- শিল্প-বাণিজ্য
- যুক্তরাষ্ট্রের তুলায় উৎপাদিত পোশাকে শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়েছে বিজিএমইএ
যুক্তরাষ্ট্রের তুলায় উৎপাদিত পোশাকে শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়েছে বিজিএমইএ

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলায় উৎপাদিত বাংলাদেশের পোশাক দেশটিতে রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা চায় বিজিএমইএ। যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে এ ব্যাপারে রাজি করাতে টেক্সাসের সিনেটর টেড ক্রজের কাছে অনুরোধ জানিয়ে সম্প্রতি চিঠি দিয়েছেন বিজিমএইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় ফোরামে বিষয়টি আলোচনাভুক্ত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয় চিঠিতে। এতে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, গত মাসে বাংলাদেশ সরকার গেজেট জারির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের তুলা আমদানি প্রক্রিয়া সহজ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিম গোলার্ধের দেশগুলো থেকে আমদানি করা তুলা ব্যবহারের ক্ষেত্রে ডাবল ফিমুগেশন বা দু’বার জীবাণুমুক্ত করার পরীক্ষার শর্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া তুলা আমদানিতে আগে থেকেই প্রায় শতভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধা আছে। তাই যুক্তরাষ্ট্রের তুলা আমদানি এবং ব্যবহার আরও বাড়বে। পাশাপাশি দু’দেশের বাণিজ্য আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করা হয় চিঠিতে।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) প্রতিবেদনের তথ্য উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, পোশাক বাণিজ্যে দ্বিতীয় প্রধান রপ্তানিকারক বাংলাদেশ। বৈশ্বিক পোশাক বাজারে বাংলাদেশের হিস্যা ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ, যার বড় একটা অংশই তুলায় তৈরি। গত অর্থবছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৪৬ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩৩ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাকই তুলায় উৎপাদিত। এ কারণে তুলার দ্বিতীয় প্রধান আমদানিকারক দেশ বাংলাদেশ। উৎপাদনে ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিজস্ব তুলা মাত্র ১ শতাংশ। বাকি ৯৯ শতাংশই আমদানি করতে হয়। গত বছর ৪০৮ কোটি পাউন্ড তুলা আমদানি করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৪১ কোটি পাউন্ড তুলা আমদানি করা হয়েছে। এ ছাড়া গত বছর যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৪৮ বিলিয়ন ডলারের তুলায় তৈরি পোশাক আমদানি করেছে, যার প্রায় ১৫ শতাংশ নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। এসব তথ্যে পরিষ্কার বোঝা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি করা তুলার পোশাকের বড় জোগানদাতা বাংলাদেশ। কিন্তু বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের পোশাকে গড়ে ১৬ শতাংশ হারে আমদানি শুল্ক রয়েছে।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে রানা প্লাজা ধসে পাঁচ পোশাক কারখানার ১ হাজার ১৩৮ শ্রমিক প্রাণ হারান। আহত হন আড়াই হাজার শ্রমিক। ওই দুর্ঘটনার পর নিরাপদ কর্মপরিবেশ না থাকার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্যের অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা বা জিএসপি বাতিল করা হয়। এরপর শর্ত অনুযায়ী বিভিন্ন খাতে অগ্রগতি সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত সেই শুল্ক সুবিধা পুনর্বহাল হয়নি। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি সুবিধার আওতায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কখনোই অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের যেসব অঞ্চলে তুলার চাষ বেশি হয়, সেসব অঞ্চলের কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও জিএসপি নিয়ে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজিএমইএ। এতে স্থানীয় তুলাচাষিরা লাভবান হবেন, সে বিষয়টি তাঁদের বোঝানো হবে। এ ছাড়া ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গেও এ বিষয়ে যাোগাযোগ করা হবে।
মন্তব্য করুন