উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে জ্ঞান সৃজন, বিতরণ ও সমৃদ্ধ মানবসম্পদ উৎপাদন দুর্বৃত্তায়নে জড়িতদের কবল থেকে মুক্ত করা না হলে আলোকিত সমাজ প্রতিষ্ঠা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। অন্যদিকে শিক্ষার মৌলিক জায়গা ঠিক করতে হবে। অনিচ্ছাকৃত বিষয়ে, অপছন্দের বিষয়ে অনিচ্ছুক একজন ছাত্রকে পড়তে হচ্ছে। যার কারণে জ্ঞানচর্চার চেয়ে কয়েকটি প্রশ্ন মুখস্থ করে শিক্ষার্থীরা পাস করছে। কোনো কিছু শিখতে পারছে না। বিশ্ববিদ্যালয় এখন ডিগ্রি ও সনদ বিতরণের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন মানসম্পন্ন শিক্ষা বড় চ্যালেঞ্জ। মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে মাতৃভাষায় পাঠদানের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। মাতৃভাষায় বিজ্ঞান ও উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। গত ১৫ নভেম্বর সমকালের চট্টগ্রাম ব্যুরোর সভাকক্ষে 'উচ্চশিক্ষার মান :প্রেক্ষিত চট্টগ্রাম' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে শিক্ষাবিদরা এসব কথা বলেন। সমকালের চট্টগ্রাম ব্যুরো এ আয়োজন করে।

মো. রেজাউল করিম চৌধুরী

উচ্চশিক্ষার মূল বিষয় গবেষণা। যেখানে গবেষণা হয় না, শিক্ষার পরিবেশ থাকে না, সেখানে মানসম্মত শিক্ষক কীভাবে হবে। তা ছাড়া শিক্ষক নিয়োগ নিয়েও কথা রয়েছে। যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ করতে না পারলে শিক্ষার মানও নিশ্চিত করা যায় না। অন্যদিকে যে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে, তাকে আমরা ভালো ছাত্র বলি। কিন্তু তার মধ্যে যদি শিষ্টাচার না থাকে, সে যদি সংস্কৃতিমনা না হয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ না করে, তাহলে তাকে ভালো ছাত্র বলা যাবে না। কারণ মানুষের সত্যিকার সৌন্দর্য হচ্ছে তার হৃদয়ে। আর মনুষ্যত্বের পূর্ণ বিকাশে শিক্ষার ভূমিকা অপরিসীম। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে প্রাথমিক শিক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এটি না হলে উচ্চশিক্ষা ঠেকে যাবে। সক্রেটিস বলে গেছেন, 'আমাদের সমাজে এমন একটা সময় আসবে জ্ঞানী, পণ্ডিত ব্যক্তিরা তাঁদের জ্ঞানের জন্য অনুশোচনা করবেন। আর মূর্খরা মূর্খতার জন্য উল্লাস করবে। যারা অসত্য, দুর্নীতিবাজ, তারা দুর্নীতির জন্য গর্ববোধ করবে।' এখন মনে হয়, আমরা সেই সময়ে চলে যাচ্ছি।

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী

উন্নত বিশ্বে উন্নয়নের পেছনে বড় বিনিয়োগ হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষাব্যবস্থার প্রতিটি স্তরে উচ্চশিক্ষায় প্রতিভাদীপ্ত ব্যক্তিদের প্রজ্ঞা ও জ্ঞানের অনুশীলননির্ভর উৎকর্ষ ফলাফলই নির্ধারণ করতে পারে গুণগত শিক্ষার মানদণ্ড। আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক তথ্যপ্রযুক্তি মনন সৃজনশীল জ্ঞানের উন্মেষই সমৃদ্ধ মানবসম্পদ উৎপাদনে সুষ্ঠু ভূমিকা পালন করে। আনুষ্ঠানিক শিক্ষার ক্ষেত্রে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার অধিকাংশ ক্ষেত্রে নূ্যনতম প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণবিহীন বা ক্ষেত্রবিশেষে দ্বিতীয়-তৃতীয় শ্রেণিপ্রাপ্তদের শিক্ষা প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদ-পদায়ন হচ্ছে। ফলে গুণগত শিক্ষার প্রচার ও প্রসার সুদূরপরাহত বলেই বিবেচিত। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নূ্যনতম শর্ত পূরণ না করা সত্ত্বেও নিয়োগ বাণিজ্য শুধু নিজস্ব বাহিনী সৃষ্টির নামান্তর। এভাবে নিয়োগ, পদ, পদক অর্জন অশুভ শক্তিমত্তা দিয়ে চর দখলের মতো ভূমিদস্যুদের বংশধরদেরই অধিকতর অপকর্মে জড়িয়ে ব্যক্তিস্বার্থ সিদ্ধির পথকেই প্রশস্ত করবে। গুণগত শিক্ষার প্রকৃতি ও পরিধি চলমান মিথস্ট্ক্রিয়া অব্যাহতভাবে প্রণোদিত হলে কোনো এক সময় জাতি-রাষ্ট্রের হেত্বাভাস চরিত্রকে ধারণ করার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। সমাজ-সভ্যতার ক্রমবিকাশের ধারায় এটি সুপ্রতিষ্ঠিত- পুথিগত বিদ্যা শিক্ষা, মনুষ্যত্ব, মানবিকতা অসাম্প্রদায়িকতায় পরিপুষ্ট না হলে আদর্শিক শিক্ষার পঠন-পাঠন অনাবিস্কৃত ও অপরিপূর্ণ থেকে যায়। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে জ্ঞান সৃজন-বিতরণ ও সমৃদ্ধ মানবসম্পদ উৎপাদন আপাদমস্তক দুর্বৃত্তায়নে জড়িতদের রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত করা না হলে আলোকিত সমাজ প্রতিষ্ঠা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।


আবু সাঈদ খান

জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে শিক্ষার বিকল্প নেই। বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞানের আদান-প্রদানের জায়গা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বহুধা বিভক্ত। বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠার পর সব ধরনের জ্ঞানচর্চা এক জায়গায় হতো। এখন সেটি হচ্ছে না। তাই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাকে ঢেলে সাজানোর সুযোগ রয়েছে কিনা ভাবা দরকার। তা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় গবেষণা হচ্ছে না। গবেষণার জন্যও পর্যাপ্ত বাজেট দেওয়া হয় না। আবার অনেক সময় গবেষণার টাকা ফেরত যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে কেবল লেখাপড়া নয়, মানবিক উন্নয়নে কাজ করতে হবে। শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু আমরা সেটি পারছি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনগুলো বন্ধ রয়েছে। মানুষে মানুষে যুক্ত হওয়ার জায়গা সংকুচিত হয়ে পড়ছে। এ জন্য সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ঠিকাদারি এসেছে রাষ্ট্র, সমাজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। শিক্ষকরা এতে জড়িয়ে পড়ছেন। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে। সারাদেশ একদিকে যাবে আর চট্টগ্রাম আরেকদিকে যাবে, তা আশা করা যায় না।


অধ্যাপক মু. সিকান্দার খান

আমি মনে করি, একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে তিনটি উপাদান লাগে- ছাত্র, শিক্ষক ও উদ্যোক্তা। কিন্তু তিনটি উপাদানেরই খারাপ অবস্থা। চট্টগ্রামের যাঁরা উদ্যোক্তা, তাঁরা ভালো মানুষ। কিন্তু তাঁদের অনেকের শিক্ষাগত যোগ্যতা কী? তা ছাড়া মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে মানসম্মত শিক্ষক প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের এমন মানসম্মত শিক্ষক অপ্রতুল। যারা ভালো ছাত্র, তারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যায়। মধ্যম মানের ছাত্ররা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। কিছু ধনাঢ্য পরিবারের ভালো ছাত্রও অবশ্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। এখানে দুই ধরনের শিক্ষার্থী রয়েছে। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর বেজ ভালো নয়। ইংরেজি, অঙ্কে নরম, অধরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সেই নরম বেজকে উন্নত করতে হয়। শিক্ষার মান উন্নয়নে সেই শুরু থেকে অর্থাৎ প্রাথমিক পর্যায় থেকে কাজ শুরু করতে হবে। তবে বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণেও কাজ করে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরস্পরের সঙ্গে অভিজ্ঞতা আদান-প্রদান করতে পারে।


আবুল মোমেন

নতুন যেসব বিদ্যালয় তৈরি হচ্ছে, সেগুলোয় খেলাধুলার ব্যবস্থা নেই, মাঠ নেই, মিলনায়তন নেই। এখন একটি ভবনে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ও হচ্ছে। ফলে পুরো ব্যাপারটার মধ্যে আমরা একটি হযবরল লাগিয়ে ফেলেছি। এখন আবার মানসম্পন্ন শিক্ষার জন্য সংগ্রাম করছি। আমাদের শিক্ষার্থীরা 'লার্নিং পভার্টি' নিয়ে বড় হচ্ছে। সরকারি একটি জরিপে দেখা যায়, আমাদের যারা প্রাথমিক শেষ করছে, তাদের বাংলা, ইংরেজি, গণিতে ৬০ শতাংশ ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। এই ঘাটতি নিয়ে তারা মাধ্যমিকে যাচ্ছে। সেখানে আরও কিছু ঘাটতি যোগ হয়। সেসব ঘাটতি নিয়ে তারা উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছে। ফলে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান, তাঁদের কারোরই সন্তুষ্টি নেই।

গোড়া ঠিক না করে আগায় পানি দিয়ে কোনো লাভ নেই। প্রাথমিক থেকে ঠিক করে আসতে হবে। সে জায়গাটা কীভাবে আমাদের হাতের বাইরে চলে গেল, সেটিও স্টাডি করা উচিত ছিল। আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে করে দেখেছি, আমাদের দেশে ১৯৬০ সালের পর থেকে শিক্ষার্থী বেড়েছে। সেটি ১৯৮০-তে গিয়ে আরও দ্রুততর হয়েছে। কিন্তু অবকাঠামো সেভাবে হয়নি।

১৯৮০ সালে এনাম কমিশন গঠন করা হয়। ওই কমিশনের সুপারিশ ছিল ১২০ জন না হলে শাখা খোলা যাবে না। একজন শিক্ষকের পক্ষে সপ্তম-অষ্টম শ্রেণিতে ১২০ জন ছাত্রকে পাঠদান করা তো সম্ভব নয়। শিক্ষকদের ওপরও বিদ্যালয়ের ভালো ফল করানোর চাপ থাকে। তখন তাঁরাই এ বুদ্ধিটা করেছেন, পাঁচটা করে প্রশ্নের উত্তর শিখবে। সেটি যেন কোচিং সেন্টারে গিয়ে শেখে। কারণ বিদ্যালয়ে তো পড়ানো যায় না। বিদ্যালয়ে পড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। ১২০ জনকে তো পড়াতে পারবেন না তিনি। খাতা দেখবেন কখন। তো কোচিং সেন্টার হয়ে গেল। ফলে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার্থীতে পরিণত হয়েছে। এখন স্কুল থেকে লেখাপড়া গেছে কোচিং সেন্টারে। পাঠ্যবইয়ের পরিবর্তে গুরুত্বপূর্ণ হয়েছে নোটবই। শিক্ষকের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়েছে কোচ। পুরো বিষয়টি পরিবর্তন হয়ে গেছে। ফলে কী করে গুণগত শিক্ষা চাইবেন?


উচ্চশিক্ষার মৌলিক জায়গা ঠিক করতে হবে। অধিকাংশ শিক্ষার্থী যা পড়তে চায়, তা পড়তে পারে না। অনিচ্ছাকৃত বিষয়ে, অপছন্দের বিষয়ে অনিচ্ছুক একজন ছাত্রকে আমরা পড়াচ্ছি। এটি বছরের পর বছর হচ্ছে। যার কারণে জ্ঞানচর্চার চেয়ে কয়েকটি প্রশ্ন মুখস্থ করে শিক্ষার্থীরা পাস করছে। কোনো কিছু শিখতে পারছে না। শিক্ষার সব পর্যায়ে এ চর্চা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় এখন ডিগ্রি ও সনদ বিতরণের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। সুতরাং আমরা এখান থেকে এখন আর কোনো কিছুই পেতে পারি না। মাতৃভাষায় শিক্ষার ওপর অনেক গুরুত্ব দিতে হবে। মাতৃভাষায় বিজ্ঞান ও উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।


অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইল খান

শিক্ষার ভিত্তিটা অবশ্যই শক্ত হতে হবে। সেটি কতটা আমরা নিশ্চিত করতে পারছি, তা দেখা উচিত সবাইকে। একেবারে প্রাইমারি লেভেল থেকেই মানসম্পন্ন শিক্ষা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য শুধুই রোবট হিসেবে কাজ করার মতো স্কিল অর্জন করব- এমনটি নয়। শিক্ষার মূল জিনিস হলো মূল্যবোধ ও নৈতিকতা। তবে সেদিকটি আমরা দিন দিন ভুলে যাচ্ছি। উচ্চশিক্ষা মানে কোনোভাবেই কোনো একটি নির্দিষ্ট গণ্ডিতে আবদ্ধ থাকা নয়। প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের প্রতিটি ভিত্তি আমাদের শক্ত করতে হবে। তবেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ নির্মাণ করতে পারব।

উন্নয়নশীল দেশগুলোয় উচ্চশিক্ষার বিষয়টি অন্য ধরনের। অথচ আমাদের এখানে মাস্টার ডিগ্রি অর্জন না করা পর্যন্ত সাধারণত লেখাপড়া শেষ হয়েছে বলে মনে করা হয় না। আমাদের দেশে ছাত্রছাত্রীরা সর্বোচ্চ ডিগ্রি নেওয়ার জন্য শ্রম, মেধা, মনন ও অর্থ ব্যয় করে যাচ্ছে। কিন্তু ওই ডিগ্রি তাকে কর্মক্ষেত্রে উচ্চতর বা ভিন্ন কোনো উপযোগিতা সৃষ্টি করে দিতে পারছে না। কোয়ালিটি এডুকেশনে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। ভারত, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ইরানসহ বিশ্বের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেয়েছে তাদের মানসম্পন্ন শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য।

অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম

শুধু বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েই নয়, উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে আমাদের একেবারেই প্রাথমিক পর্যায় থেকেই 'কোর্স কারিকুলাম' তৈরি করতে হবে। ওই পর্যায়ের শিক্ষক না থাকলে এখানে সফলতাও আসবে না। এ জন্য শুধু ঢাকায় নয়, দেশের প্রতিটি জেলায় টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট করতে হবে। কারণ যাঁরা পড়াবেন, সেই অভিজ্ঞ শিক্ষক না থাকলে আমি 'কোর্স কারিকুলাম' তৈরি করে যদি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিই, তবে তা উপযুক্ত ও ফলপ্রসূ হবে না।


আমি একেবারে প্রাথমিক পর্যায় থেকে পড়ালেখার ওপর জোর দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেব। কেননা, একটি ভবনের ভিত্তি দুর্বল হলে তা পড়ে যাওয়ার ঝুঁঁকি থাকে অনেক বেশি। ঠিক একইভাবে আমরা যদি একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন শুরু হওয়ার ভিত্তিটা মজবুত করতে না পারি, তবে সে পরবর্তী ধাপগুলো পার করতে নানাভাবে বাধার সম্মুখীন হবে। যে কারণে উচ্চশিক্ষা অর্জনে অনেক সময় তার ঝরে পড়ার আশঙ্কাও বেশি থাকবে। উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকতাও আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। কেননা শিক্ষাজীবনের প্রতিটি ধাপে ধাপে যদি যোগ্য শিক্ষক আমরা নিশ্চিত করতে না পারি, তবে তার খেসারত দিতে হবে শিক্ষার্থীদের। উচ্চশিক্ষার জন্য প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে।


অধ্যাপক ড. বেনু কুমার দে

যে কোনো প্রতিষ্ঠানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ভিশন ও মিশন। এই দুটি প্রক্রিয়ার সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে দক্ষ প্রজন্ম তৈরি করা সম্ভব। ভিশনের মধ্যে পাঠদান, গবেষণা, অর্জিত জ্ঞান দেওয়া এবং মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। শুদ্ধাচার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। শিক্ষার মান উন্নয়নে বেশি করে বিভাগে বিভাগে সেমিনার ও কনফারেন্স করতে হবে। রিসার্চ সেন্টার করতে হবে। গুণগত মান বাড়াতে প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার করতে হবে; যা আমরা করছি না। আমরা এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিক্ষার্থীর তুলনায় বেশি পরীক্ষার্থী পাচ্ছি। বিদেশে হাতেকলমে শিক্ষা লাভের জন্য ইন্টার্নশিপ রয়েছে। আমাদের দেশেও হাতেকলমে শিক্ষা লাভের জন্য ইন্টার্নশিপ সিস্টেম চালু করা প্রয়োজন। এগুলো ইন্ডাস্ট্রিয়াল বেজ হতে হবে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের বেশি করে গবেষণায় মনোযোগী হতে হবে। রিসার্চ সেন্টারের মাধ্যমে গবেষণার মানও বাড়াতে হবে। উচ্চশিক্ষাকে এগিয়ে নিতে গেলে শিক্ষার্থীদের মাদক থেকে দূরে রাখতে হবে। কারণ মাদক আমাদের শিক্ষার্থীদের ধ্বংস করে দিচ্ছে।


অধ্যাপক ড. মো. জাহিদ হোসেন শরীফ

আগামী দুই দশকের মধ্যে একটি উন্নত অর্থনীতির দেশ হিসেবে পরিচিতি পেতে আগ্রহী এবং সরকার এ ব্যাপারে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। অর্থনীতির উন্নতির স্বার্থে কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষ করে শিক্ষা ক্ষেত্রে পরিবর্তন অপরিহার্য। দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনশক্তি জাতীয় উন্নয়নের চাবিকাঠি। দ্রুত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে উচ্চ দক্ষতা, উদ্ভাবনী ও গভীরতর চিন্তাভাবনা এবং সমস্যা সমাধান করার দক্ষতাসম্পন্ন মানবসম্পদের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। গুণগত শিক্ষাই এই চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখতে পারে। গুণগত শিক্ষা কোনো একটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে না; বরং অনেক উপাদানের সমন্বিত ও কার্যকর ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভরশীল। উচ্চশিক্ষার গুণগত মান বাড়ানোর জন্য এ বিষয়গুলোয় অত্যধিক গুরুত্ব দিতে হবে।

আধুনিক ও যুগোপযোগী শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন, পর্যাপ্ত সংখ্যক দক্ষ, যোগ্য ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক, প্রয়োজনীয় আধুনিক শিক্ষা উপকরণ ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার মানোন্নয়ন করা, ভৌত অবকাঠামো ও মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করা, অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ত্রিমুখী সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও জবাবদিহিতার আওতায় আনা, শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও দক্ষতা উন্নয়নের পাশাপাশি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এবং আমাদের লালিত ঐতিহ্য, কৃষ্টি, সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ নিয়ে গড়ে তোলা, দুর্বল, কম মেধাবী এবং পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের বিশেষ বৃত্তির ব্যবস্থা করে আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে ব্যবস্থা নেওয়া, বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ ও কর্মকালীন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা, শিক্ষকদের পেশাগত স্বাধীনতা, যথাযথ ও উপযুক্ত বেতন-ভাতা নিশ্চিত করা, শিক্ষকদের জন্য 'টিচিং মেথোডলজি' এবং 'রিসার্চ মেথোডলজির' ওপর কর্মশালার আয়োজন করা। এগুলো না করলে শিক্ষার্থীর জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন আমরা করতে পারব না।


অধ্যাপক ড. গণেশ চন্দ্র রায়

চট্টগ্রামেই এখন পাবলিক-প্রাইভেট মিলে ১২টির অধিক বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষায় নিয়োজিত। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। কিন্তু শিক্ষার মান বেড়েছে বলে প্রতীয়মান হয় না। অনেক ক্ষেত্রেই পরীক্ষায় পাস করে সার্টিফিকেট লাভটাই মুখ্য বলে ধরে নেওয়া যায়। কাজেই শিক্ষার্থীর তুলনায় পরীক্ষার্থীই বেশি পাচ্ছি আমরা। প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের উন্নতি হয়েছে। কিন্তু শিক্ষার গুণগত মানের উন্নয়ন হয়নি। এটি চট্টগ্রাম নয়, সারাদেশের চিত্র। আমি পড়াতে গিয়ে দেখেছি, অধিকাংশ ছাত্র পড়াশোনার পাশাপাশি মানবিক কাজও করে। আবার অনেক ছাত্র শুধু পড়াশোনা নিয়েই থাকছে। মানসম্মত শিক্ষার্থী তৈরি করার জন্য পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয় ঘটাতে হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবী শিক্ষার্থী কম আসছে। এ ছাড়া যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ করা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কঠিন। যারা ভালো ফল নিয়ে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে, তারা বেশিদিন থাকে না। একজন সদ্য পাস করা মেধাবী শিক্ষার্থীকে যোগ্য শিক্ষক হতে সময়ের প্রয়োজন হয়। এ ছাড়া অনেকেই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন দ্রুত সার্টিফিকেট লাভের জন্য।

কাজেই শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। একই সঙ্গে বলা প্রয়োজন, উচ্চশিক্ষা নির্ভর করে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকসহ নিচু স্তরের মানের ওপর। সেটিও আশানুরূপ নয়। বিশেষত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ক্লাসরুমের চেয়ে কোচিং শিক্ষার প্রাধান্য বেড়েছে। কেননা ক্লাসে পাঠদান যথাযথ হচ্ছে না।


অধ্যাপক ড. সুনীল ধর

এখন এ প্লাস পেলেই ভালো শিক্ষার্থী হিসেবে ধরা হয়। প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষার সঙ্গে জড়িত থাকার ফলে আমি দেখেছি, এ প্লাস পাওয়া শিক্ষার্থীদের অনেকে ক্লাসে থাকার পরিবর্তে শুধু টিউশনি করতেই ব্যস্ত। একটি ভর্তি পরীক্ষায় ৩২ হাজার এ প্লাস পাওয়া শিক্ষার্থী অংশ নেয়। সেখান থেকে মাত্র ৪ হাজার ২০০ শিক্ষার্থীকে নিতে পেরেছি। শিক্ষার ক্ষেত্রে দুটি প্যারামিটার আছে। একটি ছাত্র-শিক্ষক, অপরটি শিক্ষা। দুটি প্যারামিটারকে এক করেই উন্নত শিক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব। একটির উন্নতি ছাড়া অন্যটির উন্নতি সম্ভব নয়। শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে হলে গবেষণায় নতুন নতুন ইনোভেশন সাকসেসফুল হবে। এ জন্য বিশেষজ্ঞ শিক্ষক দরকার। বিশেষজ্ঞ শিক্ষক না থাকলে প্রকৌশল শিক্ষায় ছাত্রদের ভালো কিছু দেওয়া সম্ভব হবে না। সর্বোপরি শিক্ষাকে এখন ইন্ডাস্ট্রি বেজ করতে হবে।


অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির

আমাদের শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়াটি আরও পরিস্কার হওয়া উচিত। একই সঙ্গে উপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ গুরুত্বপূর্ণ পদের নিয়োগগুলোর ক্ষেত্রে যাঁরা নীতি নির্ধারণ করবেন তাঁদের দৃষ্টি দেওয়া জরুরি। তা ছাড়া যিনি যেখানে দক্ষ, তাঁকে সেখানেই কাজে লাগাতে হবে। তা ছাড়া যিনি যে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, তাঁকে সেখানে নিয়োগ দিতে হবে। তাহলেই আমরা ভালো ফল পেতে পারি। এডুকেশন ডেভেলপমেন্টের বিষয়টি কোনো ফিজিক্যাল ডেভেলপমেন্ট নয়। আমি চাইলেই কর্ণফুলী টানেল ঘোষণা করতে পারি। আজকে শুরু করে তিন বছর পর শেষ করব। কিন্তু আমি কখনও ঘোষণা করতে পারি না, আমি চাইলেই উচ্চশিক্ষার মানটি এখান থেকে শুরু করে তিন বছরে ওই পর্যায়ে নিয়ে যাব। কেননা অনেক 'সাপোর্টিং' ও 'কন্ট্রিবিউটিং ফ্যাক্টর' আছে।

শিক্ষক, গবেষণার পরিবেশ, ছাত্রসহ অন্যান্য স্টেকহোল্ডার যারা আছে, সবই এখানে বিবেচ্য বিষয়। শিক্ষার্থী নাকি পরীক্ষার্থী- টেস্টিংয়ের ক্ষেত্রে আমরা এটাকে বলি 'ওয়াশব্যাক এফেক্ট', অর্থাৎ যখন টিচিং লার্নিংটা এক্সামকালীন এফেক্টেড হয়; আমি যা পড়াচ্ছি, আমার ছাত্র যা পড়ছে, তা পরীক্ষা দ্বারা ডিটেকটেড হয়। এখানে জ্ঞান সৃষ্টি হবে না। পরীক্ষার জন্য কেবল উত্তর মুখস্থ্থ করে পরীক্ষা দেব- এই ধরনের অবস্থ্থা ও প্রক্রিয়া থেকে আমাদের ফিরে আসতে হবে। না-হয় উচ্চশিক্ষা কোনোভাবেই নিশ্চিত করা যাবে না। এতে ঘটবে না মেধার বিকাশও।


লোটন একরাম

প্রতি মাসেই আমরা রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষাসহ নানা বিষয় নিয়ে ঢাকায় গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে থাকি। সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি সামাজিক দায়িত্বের অংশ হিসেবে সমকাল এ কাজটি করে থাকে। দেশে শুধু উচ্চশিক্ষা নয়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক- সব জায়গায় আমাদের একই অবস্থ্থা। এবার এইচএসসির দুটি প্রশ্ন প্রণয়নের ক্ষেত্রে যে ধরনের প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয়েছে, যাঁরা এই প্রশ্নপত্র তৈরি করেছেন- তাতেই বোঝা যায়, আমাদের শিক্ষার মানটা কোন জায়গায়। ক্যাম্পাসে সমস্যা, গবেষণা, শিক্ষা বাজেটে ঠিকমতো বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না। মানসম্মত উচ্চশিক্ষার পথে এগুলোও বড় অন্তরায়। এসব অন্তরায় দূর করা না হলে যতই চেষ্টা করা হোক না কেন, উচ্চশিক্ষার মান নিশ্চিত করা যাবে না।


সারোয়ার সুমন

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতক-স্নাতকোত্তর অর্থাৎ বিবিএ-এমবিএ পড়ার জোয়ার। একই সঙ্গে কলা, সামাজিক বিজ্ঞানের মতো বিষয়গুলোতেও শিক্ষার্থীদের আগ্রহ তুলনামূলক কম। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীর বিরাট অংশের পছন্দের তালিকায় থাকে বাণিজ্যের বিষয়গুলো। ইউজিসির ২০২০ সালের সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, অধ্যয়নরত মোট শিক্ষার্থীর শতকরা হার, কলা ও মানবিকে ১০ দশমিক ৭৪ শতাংশ, সামাজিক বিজ্ঞানে (অর্থনীতিসহ) ২ দশমিক ৯৫ শতাংশ, শিক্ষায় দশমিক ৪৬ শতাংশ, চারুকলায় দশমিক ২৪ শতাংশ, বিজ্ঞানে ৬ দশমিক ৭১ শতাংশ, জীববিজ্ঞানে ১ দশমিক ১৫ শতাংশ, ব্যবসায় প্রশাসনে ২৩ দশমিক ৯২ শতাংশ, আইন বিষয়ে ৬ দশমিক ১৮ শতাংশ, ফার্মাসিতে ৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ, কৃষিবিজ্ঞানে দশমিক ৫৩ শতাংশ, প্রকৌশল ও কারিগরিতে ৪২ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ এবং সার্টিফিকেট কোর্স, ডিপ্লোমা, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ও অন্যান্য কোর্সে ১ দশমিক ৫১ শতাংশ।

এখন ভর্তিতে বাণিজ্যের বিষয়গুলোর দাপট ক্রমেই কমছে। একই সঙ্গে সেই জায়গায় বিজ্ঞান, কৃষি, ফার্মাসি, প্রকৌশল ও তথ্যপ্রযুক্তিসংশ্নিষ্ট বিষয়ে শিক্ষার্থীর আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। ফলে বিজ্ঞানমনস্ক জ্ঞানভিত্তিক ডিগ্রি জাতীয় উন্নয়নে অসামান্য ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়। তবে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে ডিগ্রিধারীর সংখ্যা বাড়লেও বিজ্ঞানের মৌল বিষয়গুলোয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে কমে যাওয়ায় দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সুতরাং এসব বিষয়ে সংশ্নিষ্টদের নজর দেওয়া প্রয়োজন।
প্রধান অতিথি
মো. রেজাউল করিম চৌধুরী
মেয়র, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন
ধারণাপত্র পাঠ
ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী
প্রাক্তন উপাচার্য
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

সভাপতি
আবু সাঈদ খান
উপদেষ্টা সম্পাদক, সমকাল
আলোচক
অধ্যাপক মু. সিকান্দার খান
উপাচার্য, ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি

আবুল মোমেন
একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক ও সাংবাদিক

অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইল খান
উপাচার্য, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম
উপাচার্য, ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (ইউএসটিসি)

অধ্যাপক ড. বেনু কুমার দে
উপ-উপাচার্য
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

অধ্যাপক ড. মো. জাহিদ হোসেন শরীফ
ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য
ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি চিটাগং বাংলাদেশ

অধ্যাপক ড. গণেশ চন্দ্র রায়
কোষাধ্যক্ষ
পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

অধ্যাপক ড. সুনীল ধর
ডিন, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির
কোষাধ্যক্ষ
আন্তর্জাতিক ইসলামী
বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম

লোটন একরাম
প্রধান প্রতিবেদক, সমকাল

সঞ্চালক

সারোয়ার সুমন
আঞ্চলিক সম্পাদক ও
চট্টগ্রাম ব্যুরোপ্রধান, সমকাল

অনুলিখন

আহমেদ কুতুব
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম ব্যুরো

আব্দুল্লাহ আল মামুন
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম ব্যুরো

শৈবাল আচার্য
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম ব্যুরো

মারজান আক্তার
চবি প্রতিনিধি

ইভেন্ট সমন্বয়

তৌফিকুল ইসলাম বাবর
সিনিয়র রিপোর্টার, চট্টগ্রাম ব্যুরো

নাসির উদ্দীন হায়দার
সিনিয়র সাব-এডিটর, চট্টগ্রাম ব্যুরো

স্থিরচিত্র গ্রাহক

মো. রাশেদ
স্টাফ ফটো সাংবাদিক, চট্টগ্রাম ব্যুরো