স্বজনদের সচেতনতা সবচেয়ে জরুরি। ওষুধের অপব্যবহার, ভেজাল ওষুধ ছড়িয়ে পড়া রোধে সংবাদমাধ্যম সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা, বিষয়টি নিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে আলোচনা হলেও এ বিষয়ে সব অংশীজনের একত্র হওয়ার উদাহরণ খুব বেশি নেই। সমকাল এই সূত্রধরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পেরে আনন্দিত। ভবিষ্যতেও আমরা এ বিষয়ে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। আমরা চাইব, চিকিৎসক, বিশেষজ্ঞ ও ওষুধ খাতের অংশীজনরা সমকালে এ ব্যাপারে লেখালেখি করবেন, তাহলে নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি সহজ হবে।

আলোচক
অধ্যাপক ডা. হারুন-উর-রশিদ
সভাপতি, কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউট

অধ্যাপক আহমেদুল কবীর
অতিরিক্ত মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

অধ্যাপক ডা. মো. টিটো মিঞা
অধ্যক্ষ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

অধ্যাপক ডা. মো. ওয়াজিউল
আলম চৌধুরী
সভাপতি, সোসাইটি অব সাইকিয়াট্রিস্ট বাংলাদেশ

ডা. মেখলা সরকার
সহযোগী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক ইনস্টিটিউট
এস এম মাহমুদুল হক পল্লব
এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট (সেলস ও মার্কেটিং), বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
অধ্যাপক সুকল্যাণ কুণ্ডু
ফার্মাসি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল
চেয়ারম্যান, হেপাটোলজি বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

অধ্যাপক ডা. গুলশান আরা
গাইনোকোলজি, অবসটেট্রিকস বিশেষজ্ঞ ও সার্জন, এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
সভাপতি
মোজাম্মেল হোসেন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, দৈনিক সমকাল

সঞ্চালক
শেখ রোকন
প্রধান, সম্পাদকীয় বিভাগ, দৈনিক সমকাল

অনুলিখন
তবিবুর রহমান
নিজস্ব প্রতিবেদক, সমকাল

মাজহারুল ইসলাম রবিন
নিজস্ব প্রতিবেদক, সমকাল
ইভেন্ট সমন্বয়
হাসান জাকির
, সমকাল

বিষয় : রোগীর নিরাপত্তা

মন্তব্য করুন