বাল্যবিয়ে রোধে আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা জরুরি

ছবি :: মামুনুর রশিদ
সমকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২৪ | ০১:৫৯
বাল্যবিয়ে রোধে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখনও মেলেনি কাঙ্ক্ষিত ফল। শিশুর জন্য যে পারিবারিক, সামাজিক এবং শিক্ষার পরিবেশ দরকার, তা এখনও পরিপূর্ণভাবে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া বাংলাদেশ জেন্ডার সমতায়নেও অনেক পিছিয়ে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা না থাকা এবং ধর্মীয় অপব্যাখ্যার কারণে সমাজে বাল্যবিয়ে এখনও বিদ্যমান। বাল্যবিয়ের মতো সামাজিক ব্যাধি নির্মূল করতে প্রয়োজন মেয়েদের আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা। ২৪ নভেম্বর রাজধানীর ওয়ার্ল্ড ভিশনের জাতীয় কার্যালয়ে ‘বাল্যবিয়ে এবং শিশুর প্রতি সহিংসতা: প্রেক্ষিত ও করণীয়’ শীর্ষক আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় অতিথিরা এসব কথা বলেন। ‘সমকাল’ ও ‘ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ’ এবং ‘স্ট্রেনদেনিং সোশ্যাল অ্যান্ড বিহেভিয়ার চেঞ্জ প্রকল্প (এসএসবিসি)’ যৌথভাবে এর আয়োজন করে। প্রকল্পটি ‘ইউনিসেফ’ এবং ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের’ আর্থিক সহায়তায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলায় চলমান রয়েছে।
আবু সাঈদ খান
শিশুর জন্য যে পারিবারিক, সামাজিক এবং শিক্ষার পরিবেশ দরকার, আমরা তা দিতে পারছি না। আমরা উচ্চশিক্ষা নিয়ে যতটা সোচ্চার, শিশুশিক্ষা নিয়ে অতটা সোচ্চার নই। অনেক শিশু ঘরে, বাইরে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বঞ্চনা এবং নিগ্রহের শিকার হয়। এখনও শিক্ষার্থীদের প্রহার করা হয়। শিশুকে এই নিগ্রহ-বঞ্চনা থেকে রক্ষা করাই বড় চ্যালেঞ্জ। যেসব অঞ্চল আর্থিকভাবে পিছিয়ে, সেই অঞ্চলগুলোয় বাল্যবিয়ে বেশি। অর্থাৎ এ সমস্যার জন্য অর্থনৈতিক কারণটা যে প্রধান, তা অস্বীকার করা যাবে না। কাজেই এসব পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল করা প্রয়োজন। এর বাইরেও বাল্যবিয়ের পেছনে ধর্মীয় গোঁড়ামি বড় কারণ হিসেবে কাজ করে। এ ক্ষেত্রে দেশের আলেম সমাজ বড় একটা ভূমিকা রাখতে পারে। অনেক পরিবারে ছেলের বাল্যবিয়ে না হলেও, মেয়ের বাল্যবিয়ে হয়। ছেলেরা এর শিকার হয় না, তা নয়। কিন্তু মেয়েরাই এর শিকার বেশি। এ ক্ষেত্রে নারীর মধ্যে মর্যাদাবোধ জাগিয়ে তুলতে হবে। এর জন্য একটি সাংস্কৃতিক জাগরণ দরকার। একই সঙ্গে মানবিক মূল্যবোধেরও জাগরণ প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে আইনের বাস্তবায়ন জরুরি। এ জন্য সরকার থেকে শুরু করে এনজিও প্রতিষ্ঠানসহ সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
সুরেশ বার্টলেট
শিশুর সুরক্ষা নিশ্চিত করেত ওয়ার্ল্ড ভিশন বদ্ধপরিকর। আমরা বাল্যবিয়ের পাশাপাশি শিশুশ্রম নিয়ে কাজ করছি। কেননা বাল্যবিয়ের মতো শিশুশ্রমও শিশুর প্রতি এক ধরনের সহিংসতা। ওয়ার্ল্ড ভিশনের লক্ষ্য, সারাদেশে শিশুশ্রম বন্ধ করা। সব শিশু যেন শিক্ষার আলো পায় এবং নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে– এ নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। আমি যখন এ দেশের শিশু ও যুবসমাজের সঙ্গে কথা বলি এবং তাদের স্বপ্নের কথা জানতে পারি, আমি অভিভূত হই। আমাদের দায়িত্ব তাদের স্বপ্ন পূরণে কাজ করা। আমাদের এটিই লক্ষ্য। গত কয়েক বছরে সারাদেশে ৫ হাজারের বেশি গ্রামকে আমরা বাল্যবিয়েমুক্ত ঘোষণা করেছি। সামনে এ সংখ্যা আরও বাড়বে। একইসঙ্গে এসব এলাকাকে আমরা শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণা করব।
ড. তানিয়া হক
বাল্যবিয়ে নিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নিজস্ব আঙ্গিকে কাজ করছে। একই সঙ্গে কিছু মানুষ সমান্তরালভাবে বাল্যবিয়ে সম্পন্ন করতে কাজ করছে। তারা নিজের এলাকায় বাল্যবিয়ে দেওয়া না গেলে অন্য এলাকায় গিয়ে বিয়ে দিচ্ছে। পরিচিত কাজির কাছে না গিয়ে অপরিচিত কাজির কাছে যাচ্ছে। তবুও তাদের বাল্যবিয়ে চাই-ই চাই। অর্থাৎ নারীকে মানুষ হিসেবে এখনও কোনো ধরনের সম্মান তৈরি করতে পারিনি আমরা। বাল্যবিয়ে সাংস্কৃতিক ও সামাজিকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে সমানতালে এটি করা হচ্ছে। এটি নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
২০২২ সালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, ৭৫ শতাংশ তরুণসমাজ মনে করে, স্বামী আয় করলে স্ত্রীর আয় করার দরকার নেই। ৬৫ শতাংশ যুবসমাজ মনে করে, নারীর ধর্ষণের পেছনে পোশাক দায়ী। বিরাজমান এ অবস্থায় আমরা এখন সমাধান খুঁজছি। এ অবস্থায় শুধু প্রকল্প হবে। প্রকল্প শেষে আবারও বাল্যবিয়ে আগের মতোই শুরু হবে। এ দেশে সমন্বিত পারিবারিক নীতিমালা এখনও নেই। এটি করা প্রয়োজন। সন্তান জন্ম দিলে মা-বাবা হওয়া যায়। যোগ্য অভিভাবক হওয়া যায় না। এই যোগ্য অভিভাবকের প্রয়োজন। একইসঙ্গে যোগ্য রাষ্ট্রনায়ক প্রয়োজন, যোগ্য শিক্ষক প্রয়োজন।
তাছলিমা আক্তার
আম্পান আঘাত হানার পর আমি সাতক্ষীরার আশাশুনিতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি, একটা ছোট ঘরে ১৩ বছরের মেয়ের বিয়ের কথা চলছে। আমি তার মায়ের সঙ্গে কথা বলে বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে বোঝাই। এক পর্যায়ে মেয়েটির মা আমাকে বলেন, ‘আপনি হয়তো আমাকে এ বিষয়ে অনেক কিছু বোঝাতে পারবেন। কিন্তু আমার মাত্র একটা ঘর, সেই ঘরে এক ছেলে, তার বউ আর দুজন মেয়ে নিয়ে আমি থাকি। এই একটা ঘরে এতগুলো মানুষ কীভাবে থাকব?’ এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে ছিল না। সেই মেয়েটির বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে গেলে এ ধরনের সমস্যার সমাধান করতে হবে। এখানে শুধু সচেতনতা দিয়ে কাজ হবে না। এখানে প্রণোদনারও একটি বিষয় আছে। একেক জায়গার সমস্যা একেক রকম। বাল্যবিয়ে নিয়ে জাতীয় কর্মপরিকল্পনার আওতায় অনেক কমিটি আছে। আমি এসব কমিটির সঙ্গে কাজ করেছি। স্থানীয় কমিউনিটির সঙ্গে এসব কমিটির কোনো সমন্বয় নেই। স্থানীয় কমিউনিটির সঙ্গে সমন্বয় না থাকলে কমিটিগুলো তথ্য জানবে কীভাবে? আমরা অনেক বাল্যবিয়ে রোধ করেছি ঠিকই। কিন্তু বাল্যবিয়ের জন্য কোথাও শাস্তি দেওয়ার কোনো নজির নেই। এ ছাড়া যে মেয়েটি বাল্যবিয়ের শিকার হলো, তাকে নিয়ে কি আমরা ভেবেছি কখনও? তার জন্যও কিছু করতে হবে। চরাঞ্চলগুলোয় প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও উচ্চ বিদ্যালয় নেই। প্রাথমিক শেষ করে তারা কোথায় যাবে? তাদের কোনো কিছু করার থাকে না। ঘরে বসে থাকে। এক পর্যায়ে তার বাল্যবিয়ে হয়। এ বিষয়টা আমাদের মাথায় রেখে অঞ্চলভেদে আলাদা আলাদা প্রকল্প পরিকল্পনা করা দরকার।
সেতারায়ে জান্নাত
বাল্যবিয়ে একটা সামাজিক সমস্যা। এ সমস্যা সমাধানে আমাদের সবারই ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে অভিভাবক, শিশু-কিশোর, মা-বাবা, শিক্ষক, সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তি, ধর্মীয় নেতা– সবাইকে সম্পৃক্ত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তি পর্যায়ের প্রয়োজন ও সুযোগ, সামাজিক প্রথা, মূল্যবোধ ও অবস্থা এবং সেই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অধিকার ও সেবাগুলোর সুযোগ-সুবিধা বিশ্লেষণ করে বাল্যবিয়ে নিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন। তাহলে আমরা এ সমস্যার প্রকৃত কারণ বের করতে পারব। মূল কারণ চিহ্নিত করতে পারলে সমস্যা সমাধান সহজ হবে। তবে কোনো একটি উপায়ে হয়তো সারাদেশের বাল্যবিয়ের সমস্যা সমাধান করতে পারবে না। এর জন্য প্রয়োজন সমস্যা বুঝে সমাধান খুঁজে বের করা। হতে পারে, প্রতিটি সমস্যার সমাধান হবে স্বতন্ত্র। এ উন্মুক্ত মানসিকতা নিয়েই আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে বাল্যবিয়ের মতো সামাজিক সমস্যাকে সমাধান করতে হবে।
স্টিফানি সেন্ট-লরেন্ট ব্রাসার্ড
আমরা আমাদের বিভিন্ন প্রকল্পে কমিউনিটির বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে সম্পৃক্ত করেছি। তাদের মধ্যে রয়েছেন– ধর্মীয় নেতা, সমাজকর্মী, শিক্ষক, যুবসমাজের প্রতিনিধিরা। বিশেষ করে পুরুষরা সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। বাল্যবিয়ে রোধে সমাজের সব পক্ষকে ভূমিকা রাখতে হবে। বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে নেটওয়ার্ক তৈরি করে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করা জরুরি। বাল্যবিয়ে রোধে আমরা অনেক এগিয়েছি এটি সত্য। তবে এখনও অনেক কাজ বাকি। এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
মনজুর আহমেদ
বাল্যবিয়ে এবং শিশুদের ওপর সহিংসতার মতো ক্ষতিকর প্রথা রোধে সামাজিক আন্দোলন, বিভিন্ন সেক্টরাল কমিটিগুলোর সঙ্গে স্থানীয়দের যথাযথ সমন্বয়, আইনের বাস্তবায়ন ইত্যাদি প্রয়োজন। তবে ১০ বছর আগে বাল্যবিয়ের হার ছিল ৬৫ শতাংশ। এখন তা ৫০ শতাংশে এসে নেমেছে। অর্থাৎ আশাব্যঞ্জক উন্নতি হয়েছে। ইউনিসেফ থেকে গত সাত বছর ধরে দেশের উত্তরাঞ্চলে শিশুর জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি ব্যবস্থাপনায় আমি কাজ করছি। আমি প্রত্যন্ত অঞ্চলে দেখেছি, অনেক তরুণ নিজ উদ্যোগে বাল্যবিয়ে রোধে জনগণকে সম্পৃক্ত করার কাজ করছে। এ বিষয়গুলো প্রচার হওয়া দরকার। আমাদের উচিত ভালো কাজগুলোকে সামাজিক ও জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃতি দেওয়া; যাতে করে এ রকম ইতিবাচক কাজ করতে সবাই উৎসাহ পায়। সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর মাল্টিসেক্টরাল কর্মসূচিগুলোর মধ্যে আরও সমন্বয় প্রয়োজন এবং সেইসঙ্গে প্রয়োজন জনগণের অংশগ্রহণের আরও সুযোগ সৃষ্টি করা। একই সঙ্গে শিশুর ওপর বৈষম্যমূলক প্রথা পরিবর্তনে গণমাধ্যমের সৃজনশীল প্রভাবকে কাজে লাগাতে হবে।
ডা. ইশরাত নায়ার
বাল্যবিয়ের কারণে মেয়েশিশুরা শুধু তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়, তা নয়। এর স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিও রয়েছে। একই সঙ্গে তাদের অর্থনৈতিক কাজে যুক্ত হওয়ার সুযোগও কমে যায়। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে আমাদের আইন আছে। কিন্ত এর কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে? আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। সামাজিক আন্দোলন ছাড়া বাল্যবিয়ে রোধ করা সম্ভব নয়। এ জন্য স্থানীয় মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। মা-বাবা এবং সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগটা বাড়াতে হবে। তাদের সঙ্গে নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। মেয়েরা যেন নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরাই নিতে পারে– এভাবে তাদের গড়ে তুলতে কাজ করতে হবে। একইসঙ্গে তাদের বিভিন্ন কাজে দক্ষ করে তুলতে হবে। তাদের বোঝাতে হবে, বিয়েই জীবনের প্রধান লক্ষ্য নয়। এর বাইরেও জীবনে যে একটা লক্ষ্য আছে, এই বিষয়টা তাদের বোঝাতে হবে। এ বিষয়ে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
উম্মে শারমিন কবীর
আমাদের ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বাল্যবিয়েসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অনলাইনে ব্লগ, কনটেন্টসহ বিভিন্নভাবে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করা হচ্ছে। জেন্ডার সমতায়নে আমরা এখনও অনেক পিছিয়ে আছি। আমাদের অনেক সমস্যা রয়েছে। বাল্যবিয়ে এর মধ্যে অন্যতম। প্রতিটি সমস্যার একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক থাকে। কিশোরী বয়সের মেয়েদের সঠিক শিক্ষাটা নিশ্চিত করতে হবে; যাতে তারা নিজেদের সম্পর্কে জানতে পারে এবং নিজেদের খেয়াল রাখতে পারে। আমাদের বাল্যবিয়ের মূল কারণ খুঁজে বের করে তার মূলোৎপাটন করা প্রয়োজন। সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণ ছাড়াও বাল্যবিয়ের পেছনে অনেক কারণ থাকে। সমাজে মেয়েদের নিরাপত্তা না থাকলে মা-বাবা তাদের মেয়েকে দ্রুত বিয়ে দিয়ে দেন। মেয়েদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারলে বাল্যবিয়ে অনেক কমে যাবে।
চন্দন জেড গমেজ
এ প্রকল্পের যে ইতিবাচক শিক্ষাগুলো আমরা পেয়েছি সেটি কক্সবাজার জেলাসহ ওয়ার্ল্ড ভিশনের অন্যান্য কর্মএলাকাতেও বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি; যাতে শিশু সুরক্ষায় দৃশ্যমান পরিবর্তন নিয়ে আসা যায়। আমাদের উন্নয়ন কর্মসূচিতে পাঁচটি জিরোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। সেটি হলো জিরো চাইল্ড ম্যারেজ, জিরো চাইল্ড লেবার, জিরো হাঙ্গার, জিরো ম্যালনিউট্রেশন এবং জিরো আউট অব স্কুল। বাল্যবিয়ে, শিশু শ্রম, ক্ষুধা, অপুষ্টি এবং বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়া দূর করতে কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করা খুব প্রয়োজন। আমরা সেটি করছি। এর পাশাপাশি স্থানীয় সরকার বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন স্টিয়ারিং কমিটি সক্রিয় এবং তাদের দায়বদ্ধ করতে হবে। আমরা সে বিষয়টি নিয়েও মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছি। যেহেতু তরুণ এবং যুবকরাই আগামীর বাংলাদেশ গঠনের চেঞ্জমেকার, তাই ওয়ার্ল্ড ভিশন তার উন্নয়ন কর্মসূচিতে যুবকদের বিশেষভাবে যুক্ত করা এবং তাদের মাধ্যমেই পরিবর্তন আনতে সহায়তা করছে। বর্তমান সরকার নতুন বাংলাদেশ গঠনে বিভিন্ন খাতে সংস্কার আনতে অঙ্গীকারবদ্ধ। শিশুর সুরক্ষা ও উন্নয়নেও বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় পর্যায়েও একটি সংস্কার কমিটি গঠন এবং তা কার্যকরের দাবি জানাচ্ছি।
মোসা. নাসরিন আখতার
বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিখ্যাত গম্ভীরা গানের মাধ্যমে আমরা মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছি। কেননা গম্ভীরা গানের আসরে বহু মানুষের উপস্থিতি থাকে। ফলে তাদের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়া সহজ হয়। বাল্যবিয়ে রোধে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে শিক্ষা। শিক্ষা মানুষকে তার অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে। আমাদের শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে হবে। তারা সচেতন হলে তাদের নিজেরাই নিজেদের বাল্যবিয়ে রোধ করতে পারবে। বাল্যবিয়ে কমলেও এখনও বাল্যবিয়ে উল্লেখযোগ্য হারে হচ্ছে। শিশু সুরক্ষায় স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিরা আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখলে পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হবে।
রাবেয়া বেবী
উপকূলীয় এলাকা, বিশেষ করে সাতক্ষীরা এলাকায় বাল্যবিয়ে অনেক বেশি হয়। সে এলাকায় বছরের একটা সময় পরিবারের পুরুষরা কাজের কারণে বাইরে থাকেন। তখন ঘরে ১০ বছরের একটা মেয়ে থাকলে পরিবার তাকে একটা বোঝা মনে করে। এ কারণে তাদের বিয়ে দিয়ে বিদায় করে দেয়। এর পেছনে পারিবারিক ও অর্থনৈতিক কারণ কাজ করে। এ ছাড়া ধর্মীয় কারণেও অনেকে কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেয়। অনেক জায়গায় কাজিরা দুটো খাতা ব্যবহার করেন। ১৮ বছরের ওপরে মেয়েদের জন্য একটি খাতা, আর ১৮ বছরের নিচের মেয়েদের জন্য আরেকটি খাতা ব্যবহার করেন। এ ধরনের অনেক ঘটনা সামনে এসেছে। আবার দেখা যায়, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটিতে থাকা জনপ্রতিনিধিরা নানা কারণে বাল্যবিয়ের ঘটনা অনেক সময় চেপে রাখেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ইন্টারনেটে যুক্ত হয়ে মেয়েরা বিভিন্ন কনটেন্ট দেখে কিংবা কারও সঙ্গে এক ধরনের সম্পর্কে পড়ে ১৮ বছরের আগেই বিয়ে করতে চাইছে। এ বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। একই সঙ্গে বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন জোরদার করতে হবে।
মোছা. মাহমুদা খাতুন
আমার বিদ্যালয়ে অনেক দরিদ্র পরিবার আছে, যারা টাকার অভাবে তাদের সন্তানদের পড়াশোনা করাতে পারে না। এ ধরনের দরিদ্র শিক্ষার্থীদের আমরা বিদ্যালয়ের দরিদ্র তহবিল থেকে সাহায্য করে থাকি। এসব শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় একটা তহবিল গঠন করা প্রয়োজন। এটি করা গেলে শিশুর ঝরে পড়া এবং বাল্যবিয়ে অনেকটা কমে আসবে।
শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
বাল্যবিয়ে রোধে আমাদের সামাজিক পরিবর্তন প্রয়োজন। বিশেষ করে অভিভাবকদের সচেতন করতে হবে। একটি ট্রেনিংয়ে গিয়ে আমি জানতে পারি, পাঁচ বছর ধরে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কাজ করা একটি মেয়েরও বাল্যবিয়ে হয়। কারণ মা-বাবা সচেতন নন। দেখা যায়, এলাকার সাধারণ একজন মানুষের মেয়ের বাল্যবিয়ে হলেও, প্রভাবশালী কারও মেয়ের ওইভাবে বাল্যবিয়ে হয় না। এ কারণে সামাজিক নিরাপত্তা জরুরি। আমার চোখে বাল্যবিয়ের কারণ দুটি। একটা হলো অভাব, আরেকটি হলো নিরাপত্তাহীনতা। সুতরাং এ দুটি বিষয় নিয়ে কাজ করতে হবে।
মো. আ. কাইয়ুম সিরাজী
জুমার নামাজে সব পেশার মানুষের উপস্থিতি থাকে। সেখানে আমি বাল্যবিয়ের কুফল নিয়ে কথা বলি। সমস্যা হলো, বাল্যবিয়ে সমাজের সঙ্গে এমনভাবে মিশে গেছে, এটি সারাতে সময় লাগবে। ওয়ার্ল্ড ভিশনের এ প্রকল্পের কারণে বাল্যবিয়ে অনেকটা কমেছে। তবে এটি নির্মূল করতে আরও সময় দিতে হবে। এই প্রকল্প যেন সামনে আরও এগিয়ে যায়, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। বাল্যবিয়ের মতো ব্যাধি সমাজ থেকে একেবারে নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত কাজ করতে হবে। এখন বাল্যবিয়ে দিনের বদলে রাতে দেওয়া হয়। এমনও হয় যে, গভীর রাতে বিয়ে দেওয়া হয়। সমাজে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। এ ধরনের বিয়ে দিনের বদলে এখন রাতে গোপনে দেওয়া হয়। অর্থাৎ মানুষের মধ্যে ভয় এসেছে। কিন্তু বাল্যবিয়ে শেষ হয়ে যায়নি। এ জন্য আরও কাজ করতে হবে। শুধু শারীরিক নির্যাতনই কেবল নির্যাতন নয়। শিশুর তার শিক্ষা থেকে দূরে রাখাও নির্যাতন। কিন্তু তাদের লেখাপড়া না শেখালে যতদিন সে বেঁচে থাকবে, ততদিন একটা মানসিক পীড়ার মধ্যে থাকবে। এটি মানসিক নির্যাতন। এ নিয়ে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে।
সামিউল ইসলাম অপূর্ব
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাল্যবিয়ে অনেক বেশি। এ কারণে আমরা প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় এ বিষয়ে সচেতনতা কার্যক্রম চালাচ্ছি। এ ছাড়া আমরা উঠান বৈঠকের আয়োজন করি। এতে সরকারি অনেক কর্মকর্তা অংশ নিয়ে সবাইকে বাল্যবিয়ের বিষয়ে সচেতন করেন। আমরা আমাদের বয়সী ছেলেমেয়েদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করি, যেন তাদের নিয়ে বাল্যবিয়ের কথা উঠলে তারা আমাদের জানাতে পারে। আমরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অনেক বাল্যবিয়ে রোধ করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা আমাদের এলাকার কাজিদের এ বিষয়ে সচেতন করেছি। কিন্তু পরিবারগুলো আমাদের এলাকার কাজিদের বাদ দিয়ে অন্য এলাকায় গিয়ে বাল্যবিয়ে দেয়। এ কারণে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার কাজ করছি; যাতে ভিকটিমরা আমাদের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখি। তাদের সঙ্গে রাখলে বাল্যবিয়ে রোধ করা এবং মানুষকে সচেতন করা সহজ হয়।
জেসমিন হোসেন
ইউনিসেফ শিশুর সব ধরনের সহিংসতা থেকে রক্ষায় কাজ করে। বাল্যবিয়ের মাধ্যমে মেয়েরা অন্তত আট ধরনের সহিংসতার শিকার হয়। বাল্যবিয়ে শিশুর বাল্যকালটাই নষ্ট করে দেয়। এটি বন্ধে যেমন সামাজিক আন্দোলন দরকার, একই সঙ্গে আইনের বাস্তবায়ন দরকার। এ ছাড়া মানুষের আচরণগত পরিবর্তনও দরকার। আবার কথা এসেছে, অনেক কিশোরী বয়স হওয়ার আগেই বিয়ের প্রতি আগ্রহী হয়। সে ক্ষেত্রে মা-বাবাকেই বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে সন্তানকে বোঝাতে হবে। কোনো ধরনের দ্বিধাদ্বন্দ্বে না ভুগে সর্বোচ্চটা দিয়ে মেয়েশিশুকে বোঝাতে অভিভাবকদের সচেষ্ট হতে হবে।
সিলভী পিংকী চক্রবর্ত্তী
বাল্যবিয়ে রোধে ধর্মীয় নেতারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। কেননা সমাজের মানুষের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। আমাদের প্রকল্পে ধর্মীয় নেতাদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে। ইমামরা জুমার নামাজের সময় শিশুর প্রতি সহিংসতা ও বাল্যবিয়ের কুফল নিয়ে কথা বলেন। পুরোহিত বা অন্য ধর্মের নেতারাও কমিউনিটিতে
এ বিষয়ে কথা বলেন। বিশেষ করে তারা পরিবারের পুরুষ সদস্যকে এ সম্পর্কে বোঝাতে সক্ষম। এ ছাড়া আগে কিশোর-কিশোরীরা ১০৯৮ কিংবা ১০৯– এ দুটি হেল্পলাইন নম্বর সম্পর্কে জানত না। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে কর্মএলাকায় বর্তমানে অন্তত ৮৫ শতাংশ যুবসমাজ এ হেল্পলাইন নম্বরটা জানে। তবে স্বল্পমেয়াদে নয়, বরং বাল্যবিয়ে রোধে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প প্রয়োজন। জেন্ডার সমতায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। একইসঙ্গে বাল্যবিয়ে রোধে কাজ করে, এমন কমিটিগুলোর কাজের অগ্রগতি মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
শেখ রোকন
সমাজ থেকে বাল্যবিয়ের অভিশাপ দূরীকরণ এবং শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সমকাল সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে। বস্তুত, শিশু ও কন্যাশিশুর সুরক্ষা, অধিকার এবং তাদের যথাযথ বিকাশের প্রশ্নটি আমাদের সম্পাদকীয় নীতির অংশ। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সমকাল সংবাদ, মতামত প্রকাশ করে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখে। বিশেষজ্ঞদের সাক্ষাৎকার, অভিমত প্রকাশ করে থাকি। সমকালে ‘সমতা’ নামে সাপ্তাহিক ফিচার পাতা রয়েছে; সেখানে বাল্যবিয়ে, শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রায়ই মূল বিষয় হিসেবে উঠে আসে। আমাদের পাঠক সংগঠন ‘সুহৃদ সমাবেশ’ বাল্যবিয়ে নিয়ে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি নিয়ে থাকে। এসব বিষয়ে গোলটেবিল আলোচনা, সেমিনার, আলোচনা সভায় আমরা বিশেষ উৎসাহের সঙ্গে অংশগ্রহণ করে থাকি। আজকে এখানে যারা উপস্থিত রয়েছেন, আমরা আশা করব, তারাও বাল্যবিয়ে ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বিষয়ে সমকালে লিখবেন।
সুপারিশ
বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে যুবসমাজকে সচেতন করাসহ এটি রোধে তাদের সম্পৃক্ত করা।
সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের (জনপ্রতিনিধি, প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, শিক্ষক, ধর্মীয় নেতা প্রমুখ) বাল্যবিয়ে রোধে অন্তর্ভুক্ত করা।
বাল্যবিয়ে রোধে বিভিন্ন এনজিওগুলোর গৃহীত প্রকল্পগুলো দীর্ঘমেয়াদি করা।
শিক্ষার হার বাড়ানোর মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
উঠোন বৈঠক, জনসংযোগ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়ানো।
শিশুদের শিক্ষা থেকে ঝরে যাওয়া রোধে দরিদ্র পরিবারগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া। দরিদ্র কিশোর-কিশোরীদের শিক্ষায় সরকারি ভাতা চালু করা।
কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করা।
বাল্যবিয়ে সম্পর্কে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের প্রয়োজন। নারীর মর্যাদা ও ক্ষমতায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া। এ ক্ষেত্রে মূল্যবোধ ও সাংস্কৃতিক জাগরণ প্রয়োজন।
বাল্যবিয়ে রোধে কাজ করা বিভিন্ন কমিটিকে সক্রিয় করা। কমিটিগুলো কাজ করছে কী না—এর মনিটরিং করা।
সরকার, এনজিও, গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করা।
সমন্বিত পারিবারিক নীতিমালা শক্তিশালী করা। একইসঙ্গে জাতীয় বাজেটে পারিবারিক দিকটাকে অন্তর্ভুক্ত করা।
বিভিন্ন অঞ্চলভিত্তিক বাল্যবিয়ের কারণ নির্ণয় করে সেই কারণগুলো নিয়ে কাজ করা। প্রয়োজনে আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া।
বাল্যবিয়ে রোধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করা। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার্যকর করা।
সূচনা বক্তব্য
আবু সাঈদ খান
উপদেষ্টা সম্পাদক, সমকাল
প্যানেল আলোচক
সুরেশ বার্টলেট
ন্যাশনাল ডিরেক্টর, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ
ড. তানিয়া হক
অধ্যাপক, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সেতারায়ে জান্নাত
সোশ্যাল অ্যান্ড বিহেভিয়ার চেঞ্জ অফিসার ইউনিসেফ
চন্দন জেড গমেজ
সিনিয়র ডিরেক্টর (অপারেশনস)
ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ
স্টিফানি সেন্ট-লরেন্ট ব্রাসার্ড
সেকেন্ড সেক্রেটারি (ডেভেলপমেন্ট)
গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা
ডা. ইশরাত নায়ার
ফ্যামিলি প্ল্যানিং অ্যান্ড রিপ্রোডাক্টিভ হেলথ স্পেশালিস্ট, ইউএসএআইডি
রাবেয়া বেবী
স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক ইত্তেফাক
উম্মে শারমিন কবীর
প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান
ঋতু হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিয়িং ফাউন্ডেশন
মোসা. নাসরিন আখতার
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ
মোছা. মাহমুদা খাতুন
শিক্ষক, গাইবান্ধার পশ্চিম কুপতলা উচ্চ বিদ্যালয়
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি
মো. আ. কাইয়ুম সিরাজী
ইমাম ও খতিব, পাইকের ভিটা জামে মসজিদ কুড়িগ্রাম সদর
জেসমিন হোসেন
চাইল্ড প্রটেকশন অফিসার, ইউনিসেফ
সামিউল ইসলাম অপূর্ব
ইয়ুথ লিডার, অনিরুদ্ধ যুব ফোরাম
চাঁপাইনবাবগঞ্জ
তাছলিমা আক্তার
জেন্ডার ইক্যুয়ালিটি অ্যান্ড উইমেন্স এম্পাওয়ারমেন্ট টেকনিক্যাল স্পেশালিস্ট, ফিল্ড সাপোর্ট সার্ভিস প্রজেক্ট, গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা
এসএসবিসি প্রকল্প সম্পর্কে উপস্থাপনা
সিলভী পিংকী চক্রবর্ত্তী
বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার, ওয়ার্ল্ড ভিশন
সমাপনী বক্তব্য
মনজুর আহমেদ
সোশ্যাল অ্যান্ড বিহেভিয়ার চেঞ্জ অফিসার, ইউনিসেফ
ধন্যবাদ জ্ঞাপন
জেনী মিলড্রেড ডি. ক্রুশ
ডেপুটি ডিরেক্টর, ওয়ার্ল্ড ভিশন
উন্মুক্ত আলোচনা
ফারজানা ফেরদৌসী
প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট, ইউনিসেফ
জয়শ্রী সরকার
সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা কর্মসূচির ব্যবস্থাপক, ব্র্যাক
সালমা মাহবুব
সাধারণ সম্পাদক, বি-স্ক্যান
ডা. ফারহানা হক
হেলথ কমিউনিকেশনের ডিরেক্টর
রেড অরেঞ্জ ইন্টারন্যাশনাল
ইফতেখার আহমেদ খান
নির্বাহী পরিচালক, হোপ ফর দ্য পুওরেস্ট
সাবিহা সিদ্দিকী
সিমাভী-নেদারল্যান্ডস
নওয়াজ ফারিন অন্তরা
সাংবাদিক, ঢাকা ট্রিবিউন
সঞ্চালনা
শেখ রোকন
সহযোগী সম্পাদক, সমকাল
অনুলিখন
মাজহারুল ইসলাম রবিন
স্টাফ রিপোর্টার, সমকাল
সমন্বয়
হাসান জাকির
হেড অব ইভেন্টস, সমকাল
দেবাশীষ রঞ্জন সরকার
কমিউনিকেশনস ম্যানেজার, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ
- বিষয় :
- বাল্যবিয়ে