ঢাকা বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩

অক্টােবরে রপ্তানি আয় কমেছে ১৪ শতাংশ

অক্টােবরে রপ্তানি আয় কমেছে ১৪ শতাংশ

.

সমকাল প্রতিবেদক 

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৩ | ১৮:৩৬ | আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৩ | ০০:৩৬

চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসের মধ্যে গত অক্টোবরেই সবচেয়ে কম এসেছে রপ্তানি আয়।
গেল অক্টোবরে গত বছরের একই মাসের চেয়ে রপ্তানি কমেছে ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ। গত মাসে ৩৭৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত বছরের একই মাসের চেয়ে যা ৬০ কোটি ডলার কম। গত বছরের অক্টোবরে ৪৩৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। 

গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রতিবেদন থেকে রপ্তানির হালনাগাদ চিত্রটি পাওয়া গেছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোর রপ্তানি প্রবণতা বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসের মধ্যে অক্টোবরেই রপ্তানি হয়েছে সবচেয়ে কম। এর আগে গত জুলাইয়ে ৪৫৯ কোটি, আগস্টে ৪৭৮ কোটি এবং সেপ্টেম্বরে ৪৩১ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। 
মূলত তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে সার্বিক রপ্তানি আয়ে। মোট রপ্তানি আয়ে সমজাতীয় পণ্যসহ তৈরি পোশাকের অবদান প্রায় ৮৬ শতাংশ। অক্টোবরে পোশাক রপ্তানিও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে প্রায় ১৪ শতাংশ। ওভেন ক্যাটেগরি অর্থাৎ শার্ট, প্যান্টের রপ্তানি প্রায় ২২ শতাংশ কমেছে মাসটিতে। নিটের অর্থাৎ গেঞ্জি জাতীয় পোশাকের রপ্তানি কমছে প্রায় ৮ শতাংশ। দুই ক্যাটেগরি মিলিয়ে অক্টোবরে পোশাক রপ্তানি থেকে আয় এসেছে ৩১৬ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। সেপ্টেম্বর মাসে যা ছিল ৩৬১ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। তার আগের দুই মাস অর্থাৎ জুলাই ও আগস্টে পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৩৯৫ কোটি ৩৭ লাখ এবং ৪০৪ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। 

তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানির এ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান সমকালকে বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় বিশ্ববাজারে পোশাকের চাহিদা কমেছে। বড় অর্থনীতির দেশগুলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদের হার বাড়িয়ে আমদানি নিরুৎসাহিত করছে। ফলে বিশ্ববাজারে পোশাকের চাহিদা কমেছে। সম্প্রতি ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও কিছুটা নাজুক করে তুলেছে। এসব কারণে চলতি অর্থবছর গত অর্থবছরের সমপরিমাণ রপ্তানি আয় সম্ভব নাও হতে পারে।  

পোশাক রপ্তানি কমে যাওয়ার এই সময়টাতে ন্যূনতম মজুরিকে কেন্দ্র করে চলমান শ্রম অসন্তোষ আরও বেশি উদ্বেগের কারণ বলে মনে করছেন তিনি। ফারুক হাসান বলেন, শ্রমিক অসন্তোষের কারণে গত এক সপ্তাহে রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। মজুরি নির্ধারণে নিম্নতম মজুরি বোর্ড কাজ করছে। এর মধ্যে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে এ ধরনের অযৌক্তিক আন্দোলন খুবই দুঃখজনক। এতে মজুরি বোর্ডের কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। জাতীয় স্বার্থে পোশাক খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে মালিক-শ্রমিকসহ সব পক্ষের সহযোগিতা জরুরি। কারণ অর্থনৈতিকভাবে একটা কঠিন সময় পার করছি আমরা। এ সময় রপ্তানি আয় কমে যাওয়া কিংবা শ্রমিকরা বেকার হলে সে চাপ নেওয়ার সামর্থ্য নেই অর্থনীতির। 

ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তৈরি পোশাকের বাইরে রপ্তানি তালিকার শীর্ষ চারটি পণ্যে রপ্তানি কমেছে গত চার মাসে। গত জুলাই থেকে অক্টোবর সময়ে পাট ও পাটপণ্যের রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে ১১ দশমিক ২৬ শতাংশ। চামড়া ও চামড়া পণ্যের রপ্তানি কমেছে ২৪ শতাংশ। কৃষিপণ্যে ৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ ও হোম টেক্সটাইলে ৪৫ শতাংশ কমেছে। প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি  ১৪ শতাংশের মতো বেড়েছে।  

অক্টোবর মাসে রপ্তানি কমলেও জুলাই থেকে অক্টোবর সময়ে সার্বিক রপ্তানি কিছুটা বেড়েছে। গত চার মাসের গড় রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি। 

আরও পড়ুন