২০১৮ সালের ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি অব রিসার্চ অন ক্যান্সারের (আইএআরসি) তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রতিবছর ১২ হাজারের বেশি নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এতে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার নারী মারা যান সার্ভিক্যাল ক্যান্সার বা জরায়ুমুখ ক্যান্সারে।

হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসকে (এইচপিভি) জরায়ুমুখ ক্যান্সারের অন্যতম কারণ হিসেবে গণ্য করা হয়।

জরায়ুমুখের ক্যান্সারের জন্য উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন কারা?

• অল্প বয়সে বিয়ে বা ১৬ বছর বয়সের আগে যৌন সঙ্গমের অভিজ্ঞতা থাকলে।
• স্বামী বা যৌনসঙ্গীর শরীরে ভাইরাসটি থাকলে।
• অল্প বয়সে সন্তান প্রসব, ঘন ঘন সন্তান ধারণ।
• একাধিক যৌনসঙ্গী বা একাধিক বিয়ে কিংবা স্বামীর একাধিক বিয়ে বা যৌনসঙ্গী থাকলে।
• জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য দীর্ঘমেয়াদি, বিশেষ করে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে পিল খেতে থাকলে।
• শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ঘাটতি থাকলে (যেমন– পুষ্টিহীনতা, এইডস, জরায়ুর অন্যান্য ইনফেকশন হলে ইত্যাদি)।
• যৌনসঙ্গমের মাধ্যমে ছড়ায় এমন কোনো রোগ থাকলে, যেমন– এইডস, সিফিলিস, গনোরিয়া ইত্যাদি।
• ধূমপান ও তামাক পাতার ব্যবহার (যেমন– পান, জর্দা, সাদা পাতা খাওয়া, গুল ব্যবহার)।

ক্যান্সার স্ক্রিনিং কাদের করতে হবে?

সব মেয়েকে করতে হবে।

কত বছর বয়স থেকে ক্যান্সার স্ক্রিনিং শুরু করতে হবে?

২১ বছর বয়স থেকে স্ক্রিনিং শুরু করতে হবে।

কীভাবে ক্যান্সার স্ক্রিনিং করা হয়?

প্যাপ টেস্ট, এইচপিভি-ডিএনএ টেস্ট, প্যাপ টেস্টের সঙ্গে এইচপিভি-ডিএনএ টেস্ট।

কত দিন পরপর ক্যান্সার স্ক্রিনিং করতে হবে?

২১ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত প্রতি তিন বছর পরপর প্যাপ টেস্ট  করা উচিত। ৩০ থেকে ৬৫ বছর পর্যন্ত প্রত্যেক নারীর প্রতি তিন বছর পরপর প্যাপ টেস্ট অথবা প্রতি পাঁচ বছর পরপর এইচপিভি-ডিএনএ টেস্ট অথবা প্রতি পাঁচ বছর পরপর প্যাপ টেস্টের সঙ্গে এইচপিভি-ডিএনএ টেস্ট পরীক্ষা করা উচিত।  

বাংলাদেশ সরকার ৩০ বছর বয়স থেকে জরায়ুমুখের ক্যান্সার স্ক্রিনিং সহজলভ্য করার জন্য প্রতিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল এবং কিছু কিছু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিনামূল্যে ভায়া টেস্ট করার ব্যবস্থা করেছে। এ ছাড়া সরকারিভাবে ১০ থেকে ১৫ বছর বয়সী মেয়েদের বিনামূল্যে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন সেপ্টেম্বর-২০২৩ থেকে শুরু করার কথা রয়েছে।

লেখক: ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ, রংপুর স্পেশালাইজড হাসপাতাল।