- গোলটেবিল
- নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে আন্তঃসংস্থা সমন্বয় জরুরি
নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে আন্তঃসংস্থা সমন্বয় জরুরি

দেশের খাদ্য নিরাপদতা নিশ্চিতে একাধিক সংস্থা কাজ করলেও সমন্বয়ে ঘাটতি রয়েছে। ফলে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও খাদ্য নিরাপদতা এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে সংশ্নিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়সাধন করতে হলে 'নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩'-এর আলোকে সঠিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা প্রয়োজন। জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষে গত ২৫ জানুয়ারি রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সমকালের সভাকক্ষে 'নিরাপদ খাদ্য : আন্তঃসংস্থা সমন্বয় ও চ্যালেঞ্জ' শীর্ষক আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। যৌথভাবে বৈঠকের আয়োজন করে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) ও সমকাল
মো. ইসমাইল হোসেন এনডিসি
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে থাকাকালীন আমি লক্ষ্য করেছি যে, আমাদের দেশে ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলো একই পণ্যের স্থানীয় বাজার এবং আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য আলাদা আলাদা কারখানা স্থাপন করছে। সমন্বয়হীনতা তো এ দেশে আছেই। আমরা নিজেদেরই নিজেরা মানুষ মনে করি না। এ বিষয়ে খুব গভীরভাবে ভাবতে হবে। অন্যান্য খাদ্যপণ্যে কী উপাদান দেওয়া আছে, তা ক্ষতিকর কিনা, তার মান আছে কিনা- এসব খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাগুলোকে দেখতে হবে। এই সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। কৃষকরা অনেক সময় না বুঝে ভেজাল খাদ্য উৎপাদন করে ফেলেন। এর প্রভাব তাঁর পরবর্তী প্রজন্মের ওপরও পড়ে। এ ক্ষেত্রে কৃষকদের দায়িত্বশীল হতে হবে। পাশাপাশি গবেষণার দিকেও নজর দিতে হবে।
মুশতাক হাসান মো. ইফতেখার
বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্যসংশ্নিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নকারী সংস্থা অর্থাৎ মন্ত্রণালয়/বিভাগ প্রায় ১৮টি। বাস্তবায়নকারী দপ্তর/অধিদপ্তর প্রায় ১৮টি। স্থানীয় সরকার সংস্থা (সিটি করপোরেশনসহ) ৩৪২টি। এসব সংস্থার অধীন এবং বেসরকারি খাতে অর্ধশতাধিক ল্যাবরেটরি রয়েছে। সর্বোপরি, খাদ্য ব্যবসায়ী এবং খাদ্যসংশ্নিষ্ট বেসরকারি সংস্থা রয়েছে লক্ষাধিক। অন্যদিকে, ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং প্রিন্ট মিডিয়া 'ওয়াচ-ডগ' হিসেবে কাজ করছে। তাহলে আমরা দেখতে পাই যে, নিরাপদ খাদ্য শৃঙ্খলে মোটা দাগে পাঁচ ধরনের সংস্থা জড়িত আছে।
তবে মাল্টি এজেন্সি পদ্ধতিতে চ্যালেঞ্জ তুলনামূলকভাবে বেশি। তাই বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু এবং বাস্তবায়ন করতে সবার সহযোগিতা আবশ্যক। বিগত আট বছরে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সংস্থা এবং খাদ্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে বেশকিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। বিদ্যমান সরকারি এবং স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর সামর্থ্য বৃদ্ধি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে, খাদ্য ব্যবসায়ীদের আইন মান্য করার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করা অপর একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এটা ভুলে গেলে চলবে না, যিনি খাদ্য উৎপাদন, আমদানি থেকে খাদ্য-সংক্রান্ত যে ব্যবসা করেন এবং ক্রেতার কাছ থেকে মূল্য গ্রহণ করেন নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ করার নৈতিক দায়িত্ব তাঁর। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ মনে করে, সরকারি এবং স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর সামর্থ্য নিয়ে এগিয়ে এলে আগামীর অর্জন অতীতের চেয়ে বেশি হবে। মনে রাখতে হবে, নিরাপদ খাদ্য 'গ্লোবাল পাবলিক গুড' হিসেবে গণ্য করা হয়।
এএইচএম সফিকুজ্জামান
জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর মাধ্যমে খাদ্যের নিরাপদতা নিশ্চিত করা সম্ভব। বিভিন্ন সময়ে বাজারে অভিযানে দেখা গেছে, খাদ্যে এমন ভয়াবহ ভেজাল মেশানো হয়, যা খুবই ভয়ংকর। সারাদেশে যেসব মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন, তার মূল উৎস কিন্তু অনিরাপদ খাদ্য। বিভিন্ন সময়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সেগুলো ধরাও পড়েছে। কয়েকবার দেশের খাদ্যপণ্য রপ্তানিতেও ভেজাল দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। শিশুদের খাদ্যেও অবর্ণনীয় ভেজাল রয়েছে। খাদ্য খেয়ে শিশু মারা যাচ্ছে- এ ধরনের সংবাদ নিশ্চয় রপ্তানি বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
আমি খাদ্য উৎপাদনকারীদের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনার আহ্বান জানাই। উৎপাদনকারীরা এখন দুই ধরনের খাবার প্রস্তুত করেন। এক ধরনের খাবার তৈরি করেন রপ্তানির জন্য। অন্যটি প্রস্তুত করেন অভ্যন্তরীণ বাজারের জন্য। এটি ঠিক নয়। উৎপাদনকারীরা যে খাদ্য খাবেন সেটাই বাজারে বিক্রি করতে হবে- এমন ধরনের মানসিকতা তৈরি করতে হবে তাদের মধ্যে। এসব ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা দরকার আছে। জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। খাদ্যপণ্য সরবরাহের উৎসস্থল সম্পর্কে ভোক্তাকে নিশ্চিত করা দরকার।
মো.আব্দুল কাইউম সরকার
নিরাপদ খাদ্য আইনে বলা হয়েছে, খাদ্য উৎপাদন, আমদানি, মজুত, বিপণন, প্রক্রিয়াজাতকরণ সব ক্ষেত্রে সমন্বয়ের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। খাদ্যের যে উৎস সেটি দেখলে সহজেই বোঝা যায়, সেগুলোতে আলাদা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান জড়িত রয়েছে। যে কোনো পর্যায়ে খাদ্য অনিরাপদ হতে পারে। সে জন্য সব পর্যায়েই সমন্বয় দরকার। কিন্তু এতগুলো পর্যায়ে আমাদের নজরদারি বা খবরদারি করা খুবই কঠিন। উন্নত দেশগুলোতে পণ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যায়ে যাওয়া পর্যন্ত স্বল্প কয়েকটি ধাপ থাকে। তা ছাড়া উৎপাদনকারীরা উৎপাদিত পণ্যে নিজের ট্যাগ লাগিয়ে তা ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে পাঠান। সেখান থেকে সরাসরি ভোক্তার কাছে চলে যায়। ফলে খাদ্য অনিরাপদ হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় অনেক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি জড়িত থাকে। তাই সংশ্নিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করার কথা বলা হয়েছে আইনে। তাই সমন্বয় করা একান্ত প্রয়োজন। শিক্ষা কারিকুলামে নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কে পাঠদান জরুরি।
মোজাম্মেল হোসেন
আমাদের বাল্যকালে দুধে পানি বা গুঁড়া হলুদে কাঠের গুঁড়ার মতো খুচরা ব্যবসায়ীদের ভেজাল মেশানোকে খাদ্যে বড় নিরাপত্তাহীনতা বলে জানতাম। এখন কৃষি উৎপাদন থেকে মজুত, সরবরাহ, বাজারজাতকরণ ও শিল্পে প্রক্রিয়াজাত হরেক রকম খাদ্যে নানা উপাদান সংযোজন, মোড়কবদ্ধ করে বিক্রি ও আমদানি-রপ্তানি হয়। ফলে বহু স্তরে বৈজ্ঞানিকভাবে খাদ্যের মান রক্ষা করতে হয়। বহু প্রতিষ্ঠানের কাজের সমন্বয় প্রয়োজন হয়। সংবাদমাধ্যম 'ওয়াচডগের' ভূমিকা এবং নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে পারে। সমকাল এ বিষয়ে সজাগ।
এ আলোচনা আমাদের আশ্বস্ত করে যে, ২০১৩ সালে বর্তমান সরকারের তৈরি নিরাপদ খাদ্য আইনের সার্বিক প্রয়োগ, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের যথাযথ সমন্বিত কাজ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাবে। আইন ও বিধির কঠোর প্রয়োগ কাম্য, যা আমাদের দেশে সচরাচর হয় না। সব সেবা খাতে মান নিয়ন্ত্রণের বিধিবিধান ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ উভয়কেই শক্তিশালী করা দরকার।
অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিক
সমন্বয়হীন তো আমাদের সংস্কৃতিরই অংশ। আমরা সব খানেই সমন্বয়হীনতার মধ্যেই থাকি এবং সমন্বয়টা কখনোই সমন্বিত হয় না। সব সংস্থার মধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে, এটা স্পষ্ট। কিন্তু কোথায় কোথায় সমন্বয়হীনতা, দ্বন্দ্ব এবং সংকট রয়েছে, তা ভালো করে খোঁজা হয় না। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে এর সমাধান করতে হলে, কোথায় কোথায় তারা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছেন সেটা তাদেরই বলতে হবে। তাহলেই সেগুলোকে কীভাবে দূর করা যায়, তার পন্থা হয়তো আমরা বের করতে পারব।
নাহারুল ইসলাম মোল্লা
ইন্ডাস্ট্রিগুলো যদি নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ করতে না পারে, তাহলে সেগুলো ভবিষ্যতে টিকে থাকতে পারবে না। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তাদের মধ্যে অন্যতম হলো ইন্ডাস্ট্রি। এই ইন্ডাস্ট্রি যদি নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ না করে, তাহলে আইন বা অন্যান্য সংস্থা কোনো কিছু দিয়েই কোনো কাজ হবে না। ২০১৩ সালে নিরাপদ খাদ্য আইন হওয়ার পর নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠিত হওয়ার অনেক নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। সংস্থাটি অনেক খাদ্যে মান নিশ্চিতে কাজ করেছে। এটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় কাজ। তবে অনেক ক্ষেত্রে ইন্ডাস্ট্রিগুলো ভুক্তভোগী হয়। এ জায়গাটায় যদি সমন্বয় করা হয়, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়োজিত সংস্থাগুলো কার্যকর অংশগ্রহণ থাকে, তাহলে সমন্বয় সম্ভব হবে।
সংগীতা আহমেদ
শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে বড় ধরনের সমন্বয়হীনতা রয়েছে। খাদ্য, পুষ্টি, নিরাপদ খাদ্য- এসব নিয়ে বিভিন্ন গবেষণাগার ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষিপ্তভাবে গবেষণা হচ্ছে। একই বিষয় নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন গবেষণা হচ্ছে। কিন্তু সেগুলোর ফলাফল সঠিক কাজে প্রয়োগ হয় না। তা ছাড়া কোন বিষয়ে কখন গবেষণা করা দরকার, তা নির্ধারণ করতে হবে। যদি এমন করা যায়, বিভিন্ন সংস্থার গবেষণা করা প্রতিবেদনগুলো এক জায়গায় এলো, সেগুলো কোথায় কীভাবে কাজে লাগানো যায় সে ব্যাপারে নীতিমালা তৈরি করা হয়, তাহলে গবেষণার ফলাফল ভালো কাজে আসবে। বিক্ষিপ্তভাবে হওয়া গবেষণাগুলোর তথ্য এক জায়গায় সংরক্ষণ করা দরকার। বিদেশে খাদ্য বিক্রেতাদেরও প্রশিক্ষণ নিতে হয়। কিন্তু দেশে এ ব্যবস্থা নেই। কারও কোনো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয় না। পাঠ্য সিলেবাসে নিরাপদ খাদ্যের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।
ড. তোফাজ্জল ইসলাম
খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পর আমাদের চিন্তার বিষয় হয়েছে খাদ্যকে কীভাবে নিরাপদ করা যায়। আমাদের কৃষির এই অগ্রগতিকে মডেল হিসেবে ধরে অন্য খাতগুলোতেও ব্যবহার করা যেতে পারে। আমাদের কৃষিতে অসাধারণ সমন্বয় রয়েছে। এখানে 'ন্যাশনাল এগ্রিকালচার রিসার্চ সিস্টেম'-এর মাধ্যমে যে গবেষণাগুলো হয়, সেগুলো নিয়মিত রিভিউ হচ্ছে এবং সমন্বিত হচ্ছে। জাতীয় চাহিদা অনুযায়ী এই গবেষণাগুলো হচ্ছে। এই গবেষণাগুলো প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছানোর পথ তৈরি করা হয়েছে; গবেষণাগুলোর ফল কৃষকের কাছে পৌঁছাচ্ছে। এটা একটা অসাধারণ মডেল। এখন নিরাপদ খাদ্যের ক্ষেত্রে আমাদের কয়েকটা বিষয়ের ওপর মনোযোগ রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। নিরাপদ খাদ্যের ক্ষেত্রে প্রথমে খাদ্যের উৎপাদনকে নিশ্চিত করতে হবে। এরপর এই খাদ্যের নিরাপদতার বিষয়টি ভাবতে হবে। উৎপাদন প্রক্রিয়ায় নিরাপত্তা কতটুকু বজায় রাখা হয়, এটি ভাবার বিষয়। উৎপাদনেও কিন্তু অনেক রকমের ভেজালের সংমিশ্রণ এবং দূষিত হওয়ার বিষয় রয়েছে। সে ক্ষেত্রে নিরাপদ খাদ্য সংস্থা কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথ কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
ডা. মাহবুবুর রহমান
অনিরাপদ খাদ্যের ক্ষতিকর প্রভাব শিশু থেকে বয়োবৃদ্ধ সবার ওপরই পড়ে। কীভাবে সমন্বয় সম্ভব? জাতীয় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। কারণ দায়িত্বটা তাদের। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে প্রয়োজন সক্ষমতা বৃদ্ধি, দক্ষ জনবল এবং ক্ষমতা। এই তিনটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
খাদ্যের মান নির্ধারণ করা প্রয়োজন। আমাদের অনেক কিছুতেই মান নির্ধারণ করা আছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়তোবা নেই, আপডেট করা হচ্ছে। এ ছাড়া অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো মনিটরিং এবং স্ট্ক্রিনিং ফ্যাসিলিটি। আমাদের অনেক ধরনের খাদ্যপণ্য রয়েছে। কিন্তু এগুলো ভালো নাকি খারাপ- এ বিষয়ে আমাদের কোনো ধরনের স্ট্ক্রিনিং ক্যাপাসিটি আছে? এটা কি আমরা মাঠ পর্যায়ে করতে পারি নাকি সবকিছু ঢাকায় টেনে নিয়ে আসতে হবে? এরপর সচেতনতা বৃদ্ধিতে গণমাধ্যমসহ সংশ্নিষ্টদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে। এসব ধাপ পার করে যদি আমরা সঠিক পদক্ষেপগুলো নিতে পারি, তাহলে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব।
মাইকেল জে. পার
খাদ্য নিরাপদতা নিশ্চিতকরণের সঙ্গে জড়িত সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করা বেশ চ্যালেঞ্জিং। এনবিআর, কাস্টমস এবং অর্থ মন্ত্রণালয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বিত পরিকল্পনা থাকে। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। যদি কোনো দেশ থেকে খাদ্যপণ্য আমদানি করা হয়, সে ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলো তার মান পরীক্ষার জন্য নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবে। একই সঙ্গে খাদ্য নিরাপত্তায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে তথ্য-উপাত্ত এবং প্রযুক্তি আদান-প্রদান করা গেলে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
ড. ইকবাল রউফ মামুন
নিরাপদ খাদ্যের ইস্যুটা এ দেশে আগেও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ছিল, আজও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। যদি এ দেশের জনগণকে জিজ্ঞাসা করা হয়, এ দেশের খাদ্যের কী অবস্থা? তারা এখনও বলবেন, 'যা-তা অবস্থা। আমরা কী খাচ্ছি, আল্লাহই জানেন।' অর্থাৎ জনগণের এই ধারণা আমরা এখনও পরিস্কার করতে পারিনি। এই ধারণা বদলাতে হলে জনগণ যে বিষয় নিয়ে এখনও সন্দিহান, সেই বিষয় নিয়ে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে কাজ করতে হবে। এসব জায়গায় নজরদারি এবং মনিটর করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এ বার্তাটি জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এই বার্তা পৌঁছাতে হলে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে সমন্বয় করতে হবে টেস্টিং ল্যাবরেটরি এবং একাডেমিক ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে। একই সঙ্গে ল্যাবরেটরির সক্ষমতা বাড়াতে হবে। কেননা অনেক ল্যাবরেটরি থাকলেও সেখানে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এবং জনবল নেই। এ জন্য দক্ষ জনবল ও যন্ত্রপাতি দরকার। এ বিষয়ে সরকারের মনোযোগ দিতে হবে।
মো. রেজাউল করিম
মূল সমস্যা হলো সমন্বয়হীনতা। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কাজ লোক দেখানো নয়। দেশে লাখ লাখ খাদ্য বিক্রয়, প্রক্রিয়াজাত ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আছে। হোটেল-রেস্তোরাঁ আছে। কিন্তু তাদের ব্যবসা শুরু করার জন্য কোনো লাইসেন্স নিতে হয় না। এটা তাদের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। এটা আমাদের জন্য একটা বড় সমস্যা। তবে এটা নিয়ে কাজ চলছে। তা ছাড়া দেশে যে পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি রয়েছে, যেটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অথচ সেখানেই রয়েছে জনবলের ঘাটতি। কিছুদিন আগে সুইডেন থেকেও রপ্তানি করা খাদ্যপণ্য ফেরত আসছে। কারণ তাতে ক্ষতিকর পদার্থ পাওয়া গেছে। কক্সবাজারে শুঁটকিতে ভেজাল দেওয়া হচ্ছে। সাতক্ষীরার সুন্দরবনের মধুতেও দেওয়া হচ্ছে ভেজাল। সেখানে মধু আহরণের সময় তিন মাস হলেও সারাবছরই খাঁটি মধু বলে বিক্রি করা হচ্ছে। এভাবে বিভিন্ন খাদ্যপণ্য অনিরাপদ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। সব জায়গায় সব ক্ষেত্রে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা বিএফএসএর একার পক্ষে অসম্ভব। তবে সংশ্নিষ্ট সব পক্ষ সমন্বয়ের মাধ্যমে উদ্যোগ নিলে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার কাজটি সহজ হবে।
প্রণব সাহা
নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হলো আমাদের মনোজগতের পরিবর্তন করা। আমাদের সচেতন হতে হবে, শুধু সংস্থাগুলোর ওপর দায় চাপালে হবে না। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের একটি লিফলেটে খাদ্য নিশ্চিতে পাঁচটি মূল কৌশলের কথা বলা হয়েছে। এর কোনোটাই কোনো সংস্থার দায়িত্ব নয়। বরং এর দায়িত্ব আমরা যারা বাজারে যাই, রান্না করি এবং খাই- তাদের। অর্থাৎ সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের পাশাপাশি নিজেদের সচেতন হওয়াও জরুরি। আমি মনে করি, চ্যালেঞ্জটা সেই জায়গায়।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ যদি উদ্যোগ নিয়ে বলে যে, আগামী বছর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করার আগে অন্তত একটা লিখিত দিতে হবে, তারা নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ করবে। এটা খুব বড় কাজ নয়। এর জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বড় কোনো বৈঠক করতে হবে না। সঠিক তাপমাত্রায় খাদ্য সংরক্ষণের বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা নিয়ে বিএসটিআই এবং নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কাজ করতে পারে। এই সমন্বয়সাধন করে যদি বলে দেওয়া হয়, রেফ্রিজারেটর উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর স্লোগানে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় খাদ্য রাখার বিষয়টি রাখতে হবে। এতে খাদ্য নিরাপদতার কাজ অর্ধেকের বেশি হয়ে যাবে।
ড. মো. আবদুল মুঈদ
একজন কৃষিবিদ হিসেবে বাজারে কোনো পণ্য কিনতে গেলে আমার ভাবতে হয়। কেননা একটা পণ্য আমি আজ কিনলাম, কিন্তু গতকালই এটাতে কোনো ধরনের কীটনাশক দেওয়া হয়েছে কিনা- সেটা আমি জানি না। কাজেই সে ক্ষেত্রে আমি দশবার চিন্তা করে শেষে বাধ্য হয়ে কিনি। যে স্বাস্থ্যের জন্য আমি খাদ্য কিনব, সেই খাদ্যই আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ কারণে মানুষ ক্যান্সারসহ অনেক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রণীত নীতিমালার আলোকে বিভিন্ন ধরনের জৈব বালাইনাশক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে নিরাপদ খাদ্যপণ্য উৎপাদনে কাজ করছে। তবে সেই পণ্যগুলো যখন বাজারে পৌঁছায়, তখন সেই কীটনাশক দেওয়া পণ্যের সঙ্গে মিশে গিয়ে দূষিত হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে এসব নিরাপদ খাদ্য আলাদাভাবে চিহ্নিত করে এর জন্য আলাদা বাজার তৈরি করতে হবে।
ড. মো. জুলফিকার আলী
মৎস্য উৎপাদনে আমরা ইতোমধ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। আমাদের দৈনিক মাথাপিছু মাছের চাহিদা ৬০ গ্রাম। এর বিপরীতে আমরা পাচ্ছি ৬২ দশমিক ৫৮ গ্রাম। মৎস্য উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি নিরাপদ এবং মানসম্পন্ন মৎস্যজাত খাদ্য উৎপাদনে সরকার কাজ করছে। মৎস্য উৎপাদন থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানির ক্ষেত্রে কার্যকর পদ্ধতি নির্ধারণের মাধ্যমে নিরাপদ মৎস্যজাত খাদ্য মানুষের কাছে পৌঁছানো আমাদের জন্য এখনও চ্যালেঞ্জ। তবে মৎস্য অধিদপ্তর মাছ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বাজারজাতকরণসহ সব ক্ষেত্রেই মান নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে কিছু নীতিমালা মৎস্য অধিদপ্তর থেকে প্রণীত হয়েছে। তবে অধিদপ্তরের সঙ্গে অন্য সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সমন্বয়সাধনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
রিয়াজুল হক
মান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব বিএসটিআইয়ের ওপর অর্পিত থাকলেও সংস্থাটি এককভাবে মান প্রণয়ন করে না। বিএসটিআই সাচিবিক দায়িত্ব পালন করে। এ ক্ষেত্রে গবেষক, বিজ্ঞানী, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিভিন্ন সরকারি সংস্থা এবং উৎপাদনকারীদের সমন্বয়ে আমাদের ৭৭টি টেকনিক্যাল কমিটি রয়েছে এবং ছয়টি বিভাগীয় কমিটি রয়েছে। এই কমিটিগুলো মান প্রণয়ন করে আর বিএসটিআইয়ের কাজ হলো সে অনুযায়ী মান নিয়ন্ত্রণ করা। বিএসটিআই লাইসেন্স দেওয়ার পর কোনো প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের পণ্য বাজারজাত করছে কিনা কিংবা লাইসেন্স ছাড়া বাজারজাত করছে কিনা- সেটা আমরা মনিটর করি। আমাদের 'সার্ভিলেন্স টিম' রয়েছে। এর মাধ্যমে খোলাবাজার থেকে পণ্য ক্রয় করে আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে থাকি। পরীক্ষায় নিম্নমানের পণ্য পেলে কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।
বিএসটিআই সম্প্রতি তিনটি উল্লেখযোগ্য কাজ করেছে। আমরা হালাল সনদ দেওয়া শুরু করেছি। বিএসটিআইয়ের একটা মান চিহ্ন থাকে। এর পাশাপাশি আমরা একটা কিউআর কোডেরও ব্যবস্থা করেছি। কোনো পণ্যের গায়ে বিএসটিআইয়ের মান চিহ্ন থাকে এবং সেই পণ্য বিএসটিআইয়ের অনুমোদিত কিনা- তা এই কোড স্ক্যান করলেই জানা যাবে। এর ফলে বাজারে নকল পণ্যের প্রবণতা কমে যাবে।
কামরুন নাহার
নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ যেটা প্রণয়ন হয়েছে, সেই আইনের ১৩ নং ধারায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব সম্পর্কে খুব স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। এই ধারায় 'ইমার্জেন্সি রেসপন্স সিস্টেম (ইআরএস)'-এর কথা বলা হয়েছে। এতে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা-সংক্রান্ত ঝুঁকি আসলে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার কথা বলা আছে। এ ক্ষেত্রে একাডেমিক গবেষণার সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, দেখা গেল পরমাণু শক্তি কমিশনের পরীক্ষায় কোনো দুগ্ধজাত পণ্যে রেডিয়েশন পাওয়া গেছে। সঙ্গে সঙ্গে তাদের নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে, যাতে সংস্থাটি জাতীয়ভাবে সাড়া প্রদান করতে পারে। এই বিষয়টি ওই ধারায় বলা আছে। ওই আইনের ১৫ নং ধারায় সুন্দর করে বলা আছে, খাদ্য নিরাপত্তা সমন্বয় ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করতে হবে।
গৌতম মণ্ডল
খাদ্য নিরাপদতা নিয়ে সংস্থাগুলো অনেক কাজ করেছে এবং করছে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হলে আমাদের ইতিবাচক মানসিকতা দরকার। সামনে যেসব কাজ করা হবে, ইতিবাচক মানসিকতা নিয়েই করতে হবে। এতে সবার সহযোগিতা এবং সম্পৃক্ততা প্রয়োজন।
সুপারিশ
ইন্ডাস্ট্রিকে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করে বাজারজাত করতে হবে।
একটি নির্দিষ্ট সংস্থার মাধ্যমে মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
খাদ্যের মান এবং নিরাপদতা সংক্রান্ত গবেষণাগুলোর মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে।
উৎপাদন প্রক্রিয়ায় জড়িতদের নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
খাদ্য উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে এর মান বাড়াতে কাজ করতে হবে।
এনবিআরের সঙ্গে বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয় করতে হবে।
ল্যাবরেটরিগুলোতে দক্ষ জনবল এবং যন্ত্রপাতি সরবরাহ করতে হবে।
রপ্তানি এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারের জন্য একই মানের পণ্য উৎপাদন করতে হবে।
ভোক্তা ও জনসাধারণের মাঝে ব্যাপক গণসচেতনতা তৈরিতে কর্মসূচি নিতে হবে।
প্রধান অতিথি
মো. ইসমাইল হোসেন এনডিসি
সচিব, খাদ্য মন্ত্রণালয়
সভাপতি
মোজাম্মেল হোসেন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, সমকাল
মূল প্রবন্ধ
মুশতাক হাসান মো. ইফতেখার
সাবেক চেয়ারম্যান
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ
আলোচক
এএইচএম সফিকুজ্জামান
মহাপরিচালক
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর
মো. আব্দুল কাইউম সরকার
চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ)
অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিক
সাধারণ সম্পাদক, বিসেইফ ফাউন্ডেশন
উপস্থাপক, মাটি ও মানুষ
নাহারুল ইসলাম মোল্লা
হেড অব রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড কোম্পানি
ইউনিলিভার
সংগীতা আহমেদ
অধ্যাপক, অণুজীববিজ্ঞান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মাইকেল জে. পার
চিফ অব পার্টি
বাংলাদেশ ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন (বিটিএফ) প্রজেক্ট
ড. তোফাজ্জল ইসলাম
অধ্যাপক, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট, বিএসএমআরইউ
ডা. মাহবুবুর রহমান
প্রকল্প সমন্বয়ক, আইসিডিডিআর,বি
ড. ইকবাল রউফ মামুন
অধ্যাপক, রসায়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মো. রেজাউল করিম
সদস্য, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ
প্রণব সাহা
সম্পাদক, ডিবিসি টেলিভিশন
ড. মো. আবদুল মুঈদ
সাবেক মহাপরিচালক
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
ড. মো. জুলফিকার আলী
পরিচালক (গবেষণা ও পরিকল্পনা)
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট
রিয়াজুল হক
উপপরিচালক, বিএসটিআই
কামরুন নাহার
সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার
বাংলাদেশ ট্রেড ফ্যাসিলিয়েশন (বিটিএফ) প্রজেক্ট
সঞ্চালনা
গৌতম মণ্ডল
বার্তা সম্পাদক (অনলাইন), সমকাল
অনুলিখন
জসিম উদ্দিন বাদল
নিজস্ব প্রতিবেদক, সমকাল
মাজহারুল ইসলাম রবিন
নিজস্ব প্রতিবেদক, সমকাল
মন্তব্য করুন