আপনার শিশুসন্তানের চোখ কি ট্যারা?
ছবি-সংগৃহীত
ডা. আহসান কবির
প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫ | ০৯:১৪
চোখে জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্মায় অনেক শিশু। এসব নিয়ে চিন্তিত থাকেন অভিভাবক। এ ছাড়া শিশুর চোখে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। এর মধ্যে ট্যারা চোখ একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা।
ট্যারা চোখ মানে কী?
যখন আমরা সামনে থেকে চোখের দুটো কালো অংশ সমানভাবে ডানে-বাঁয়ে ঘুরতে না দেখি তখনই বলব– চোখ ট্যারা। সামান্য হলে আমরা বলি লক্ষ্মীট্যারা, যা আদৌ লক্ষ্মী নয়; বরং সমস্যা।
চোখ কেন ট্যারা হয়
প্রতিটি চোখ ডানে-বাঁয়ে, ওপর-নিচে ঘোরাতে চোখের পাশে থাকা ছয়টি মাংসপেশি দায়িত্ব নিয়ে থাকে। যদি কোনো কারণে যে কোনো একটি মাংসপেশি দায়িত্ব না নেয়, তখনই আমাদের চোখ ট্যারা হয়ে যায়।
তবে চোখ ট্যারা হওয়ার সঠিক কারণ বলা মুশকিল। এ সমস্যার সম্ভাব্য কারণ হলো–
*স্নায়ুগত সমস্যা। শরীরের কেন্দ্রীয় ৩, ৪, ৬ নম্বর স্নায়ু মগজের উৎপত্তি স্থান থেকে শেষ পর্যন্ত চলার পথে যে কোনো সমস্যা হলে।
*চোখে যে কোনো আঘাত।
*চোখের পাওয়ার বা প্রতিসরণ সমস্যা।
*চোখের আশপাশে বা পেছনে টিউমার।
*হঠাৎ প্রচণ্ড উচ্চমাত্রায় জ্বর হলে।
*বংশগতভাবে ট্যারা।
*চোখের নেত্রস্বচ্ছ ঘোলা, লেন্সের ছানি ও রেটিনার সমস্যা।
*শরীরের কিছু সাধারণ রোগ, মেটাবলিক রোগ ইত্যাদি।
কী করতে হবে
জন্মের পর থেকে তিন বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর চোখের দিকে খেয়াল করুন। তার কোনো চোখ ট্যারা হচ্ছে কিনা লক্ষ্য রাখুন। এমন সমস্যা হলে দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে চক্ষু বিশেষজ্ঞের চিকিৎসা নিতে হবে। মনে রাখতে হবে শিশুর এ-সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যা পাঁচ বছর বয়সের মধ্যেই সমাধান করে নিতে হবে।
চিকিৎসক হয়তো চশমা দিতে পারেন কিংবা ব্যায়াম বা যে কোনো চোখ সাময়িক বন্ধ রাখতে বলতে পারেন। ক্ষেত্রবিশেষে এসব পদ্ধতিতে অবস্থার উন্নতি না হলে চিকিৎসক অপারেশনের পরামর্শ দেবেন।
চিকিৎসক অপারেশনের পরামর্শ দিলে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। অনেক অভিভাবক এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন। এটি খুব সাধারণ সার্জারি। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ট্যারা চোখ ঠিক করা যায়।
মনে রাখবেন, আপনার সিদ্ধান্তহীনতা শিশুর ভবিষ্যৎ জীবনে অন্ধকার বয়ে আনবে এবং সামাজিকভাবে সে হীনম্মন্যতায় ভুগবে।
লেখক : চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও ফেকো সার্জন, যশোর চক্ষু ক্লিনিক।