
ছবি-সংগৃহীত
মুটিয়ে যাচ্ছে বিশ্বের মানুষ। বিশ্বের প্রতি ছয়জন বয়স্ক মানুষের মধ্যে একজন এতে আক্রান্ত।
আপনি কি স্থূলকায়?
এটি নিরূপণের মাপকাঠি হলো বিএমআই। এর পুরো অর্থ দাঁড়ায় বডি ম্যাস ইনডেক্স। ওজন আর উচ্চতা জানা থাকলে নির্ণয় করা যায় বিএমআই। ওজন নিতে হবে কেজিতে আর উচ্চতা মিটারে। মিটারের বর্গ দিয়ে কেজিকে ভাগ দিলেই বেরিয়ে আসবে স্থূলতা। যদি বিএমআই ২৩-এর বেশি হয় তবে আপনি অধিক ওজনধারী। ২৮ কিংবা এর ওপরে হলে আপনি স্থূলকায়। অবশ্য ইউরোপ-আমেরিকার মানুষের জন্য মাপকাঠিতে ভিন্নতা রয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে এই মান ৩০-এর বেশি হলে স্থূলতা আক্রান্ত বলে বিবেচিত হবে।
কোমরের মাপ নিন: কোমরের মাপ নিয়েও স্থূলতা নির্ণয় করা যায়। কটিদেশের বহর যদি এশিয়ান পুরুষদের ৯০ এবং নারীদের ৮০ সেন্টিমিটারের বেশি হয় তবেই বিপত্তি। এটি নির্দেশ করে পেটে জমে গেছে চর্বির চাঁই।
কটিদেশ ও উচ্চতার অনুপাত বেশি নয় তো: স্থূলতার আরেক মানদণ্ড হলো কটিদেশ ও উচ্চতার অনুপাত। এটি যদি শূন্য দশমিক পাঁচের বেশি হয় তবে বিপদ। কারও উচ্চতা ৬০ ইঞ্চি আর কোমর যদি হয় ৩৬ তবে অনুপাত দাঁড়াবে ০.৬, যা বিপদচিহ্ন নির্দেশ করে।
কেন পেটের চর্বি ক্ষতিকর: শরীরের অন্য জায়গা আর পেটে চর্বির আস্তর জমে যাওয়ার মধ্যে বিপদের ফারাক রয়েছে। পেটের চর্বি হলো বিপজ্জনক। এটাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হয় ভিসেরাল ফ্যাট। এই চর্বিই যত বিপত্তির উৎপত্তিস্থল। এখান থেকেই তৈরি হয় কয়েক পদের হরমোন; যা সুস্থতার বিপক্ষে কাজ করতে থাকে।
আপেল কিংবা নাশপাতি: দেহে চর্বি জমে যাওয়ার ওপর ভিত্তি করে দেহের আকৃতিকে কেউ বলেছেন আপেলের মতো। কেউ বলেছেন নাশপাতির মতো। আপেলের মতো পেটের আকৃতি বিপদের লক্ষণ। নাশপাতির মতো যদি হয় তবে বিপদ কম। নাশপাতির মতো মানে হলো, পেটে চর্বি কম কিন্তু নিতম্বদেশে বেশি। এটি ক্ষতিকর নয়। সে জন্য বলা হয় নাশপাতির মতো হও, আপেলের মতো নয়।
স্থূলতা থেকে বিপদ: মুটিয়ে গেলে বিভিন্ন ব্যাধি এসে হাজির হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃৎপিণ্ডের অসুখ, আর্থ্রাইটিস, ফ্যাটি লিভার, কোলেস্টেরলের আধিক্য, কিছু ক্যানসার, বিষণ্নতা– এগুলো সবই হতে পারে স্থূলতার কারণ। এটি পুরুষ কিংবা নারী উভয়ের প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। সুতরাং মুটিয়ে যাওয়া থেকে সাবধান হোন।
লেখক: মেডিসিন স্পেশালিস্ট ও এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, সিএমএইচ, ঢাকা।
মন্তব্য করুন