- গোলটেবিল
- দুর্যোগপ্রবণ অঞ্চলে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ জরুরি
দুর্যোগপ্রবণ অঞ্চলে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ জরুরি

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদীভাঙন ও ভূমি লবণাক্ততায় প্রতি বছর দেশের কৃষিজমি হারিয়ে যাচ্ছে; বাস্তুহীন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাবে কাজ হারিয়ে নতুন করে মানুষ দরিদ্র হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুযোগ-সুবিধা যথেষ্ট নয়। দুর্যোগপ্রবণ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জন্য বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করে প্রান্তিক ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। গত ২৯ জানুয়ারি রাজধানীর তেজগাঁওয়ে দৈনিক সমকালের সভাকক্ষে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উত্তরণ ও দৈনিক সমকালের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত 'প্রান্তিক মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির কৌশল ও চ্যালেঞ্জ' বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। এর সার্বিক সহযোগিতায় ছিল ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন।
মো. আশরাফ আলী খান খসরু
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর দেশে সামাজিক নিরাপত্তা থেকে রাজনৈতিক- কোনো নিরাপত্তাই ছিল না। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে দেশের মানুষকে সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আনার কার্যক্রম শুরু করে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এ কর্মসূচির আওতায় এনে তাঁদের সম্মানী ভাতা ও বয়স্ক ভাতা সরকার প্রথম দেওয়া শুরু করে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের দ্বারা মাইকিংয়ের মাধ্যমে বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতাসহ বিভিন্ন ভাতা দেওয়া হচ্ছে। দেশের অর্ধেক উপজেলায় এসব ভাতা শতভাগ দেওয়া হচ্ছে। তৃতীয় লিঙ্গের যাঁরা আছেন, তাঁদেরও ভাতার আওতায় আনা হয়েছে। যদিও তাঁরা অনেকে রাস্তাঘাটে ভিক্ষাবৃত্তি করেন। তাঁদের মধ্যেও অনেক প্রতারক রয়েছে। ভিক্ষাবৃত্তি থেকে নিবৃত্ত করার জন্য জেলা প্রশাসকদের কাছে ফান্ড দেওয়া আছে। তাঁদের ঋণ সাহায্য এবং ঘর না থাকলে ঘর করে দিচ্ছে সরকার। বেদে পরিবারকে বিভিন্ন ভাতাসহ তাঁদের সন্তানদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন এসব ভাতা ডিজিটালি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দেওয়া হয়। সরকার দেশের খাসজমি ভূমিহীনদের মধ্যে বণ্টন করে দিচ্ছে। দেশের মানুষের এখন অর্থনৈতিক সক্ষমতা বেড়েছে। শিল্পকারখানা ও গার্মেন্টে কাজ করে তাঁরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন। মাথাপিছু আয় বেড়েছে। দুর্যোগ প্রতিরোধে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে দুর্যোগকালীন ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা হচ্ছে।
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান
সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে আরও অধিক বরাদ্দের জোরালো প্রয়োজন রয়েছে। পেনশন, অন্যান্য বিষয় ছাড়াও সামাজিক নিরাপত্তায় যে পরিমাণ বাজেট থাকে, তা বাড়ানোর যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। অন্যান্য জায়গায় টাকা যেমন আছে, এখানেও থাকা দরকার। কারণ এটি খুবই জরুরি। কভিডের ধাক্কাটা এখনও অনেকে কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এ ক্ষেত্রে সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে বিষয়টিতে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। 'ইনক্লুশন এরর' অর্থাৎ কোনো একটি জায়গায় যেসব মানুষের ভাতা পাওয়ার কথা নয়, কিন্তু তাঁরা পেয়ে যাচ্ছেন- এই বিষয় নিয়ে গবেষকরা আলোচনা করে থাকেন। কিন্তু ওই জায়গায় 'এক্সক্লুশন এরর' বিষয়টাও গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ কোনো জায়গায় ১০০ জন সাহায্য পাওয়ার কথা থাকলেও মাত্র ২০ জন পাচ্ছেন- এ বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন তুলতে হবে। কেননা ওই অঞ্চলে 'ইনক্লুশন এরর' যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি 'এক্সক্লুশন এরর'ও গুরুত্বপূর্ণ।
সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়কে যদি একটি একক কর্মসূচি হিসেবে চিন্তা করি, তাহলে এখান থেকে সার্বিক ফল পাওয়া সম্ভব নয়। কেননা শুধু সামাজিক নিরাপত্তার ওপর নির্ভর করে একটি দরিদ্র পরিবারের ভাগ্যোন্নয়নে কিছুটা সাহায্য হবে, কিন্তু পুরোপুরি হবে না। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সঙ্গে অন্য যেসব কর্মসূচিকে সংযুক্ত করা যায়, তা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে রাষ্ট্রের সার্বিকভাবে সহানুভূতিশীল দৃষ্টিতে দেখতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে সহায়তা ছাড়াও ওই দরিদ্র জনগোষ্ঠী জীবন ধারণের জন্য যে পেশায় নিয়োজিত, সেখানে সহায়তা করতে হবে। তাঁদের পেশায় কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা ঠিক হবে না। জলবায়ু পরিবর্তন এবং রাষ্ট্রীয় নানা নীতির কারণে তাঁরা নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার শিকার হন। এদিকে সরকারের নজর দিতে হবে। প্রয়োজনে দারিদ্র্যপীড়িত মানুষকে নতুন ধরনের পেশায় সংযুক্ত করা যেতে পারে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের পুরো বিষয়টি একটি বৃহত্তর পরিকল্পনার মধ্যে আনতে না পারলে শুধু সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি দিয়ে কিছু হবে না।
নারায়ণ চন্দ্র চন্দ
দেশের দক্ষিণাঞ্চলে প্রাকৃতিক বিপর্যয় হচ্ছে। এ দুর্যোগকে অবহেলা করা যাবে না। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের পরিকল্পনার অভাব আছে। বিভিন্ন সময়ে দুর্যোগ প্রশমনে সরকারের পক্ষ থেকে এ জনপদ নিয়ে পরিকল্পনা নেওয়া হয়। পরিকল্পনা গ্রহণে দক্ষ ও সংশ্নিষ্ট অনেকেই থাকেন। বিদেশি দুর্যোগপ্রবণ এলাকার দুর্যোগ মোকাবিলার অভিজ্ঞতাও আমরা গ্রহণ করে থাকি। কিন্তু আমাদের দেশে দুর্যোগ পরিকল্পনায় স্থানীয় পর্যায়ে যাঁরা সব সময় দুর্যোগ মোকাবিলা করেন, তাঁদের নেওয়া হয় না। স্থানীয় পর্যায়ের এ জনগোষ্ঠী অশিক্ষিত হলেও বাস্তব অভিজ্ঞতায় দক্ষ। তাঁদের নিয়ে কাজ করলে ক্ষতি কমবে। এ দক্ষ কৃষকরা অল্প জমিতে ব্যাপক উৎপাদনের সক্ষমতা রাখেন। তাঁদের হাতে জমি থাকলে তাঁরা দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবেন।
মুস্তফা লুৎফুল্লাহ
দেশের দক্ষিণাঞ্চল বছরে কয়েকবার ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের শিকার হয়। এতে বারবার ঘরবাড়ি হারিয়ে ফেলে এ অঞ্চলের মানুষ। পাশাপাশি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদনদী ভরাট এ অঞ্চলের মানুষের জীবিকা ও জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। কিন্তু সরকার এসব দুর্যোগপ্রবণ মানুষকে সম্পূর্ণভাবে সহায়তা করেনি। এ ছাড়া এ অঞ্চলে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়নি। উপকূলে দিন দিন লবণাক্ততার হার বেড়ে কৃষিকাজের অনুপযোগী হয়ে উঠছে জমি। তাই দক্ষিণাঞ্চলে ভারী শিল্পকারখানাসহ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলে অনেক মানুষ সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আসবে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের উন্নতির মাধ্যমেও এ অঞ্চলে সামাজিক নিরাপত্তা বাড়ানো যাবে।
শাহীন আনাম
ভূমিহীনদের জন্য পরিকল্পিতভাবে সরকারি খাসজমি বণ্টন করতে হবে। তাঁদের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য বিশেষ প্রকল্পের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে রাষ্ট্রের সার্বিকভাবে সহানুভূতিশীল দৃষ্টিতে দেখতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে সহায়তা ছাড়াও ওই দরিদ্র জনগোষ্ঠী জীবনধারণের জন্য যে পেশায় নিয়োজিত থাকে, সেখানে সহায়তা করতে হবে।
রোকেয়া কবির
দুর্নীতি কিংবা স্বজনপ্রীতির কারণে সত্যিকারের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে যেটুকু বরাদ্দ থাকে, তা পান না। সামাজিক নিরাপত্তা নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে জেন্ডার পরিপ্রেক্ষিতও বিবেচনা করতে হবে। কেননা আমরা যদি ভূমিহীন হিসেবে ধরি, তাহলে নারীদের প্রায় শতভাগ ভূমিহীন। কারণ, তাঁরা উত্তরাধিকার হিসেবে পুরুষের সমান অধিকার পান না। এ কারণে নারীরা বৈষম্যের শিকার হন। অথচ সিপিডির একটি গবেষণায় দেখা যায়, নারীরা বিনামূল্যে যে শ্রম দেন, তা জিডিপির ৪৭ শতাংশ। সুতরাং নারী তাঁর অবদানের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা পাওয়ার যোগ্য। এ বিষয়টি আমাদের চিন্তায় আনতে হবে।
মানুষের জন্য সরকারের যে বরাদ্দ থাকে, তা কেন সবার কাছে পৌঁছায় না? আমাদের আমলাতন্ত্র ব্রিটিশ আমলাতন্ত্রের আদলে করা। অর্থাৎ আমলারা জনগণকে শাসন করবেন। আমরা ছোটবেলায় গ্রামারে পড়েছি- 'ডাক্তার আসার পূর্বেই রোগী মারা গেল'। এখানে কেন রোগী মারা গেল? রোগী কেন ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করল না- এই দর্শন এখনও আমাদের আমলাতন্ত্রে রয়েছে। অথচ এর উল্টো হওয়ার কথা ছিল। রোগী মরার আগে কেন ডাক্তার এলো না- এই প্রশ্নটা আমাদের নেই। সুতরাং, বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে জনগণের কাছে প্রশাসনকে নিতে হবে। এটি করলে মানুষ জনপ্রতিনিধির কাছে যেমন জবাব চাইতে পারবেন, তেমনি আমলাদেরও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।
ফিলিপ গাইন
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির জন্য বাজেট বরাদ্দ ও উপকারভোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়লেও বাজেটের বড় অংশ যাচ্ছে যাঁরা দরিদ্র নন, এমন মানুষের জন্য। ২০২১-২২ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বাজেটের ২৯ দশমিক ৫ শতাংশ ৭ লাখ ৫০ হাজার সরকারি কর্মচারীর অবসর ভাতা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ভাতা, সম্মানী ও চিকিৎসা বাবদ দেওয়া হয়েছে। একই অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বাজেটের ৯ শতাংশ ব্যয় করা হয়েছে সঞ্চয়পত্রের সুদ পরিশোধে এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ভর্তুকি দিতে। এ খাত থেকেই শিক্ষাবৃত্তি ও কৃষিক্ষেত্রে ভর্তুকি দেওয়া হয়। বিশ্বব্যাপী অবসর ভাতা ও সঞ্চয়পত্রের মুনাফার মতো সুবিধা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। এ ছাড়া স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি এবং উপকারভোগী নির্বাচনে রাজনৈতিক বিবেচনার কারণে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাজেটের ৬৫ শতাংশ গিয়েছে দরিদ্র নন- এমন মানুষের হাতে। দেশের দরিদ্র ও হতদরিদ্রদের ভূসম্পদে মালিকানা নগণ্য। গ্রামাঞ্চলে যাঁদের জমি নেই, তাঁরা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে শক্তিহীন। তাঁরা উচ্চশিক্ষা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন; বংশানুক্রমিকভাবে দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র থেকে বের হতে পারছেন না। প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ বেশি অরক্ষিত। তাঁরা সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি থেকে কিছু সুযোগ-সুবিধা পেলেও তা দারিদ্র্য ও প্রান্তিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে যথেষ্ট নয়। এ জনগোষ্ঠীর বৃহৎ অংশ সামাজিক নিরাপত্তা সম্পর্কেও অবহিত নন।
নূরুল কাদের
বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে সামাজিক নিরাপত্তায় সরকারের সঙ্গে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কাজ করে। সামাজিক নিরাপত্তার জন্য প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দেয়। মন্ত্রণালয় বিভিন্ন অধিদপ্তর ও বিভাগের মাধ্যমে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ন্যাশনাল সেন্টার ও ক্যাপাসিটির জায়গায় ঘাটতি আছে। এ বিষয়গুলো চিহ্নিত করার জন্য ন্যাশনাল সোশ্যাল সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজি রিভোল্ড নামে একটি বাজেট সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। চারটি পর্যায়ে এ প্রকল্পের কাজ চলছে।
মাইনুল ইসলাম
তৃণমূলের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে নীতিমালা পরিবর্তন করতে হলে তাঁদের সমস্যাগুলো নিয়ে দাতা সংস্থাগুলোর আরও বেশি বেশি গবেষণা করতে হবে। একই সঙ্গে গবেষণার মাধ্যমে তৃণমূলের বাস্তবতা সরকারের কাছে তুলে ধরতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ক্ষেত্রে একটি ব্যাপক বাজেট দেখানো হয়। কিন্তু সমস্যা হলো- এই বাজেটের মধ্যে সরকারি কর্মচারীদের অবসরসহ অন্য অনেক ভাতাও রয়েছে। এতে এ কর্মসূচির মোট বাজেট অনেকটা ফোলানো-ফাঁপানো থাকে। কিন্তু তৃণমূলে যিনি ভাতা পান, তিনি ৫০০ টাকার বেশি পান না। এ বিষয়ে নজর দিতে হবে।
সাজ্জাদ খান
আমাদের মোট বাজেটের ২৫ শতাংশ সামাজিক নিরাপত্তায় ব্যয় করা উচিত। উন্নত দেশগুলোতে এটি করা হয়। আমাদের পরবর্তী বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তায় অন্তত আড়াই লাখ হাজার কোটি টাকার বাজেট দেওয়া উচিত। এ ছাড়া আমাদের নিরাপত্তা বাজেট থেকে সরকার অবসর ভাতাসহ মুক্তিযোদ্ধা ভাতাও দিয়ে থাকে। তাতে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বাজেট আরও কমে যায়। তাই নিরাপত্তা বাজেট থেকে অন্যান্য ভাতা না দিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে বাজেট প্রণয়ন করতে হবে।
অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ
আমরা যদি ভিজিডি চাল বিতরণ কার্যক্রমটা দেখি, তাহলে অন্য রকম চিত্র দেখব। আমার শ্যামনগর উপজেলায় সরকারি হিসাবমতে ৭৭ হাজার পরিবার বাস করে। এখানে ৮২ হাজার কার্ড দেওয়ার পরও অতিদরিদ্র মানুষ সাহায্য পায় না। এটাই কিন্তু বাস্তবতা। এখানে জনসংখ্যার চেয়ে কার্ডের সংখ্যা বেশি। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যাঁদের কার্ড পাওয়ার কথা, তাঁরা কার্ড পান না। আমরা যদি ওএমএসের দোকানগুলো দেখি, তাহলে দেখা যায়- সরকারি কর্মকর্তারা তাঁদের পিয়নদের পাঠিয়ে দিচ্ছেন চাল-ডাল কেনার জন্য। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ক্ষেত্রে আমি একটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব রাখতে চাই। সেটি হচ্ছে, সব ক্ষেত্রে ডাটাবেজ তৈরি হচ্ছে। আমাদের এসব ভূমিহীন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর একটি ডাটাবেজ তৈরি করতে হবে। কোন এলাকায় কতজন প্রান্তিক লোক রয়েছে, ডাটাবেজ দেখলে তা বের করা যাবে। তখন আর কষ্ট করে দালালের কাছে যেতে হবে না। ওই ডাটাবেজই বলে দেবে- কে সাহায্য পাওয়ার যোগ্য। এর জন্য কারও কাছে ধরনা দিতে হবে না। প্রতি বছর সেই তালিকা হালনাগাদ করতে হবে। এই ডাটাবেজ তৈরি করা গেলে স্থানীয় পর্যায়ে তালিকা প্রণয়নে যে দুর্নীতি হয়, তা কমিয়ে আনা যাবে।
মিজানুর রহমান
সাতক্ষীরা অঞ্চলের যে সমস্যা, তা হলো- ভূমিহীনের সংখ্যা বাড়ছে। সাতক্ষীরা ভূমি আন্দোলন এত গভীর ছিল যে, ওই সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীনদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন, ভূমিহীনরা খাসজমি পাবেন। দুই যুগ পর ওই ঘোষণার বাস্তবায়ন হলেও সংকট কাটেনি। এ কারণে যেসব অঞ্চলে ভূমিহীনরা সরকারি খাসজমি পেয়েছেন, তাঁরা কিছুটা সচ্ছল হলেও, যাঁরা ভূমি পাননি তাঁরা আরও দরিদ্র হয়েছেন। পরিবেশ বিপর্যয়, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি কারণে প্রতি বছর ভূমিহীন এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বাড়ছে। এই জনগোষ্ঠী চলে আসছে শহরে। তাঁরা সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আসছে না। তাদের কোনো স্থায়ী ঠিকানা না থাকায় কোনো ধরনের সরকারি সুবিধা পাচ্ছে না। এই জনগোষ্ঠীকেও সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আনতে হবে।
রেজাউল করিম
পরিসংখ্যানে দরিদ্র মানুষের সামাজিক নিরাপত্তার বরাদ্দ বিশাল- ১ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু যাঁদের জন্য এই বরাদ্দ, তাঁরা যখন সহায়তা পাচ্ছেন, সেটি খুবই নগণ্য। সে ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা করে তাঁদের সহায়তা দেওয়া যেতে পারে। তবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রকৃতি যেহেতু অন্য রকম, ফসলের ধরনও অন্য রকম; সে ক্ষেত্রে এ অঞ্চলের জন্য লাগসই কৃষি প্রযুক্তিকে মানুষের মধ্যে পরিচিত করানো যেতে পারে। দরিদ্র মানুষকে টাকা না দিয়ে যদি করে খাওয়ার মতো একটু জমি দেওয়া যায়, তাহলে তাঁকে পয়সাও দিতে হবে না। আমাদের সংবিধান পৃথিবীর অন্যতম সেরা সংবিধান। বঙ্গবন্ধু খুব সুন্দরভাবে সংবিধান প্রণয়ন করেছিলেন। সংবিধানে এসব দরিদ্র মানুষের সহায়তার জন্য বিধান রয়েছে। কিন্তু সংবিধান বাস্তবায়নে নিয়োজিত কর্তৃপক্ষের দুর্বলতার কারণে সেই বিধান সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। আমাদের দেশে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি খুবই দরিদ্রবান্ধব। কিন্তু তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে কৌশল প্রণয়ন করা হয়, তাতে দুর্বলতা থাকে। সঠিক কৌশল নির্ধারণে সরকারকেই উদ্যোগী হতে হবে এবং কঠোরভাবে নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে।
গৌরাঙ্গ নন্দী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষকে কেন্দ্র করে ভূমিহীনদের ঠিকানা দেওয়ার যে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। তবে এ কর্মসূচি আরও সফল হতো যদি যে পরিমাণ জমিতে এই ঘর তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে, তা আরেকটু বাড়িয়ে দেওয়া হতো। আমরা সবাই জানি, খাসজমিতে এ ঘর তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জমিগুলো নদীর পাশে। এতে একাধিক সমস্যা তৈরির আশঙ্কা রয়েছে। তা হচ্ছে, নদীভাঙনে বসতি হারিয়ে যাওয়া, আবার নদী খনন কর্মসূচি নিলে বসতি উচ্ছেদ হওয়া এবং জমির পরিমাণ কম হওয়ায় ওই জমিতে কোনো আয়বর্ধক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের সুযোগ না থাকা। আমরা যদি জমির পরিমাণ বাড়িয়ে পরিবার পিছু ১০ শতক করতে পারতাম, তাহলে ওই জমিকে ঘিরেই ভূমিহীন পরিবার ভূমিহীনতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারত। একদিকে তারা ঠিকানা পেত, অন্যদিকে দারিদ্র্যসীমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারত। দরিদ্র মানুষের হাতে ভূমি হস্তান্তরের এই প্রক্রিয়ায় আমরা দারিদ্র্য বিমোচন ঘটাতে পারি। আবার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ব্যারাকভিত্তিক সংস্কৃতি থেকে মুক্ত হয়ে বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতি- একটু জমির ওপর নিজের বাড়ি, গাছপালা, সবজি ফলানো, গরু-ছাগল পালন; তা লালন ও বিকাশ ঘটাতে পারতাম।
সেলিম আক্তার স্বপন
আমাদের এলাকার মানুষ বিভিন্ন কারণে কৃষিজীবী। শিক্ষার দিক দিয়েও আমরা পিছিয়ে। সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় যেসব খাসজমি আছে, তার একটা অংশ এসব লোককে কৃষির জন্য দেওয়া যেতে পারে। আমি দীর্ঘদিন ভূমি আন্দোলন নিয়ে কাজ করেছি। দেখা গেছে, যেসব পরিবার এক একর খাসজমি পেয়েছে, তারা স্থায়ীভাবে দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছে। কোনো ব্যক্তির খাসজমি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে আবেদন থেকে শুরু করে দলিল হাতে পাওয়া পর্যন্ত অনেক লম্বা প্রক্রিয়া। এখানে দুর্নীতিরও একটা সমস্যা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সরকারকে আলাদাভাবে প্রকল্প নিতে হবে। প্রয়োজনে স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থাগুলোর সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।
জাহিন শামস সাক্ষর
আমাদের দেশের দারিদ্র্য কাঠামোগত। এই প্রক্রিয়ায় প্রান্তিক মানুষকে হয়তো ৫০০ বা এক হাজার টাকার ভাতা সহযোগিতার মাধ্যমে তাঁদের পারিবারিক আয় ৪ হাজার ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকায় উন্নীত করা যায়। এতে দারিদ্র্যের হার কিছুটা কম দেখানো গেলেও প্রকৃতপক্ষে গরিব মানুষের দুর্ভোগ কমাতে এটি স্থায়ী সমাধান নয়। বিভিন্ন দুর্যোগ বা অর্থনৈতিক মন্দায় তাঁরা আবার দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যান। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থায়ী সমাধান হিসেবে কাঠামোগত পরিবর্তন প্রয়োজন। যেমন খাসজমি ও জলমহলের সঠিক বন্দোবস্ত এবং দুর্যোগপ্রবণ অঞ্চলের জন্য বিশেষ বরাদ্দ ও প্রকল্প গ্রহণ করা যেতে পারে।
শহিদুল ইসলাম
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদনদী ও প্রকৃতির বৈশিষ্ট্য অন্যান্য অঞ্চল থেকে ভিন্ন। অধিকাংশ জায়গায় জোয়ার-ভাটার প্লাবনভূমি ছিল। এই অঞ্চলের নদীগুলোর সঙ্গে একসময় হিমালয়ের সংযোগ ছিল, এখন নেই। উপকূলীয় বাঁধের কারণে খুলনা, যশোর ও সাতক্ষীরা অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা সাত থেকে আট মাস পানিবন্দি থাকে। কখনও কখনও ১০ থেকে ১৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আগে এ অঞ্চলের প্রধান ফসল ছিল আমন ধান। বর্তমানে জলাবদ্ধতার কারণে আমন ফসল উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ যেমন- জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় ও জলাবদ্ধতার জন্য মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে খুলনা ও সাতক্ষীরা শহরের বস্তিতে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে। বাস্তুচ্যুত অসহায় এসব মানুষের সিটি করপোরেশন/পৌরসভায় ভোটাধিকার না থাকায় বিভিন্ন নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত। এসব প্রান্তিক মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। একইভাবে এ অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষের পেশা কৃষি কিন্তু তাদের আবাদযোগ্য ভূমি নেই। অথচ সাতক্ষীরা জেলায় প্রায় ৬৯ হাজার একর এবং খুলনা জেলায় প্রায় ৫৩ হাজার একর বিভিন্ন শ্রেণিভুক্ত খাসজমি ও জলমহাল রয়েছে। এসব সরকারি সম্পত্তিতে ভূমিহীন কৃষকদের অভিগম্যতা নিশ্চিত হলে দেশে দারিদ্র্যের হার অনেকাংশে হ্রাস পবে। তা ছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় অন্যান্য ভাতার (যেমন বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা) মতো আলাদাভাবে 'ভূমিহীন কৃষক ভাতা' নামে একটি বিশেষ ভাতা চালুর বিষয়টি বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে বিনীত আবেদন জানাচ্ছি।
আবু সাঈদ খান
দেশের সব মানুষকে সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আনতে বিভিন্ন এনজিও এবং সরকারি পর্যায়ে নানামুখী কার্যক্রম আছে। কিন্তু করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের পর এ কার্যক্রম ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন কৌশল ও পরিকল্পনার মাধ্যমে এ সংকট থেকে উত্তরণ ঘটাতে হবে। অবসর ভাতা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ও সম্মানীর বিষয় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বিষয় নয়। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ও অবসর ভাতা বাদ দিয়ে দরিদ্র প্রান্তিক মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে সামাজিক নিরাপত্তায় বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। পেনশন, অন্যান্য বিষয় ছাড়াও সামাজিক নিরাপত্তায় যে পরিমাণ বাজেট থাকে, তা বাড়াতে হবে।
প্রান্তিক মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি তাঁদের পেশার সুরক্ষা দিতে হবে। প্রয়োজনে তাঁদের নতুন ধরনের পেশায় সংযুক্ত করা যেতে পারে।
তৃণমূলের মানুষের সমস্যা নিয়ে দাতা সংস্থাগুলোর গবেষণা পরিচালনা করতে হবে। গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ফলাফল সরকারের কাছে তুলে ধরতে হবে যেন পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে অঞ্চলভেদে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।
মোট বাজেটের ২৫ শতাংশ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ দিতে হবে।
ভূমিহীন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর একটি সঠিক ডাটাবেজ তৈরি করতে হবে।
খাসজমিতে দরিদ্রদের আবাস গড়ে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের আয়েরও ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
উদ্বাস্তু জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আনতে হবে।
ভূমিহীনদের মাঝে খাসজমি বরাদ্দ চলমান রাখতে হবে।
প্রধান অতিথি
মো. আশরাফ আলী খান খসরু
প্রতিমন্ত্রী, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়
মূল প্রবন্ধ
ফিলিপ গাইন
পরিচালক, সেড
আলোচকবৃন্দ
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান
পরিচালক
পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি)
নারায়ণ চন্দ্র চন্দ
সংসদ সদস্য, খুলনা-৫
মুস্তফা লুৎফুল্লাহ
সংসদ সদস্য, সাতক্ষীরা-১
শাহীন আনাম
নির্বাহী পরিচালক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন
রোকেয়া কবির
নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ
নূরুল কাদের
প্রোগ্রাম ম্যানেজার-গভর্ন্যান্স, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন
মাইনুল ইসলাম
হেড অব প্রোগ্রামস
নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল (এনআরসি-বাংলাদেশ)
সাজ্জাদ খান
সিনিয়র প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন
অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ
সভাপতি, কেন্দ্রীয় ভূমি কমিটি
সম্পাদক, দৈনিক পত্রদূত, সাতক্ষীরা
গৌরাঙ্গ নন্দী
সাধারণ সম্পাদক, খুলনা জেলা ভূমি কমিটি
ব্যুরোপ্রধান, দৈনিক কালের কণ্ঠ, খুলনা
মিজানুর রহমান
সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
দৈনিক জনকণ্ঠ, সাতক্ষীরা
রেজাউল করিম
অধ্যাপক, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কলেজ
তালা, সাতক্ষীরা
সেলিম আক্তার স্বপন
সভাপতি, ডুমুরিয়া উপজেলা ভূমি কমিটি, খুলনা
জাহিন শামস সাক্ষর
প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর, উত্তরণ
শুভেচ্ছা বক্তব্য
শহিদুল ইসলাম
পরিচালক, উত্তরণ
সভাপতি ও সঞ্চালক
আবু সাঈদ খান
উপদেষ্টা সম্পাদক, দৈনিক সমকাল
অনুলিখন
লতিফুল ইসলাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, সমকাল
মাজহারুল ইসলাম রবিন
নিজস্ব প্রতিবেদক, সমকাল
উত্তরণের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন
ফাতিমা হালিমা আহমেদ, সমন্বয়কারী
মো. মনিরুজ্জামান জমাদ্দার, সমন্বয়কারী
শম্ভু চরণ চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ সহকারী সমন্বয়কারী
মো. মুস্তাফিজুর রহমান, মনিটরিং অফিসার, উত্তরণ
মন্তব্য করুন