বায়ুদূষণ ও হাঁপানি
প্রতীকী ছবি
ডা. নাফিসা আবেদীন
প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৫ | ০৩:৩১
চারদিকে বায়ুদূষণে প্রভাব সদ্যোজাত থেকে প্রাপ্তবয়স্ক– প্রত্যেকের ওপরই পড়ছে। বায়ুদূষণের ফলে সদ্যোজাত বা এক বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা বা হার্টের সমস্যা হতে পারে।
এমনকি দূষণের কারণে মায়ের গর্ভে থাকাকালীন সন্তানের জন্মগত সমস্যা তৈরি হতে পারে! ১৫ থেকে ৬০ বছর বয়সের মধ্যে যাদের লাং ডিজিজ বা শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা আছে, তাদের ক্ষেত্রেও বারবার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। ৬৫ বছরের ওপরে যাদের ক্ষেত্রে ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজের প্রবণতা অনেকটাই বেশি, তাদের ক্ষেত্রে ইনফেকশন, নিউমোনিয়া, হাঁপানি বেড়ে যেতে পারে। হাঁপানি, সিওপিডি বা শ্বাসযন্ত্রের অন্য যে কোনো অসুখের সঙ্গে বায়ুদূষণের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে।
অসুখের প্রতিকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো দূষণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা! গাড়ির ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে। একটি জরুরি বিষয় হলো মাস্ক ব্যবহার করা।
খুব ভোরে বা সন্ধ্যায় হাঁটবেন না। এ সময়ে ধূলিকণা বা বাতাসের দূষণ সৃষ্টিকারী উপাদান অনেকটাই নিচের দিকে থাকে। ফ্রিজের ঠান্ডা খাবার এড়িয়ে চলুন। শীতে গলা-কান ঢেকে রাখা জরুরি, অনেকের অল্প ধুলো ঢুকলেই হাঁচি-কাশি শুরু হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে অ্যালার্জির পরিমাণ জেনে নেওয়া জরুরি। হাঁপানি বা সিওপিডির আশঙ্কা আছে কিনা, সেটিও জেনে নেবেন। হাঁপানির ক্ষেত্রে শুকনো কাশি, নিঃশ্বাসে কষ্ট আর বুকের মধ্যে সাঁইসাঁই শব্দ হতে পারে। হাঁপানির একটি বৈশিষ্ট্য হলো এই অসুখ মাঝেমধ্যে বাড়ে, আবার মাঝেমধ্যে এতটাই নিয়ন্ত্রিত থাকে যে রোগী ধরেই নেন, তিনি সুস্থ হয়ে গেছেন! সিওপিডি সাধারণত ৪০ বা ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের হতে পারে। কিছুটা সিঁড়ি দিয়ে উঠলে, বেশি হাঁটাচলা করলে হাঁপিয়ে যান রোগী। কাশি থাকে, মাঝেমধ্যে কাশির সঙ্গে কফও থাকে। হাঁপানির মূল চিকিৎসা হলো ইনহেলেশন থেরাপি। এর সঙ্গে প্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক, ওরাল স্টেরয়েড, অ্যান্টিঅ্যালার্জিক ওষুধের দরকার হতে পারে।
লেখক : বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
- বিষয় :
- বায়ুদূষণ