রেমিট্যান্স এ দেশের জন্য এমন একটা শক্তি, যা আমাদের আত্মনির্ভরশীল ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশীল হতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। তবে বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশ প্রবাসী শ্রমিকদের পুরো রেমিট্যান্স পাচ্ছে না। ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠাতে গিয়ে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয় প্রবাসীদের। এ কারণে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের একটা বড় অংশ আসছে হুন্ডির মাধ্যমে। এর প্রভাব পড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। প্রবাসীরা যাতে সহজে ঝামেলা ছাড়াই ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠাতে পারেন, তার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা জরুরি। গত ৮ ডিসেম্বর সমকাল কার্যালয়ে 'রেমিট্যান্সপ্রবাহ ও ব্যবস্থাপনায় চ্যালেঞ্জ এবং মোকাবিলার উপায়' শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। 'সমকাল' এবং 'রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু)' আয়োজিত বৈঠকের সহযোগিতায় ছিল 'হেলভেটাস বাংলাদেশ' ও 'সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কোঅপারেশন'

শামীম হায়দার পাটোয়ারী, এমপি
এটা অস্বীকার করা যাবে না, অনেক মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হচ্ছে, নতুন নতুন অনেক পদক্ষেপ নিচ্ছে। কিন্তু সমস্যা তো পর্বতপ্রমাণ। আমরা অল্প অল্প করে সমাধানের চেষ্টা করছি। প্রবাসীদের আয়ে যে বছর ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হলো, সে বছরই রেমিট্যান্স বেড়েছিল। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো কম টাকায় এ দেশ থেকে শ্রমিক নিচ্ছে। অথচ আমাদের রিক্রুটিং এজেন্টরা অনেক বেশি টাকা নিয়ে লোক পাঠাচ্ছেন। প্রবাসী শ্রমিকদের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। সবাই শুধু তাঁদের কাছ থেকে নিচ্ছে। এ অবস্থায় তাঁরা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বৈধ মাধ্যমে টাকা পাঠাবেন- এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। যদি আমরা চাই, তাঁরা বৈধ পন্থায় টাকা পাঠাক, তাহলে তাঁদের সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। এ মুহূর্তে যদি সেবা বাড়ানো হয়, সেবা ২৪ ঘণ্টা দেওয়া হয়, তাহলে রেমিট্যান্স বাড়বে। যাঁরা বিদেশে যাচ্ছেন, তাঁদের 'বেনিফিশিয়ারি' ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, অর্থাৎ যাঁদের টাকা পাঠানো হবে, তাঁদের কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে কিনা- দেখা দরকার। আবার রিক্রুটিং এজেন্টকে বলতে হবে, যাঁরা যে দেশে যাবেন, তাঁর বেতন ওই দেশের কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্টে যেন দেওয়া হয়। এই অ্যাকাউন্ট থেকে যেন একটা অংশ দেশে তাঁর পরিবারের কাছে চলে যায়, সে ব্যবস্থাও করতে হবে। তাহলে ওই ব্যক্তি বিদেশে যাওয়ার আগেই বৈধ রেমিট্যান্স পদ্ধতি নিশ্চিত করতে পারবেন।

আরেকটা বিষয় হলো, ব্যাংকে টাকা নেই- এ কথায় একটা আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল। এটা সত্য। হুন্ডির বিষয়েও এই ধরনের আতঙ্ক তৈরি করতে হবে। অনেক মানি একচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান এবং অনেক ক্ষেত্রে অনেক ব্যাংকের শাখাও মানি লন্ডারিং করে। তাদের এই বার্তা দিতে হবে, হুন্ডি করলেই তাদের লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে বা টাকা আটকে যাবে। এ ধরনের 'কাউন্টার প্যানিক' সৃষ্টি করতে হবে। আমরা প্রবাসীদের জন্য রেমিট্যান্স কার্ড করতে পারি। তাঁরা এ কার্ড ব্যবহার করে বৈধভাবে টাকা পাঠালে তাঁদের নামে পয়েন্ট যোগ হবে এবং পরবর্তী সময়ে তাঁরা পেনশন পাবেন। তাহলে তাঁরা উৎসাহিত হবেন।

তানভীর শাকিল জয়, এমপি
আমরা রেমিট্যান্স নিয়ে অনেক বড় বড় বক্তব্য দিই, অনেক কিছু বলি। কিন্তু প্রবাসীদের দুঃখ, কষ্ট, বঞ্চনা বুঝতে চাই না। রেমিট্যান্সের 'ইকোসিস্টেম' যে কত জটিল, যাঁরা এ বিষয়ে জানেন না, তাঁরা বুঝতে পারবেন না। বাংলাদেশে টাকা আসার পর এমএফএসের মাধ্যমে কিংবা ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা তোলা খুব একটা কঠিন বিষয় নয়। হয়তো শাখা কম আছে, কিন্তু এ দেশে কেউ টাকা তুলতে পারবেন না- এমন অবস্থা নেই। সমস্যা হলো বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো। একজন ব্যক্তি দাম্মামে আছেন, তিনি কীভাবে রিয়াদে গিয়ে টাকা পাঠাবেন? এটা অসম্ভব। এর সমাধান বের করতে হবে। সরকারের অংশ হওয়ার পরও আমার বলতে কোনো দ্বিধা নেই যে, দূতাবাসকে দিয়ে এ কাজ হবে না। দূতাবাসগুলো আগের চেয়ে গতিশীল হয়েছে, কিন্তু তারা অন্য সমস্যাই সমাধান করতে পারছে না, এর কী সমাধান করবে? শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে, তাঁরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা দূতাবাসে গিয়ে বসে থাকছেন, কিন্তু দূতাবাসগুলো কোনো সহযোগিতা করতে পারছে না। সব ক্ষেত্রে দূতাবাসগুলোকে দোষও দিচ্ছি না। কেননা তারা আন্তরিক হলেও তাদের তেমন জনবল নেই, সক্ষমতা নেই। তাদের করার কিছু থাকে না। একজন প্রবাসী শ্রমিক যদি নিজের স্মার্টফোন থেকেই দেশে সহজে টাকা পাঠাতে পারেন, তাহলে তিনি আর হুন্ডিওয়ালার কাছে যাবেন না। সে ক্ষেত্রে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক ভূমিকা রাখতে পারে। এ ছাড়া রেমিট্যান্স পাঠানোর বিষয়ে আমাদের দেশভিত্তিক সমাধান বের করতে হবে। যেমন- ইতালিতে যেভাবে সমস্যার সমাধান সম্ভব, সৌদি আরবে সেভাবে সমাধান করা নাও যেতে পারে। এই বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখার প্রয়োজন রয়েছে।

ড. আহসান এইচ মনসুর
আমাদের মেনে নিতে হবে, বিনামূল্যে বা ঝামেলা ছাড়াই পৃথিবীর এক দেশ থেকে অন্য দেশে টাকা পাঠানো অসম্ভব। ৯/১১-এর পরপর এটা আরও জটিল হয়ে গেছে। আরেকটা সমস্যা হলো, যেহেতু আমরা একটা উন্নয়নশীল দেশ, সেহেতু আমাদের 'ক্যাপিটাল অ্যাকাউন্টে রেস্ট্রিকশন' রয়েছে। এটি থাকলে এক্সচেঞ্জ মার্কেট 'ভেরিফায়েড' হয় না। সব সময়ই আরেকটা মার্কেট থাকে, যেখানে অন্যান্য লেনদেন হয়। একটা মার্কেট হলো 'ইন্টার ব্যাংক মার্কেট', যেটা সবচেয়ে বড়। আরেকটা হলো 'কার্ব মার্কেট', যেটা বাংলাদেশে আছে। আরও একটা মার্কেট আছে, যা হুন্ডিওয়ালারা নিয়ন্ত্রণ করে। এ মার্কেটের মাধ্যমে টাকা পাঠানো ঠেকাতে সরকার যতই প্রণোদনা দিক, কোনো লাভ হবে না। কেননা সরকার যত প্রণোদনা দেবে, ওই মার্কেট আরও বেশি সুযোগ-সুবিধা দেবে। সুতরাং আমাদের ক্যাপিটাল অ্যাকাউন্টের কার্যক্রম যতক্ষণ সীমাবদ্ধ থাকবে, ততক্ষণ ওই মার্কেটের সঙ্গে পেরে ওঠা মুশকিল। আমাদের মতো দেশে এটা সম্ভব নয়। কাজেই একে মেনে নিয়েই আমাদের নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।

ড. নাশিদ রেজওয়ানা মনির
আমাদের মন্ত্রণালয়ের কাজ প্রবাসীদের কল্যাণ ও তাঁদের অধিকার নিশ্চিত করা। অভিবাসী কর্মীদের কথা মাথায় রেখে বর্তমান সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মধ্যে আর্থিক অভিগম্যতাকে গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা হিসেবে রাখা হয়েছে। রেমিট্যান্সের বিষয়টি এই এজেন্ডার মধ্যে রয়েছে। যেহেতু সরকার এজেন্ডা দিয়েছে, সেহেতু ২০২৫ সালের মধ্যে আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। এজেন্ডা বাস্তবায়নে আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে একটা কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে আমরা ২১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছি। করোনার মধ্যে এর আগের অর্থবছরেও আমাদের প্রায় ২৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার রেমিট্যান্স ছিল। আমাদের রেমিট্যান্সের প্রবাহ কিছুটা কমে গেছে। করোনা এবং সাম্প্রতিক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ- দুটি বিষয় সরকার ও আমাদের মন্ত্রণালয়কে মোকাবিলা করতে হয়েছে। এ বছর রেমিট্যান্সের ওপর প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করেছে। যদিও মানি লন্ডারিং, হুন্ডি ও রেমিট্যান্স ব্যবস্থাপনাকে নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের মন্ত্রণালয়ের বিষয় নয়, তবে আমরা এ বিষয়ে সচেতন। এ বিষয়ে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী প্রণোদনা বাড়ানোর বিষয়ে আন্তরিক। হয়তো শতভাগের সুবিধা না পাওয়া গেলেও আমার মনে হয়, প্রণোদনা বাড়ালে একটা ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক আমাদের প্রধানমন্ত্রীর মস্তিস্কপ্রসূত ছিল। একমাত্র আমাদের দেশেই প্রবাসীদের জন্য একটা বিশেষায়িত ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। যে কোনো প্রতিষ্ঠানই প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গেই কিন্তু সাফল্য পায় না, সময় লাগে। এই ব্যাংকের শাখা আঞ্চলিক পর্যায়ে বিস্তৃত হচ্ছে। এখনও যদি আমাদের অভিবাসীরা পর্যাপ্ত সেবা না পেয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে এর সমাধান করতে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় গুরুত্ব আরোপ করেছে এবং সরকারও এ বিষয়ে আন্তরিক।

ড. তাসনিম সিদ্দিকী
বাংলাদেশের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রেখেছেন প্রবাসী শ্রমিকরা। রেমিট্যান্স এ দেশের জন্য এমন একটা শক্তি, যা আমাদের আত্মনির্ভরশীল হতে এবং একটা সম্মানের জায়গায় নিতে সহায়তা করেছে। আমরা যে সবকিছুতে পরমুখাপেক্ষী নই, আমরা আমাদের সম্পদের ওপর নির্ভর করেই এগিয়ে যাওয়ার শক্তি রাখি- এ জায়গাটা তৈরি করেছেন প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা। রেমিট্যান্সের জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে প্রচুর সংশোধন হয়েছে। রেমিট্যান্স নিয়ে ১৯৯৯ সাল থেকেই গবেষণা শুরু হয়। এরপর একটার পর একটা গবেষণা একেকটা নীতিমালা পরিবর্তন ও প্রণয়নে ভূমিকা রেখেছে। আবার বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়, যার মধ্যে কিছু পদক্ষেপ রেমিট্যান্সকে পিছিয়েও দিয়েছে। এটা আগেও হয়েছে, এখনও হচ্ছে। রেমিট্যান্স কেন কমছে- এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে আমরা আসল জায়গায় নজর না দিয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানের দিকে নজর দিয়ে বলি যে, এই কারণে রেমিট্যান্স 'ইনফরমাল' চ্যানেলে চলে যাচ্ছে. তাহলে লাভ হবে না। এ জায়গাটায় যদি আমরা সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারি তাহলে আমার বিশ্বাস, একটা ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।

আমরা সবাই জানি, রেমিট্যান্স প্রেরণের ক্ষেত্রে আগে বিভিন্ন হাউসের মাধ্যমে একচেটিয়া ব্যবসা করা হতো। এক পর্যায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে এটা বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলাম যে, একটা 'লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড' তৈরি করতে হবে এবং সবাইকে সুযোগ দিতে হবে। এটা কিন্তু হয়েছে। এর পরেই কিন্তু বিভিন্ন ব্যাংক প্রতিটি 'এক্সচেঞ্জ হাউসের' সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে রেমিট্যান্সপ্রবাহের ক্ষেত্রে দৃশ্যনীয় অগ্রগতি হয়েছে।

২০০১ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আমরা যদি রেমিট্যান্স ও অভিবাসীর গতি বিশ্নেষণ করি তাহলে দেখা যায়, অভিবাসী ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে। কখনও কখনও অভিবাসন কিছুটা কমে, কিন্তু এর পরেই আবার বাড়ে। অর্থাৎ অভিবাসন ও অভিবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের জন্য একটা স্থিতিশীল শক্তি। অভিবাসীরা রেমিট্যান্স প্রেরণের ক্ষেত্রে আস্থা আছে এমন ব্যাংকের যেন সেবা নিতে পারেন- সে ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানগুলোকে তৎপর হতে হবে।

মুনতাসির কামাল
বাইরে থেকে এ দেশে টাকা পাঠানোর ওপর হুন্ডির প্রভাব নিয়ে আমরা সবাই কথা বলছি। হুন্ডির বিষয়টি এভাবে চলে যে, বাইরে থেকে একজন টাকা পাঠাচ্ছেন এবং এ দেশে তাঁর পরিবার টাকাটা পেয়েও যাচ্ছে। এর বিপরীত চিত্রটা হলো, বাংলাদেশ থেকে যাঁরা ফরমাল চ্যানেল বাইপাস করে টাকা পাঠাতে চাইছেন, তাঁদের কাছ থেকেই ওই টাকা সংগ্রহ করা হচ্ছে। আমরা যদি অর্থ পাচার বন্ধ করতে না পারি, তাহলে আমরা কখনোই হুন্ডি বন্ধ করতে পারব না। এটা বন্ধ না করলে আমরা যতই হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করি বা প্রণোদনা বাড়াই- তাতে কোনো লাভ হবে না। প্রণোদনা আড়াই শতাংশের জায়গায় ৫ বা ১০ শতাংশ বাড়ালেও কোনো লাভ হবে না। এতে জনগণের টাকা আরেকটু বেশি করে খরচ হবে। কারণ যে হুন্ডি করবে, সে সব সময়ই আপনাকে ফরমাল রেট, তার ওপরে প্রণোদনা রেট এবং তার ওপর অতিরিক্ত একটা টাকা দেবে। দেশে হয়তো হুন্ডি চক্রের কিছু মানুষকে ধরা হচ্ছে। কিন্তু মূল হোতাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখেছি কিনা- তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। হুন্ডি বন্ধে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নিতে হবে। এমএফএসের ক্ষেত্রে দুটি জায়গায় গুরুত্ব দেওয়ার বিষয় আছে বলে আমি মনে করি। বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা 'ক্যাশআউট' করার রেটের দিকে নজর দেওয়ার সময় এসেছে। কেননা আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু ক্যাশআউট করার সময় হাজারে ১৫ টাকা, অর্থাৎ দেড় শতাংশ দিয়ে দিতে হচ্ছে।

মেজর জেনারেল শেখ মো. মনিরুল ইসলাম (অব.)
'বাংলাদেশ এমএফএস রেগুলেশন ২০১৮', যা এ বছর সংশোধিত হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে, শুধু ব্যাংক অথবা ডিলার রেমিট্যান্স সংগ্রহ করা এবং সেটেলমেন্ট করতে পারে। গ্রাহকের কাছে ডিজিটাল উপায়ে টাকা পৌঁছানোর কাজ শুধু এমএফএস করতে পারে। এটা শুধু 'ইনওয়ার্ড ফরেন রেমিট্যান্সের' ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। সুতরাং পাচারের বিষয়ে যখন কথা ওঠে, তখন এ বিষয়টা মনে রাখতে হবে যে এমএফএস শুধু ব্যাংকের প্রতিনিধি হয়ে 'লাস্ট মাইল সল্যুশন' হিসেবে দেশে আসা টাকার বিষয়ে কাজ করতে পারে। এর বাইরে কিছু করতে পারে না। ২০১৬ সাল থেকে বিকাশ এই কাজ করছে। এ পর্যন্ত আমরা ১৪টি ব্যাংকের সঙ্গে এক হয়ে কাজ করেছি। এ ব্যবস্থায় আমাদের গ্রাহকরা রেমিট্যান্স পাচ্ছে। গত বছর ২৪৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের টাকা বিকাশের গ্রাহকরা ফরমাল চ্যানেলে পেয়েছিলেন। এ বছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত ৩৮৭ মিলিয়ন এসেছে। আমরা আশা করছি, ডিসেম্বরে এটি ৪০০ মিলিয়ন ছাড়াবে। সুতরাং এমএফএসের ফরমাল চ্যানেলে ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে। কেননা এ ব্যবস্থার সঙ্গে সঙ্গে টাকা পাওয়ার বিষয়টি রয়েছে।

প্রবাসীদের হাতে যদি একটা অ্যাপ থাকে, যার মাধ্যমে তাঁরা ঘরে বসে টাকা পাঠানো সুবিধাটা পান, তাহলে তাঁদের জন্য অনেক সুবিধা হবে। কেননা কাজ ফেলে টাকা পাঠাতে গেলে তাঁর কর্মঘণ্টা থেকে বেতন কাটা যাবে। আমরা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকও এ বিষয়ে ভাবছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ সার্কুলারে 'ওয়েজ আর্নার্স এমএফএস অ্যাকাউন্টের' কথা বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কতগুলো চ্যালেঞ্জ রয়েছে। চ্যালেঞ্জটা হলো, এ দেশের একটা সিমকার্ডের মাধ্যমে এই অ্যাকাউন্ট খোলা হবে। এই সিমকার্ড তো অন্য দেশে চলবে না। এ ছাড়া আইডি ভেরিফিকেশনের বিষয়টাও আমাদের দেখতে হবে। প্রবাসী শ্রমিকদের নিজস্ব 'ওয়েজ আর্নার্স এমএফএস অ্যাকাউন্ট' থাকে তাহলে নিয়ন্ত্রণটা তাঁর হাতে থাকে। তাঁকে সেই সুবিধা দেওয়া হলে তিনি যথেষ্ট পরিমাণ টাকা তাঁর পরিবারকে দিতে পারবেন, একই সঙ্গে সঞ্চয়ও করতে পারবেন।

মো. সিহাব উদ্দিন চৌধুরী
প্রবাসী শ্রমিকদের জীবনযাপনকে আমাদের বিশ্নেষণ করা দরকার। তাঁরা আসলে কেন হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠান? এর তো নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে। তাঁরা যদি দেখতেন যে ব্যাংকিং চ্যানেল বা রেগুলার চ্যানেলে টাকা পাঠালে তাঁরা বেশি লাভবান হবেন, তাহলে তাঁরা হুন্ডিতে টাকা পাঠাতেন না। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমতি পাওয়ার পর সেপ্টেম্বর মাসে আমরা শুরু করি। তখন বিশ্নেষণ করে দেখা যায়, প্রবাসী শ্রমিকরা কর্মস্থল থেকে বাইরে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমিকরা শহর থেকে অনেক দূরে গিয়ে টাকা পাঠান। তাঁরা সে রকম কোনো ছুটি পান না, যাতে করে তাঁরা শহরে এসে টাকাটা পাঠাতে পারবেন। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, একটা সংঘবদ্ধ চক্র শ্রমিকরা বেতন পাওয়ার কয়েক দিন আগে তাঁদের কাছে যায় এবং অগ্রিমভাবে তাঁদের হয়ে তাঁদের পরিবারের কাছে টাকা পাঠায়। যেদিন শ্রমিকরা বেতন পান, সেদিন ওই চক্র তাঁদের কাছ থেকে টাকাটা সংগ্রহ করে। এ অবস্থায় তাঁরা টাকা পাঠালে তাঁদের ব্যাংকের রেটের চেয়ে বেশি রেটে টাকা পাঠাতে পারেন। এমন সুবিধা পেলে শ্রমিকরা আর অন্য কিছু চিন্তা করেন না। আবার এভাবে তাঁরা যখন টাকা পাঠান, তখন তাঁদের আয়ের পুরোটাই দেশে পাঠাতে হয়। তাঁরা দেশে আসেন নিঃস্ব হয়ে। এমএফএস ছাড়াও এখন কিন্তু ওপেন ব্যাংকিংয়ের সুযোগ এসেছে। এখন ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ে লেনদেনের সুযোগ এসেছে। প্রবাসীদেরও যদি এমন সুযোগ করে দেওয়া যায়, তাঁদের নিজেদের টাকা যদি নিজের অ্যাকাউন্টে থাকে, তাহলে তিনি আর অন্যায়ভাবে টাকা পাঠাবেন না। একই সঙ্গে যদি তাঁকে আরও অনেক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যায়, তিনি আর অন্য পথে হাঁটবেন না।

আব্দুল্লাহ আল মুঈদ
প্রবাসী শ্রমিকরা যখন টাকা পাঠান, তখন তাঁরা তিনটি বিষয় বিবেচনা করেন। সেগুলো হলো- কত টাকা পাঠানো যাবে, কত সহজে পাঠানো যাবে এবং কমিশন কত। প্রবাসী শ্রমিকরা কিন্তু অনেক সাবধান। তাঁরা জানেন, কোথায় বেশি টাকা পাবেন। ব্যাংক যদি তাঁদের ১০২ টাকা দেয়, তাহলে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠালে ১১৭ টাকা পাবেন। এ ক্ষেত্রে রেমিট্যান্স বাড়াতে কাঠামোগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেটা মন্ত্রণালয় থেকে হতে পারে কিংবা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রণোদনা বাড়ানোসহ প্রবাসীদের আস্থা বাড়াতে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। প্রবাসীদের জন্য সেবা বাড়াতে হবে। এ দেশে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের তিনটি স্কিমের আওতায় ১২টি সেবা রয়েছে। অন্যান্য ব্যাংকেও সেবা বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে ব্যাংক প্রবাসীদের উৎসাহী করতে তাদের কাছে যেতে পারে, কাউন্সেলিং করতে পারে, যাতে তারা ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠান।

জাকির হোসেন
বর্তমান সময়ে অর্থনৈতিক বিষয়ের বিভিন্ন দিক বিশ্নেষণ করলে দেখা যায়, রেমিট্যান্সই এখন আমাদের মূল ভরসার জায়গা। অবৈধ পথে টাকা পাঠানো পুরোপুরি না হোক, অধিকাংশ ক্ষেত্রে বন্ধ করা সম্ভব হলে বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের অনেকটাই মোকাবিলা করা সম্ভব। অন্যদিকে মোবাইল ফাইন্যান্স সার্ভিস যদি ভালোভাবে কাজে লাগানো যায়, তাহলে প্রবাসীরা উৎসাহী হবেন এবং রেমিট্যান্স বাড়বে।


সুমাইয়া ইসলাম
শ্রমিকরা বিদেশে যাওয়ার পর যখন তাঁদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার জায়গায় ঘাটতি হয়, তখন রেমিট্যান্সপ্রবাহ কমে যায়। গত বছরে বিদেশে যে পরিমাণ শ্রমিক গেছেন, সে অনুযায়ী রেমিট্যান্স আসেনি। কারণ যাঁরা গেছেন, তাঁরা অনেকেই ঠিকমতো বেতন পাননি। আমাদের সংস্থার একটা হটলাইন নাম্বার আছে। সেই নাম্বারে খোলা ইমো অ্যাকাউন্টে প্রচুর ফোনকল আসে। তাঁরা জানান, তাঁদের ঠিকমতো বেতন দেওয়া হয় না। আবার তাঁদের মধ্যে অনেক নারী ও পুরুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন, অনেকে জেলেও আছেন। যদি আমরা প্রত্যেক শ্রমিকের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারতাম, তাহলে আমাদের রেমিট্যান্সপ্রবাহ কমত না। এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে যেসব শ্রমিক বিদেশে গেছেন, তাঁরা বেতন পেয়েছেন কিনা- সে বিষয়টি মন্ত্রণালয় এবং বিএমইটিকে তদারক করতে হবে। অনেক সময় নারী শ্রমিকরা ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারেন না। তাঁদের মালিকরা নিজেদের ইচ্ছামতো টাকা পাঠান। ওই নারী জানতেও পারেন না, কীভাবে তাঁর মালিক টাকা পাঠিয়েছেন। কেননা ওই নারীর চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকে। এ বিষয়গুলোও আমলে আনতে হবে। এ ছাড়া বিদেশগামী নারীদের জন্য সেবা নিশ্চিত করতে হবে।

সৈয়দ সাইফুল হক
প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক কেন করা হয়েছে? প্রবাসীদের সঞ্চয়ের জন্য, তাদের সেবার জন্য এই ব্যাংক করা হয়েছে। এ ব্যাংক প্রবাসী শ্রমিকদের টাকাতেই চলে। শ্রমিকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে এই ব্যাংক চললেও তাঁদের কোনো কিছু দেওয়া হয় না। শুধু তাঁদের কাছ থেকে টাকা নেব, রেমিট্যান্সও চাইব- বিনিময়ে তাঁদের কিছু দেব না, তা হতে পারে না। রেমিট্যান্স বাড়াতে হলে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক- এ তিনটি বিষয়ে কাজ করতে হবে। রেমিট্যান্স বাড়াতে হলে রাজনৈতিক নেতৃত্বের সদিচ্ছা থাকতে হবে। কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে প্রবাসীদের নিয়ে কোনো ব্যবস্থা রাখার কথা আমি দেখিনি। শুধু শ্রমিকদের জন্য বন্ডের সুদহার কমানো হয়েছে। এতে রেমিট্যান্সপ্রবাহটা কিছুটা বেড়েছে। এরপরও তাঁদের বেশি একটা সুযোগ নেই। আমরা শুধু তাঁদের কাছ থেকে নিচ্ছিই। প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে তেমন রেমিট্যান্স আনা যাচ্ছে না। এখানে রেমিট্যান্স আনার জন্য বাধা প্রদান করল কারা? তাদের কি আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি? সত্য কথা ও সত্য জিনিস প্রকাশিত হওয়া উচিত। কোথা থেকে বাধাটা আসছে. চিহ্নিত করে তা দূর করতে হবে।

শাকিরুল ইসলাম
একজন অভিবাসী শ্রমিক তাঁর নিজের দায় নিয়ে ঋণ করে বিদেশে যাচ্ছেন এবং কঠোর পরিশ্রম করে টাকা উপার্জন করছেন। সেই টাকার ওপরই সবার চোখ। তাঁরা পরিবারের কারও নামে টাকাটা পাঠাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, সেই টাকার পুরোটা অনেক সময় পরিবার খরচ করে ফেলছে। শ্রমিকরা যখন দেশে ফেরেন, তখন তাঁদের কাছে কোনো টাকা থাকে না। এ কারণে অনেকেই সেই অন্য দেশের ব্যাংকে টাকা রাখছেন। অন্যদিকে নারী শ্রমিক যাঁরা গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন, তাঁদের কোনোভাবেই নিজের হাতে টাকা পাঠানোর সুযোগ নেই। নারীর টাকাটা যে পাঠান, তিনি নিজের নামে পাঠান। তাই নারীর টাকাটা পুরুষের নামে যায়। প্রবাসী শ্রমিকরা কেন হুন্ডিতে আগ্রহী- এর কারণ আমাদের বের করতে হবে। তারা যেন হুন্ডিতে টাকা না পাঠিয়ে সঠিক পন্থায় টাকা পাঠান- এটি আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। আমরা প্রণোদনা বাড়ানোর কথা বলছি। এটা যেন অন্তত ১০ শতাংশ করা হয়- এই দাবি জানিয়েছি। প্রণোদনা যত বাড়ানো হবে, আমাদের রেমিট্যান্স তত বাড়বে।

মেরিনা সুলতানা
অভিবাসীদের ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণের ক্ষেত্রে এখনও অনাগ্রহ রয়েছে। এর পেছনে নানা কারণও রয়েছে। আমরা রেমিট্যান্স দিয়ে অভিবাসীদের মূল্যায়ন করছি, কিন্তু অভিবাসীবান্ধব সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে আমাদের উদ্যোগে এখনও যথেষ্ট দুর্বলতা রয়েছে। রিক্রুয়েটমেন্ট ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি অভিবাসীদের বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা। অনেক অভিবাসী উপযুক্ত কাজ, বেতন পান না। ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউটকে অভিবাসীর সেবা প্রদান ও উপযুক্ত সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা জানি, আমাদের অভিবাসীদের অবদান অনেক। এখানে সেবা প্রদানকারী সংস্থার মাঝে সমন্বিত পরিকল্পনার প্রয়োজন রয়েছে। রেমিট্যান্সপ্রবাহ নিয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি প্রবাসীদের বিনিয়োগের বিষয়টা নিয়েও ভাবতে হবে।

রাশিদা খাতুন
গত মাসে আমার সংগঠনের 'অ্যাওয়ারনেস ক্যাম্পেইন'-এর একটা ওয়ার্কশপে আমি ছিলাম। সেই ওয়ার্কশপে যেটা উঠে আসে, সেটা হলো বর্তমান সময়ে আমরা ব্যাংক খাতে বড় একটা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি। ব্যাংকের গ্রাহকরা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ভেঙে ফেলতে চাইছেন, টাকা রাখতে চাইছেন না। দুই-তিন মাস ধরে এ দেশের ব্যাংকগুলোকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এ সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নিতে হবে।


শান্তা সূত্রধর
অনেক প্রবাসীর পরিবারকে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে বললে তাঁরা বলেন, ব্যাংকগুলো নাকি দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। সবাই প্রায় একই ধরনের কথা বলেছেন। প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন এবং ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিতে বলছেন পরিবারকে। এটা গত মাসের ঘটনা। এসব প্রবাসী খুবই স্বল্প আয়ের মানুষ। তাঁরা ব্যাংকে টাকা রাখতে ভয় পাচ্ছেন। তাঁরা ব্যাংক থেকে টাকা তুলে অন্য কোনো কাজে লাগানোর কথা ভাবছেন।


মোজাম্মেল হোসেন
এ দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে আমরা প্রবাসী শ্রমিকদের শুধু খেয়ে-পরে বাঁচার জন্য দেশের বাইরে ঠেলে দিচ্ছি। আমাদের দেশের অর্থনীতিতে তাদের বিশাল একটা ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু তারা নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এই রেমিট্যান্সের ব্যবস্থাপনা ও সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ব্যবহার নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।




আলোচক
শামীম হায়দার পাটোয়ারী, এমপি
চেয়ার, পার্লামেন্টারি ককাস অন মাইগ্রেশন

তানভীর শাকিল জয়, এমপি
সদস্য, পার্লামেন্টারি ককাস অন মাইগ্রেশন

ড. আহসান এইচ মনসুর
নির্বাহী পরিচালক, পিআরআই

ড. নাশিদ রেজওয়ানা মনির
উপসচিব, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়

মুনতাসির কামাল
সিনিয়র রিসার্চ ফেলো, সিপিডি

মো. সিহাব উদ্দিন চৌধুরী
প্রধান বিপণন কর্মকর্তা, নগদ লিমিটেড

মেজর জেনারেল শেখ মো. মনিরুল ইসলাম (অব.)
চিফ এক্সটার্নাল অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার, বিকাশ

মো. সিহাব উদ্দিন চৌধুরী
প্রধান বিপণন কর্মকর্তা, নগদ লিমিটেড

আব্দুল্লাহ আল মুঈদ
ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার, আইওএম

জাকির হোসেন
বিজনেস এডিটর, সমকাল

সুমাইয়া ইসলাম
নির্বাহী পরিচালক
বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্র (বিএনএসকে)

সৈয়দ সাইফুল হক
চেয়ারম্যান, ওয়্যারবি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন

শাকিরুল ইসলাম
চেয়ারম্যান, ওকাপ

মেরিনা সুলতানা
পরিচালক, কর্মসূচি, রামরু

রাশিদা খাতুন
জেলা সমন্বয়কারী, প্রত্যাশী, চট্টগ্রাম

শান্তা সূত্রধর
জেলা সমন্বয়কারী, রামরু

কি-নোট ও সঞ্চালনা
ড. তাসনিম সিদ্দিকী
প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার, রামরু

সভাপতি
মোজাম্মেল হোসেন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, সমকাল

অনুলিখন
ওবায়দুল্লাহ রনি
বিশেষ প্রতিনিধি, সমকাল

মাজহারুল ইসলাম রবিন
স্টাফ রিপোর্টার, সমকাল

সমন্বয়
হাসান জাকির
হেড অব ইভেন্ট, সমকাল